আবদুল আলী খুনের ঘটনায় আওয়ামী লীগে বিভক্তি
সিলেটের কোম্পানীগঞ্জের যুবলীগ নেতা আবদুল আলী খুনের ঘটনায় আওয়ামীলীগেও দেখা দিয়েছে বিভক্তি। এ ঘটনায় নিহতের পরিবার শুধু কোম্পানীগঞ্জ আওয়ামী লীগ নয়, সিলেট আওয়ামী লীগের একাংশের নেতাদের দিকে আঙুল তুলেছে। এর সত্যতা মিলেছে খুনের ঘটনায় গ্রেপ্তার হওয়া তেলিখাল ইউনিয়নের চেয়ারম্যানের আলফু মিয়ার বক্তব্যেও। এ অবস্থায় আলোচিত এ হত্যাকাণ্ড নিয়ে প্রশাসনও পড়েছে দোটানায়। প্রশাসন বলছে, খুনের ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের গ্রেপ্তারে কোন ছাড় দেয়া হবে না। ‘সরকার যার, ভোলাগঞ্জ পাথর কোয়ারি তার’- এই নীতিতে বিগত দেড় যুগ ধরে চলছে দেশের বৃহত্তম ভোলাগঞ্জ পাথর কোয়ারির শাসন। বিগত চারদলীয় জোট সরকারের সময় বিএনপির নেতাকর্মীরা লুটেপুটে খেয়েছে ভোলাগঞ্জ পাথর কোয়ারি। আর বর্তমান সরকার ক্ষমতায় আসার পরপরই ভোলাগঞ্জ কোয়ারি দখলে গেছে আওয়ামী লীগের। এ কারণে ভোলাগঞ্জ পাথর কোয়ারি কেন্দ্রিক হয়ে গেছে কোম্পানীগঞ্জ আওয়ামী লীগের রাজনীতি। এই রাজনীতির সুতোর নাটাই সিলেটের নেতাদের কাছে। স্থানীয়রা জানিয়েছেন, ভোলাগঞ্জ কোয়ারির একাংশের নিয়ন্ত্রক আবদুল আলী যুবলীগের নেতা ছিলেন। আর অপর অংশের শাসক শামীমও যুবলীগের নেতা। আবদুল আলী খুনের ঘটনার পর তাকে দলীয় কর্মী হিসেবে মেনে নিতে পারেনি অনেকেই। এ অবস্থায় আবদুল আলীর পরিবারকে সান্ত্বনা জানাতে সোমবার তার বাড়ি সিলেটের কোম্পানীগঞ্জে ছুটে গেছেন আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক এডভোকেট মিসবাহ উদ্দিন সিরাজ সহ জেলার নেতারা। এ সময় মিসবাহ সিরাজ জানিয়েছেন, আবদুল আলীর খুনিদের কোনভাবেই ছাড় দেয়া হবে না। এদিকে, আদালতে দেওয়া জবানবন্দিতেও গ্রেপ্তার হওয়া চেয়ারম্যান আলফু মিয়া জানিয়েছিলেন, ব্যবসায়িক দ্বন্দ্ব ও ভোলাগঞ্জ পাথর কোয়ারিতে আধিপত্য বিস্তার নিয়ে গত ঈদের আগে আবদুল আলীকে খুন করার পরিকল্পনা করা হয়। এই পরিকল্পনায় কোম্পানীগঞ্জের অনেক প্রভাবশালীর মৌন সমর্থন ছিল। সুযোগ পেলেই যে কোন সময় আবদুল আলীকে দুনিয়া থেকে সরিয়ে দেয়ার পরিকল্পনা নিয়ে এগোচ্ছিলেন তারা। আলফু মিয়ার দেয়া বক্তব্যের সঙ্গে অনেকাংশে মিল রয়েছে আবদুল আলীর স্ত্রীর থানায় দাখিলকৃত এজাহারের। নিহত আবদুল আলীর স্ত্রী হালিমা বেগম গ্রেপ্তার হওয়া আলফু চেয়ারম্যান, কোম্পানীগঞ্জের আলোচিত যুবলীগ নেতা শামীম, জেলা আওয়ামী লীগের প্রচার সম্পাদক এডভোকেট মাহফুজুর রহমান, জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য এডভোকেট আজমলসহ আসামী হিসেবে কোম্পানীগঞ্জের ৩১ জনের নাম উল্লেখ করেছেন। এজাহারে উল্লেখ করা হয়, আবদুল আলী নিহত হওয়ার আগে প্রায়ই বলতেন, আলফু চেয়ারম্যান, যুবলীগ নেতা শামীম, আকদ্দছ আলী, আলী হোসেন, এডভোকেট ভুট্টো, এডভোকেট আজমল কোর্টে এডভোকেট মাহফুজুর রহমানের চেম্বারে বৈঠক করেছে। সেখানে আবদুল আলীকে হত্য্যা করার পরিকল্পনা করা হয় বলে আবদুল আলী জানতে পেরেছিলেন বলে তার স্ত্রী হালিমা বেগমকে বলেছেন। এছাড়া সিলেট নগরীর একটি হোটেলে বসে তাকে হত্যার পরিকল্পনা করা হয়েছে বলে জানতে পেরেছিলন এমন তথ্য স্ত্রী হালিমাকে বলতেন আবদুল আলী। এরপর থেকে আবদুল আলী ভয়ে থাকতেন বলে এজাহারে উল্লেখ করেন হালিমা বেগম। স্থানীয় সূত্র জানায়, ঘটনার দিন রাতেই সিলেটের তামাবিল এলাকা থেকে গ্রেপ্তার হন আলফু চেয়ারম্যান। যখন তাকে গ্রেপ্তার করা হয় তখন তিনি একা ছিলেন না। তার সঙ্গে যুবলীগ নেতা শামীম, এডভোকেট মাহফুজ, এডভোকেট আজমল ছিলেন। তবে পুলিশের পক্ষ থেকে সে ব্যাপারে কোন বক্তব্য দেয়া হয়নি। নিহত আবদুল আলীর পরিবারের সদস্যরা জানিয়েছেন, আবদুল আলী জেলা আওয়ামী লীগ নেতা এডভোকেট মাহফুজসহ ওই অংশের বিরোধী ছিলেন। এজন্য স্থানীয় রাজনীতিতে তাকে অনেক দুর্ভোগ পোহাতে হয়। এসব বিষয় কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগ নেতাদের জানিয়েছিলেন আবদুল আলীও। চেয়েছিলেন সহায়তা। কিন্তু প্রশাসনের পক্ষ থেকে কোন সহায়তা না পাওয়ায় শেষ পর্যন্ত জীবন দিতে হলো আবদুল আলীকে।
মিসবাহ সিরাজের হুশিয়ারি: আবদুল আলীর হত্যাকারীদের কোনভাবেই ছাড় দেয়া হবে না মর্মে হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেছেন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক এডভোকেট মিসবাহ উদ্দিন সিরাজ। আওয়ামীলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক এডভোকেট মিসবাহ উদ্দিন সিরাজ ও জেলা আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক এডভোকেট নিজাম উদ্দিনসহ জেলা নেতৃবৃন্দ আবদুল আলীর পরিবারকে সান্ত্বনা দিতে কোম্পানীগঞ্জে ছুটে যান। তারা আবদুল আলীর খুনিদের রাজনৈতিকভাবে কোন ছাড় দেয়া হবে না বলে ঘোষণা দিয়ে আসেন। মিসবাহ উদ্দিন সিরাজ পিপি হিসেবে আবদুল আলীর খুনের মামলার ব্যাপারে প্রয়োজনীয় আইনগত সহযোগিতা প্রদানের আশ্বাস দেন। এ সময় অন্যান্যের মধ্যে জেলা আওয়ামী লীগের শিল্প ও বাণিজ্য সম্পাদক এডভোকেট ইশতিয়াক আহমদ চৌধুরী, সাংগঠনিক সম্পাদক মোহাম্মদ আলী দুলাল, কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আলী আমজদ, ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক হুমায়ুন কবির মছব্বির, কোম্পানীগঞ্জ থানার ওসি দেলোয়ার হোসেন, পশ্চিম ইসলামপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মো. আবদুল আলী, যুবলীগের আহবায়ক ইকবাল হোসেন, যুগ্ম আহবায়ক শাহ আলম, মরহুম আবদুল আলীর ভাই যুবলীগ নেতা আবদুল হক ও উপজেলা আইন শৃঙ্খলার বাহিনীর ঊধ্বর্তন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। এদিকে আবদুল আলী খুনের ঘটনায় গতকাল বিকেলে কোম্পানীগঞ্জ পুলিশ অভিযান চালিয়ে দুইজনকে গ্রেপ্তার করেছে। তাদেরকে আজ আদালতে হাজির করা হবে জানিয়েছে পুলিশ। যুবলীগ নেতা আবদুল আলী হত্যাকাণ্ডের পর পুলিশ আতঙ্কে কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার গৌখালেরপাড় গ্রাম পুরুষশূন্য হয়ে পড়েছে।
মিসবাহ সিরাজের হুশিয়ারি: আবদুল আলীর হত্যাকারীদের কোনভাবেই ছাড় দেয়া হবে না মর্মে হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেছেন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক এডভোকেট মিসবাহ উদ্দিন সিরাজ। আওয়ামীলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক এডভোকেট মিসবাহ উদ্দিন সিরাজ ও জেলা আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক এডভোকেট নিজাম উদ্দিনসহ জেলা নেতৃবৃন্দ আবদুল আলীর পরিবারকে সান্ত্বনা দিতে কোম্পানীগঞ্জে ছুটে যান। তারা আবদুল আলীর খুনিদের রাজনৈতিকভাবে কোন ছাড় দেয়া হবে না বলে ঘোষণা দিয়ে আসেন। মিসবাহ উদ্দিন সিরাজ পিপি হিসেবে আবদুল আলীর খুনের মামলার ব্যাপারে প্রয়োজনীয় আইনগত সহযোগিতা প্রদানের আশ্বাস দেন। এ সময় অন্যান্যের মধ্যে জেলা আওয়ামী লীগের শিল্প ও বাণিজ্য সম্পাদক এডভোকেট ইশতিয়াক আহমদ চৌধুরী, সাংগঠনিক সম্পাদক মোহাম্মদ আলী দুলাল, কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আলী আমজদ, ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক হুমায়ুন কবির মছব্বির, কোম্পানীগঞ্জ থানার ওসি দেলোয়ার হোসেন, পশ্চিম ইসলামপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মো. আবদুল আলী, যুবলীগের আহবায়ক ইকবাল হোসেন, যুগ্ম আহবায়ক শাহ আলম, মরহুম আবদুল আলীর ভাই যুবলীগ নেতা আবদুল হক ও উপজেলা আইন শৃঙ্খলার বাহিনীর ঊধ্বর্তন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। এদিকে আবদুল আলী খুনের ঘটনায় গতকাল বিকেলে কোম্পানীগঞ্জ পুলিশ অভিযান চালিয়ে দুইজনকে গ্রেপ্তার করেছে। তাদেরকে আজ আদালতে হাজির করা হবে জানিয়েছে পুলিশ। যুবলীগ নেতা আবদুল আলী হত্যাকাণ্ডের পর পুলিশ আতঙ্কে কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার গৌখালেরপাড় গ্রাম পুরুষশূন্য হয়ে পড়েছে।
No comments