পবিত্র কোরআনের আলো-শেষ নবী (সা.) আগের নবীদের মতোই মানুষের জন্য মুক্তির বার্তা নিয়ে এসেছেন
১৫৬. ওয়াকতুব লানা ফি হাজিহিদ দুনিয়া হাছানাতান ওয়া ফিল আখিরাতে ইন্না হুদনা ইলাইকা; ক্বালা আজা-বি উসিবু বিহি মান আশা-উ। ওয়া রাহমাতি ওয়াসিআ'ত কুল্লা শাইয়্যিন; ফাসা আকতুবুহা লিল্লাজিনা ইয়াত্তাক্বুনা ওয়া ইউতুনাজ জাকাতা ওয়াল্লাজিনাহুম বিআয়াতিনা ইউ'মিনুন।\ ১৫৭. আল্লাজিনা ইয়াত্তাবি'উনার রাসুলান নাবিয়্যাল উম্মিয়াল্লাজি ইয়াজিদুনাহু মাকতুবান ইন্দাহুম ফিততাওরা-তি ওয়াল ইনজি-লি, ইয়া'মুরুহুম বিল মা'রুফি ওয়া
ইয়ানহাহুম আ'নিল মুনক্বারি ওয়া ইউহিল্লু লাহুমুত তাইয়্যিবাতি ওয়া ইউহাররিমু আলাইহিমুল খ্বাবাইছা ওয়া ইয়াদা'উ আনহুম ইসরাহুম ওয়াল আগলালাল্লাতি কানাত 'আইলাইহিম। আল্লাজিনা আমানু বিহি ওয়া আজজারুহু ওয়া নাছারু-হু ওয়াত্তাবাউন নূরা, আল্লাজি উনজিলা মা'আহু উলাইকা হুমুল মুফলিহুন।
অনুবাদ : ১৫৬. হে প্রভু! তুমি আমাদের জন্য ইহকাল ও পরকালের কল্যাণ লিখে দাও। সঠিক পথের দিশা লাভ করার জন্য আমরা তোমার দিকেই ফিরে আসছি। আল্লাহ তায়ালা বললেন, আমি যাকে ইচ্ছা করি তাকেই শুধু শাস্তি দিই আর আমার দয়া সে তো প্রতিটি বস্তুতে পরিব্যাপ্ত। সুতরাং আমি এ রহমত পরিপূর্ণভাবে সেই সব লোকের জন্য লিখব, যারা তাকওয়া অবলম্বন করে, জাকাত আদায় করে এবং আমার আয়াতগুলোর ওপর পূর্ণ ইমান রাখে।
১৫৭. যারা এই বার্তাবাহক নিরক্ষর রাসুল (সা.)-এর অনুসরণ করে চলে, যা তারা তাদের কিতাব তাওরাত ও ইঞ্জিলেও লিখিত দেখতে পাচ্ছে; যে নবী তাদের ভালো কাজের আদেশ দেন, মন্দ কাজ থেকে বিরত রাখেন, তিনি তাদের জন্য যাবতীয় পবিত্র জিনিসকে হালাল এবং অপবিত্র জিনিসগুলোকে হারাম ঘোষণা করেন। যিনি মানুষের ঘাড় থেকে মানুষের গোলামির যে বোঝা ছিল তা নামিয়ে দেবেন এবং মানুষের চাপানো যে বন্ধন তাদের গলার ওপর ঝোলানো ছিল তা খুলে ফেলবেন। অতঃপর যারা তাঁর ওপর ইমান আনবে, যারা তাঁকে সাহায্য-সহযোগিতা করবে, সর্বোপরি তাঁর মাধ্যমে যে আলোকিত কোরআন নাজিল করা হয়েছে তার অনুসরণ করবে, তারাই হচ্ছে সফলকাম।
ব্যাখ্যা : ১৫৬ নম্বর আয়াতের মাধ্যমে আল্লাহর কাছে প্রার্থনা জানানোর একটি চিরায়ত ধরনের কথা বলা হয়েছে। হজরত মুসা (আ.) আল্লাহর কাছে তাঁর জাতির জন্য যে প্রার্থনা জানিয়েছিলেন, তা এখানে উল্লেখ করা হয়েছে। অর্থাৎ তিনি তাঁর জাতির জন্য দুনিয়া ও আখিরাত উভয় স্থানে কল্যাণ দানের দোয়া করেছিলেন। সেই সঙ্গে এখানে আল্লাহ তায়ালা মানবজাতিকে জানিয়ে দিচ্ছেন যে তাঁর রহমত তাঁর ক্রোধের চেয়ে অনেক বিস্তৃত ও বড়। আল্লাহ তায়ালা দুনিয়াতে সব পাপীকে তাদের পাপের জন্য শাস্তি দেন না। অনুরূপভাবে আখিরাতেও সব পাপের জন্য শাস্তি অবধারিত নয়। অন্যদিকে দুনিয়ায় আল্লাহর রহমত সর্বব্যাপী। মুমিন ও কাফির এবং পাপিষ্ঠ ও পুণ্যবান সবাই তা ভোগ করে। পৃথিবীতে আল্লাহ তায়ালা সবাইকে রিজিক দেন এবং সুস্থতা ও নিরাপত্তা দেন। এই আয়াতে নবী মুসা (আ.)-এর মোনাজাতের একটি উত্তরও দেওয়া হয়েছে। এখানে বলা হয়েছে, কিন্তু যারা দুনিয়া ও আখিরাত উভয় স্থানে আল্লাহর রহমতের অধিকারী হবে, তারা হবে সেই সব লোক, যারা ইমান ও তাকওয়ার গুণ অর্জন করবে এবং জাকাত আদায়ের মতো কর্তব্যে অবহেলা করবে না।
১৫৭ নম্বর আয়াতে বনি ইসরাইলদের প্রতি প্রেরিত শিক্ষার ধারাবাহিকতায় শেষ নবী (সা.)-এর ওপর ইমান আনার ব্যাপারটিকে অনিবার্য করে রেখেছেন। আল্লাহ তায়ালা হজরত মুসার দোয়া কবুল করার সময় এটাও স্পষ্ট করে দিলেন যে শেষ নবী (সা.) আগমনের সময় বনি ইসরাইলের যেসব লোক জীবিত থাকবে তাদের দুনিয়া ও আখিরাতের কল্যাণ লাভ শুধু এই অবস্থায়ই হতে পারে যে তারা শেষ নবীর ওপর ইমান আনবে এবং তাঁকে অনুসরণ করবে। এ প্রসঙ্গে আল্লাহ তায়ালা শেষ নবীর কিছু বৈশিষ্ট্যও উল্লেখ করে দিয়েছেন। প্রথম বৈশিষ্ট্য হলো_তিনি নবী হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে রাসুলও হবেন। রাসুল হওয়ার মানে তিনি নতুন শরিয়ত নিয়ে আসবেন। নতুন শরিয়তের কোনো কোনো বিধান তাওরাত বা ইঞ্জিলের বিধান থেকে ভিন্ন হতে পারে_এটাও এখানে বুঝিয়ে দেওয়া হয়েছে। দ্বিতীয় বৈশিষ্ট্য হলো_তিনি উম্মি বা নিরক্ষর হবেন। তৃতীয় বৈশিষ্ট্য হলো_তাওরাত ও ইঞ্জিল উভয় গ্রন্থে তাঁর উল্লেখ থাকবে। এই আয়াতে শেষ নবীর আনীত ধর্ম ইসলামের মানবমুক্তির আদেশের কিছু বৈপ্লবিক ধারার প্রতি ইঙ্গিত করা হয়েছে, যেসব বিধিবিধান বা প্রচলিত নিয়ম ও আইন মানুষকে পদদলিত করে রাখার শৃঙ্খলরূপে আবির্ভূত হয়ে উঠেছিল, যেগুলো ইসলাম এসে নাকচ করে দেবে এই ইঙ্গিতই এখানে দেওয়া হয়েছে।
গ্রন্থনা : মাওলানা হোসেন আলী
অনুবাদ : ১৫৬. হে প্রভু! তুমি আমাদের জন্য ইহকাল ও পরকালের কল্যাণ লিখে দাও। সঠিক পথের দিশা লাভ করার জন্য আমরা তোমার দিকেই ফিরে আসছি। আল্লাহ তায়ালা বললেন, আমি যাকে ইচ্ছা করি তাকেই শুধু শাস্তি দিই আর আমার দয়া সে তো প্রতিটি বস্তুতে পরিব্যাপ্ত। সুতরাং আমি এ রহমত পরিপূর্ণভাবে সেই সব লোকের জন্য লিখব, যারা তাকওয়া অবলম্বন করে, জাকাত আদায় করে এবং আমার আয়াতগুলোর ওপর পূর্ণ ইমান রাখে।
১৫৭. যারা এই বার্তাবাহক নিরক্ষর রাসুল (সা.)-এর অনুসরণ করে চলে, যা তারা তাদের কিতাব তাওরাত ও ইঞ্জিলেও লিখিত দেখতে পাচ্ছে; যে নবী তাদের ভালো কাজের আদেশ দেন, মন্দ কাজ থেকে বিরত রাখেন, তিনি তাদের জন্য যাবতীয় পবিত্র জিনিসকে হালাল এবং অপবিত্র জিনিসগুলোকে হারাম ঘোষণা করেন। যিনি মানুষের ঘাড় থেকে মানুষের গোলামির যে বোঝা ছিল তা নামিয়ে দেবেন এবং মানুষের চাপানো যে বন্ধন তাদের গলার ওপর ঝোলানো ছিল তা খুলে ফেলবেন। অতঃপর যারা তাঁর ওপর ইমান আনবে, যারা তাঁকে সাহায্য-সহযোগিতা করবে, সর্বোপরি তাঁর মাধ্যমে যে আলোকিত কোরআন নাজিল করা হয়েছে তার অনুসরণ করবে, তারাই হচ্ছে সফলকাম।
ব্যাখ্যা : ১৫৬ নম্বর আয়াতের মাধ্যমে আল্লাহর কাছে প্রার্থনা জানানোর একটি চিরায়ত ধরনের কথা বলা হয়েছে। হজরত মুসা (আ.) আল্লাহর কাছে তাঁর জাতির জন্য যে প্রার্থনা জানিয়েছিলেন, তা এখানে উল্লেখ করা হয়েছে। অর্থাৎ তিনি তাঁর জাতির জন্য দুনিয়া ও আখিরাত উভয় স্থানে কল্যাণ দানের দোয়া করেছিলেন। সেই সঙ্গে এখানে আল্লাহ তায়ালা মানবজাতিকে জানিয়ে দিচ্ছেন যে তাঁর রহমত তাঁর ক্রোধের চেয়ে অনেক বিস্তৃত ও বড়। আল্লাহ তায়ালা দুনিয়াতে সব পাপীকে তাদের পাপের জন্য শাস্তি দেন না। অনুরূপভাবে আখিরাতেও সব পাপের জন্য শাস্তি অবধারিত নয়। অন্যদিকে দুনিয়ায় আল্লাহর রহমত সর্বব্যাপী। মুমিন ও কাফির এবং পাপিষ্ঠ ও পুণ্যবান সবাই তা ভোগ করে। পৃথিবীতে আল্লাহ তায়ালা সবাইকে রিজিক দেন এবং সুস্থতা ও নিরাপত্তা দেন। এই আয়াতে নবী মুসা (আ.)-এর মোনাজাতের একটি উত্তরও দেওয়া হয়েছে। এখানে বলা হয়েছে, কিন্তু যারা দুনিয়া ও আখিরাত উভয় স্থানে আল্লাহর রহমতের অধিকারী হবে, তারা হবে সেই সব লোক, যারা ইমান ও তাকওয়ার গুণ অর্জন করবে এবং জাকাত আদায়ের মতো কর্তব্যে অবহেলা করবে না।
১৫৭ নম্বর আয়াতে বনি ইসরাইলদের প্রতি প্রেরিত শিক্ষার ধারাবাহিকতায় শেষ নবী (সা.)-এর ওপর ইমান আনার ব্যাপারটিকে অনিবার্য করে রেখেছেন। আল্লাহ তায়ালা হজরত মুসার দোয়া কবুল করার সময় এটাও স্পষ্ট করে দিলেন যে শেষ নবী (সা.) আগমনের সময় বনি ইসরাইলের যেসব লোক জীবিত থাকবে তাদের দুনিয়া ও আখিরাতের কল্যাণ লাভ শুধু এই অবস্থায়ই হতে পারে যে তারা শেষ নবীর ওপর ইমান আনবে এবং তাঁকে অনুসরণ করবে। এ প্রসঙ্গে আল্লাহ তায়ালা শেষ নবীর কিছু বৈশিষ্ট্যও উল্লেখ করে দিয়েছেন। প্রথম বৈশিষ্ট্য হলো_তিনি নবী হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে রাসুলও হবেন। রাসুল হওয়ার মানে তিনি নতুন শরিয়ত নিয়ে আসবেন। নতুন শরিয়তের কোনো কোনো বিধান তাওরাত বা ইঞ্জিলের বিধান থেকে ভিন্ন হতে পারে_এটাও এখানে বুঝিয়ে দেওয়া হয়েছে। দ্বিতীয় বৈশিষ্ট্য হলো_তিনি উম্মি বা নিরক্ষর হবেন। তৃতীয় বৈশিষ্ট্য হলো_তাওরাত ও ইঞ্জিল উভয় গ্রন্থে তাঁর উল্লেখ থাকবে। এই আয়াতে শেষ নবীর আনীত ধর্ম ইসলামের মানবমুক্তির আদেশের কিছু বৈপ্লবিক ধারার প্রতি ইঙ্গিত করা হয়েছে, যেসব বিধিবিধান বা প্রচলিত নিয়ম ও আইন মানুষকে পদদলিত করে রাখার শৃঙ্খলরূপে আবির্ভূত হয়ে উঠেছিল, যেগুলো ইসলাম এসে নাকচ করে দেবে এই ইঙ্গিতই এখানে দেওয়া হয়েছে।
গ্রন্থনা : মাওলানা হোসেন আলী
No comments