খুঁড়িয়ে চলছে বোয়েসেল by রোকনুজ্জামান পিয়াস
বিদেশে কর্মী নিয়োগকারী একমাত্র সরকারি রিক্রুটিং এজেন্সি বাংলাদেশ ওভারসিজ এমপ্লয়মেন্ট এন্ড সার্ভিসেস লিমিটেড (বোয়েসেল) চলছে খুঁড়িয়ে খুঁড়িয়ে। রাষ্ট্রায়ত্ত এ এজেন্সির ৫১ শতাংশ মালিকানা সরকারের থাকলেও অজ্ঞাত কারণে আজও পর্যন্ত অবিক্রীত রয়েছে বেসরকারি খাতের ৪৯ শতাংশ। সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা বলছেন, বাজার সমপ্রসারিত করার প্রবল ইচ্ছা থাকা সত্ত্বেও আমলাতান্ত্রিক জটিলতার কারণে তা সম্ভব হচ্ছে না। তবে সেবার পরিধি বাড়াতে তারা বেশকিছু পরিকল্পনাও নিয়েছে। অন্যদিকে জনশক্তি রপ্তানি ও প্রশিক্ষণ ব্যুরোর (বিএমইটি) কাজ কর্মী পাঠানো নিয়ন্ত্রণ করা হলেও তারাও বিভিন্ন দেশে কর্মী প্রেরণ প্রক্রিয়ার সঙ্গে যুক্ত হয়েছে। এতে বোয়েসেলের গুরুত্ব অনেকাংশে কমে গেছে বলে দাবি করেছেন নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কর্মকর্তারা। সৎ, দক্ষ ও দ্রুত সেবা দেয়ার লক্ষ্যে বোয়েসেল প্রতিষ্ঠিত হয়। ১৯৮৪ সালে ৪২ জন বিদেশে কর্মী পাঠানোর মাধ্যমে এর কার্যক্রম শুরু হয়। এরপর থেকে পেশাদার, দক্ষ ও আধাদক্ষ এই তিনটি ক্যাটাগরিতে ২৭টি দেশে কর্মী পাঠিয়েছে এ প্রতিষ্ঠান। ওই সব দেশে ২০১৩ সাল পর্যন্ত এই এজেন্সির মাধ্যমে কর্মী গেছে মাত্র ৩৬ হাজার ১২৩ জন। যা ৩০ বছরে সংখ্যার দিক থেকে খুবই নগণ্য।
বোয়েসেলের মাধ্যমে গত বছরের জুন থেকে এ বছর অক্টোবর পর্যন্ত ১০ হাজার ১৭ জন কর্মী গেছে। বর্তমান সরকার নির্ধারিত দু’টি দেশে কর্মী পাঠানো অব্যাহত রেখেছে। এর মধ্যে জর্ডানে গার্মেন্টস কর্মী হিসেবে যাচ্ছে নারীরা। দক্ষিণ কোরিয়ায় এমপ্লয়মেন্ট পারমিট সিস্টেমের মাধ্যমে যাচ্ছে পুরুষ কর্মীরা। সূত্র জানিয়েছে, বোয়েসেল কেবলমাত্র কোন নিয়োগকর্তা চাহিদা পাঠালেই কর্মী পাঠানোর ব্যবস্থা করে থাকে। ব্যাপক ভিত্তিক বিভিন্ন দেশে নতুন শ্রমবাজার তৈরি করার কোন উদ্যোগই নেই তাদের। বোয়েসেল রাষ্ট্রায়ত্ত প্রতিষ্ঠান হলেও এর যাবতীয় ব্যয় নির্বাহ করতে হয় নিজস্ব আয় থেকে। বিদেশ গমনকারী কর্মীর কাছ থেকে নেয়া সার্ভিস চার্জই তাদের আয়ের উৎস। এই চার্জ থেকেই সব অফিস ভাড়া, কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বেতনসহ অন্যান্য সব ব্যয় নির্বাহ করতে হয়। এছাড়া প্রতিবছরই সরকারকে লভ্যাংশ এবং অর্জিত আয়ের রাজস্ব আদায় করতে হয়। ফলে দেনদরবার করে বিদেশ থেকে কর্মী নিয়োগের চাহিদা আনার মানসিকতাও থাকে না। সেবাদানকারী প্রতিষ্ঠান বলা হলেও আর্থিক অনুদান পায় না প্রতিষ্ঠানটি। উপরন্তু নিজস্ব আয় থেকেই তারা ব্যয় নির্বাহ করে। ব্যয় সংকোচন নীতি গ্রহণ করে ঝুঁকিও নেন না তারা। গত ২০১২-১৩ অর্থবছর পর্যন্ত প্রতিষ্ঠানটি সরকারকে লভ্যাংশ দিয়েছে ১ কোটি ৮৪ লাখ টাকা এবং রাজস্ব দিয়েছে ৯ কোটি ৮৭ লাখ টাকা। তাছাড়া নতুন শ্রমবাজার সৃষ্টি করতে বেশ জটিলতা এবং দীর্ঘসূত্রতা রয়েছে। বোয়েসেল নিজেরা ত্বরিত কোন সিদ্ধান্তই নিতে পারে না। এজন্য প্রথমে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়কে অবহিত করতে হয়। পরে বিভিন্ন প্রক্রিয়া অবলম্বন করে উল্লেখিত বিষয়ে সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। যা দীর্ঘসূত্রতা সৃষ্টি করে। অনেক সময় নিয়োগকর্তা জরুরি ভিত্তিতে কর্মী চাইলেও এই দীর্ঘসূত্রতার জন্য নিয়োগকর্তা বিকল্প পথ খোঁজেন। তাছাড়া এ উদ্দেশ্যে কোন বাজেট বরাদ্দ নেই। ফলে বাড়তি কর্যক্রমও নেই। অহেতুক জবাবদিহি এড়িয়ে চলতে এ পন্থায় অবলম্বন করেন সংশ্লিষ্টরা। এদিক বিবেচনায় দুই পারস্পরিক সাংঘার্ষিক নীতিতে চলছে প্রতিষ্ঠানটি। একদিকে বলছে সেবাদানকারী অন্যদিকে বলা হচ্ছে অন্যান্য বেসরকারি রিক্রুটিং এজেন্সির মতোই একটি ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান। পদাধিকার বলে বোয়েসেলের পরিচালনা বোর্ডে রয়েছেন সরকারের বিভিন্ন দপ্তরের ৭ কর্মকর্তা। ৫১ লাখ টাকা নিয়ে শুরু হওয়া এই এজেন্সি ৫১ শতাংশ মালিকানা সরকারের। তবে অজ্ঞাত কারণে এখনও বেসরকারি পর্যায়ের বাকি শেয়ার বিক্রি করা হয়নি। কর্মকর্তাদের মতে, বাকি শেয়ারগুলো বিক্রি করলে অর্থের যোগান যেমন হবে তেমনি ব্যক্তির পক্ষ থেকেও লভ্যাংশ বাড়ানোর তাগিদ থাকবে। এ ব্যাপারে বোয়েসেলের জিএম ও যুগ্ম সচিব মোহাম্মদ জহিরুল ইসলাম বলেন, একটি কোম্পানিকে শেয়ারে যেতে হলে বেশ কিছু নিয়ম-কানুন মেনে শেয়ার মার্কেটে ঢুকতে হয়। এতোদিন বিভিন্ন কারণে সেটা হয়ে ওঠেনি। এখন এ ব্যাপারে উদ্যোগ নেয়া হবে বলেও তিনি জানান। তিনি আরও বলেন, শেয়ার মার্কেটে গেলে প্রতিষ্ঠানটি গতিশীলতা পাবে এবং সেবার মান ও পরিধি দুটোই বাড়বে। বাজার বিস্তৃত না হওয়ার কারণ হিসেবে আমলাতান্ত্রিক জটিলতা এবং অর্থনৈতিক সুযোগ-সুবিধার স্বল্পতাকে দায়ী করেন তিনি। বলেন, এ প্রতিষ্ঠানের জন্য কোন বাজেট বরাদ্দ নেই এবং যে সার্ভিস চার্জ নেয়া হয় সেটাও সরকার নির্ধারিত। বিএমইটি’র কর্মী পাঠানোর প্রসঙ্গে তিনি বলেন, বিএমইটি’র কাজ রেগুলেটরি করা, কর্মী পাঠানোর কাজ তাদের না।
তাছাড়া বিএমইটি’র জন্য বাজেট বরাদ্দ রয়েছে, তারা সার্ভিস চার্জ না নিয়েও কর্মী পাঠাতে পারে। তিনি বলেন, বিএমইটি’র তৈরি ডাটাবেজের মধ্যে থেকে তারা যে তালিকা দেয় তার মধ্য থেকে কাঙ্ক্ষিত কর্মী খুব কমই পাওয়া যায়। কর্মকর্তারা রুটিন মাফিক কাজ করেন এমন অভিযোগ অস্বীকার করে তিনি বলেন, বিগত ৪ বছরের বোয়েসেলের মাধ্যমে বিদেশ গমনের হার বেড়েছে। কর্মী প্রেরণ এবং সেবার মান বৃদ্ধি করতে বিভাগীয় পর্যায়ে বোয়েসেলের শাখা খোলার পরিকল্পনার কথা বলেন তিনি। এছাড়া নিজেস্ব ট্রেনিং সেন্টার, মেডিকেল সেন্টার এবং ল্যাংগুয়েজ ক্লাব চালু করার পরিকল্পনা রয়েছে বলে জানান। এ ব্যাপারে প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রী ইঞ্জিনিয়ার খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেন, ওদের চাহিদা আনার ক্ষমতা নেই। ফান্ডের ব্যাপারে তিনি বলেন, ওদের কোটি কোটি টাকার ফান্ড আছে। সেখান থেকেই ব্যয় করতে পারে। উল্লেখ্য, বোয়েসেল’র উদ্যোগে ওমান ও মালদ্বীপে পেশাদার (ডাক্তার ও নার্স) কর্মী নিয়োগ কার্যক্রম শুরু হয়েছে।
বোয়েসেলের মাধ্যমে গত বছরের জুন থেকে এ বছর অক্টোবর পর্যন্ত ১০ হাজার ১৭ জন কর্মী গেছে। বর্তমান সরকার নির্ধারিত দু’টি দেশে কর্মী পাঠানো অব্যাহত রেখেছে। এর মধ্যে জর্ডানে গার্মেন্টস কর্মী হিসেবে যাচ্ছে নারীরা। দক্ষিণ কোরিয়ায় এমপ্লয়মেন্ট পারমিট সিস্টেমের মাধ্যমে যাচ্ছে পুরুষ কর্মীরা। সূত্র জানিয়েছে, বোয়েসেল কেবলমাত্র কোন নিয়োগকর্তা চাহিদা পাঠালেই কর্মী পাঠানোর ব্যবস্থা করে থাকে। ব্যাপক ভিত্তিক বিভিন্ন দেশে নতুন শ্রমবাজার তৈরি করার কোন উদ্যোগই নেই তাদের। বোয়েসেল রাষ্ট্রায়ত্ত প্রতিষ্ঠান হলেও এর যাবতীয় ব্যয় নির্বাহ করতে হয় নিজস্ব আয় থেকে। বিদেশ গমনকারী কর্মীর কাছ থেকে নেয়া সার্ভিস চার্জই তাদের আয়ের উৎস। এই চার্জ থেকেই সব অফিস ভাড়া, কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বেতনসহ অন্যান্য সব ব্যয় নির্বাহ করতে হয়। এছাড়া প্রতিবছরই সরকারকে লভ্যাংশ এবং অর্জিত আয়ের রাজস্ব আদায় করতে হয়। ফলে দেনদরবার করে বিদেশ থেকে কর্মী নিয়োগের চাহিদা আনার মানসিকতাও থাকে না। সেবাদানকারী প্রতিষ্ঠান বলা হলেও আর্থিক অনুদান পায় না প্রতিষ্ঠানটি। উপরন্তু নিজস্ব আয় থেকেই তারা ব্যয় নির্বাহ করে। ব্যয় সংকোচন নীতি গ্রহণ করে ঝুঁকিও নেন না তারা। গত ২০১২-১৩ অর্থবছর পর্যন্ত প্রতিষ্ঠানটি সরকারকে লভ্যাংশ দিয়েছে ১ কোটি ৮৪ লাখ টাকা এবং রাজস্ব দিয়েছে ৯ কোটি ৮৭ লাখ টাকা। তাছাড়া নতুন শ্রমবাজার সৃষ্টি করতে বেশ জটিলতা এবং দীর্ঘসূত্রতা রয়েছে। বোয়েসেল নিজেরা ত্বরিত কোন সিদ্ধান্তই নিতে পারে না। এজন্য প্রথমে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়কে অবহিত করতে হয়। পরে বিভিন্ন প্রক্রিয়া অবলম্বন করে উল্লেখিত বিষয়ে সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। যা দীর্ঘসূত্রতা সৃষ্টি করে। অনেক সময় নিয়োগকর্তা জরুরি ভিত্তিতে কর্মী চাইলেও এই দীর্ঘসূত্রতার জন্য নিয়োগকর্তা বিকল্প পথ খোঁজেন। তাছাড়া এ উদ্দেশ্যে কোন বাজেট বরাদ্দ নেই। ফলে বাড়তি কর্যক্রমও নেই। অহেতুক জবাবদিহি এড়িয়ে চলতে এ পন্থায় অবলম্বন করেন সংশ্লিষ্টরা। এদিক বিবেচনায় দুই পারস্পরিক সাংঘার্ষিক নীতিতে চলছে প্রতিষ্ঠানটি। একদিকে বলছে সেবাদানকারী অন্যদিকে বলা হচ্ছে অন্যান্য বেসরকারি রিক্রুটিং এজেন্সির মতোই একটি ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান। পদাধিকার বলে বোয়েসেলের পরিচালনা বোর্ডে রয়েছেন সরকারের বিভিন্ন দপ্তরের ৭ কর্মকর্তা। ৫১ লাখ টাকা নিয়ে শুরু হওয়া এই এজেন্সি ৫১ শতাংশ মালিকানা সরকারের। তবে অজ্ঞাত কারণে এখনও বেসরকারি পর্যায়ের বাকি শেয়ার বিক্রি করা হয়নি। কর্মকর্তাদের মতে, বাকি শেয়ারগুলো বিক্রি করলে অর্থের যোগান যেমন হবে তেমনি ব্যক্তির পক্ষ থেকেও লভ্যাংশ বাড়ানোর তাগিদ থাকবে। এ ব্যাপারে বোয়েসেলের জিএম ও যুগ্ম সচিব মোহাম্মদ জহিরুল ইসলাম বলেন, একটি কোম্পানিকে শেয়ারে যেতে হলে বেশ কিছু নিয়ম-কানুন মেনে শেয়ার মার্কেটে ঢুকতে হয়। এতোদিন বিভিন্ন কারণে সেটা হয়ে ওঠেনি। এখন এ ব্যাপারে উদ্যোগ নেয়া হবে বলেও তিনি জানান। তিনি আরও বলেন, শেয়ার মার্কেটে গেলে প্রতিষ্ঠানটি গতিশীলতা পাবে এবং সেবার মান ও পরিধি দুটোই বাড়বে। বাজার বিস্তৃত না হওয়ার কারণ হিসেবে আমলাতান্ত্রিক জটিলতা এবং অর্থনৈতিক সুযোগ-সুবিধার স্বল্পতাকে দায়ী করেন তিনি। বলেন, এ প্রতিষ্ঠানের জন্য কোন বাজেট বরাদ্দ নেই এবং যে সার্ভিস চার্জ নেয়া হয় সেটাও সরকার নির্ধারিত। বিএমইটি’র কর্মী পাঠানোর প্রসঙ্গে তিনি বলেন, বিএমইটি’র কাজ রেগুলেটরি করা, কর্মী পাঠানোর কাজ তাদের না।
তাছাড়া বিএমইটি’র জন্য বাজেট বরাদ্দ রয়েছে, তারা সার্ভিস চার্জ না নিয়েও কর্মী পাঠাতে পারে। তিনি বলেন, বিএমইটি’র তৈরি ডাটাবেজের মধ্যে থেকে তারা যে তালিকা দেয় তার মধ্য থেকে কাঙ্ক্ষিত কর্মী খুব কমই পাওয়া যায়। কর্মকর্তারা রুটিন মাফিক কাজ করেন এমন অভিযোগ অস্বীকার করে তিনি বলেন, বিগত ৪ বছরের বোয়েসেলের মাধ্যমে বিদেশ গমনের হার বেড়েছে। কর্মী প্রেরণ এবং সেবার মান বৃদ্ধি করতে বিভাগীয় পর্যায়ে বোয়েসেলের শাখা খোলার পরিকল্পনার কথা বলেন তিনি। এছাড়া নিজেস্ব ট্রেনিং সেন্টার, মেডিকেল সেন্টার এবং ল্যাংগুয়েজ ক্লাব চালু করার পরিকল্পনা রয়েছে বলে জানান। এ ব্যাপারে প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রী ইঞ্জিনিয়ার খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেন, ওদের চাহিদা আনার ক্ষমতা নেই। ফান্ডের ব্যাপারে তিনি বলেন, ওদের কোটি কোটি টাকার ফান্ড আছে। সেখান থেকেই ব্যয় করতে পারে। উল্লেখ্য, বোয়েসেল’র উদ্যোগে ওমান ও মালদ্বীপে পেশাদার (ডাক্তার ও নার্স) কর্মী নিয়োগ কার্যক্রম শুরু হয়েছে।
No comments