স্মরণ- বীরশ্রেষ্ঠ মোহাম্মদ হামিদুর রহমান
বীরশ্রেষ্ঠ সিপাহি মোহাম্মদ হামিদুর রহমানের জন্ম ১৯৪৫ সালে ডুমুরিয়া গ্রাম, চাপড়া, চব্বিশ পরগনা, পশ্চিমবঙ্গে। স্থায়ী নিবাস গ্রাম খোর্দ্দ খালিশপুর, উপজেলা মহেশপুর, জেলা ঝিনাইদহ। স্থানীয় প্রাথমিক বিদ্যালয় এবং পরে নাইট স্কুলে সামান্য লেখাপড়া করেছিলেন। ১৯৭১ সালের ২ ফেব্রুয়ারি ইস্টবেঙ্গল রেজিমেন্টে যোগ দেয়ার পরই চট্টগ্রাম সেনানিবাসে ইস্টবেঙ্গল রেজিমেন্টাল সেন্টারে যান। ২৫ মার্চ পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর আক্রমণের মুখে চাকরিস্থল থেকে নিজ গ্রামে ফিরে বাড়িতে থাকেন মাত্র এক দিন। পরদিনই মুক্তিযুদ্ধে যোগ দিতে চলে যান সুদূর সিলেট জেলার ধলই চা বাগানের পূর্ব প্রান্তে অবস্থিত বর্ডার আউট-পোস্টে। সামরিক দিক থেকে এই ফাঁড়িটি দখল করা ছিল মুক্তিবাহিনীর জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এই ঘাঁটি দখলের দায়িত্ব দেয়া হয় প্রথম ইস্টবেঙ্গল রেজিমেন্টের সি কোম্পানিকে। এই দলে ছিলেন হামিদুর রহমান। এ জন্য ২৮ অক্টোবর ভোরে আক্রমণের দিন ঠিক করা হয়। আগের রাত ১০টায় যাত্রা শুরু মুক্তিযোদ্ধাদের। ভোর ৪টায় লক্ষ্যস্থলের কাছে পৌঁছে তারা চূড়ান্ত আক্রমণের প্রস্তুতি নেন। সামনে দুই প্লাটুন ও তার পেছনে আর এক প্লাটুন মুক্তিযোদ্ধা। শেষের প্লাটুনটি প্রথম দুই প্লাটুনের অনুসরণকারী হিসেবে অগ্রসর হতে থাকে। টার্গেট ঘাঁটির কাছাকাছি এলে একটি মাইন বিস্ফোরিত হয়। বিস্ফোরণের সাথে সাথে শুরু হয় শত্রুর অবিরাম গোলাবর্ষণ। বাধ্য হয়ে মুক্তিযোদ্ধারা মাটিতে শুয়ে পড়েন। আর এগোনো তাদের পক্ষে সম্ভব হচ্ছিল না। দক্ষিণ-পশ্চিম কোনায় শত্রুর এলএমজি অবস্থানের ফলে আর গাছপালার জন্য মেশিনগান দিয়ে গুলি করেও কোনো ফল হচ্ছিল না। অথচ শত্রুর এলএমজি স্তব্ধ করতে না পারলে ধলই ঘাঁটি দখল অসম্ভব। এই অসম্ভবকে সম্ভব করতে এগিয়ে এলেন দুঃসাহসী সিপাহি হামিদুর রহমান। সঙ্গোপনে হামাগুড়ি দিয়ে শত্রুর অগোচরে এগিয়ে গেলেন এলএমজি পোস্টের দিকে। ঝাঁপিয়ে পড়লেন শত্রুপক্ষের ওপর। নিহত হলো এলএমজি চালকদ্বয়।
সাথে সাথে স্তব্ধ হলো এই মারণাস্ত্র এবং গুলির আঘাতে নিস্তব্ধ হয়ে গেলেন হামিদুর রহমান নিজেও। কিন্তু তার প্রাণের বিনিময়ে স্পন্দন জাগল সি কোম্পানির সৈনিকদের মধ্যে। ফলে দুর্বার গতিতে তারা দখল করে নিতে সক্ষম হলেন সেই দুর্ভেদ্য ঘাঁটি। সাথে সাথে যুদ্ধের গতি পরিবর্তিত হয়ে গেল। নিজের জীবন উৎসর্গ করে হামিদুর রহমান বাংলাদেশের স্বাধীনতাকে আরো নিশ্চিত করে দিলেন। দেশ তাকে বীরশ্রেষ্ঠের সম্মানে ভূষিত করেছে। জাতি তার সর্বোচ্চ ত্যাগ ও অতুলনীয় অবদানকে শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করছে।
সাথে সাথে স্তব্ধ হলো এই মারণাস্ত্র এবং গুলির আঘাতে নিস্তব্ধ হয়ে গেলেন হামিদুর রহমান নিজেও। কিন্তু তার প্রাণের বিনিময়ে স্পন্দন জাগল সি কোম্পানির সৈনিকদের মধ্যে। ফলে দুর্বার গতিতে তারা দখল করে নিতে সক্ষম হলেন সেই দুর্ভেদ্য ঘাঁটি। সাথে সাথে যুদ্ধের গতি পরিবর্তিত হয়ে গেল। নিজের জীবন উৎসর্গ করে হামিদুর রহমান বাংলাদেশের স্বাধীনতাকে আরো নিশ্চিত করে দিলেন। দেশ তাকে বীরশ্রেষ্ঠের সম্মানে ভূষিত করেছে। জাতি তার সর্বোচ্চ ত্যাগ ও অতুলনীয় অবদানকে শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করছে।
No comments