বাংলা ছবির শীর্ষ চরিত্রে হিজড়া
প্রথমবারের মতো কোন বাংলা ছবির দুই বাংলার
নারী-পুরুষ সমকামী, হিজড়া (এলজিবিটি) সম্প্রদায়ের সদস্যদের শীর্ষ ভূমিকায়
উপস্থাপন করা হয়েছে। ‘অচেনা বন্ধুত্ব’ নামক ডকুু-ফিচার এ ছবির পরিচালনায়
রয়েছেন সাংবাদিক থেকে পরিচালক হওয়া হৃষীকেশ মণ্ডল। সম্প্রতি ছবিটির আউটডোর
শুটিং সমাপ্ত হয়েছে। উঠতি বয়সী এ পরিচালক বলেন, আউটডোরে নির্দিষ্ট একটি
দৃশ্যে সমকামী সম্প্রদায়ের ১০০ সদস্য অংশগ্রহণ করেন। ছবির মূল চরিত্র
তিস্তা একজন হিজড়া। তিনি বলেন, অচেনা বন্ধুত্বে আমার ভূমিকাটি হলো সমাজে
গ্রহণযোগ্যতা অর্জনের লড়াই। আর মানুষকে এটা বোঝানোর চেষ্টা করা যে, হিজড়া
সম্প্রদায়ের হাততালি দেয়া ছাড়াও অনেক কিছু করার আছে। কয়েক বছর আগে নারী
হওয়ার জন্য লিঙ্গ পরিবর্তন অপারেশন করান তিস্তা। তিনি আরও বলেন, লিঙ্গ
ভেদাভেদ না করে কিভাবে সবাইকে মানুষ হিসেবে দেখা যায়- ছবিটি তা নিয়ে কথা
বলেছে। একটা সময় ছিল যখন রাস্তাঘাটে আমাদের নিরাপদ বিবেচনা করা হতো না।
গ্রহণযোগ্যতার জন্য আমাদের লড়াইকে তখন তাচ্ছিল্য করা হতো। আমাদের
সাইকোলজিক্যাল কাউন্সেলিং নিতে হতো। এ ধরনের ছবিতে এক সময় কলঙ্কের তকমা
ছিল। কিন্তু এখন আর ঠিক আগের মতো নেই। তিস্তা আরও জানান, তিনি ঋতুপর্ণ ঘোষ ও
তার চলচ্চিত্র ‘চিত্রাঙ্গদা’ থেকে অনুপ্রেরণা নিয়েছেন। ‘আরেকটি প্রেমের
গল্প’ নামের সমকামী বিষয়ক একটি চলচ্চিত্রে অংশও নিয়েছিলেন খ্যাতিমান ওই
পরিচালক। টিভি মিডিয়ার সাবেক অনুসন্ধানী সাংবাদিক হৃষীকেশ জানালেন,
সাংবাদিকতার দায়িত্ব পালনকালে এ সব সম্প্রদায়ের মানুষের সঙ্গে বিভিন্ন সময়
দেখা-সাক্ষাৎ হয়। তাদের সঙ্গে পরিচয়ের পর এ সম্প্রদায়ের ওপর মনোযোগ দেয়া ও
ছবির চরিত্রে তাদের উপস্থাপন করার স্পৃহা গড়ে ওঠে। হৃষীকেশ ছবির ‘অচেনা
বন্ধুত্ব’কে ডকুমেন্টারি বলতে রাজি নন। তার দৃষ্টিতে এটা একটি ফিচারধর্মী
চলচ্চিত্র বা খুব জোর বলা যেতে পারে ডকু ফিচার। ছবিটির থিম সং গেয়েছেন
কলকাতার শীর্ষস্থানীয় বাংলা রক গায়ক ফসিলসের রূপম ইসলাম, ক্যাকটাসের সিধু
এবং ভূমি ব্যান্ডের সুরজিত চ্যাটার্জি।
No comments