যেমন দেখা গেল সুপারমুন
জার্মানির আকাশে সুপারমুন। ছবি: এএফপি |
প্রতিদিনের
চেয়ে আকারে চোখে পড়ার মতোই বড়। আর গায়ে লালচে আভা। আকাশে দেখা যাচ্ছে
‘সুপারমুন’ নামে পরিচিত এ রকম হৃষ্টপুষ্ট চাঁদ। একই সময়ে চন্দ্রগ্রহণ এবং
সারা বছরের মধ্যে পৃথিবীর সবচেয়ে কাছাকাছি থাকা পূর্ণিমার চাঁদ—এ দুটি বিরল
মহাজাগতিক ঘটনার সমন্বয়েই উপগ্রহটির রং ও আকারে এই পরিবর্তন। আর তা দেখার
জন্য সাড়া পড়েছে বিশ্বজুড়ে শখের আকাশ পর্যবেক্ষণকারীদের মধ্যে। খবর
রয়টার্সের।
যুক্তরাষ্ট্রের ইন্ডিয়ানা অঙ্গরাজ্যের ভালপ্রাইজো শহর থেকে দেখা সুপারমুন। ছবি: রয়টার্স |
বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে গতকাল রোববার রাত থেকে শুরু হয় সুপারমুনের উপস্থিতি। কোথাও কোথাও আজ সোমবারও এর দেখা মিলবে।
যুক্তরাষ্ট্রের ম্যাসাচুসেটস অঙ্গরাজ্যের বোস্টন হারবোর বন্দর থেকে তোলা। ছবি: এএফপি |
স্বাভাবিকের
চেয়ে বেশি উজ্জ্বলও এই চাঁদ। আকাশপ্রেমীরা উচ্ছ্বসিত ‘সুপারমুন’ দেখতে
পেয়ে। চন্দ্রগ্রহণের কারণে চাঁদের এ ধরনের অবস্থার নাম ‘ব্লাড মুন’। তবে
এবারের চন্দ্রগ্রহণ বাংলাদেশ থেকে দেখা যাচ্ছে না। ‘ব্লাড মুন’ দেখেছেন
কেবল পশ্চিম গোলার্ধের অধিবাসীরাই।
প্যারিসের আইফেল টাওয়ারের পাশে সুপারমুন। ছবি: রয়টার্স |
আকাশ পরিষ্কার থাকা সাপেক্ষে ‘সুপারমুন’ ও ‘ব্লাড মুন’ উত্তর ও দক্ষিণ
আমেরিকা, ইউরোপ, আফ্রিকা ও পশ্চিম এশিয়ার কয়েকটি অংশ এবং পূর্বাঞ্চলীয়
প্রশান্ত মহাসাগর এলাকায় দৃশ্যমান হয়।
যুক্তরাষ্ট্রের শিকাগো শহরের রিগলি ফিল্ড থেকে ছবিটি তোলা। ছবি: এএফপি |
যুক্তরাষ্ট্রে স্থানীয় সময় রোববার রাত ৮টা ১১ মিনিটে (পূর্বাঞ্চলীয়
সময়) চন্দ্রগ্রহণ শুরু হয়। পূর্ণগ্রাস হয় দুই ঘণ্টা পর এবং তা চলে ১ ঘণ্টা
১২ মিনিট।
যুক্তরাষ্ট্রের নেভাদা অঙ্গরাজ্য থেকে ছবিটি তোলা। ছবি: এএফপি |
মার্কিন মহাকাশ গবেষণা সংস্থা নাসা জানায়, একই সঙ্গে ‘সুপারমুন’ ও
পূর্ণগ্রাস চন্দ্রগ্রহণের ঘটনা এবার ৩০ বছরেরও বেশি সময় পর ঘটছে। ২০১৮ সাল
পর্যন্ত আর কোনো পূর্ণগ্রাস চন্দ্রগ্রহণ হবে না। আর একই সঙ্গে
সুপারমুন-চন্দ্রগ্রহণ দেখা যাবে ২০৩৩ সালে।
ফ্রান্সের স্টার্সবার্গ থেকে দেখা সুপারমুন। ছবি; এএফপি |
গতকাল রাতে চন্দ্রগ্রহণের সময় চাঁদের অনন্য সাদা আভা ধীরে ধীরে লালচে রং
নেয়। এই রং বদলের কারণ, পৃথিবীর বায়ুমণ্ডলে সূর্যালোকের বিক্ষেপণ।
ভেনেজুয়েলার রাজধানী কারাকাসের আকাশে সুপারমুন। ছবি: এএফপি |
সুপারমুনের টেকনিক্যাল নাম হচ্ছে ‘পেরিজি মুন’। পেরিগি অর্থ হচ্ছে ‘পৃথিবীর নিকটতম’।
ইসরায়েলে ভূমধ্যসাগরের উপকূলীয় শহর নেতানিয়ার আকাশে সুপারমুন। ছবি: এএফপি |
চাঁদ সম্পূর্ণ গোলাকার নয় বলে পৃথিবী থেকে এর দূরত্ব প্রায় ৪৯ হাজার
৯০০ কিলোমিটার কম-বেশি হয়। আর একমাত্র এ উপগ্রহটি প্রতি ২৭ দিন অন্তর
পৃথিবীকে প্রদক্ষিণ করে। পৃথিবীর সবচেয়ে কাছের যে বিন্দুতে (পেরিজি) চাঁদ
আসে, তার দূরত্ব ৩ লাখ ৬৩ হাজার ১০৪ কিলোমিটার।
যুক্তরাষ্ট্রের ক্যালিফোর্নিয়ার লস অ্যাঞ্জেলস থেকে তোলা। ছবি: এএফপি |
আর সবচেয়ে দূরে (অ্যাপোজি) যে বিন্দুতে চাঁদ অবস্থান করতে পারে, তার
দূরত্ব ৪ লাখ ৬ হাজার ৬৯৬ কিলোমিটার। পেরিজির সময় চাঁদ ও পৃথিবীর দূরত্ব
যখন সবচেয়ে কম হয়, তখনই ঘটনাচক্রে পূর্ণিমা হলে চাঁদকে স্বাভাবিকের থেকে
বড় ও উজ্জ্বল দেখায়। এটিই ‘সুপারমুন’।
প্যারাগুয়ের রাজধানী আসুনসিয়ন থেকে দেখা সুপারমুন।
কলম্বিয়ার লস আন্দিজ পর্বত মালার পেছনে থেকে উঁকি দিচ্ছে সুপারমুন।
No comments