চাল রপ্তানি-আমদানির খেলা, দামে উত্তাপ by হামিদ বিশ্বাস
আশ্চর্যজনক হলেও ঘটনা সত্য- বাংলাদেশ যখন শ্রীলঙ্কায় চাল রপ্তানি করতে চলেছে, তখন চালের আমদানিও বেড়েছে। সোমবার খাদ্যমন্ত্রী কামরুল ইসলাম টনপ্রতি ৪৫০ ডলার দামে শ্রীলঙ্কায় ৫০ হাজার টন চাল রপ্তানির কথা জানান। অথচ বাংলাদেশ ব্যাংকের আমদানি বিষয়ক সর্বশেষ প্রতিবেদন সাক্ষ্য দিচ্ছে, চালের আমদানি বেড়েছে। চালের পাশাপাশি চলতি বছর ভোগ্যপণ্য সামগ্রীর আমদানিও বেড়েছে। ওদিকে, শ্রীলঙ্কায় চাল রপ্তানির আলোচনার মধ্যেই বাংলাদেশের খুচরা বাজারে চালের দাম বেড়েছে। গত এক সপ্তাহে খুচরা বাজারে প্রতি কেজি চালের দাম বেড়েছে ৩ থেকে ৫ টাকা। ২০১৪-১৫ অর্থবছরের জুলাই-সেপ্টেম্বরে গত অর্থবছরের একই সময়ের চেয়ে চালের আমদানি বেড়েছে। এই সময়ে চাল আমদানির জন্য ব্যাংকগুলোতে ১০ কোটি ৩৬ লাখ ৩০ হাজার ডলারের ঋণপত্র (এলসি) খোলা হয়েছে। এর মধ্যে নিষ্পত্তি হয়েছে ৯ কোটি ৭ হাজার ডলারের এলসি। গত অর্থবছরের তুলানায় ৫৬ শতাংশ বেশি এলসি খোলা হয়েছে এই বছরে। ২০১৩-১৪ অর্থবছরের জুলাই-সেপ্টেম্বরে চাল আমদানির জন্য ৬ কোটি ৬৪ লাখ ৩০ হাজার ডলারের এলসি খোলা হয়েছিল। ওই সময়ে এলসি নিষ্পত্তি হয়েছিল ৫ কোটি ৯ লাখ ২০ হাজার ডলারের। বাংলাদেশ এবারই প্রথম বড় পরিসরে চাল রপ্তানি করছে। গবেষকদের অনেকেই মনে করেন, বাংলাদেশকে খাদ্য স্বয়ং সম্পূর্ণ দেশ হিসেবে পরিচিত করার জন্যই সরকার চাল রপ্তানি করছে। বিশ্বের প্রধান চাল রপ্তানিকারক দেশ হচ্ছে থাইল্যান্ড ও ভিয়েতনাম। ওই দু’টি দেশেই চালের উৎপাদন খরচ বাংলাদেশের তুলনায় অনেক কম। শ্রীলঙ্কায় বাংলাদেশ যে দামে চাল রপ্তানি করছে তাতে প্রতি কেজি চালের দাম পড়বে প্রায় ৩৩ টাকা। অথচ বাংলাদেশের স্থানীয় বাজারেই প্রতি কেজি চালের দাম তার চেয়ে বেশি। মন্ত্রিসভা কমিটির অনুমোদনের এক মাসের মধ্যে সোমবার শ্রীলঙ্কায় ৫০ হাজার টন চাল রপ্তানির সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত অনুমোদন দেয় সরকার। সচিবালয়ে খাদ্য পরিকল্পনা ও পরিধারণ কমিটির সভায় এ অনুমোদন দেয়া হয়। অর্থনৈতিক বিষয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটি গত ১৮ই সেপ্টেম্বর শ্রীলঙ্কায় চাল রপ্তানির এ প্রস্তাবে সায় দেয়। খাদ্যমন্ত্রী কামরুল ইসলাম সোমবার জানিয়েছিলেন, শ্রীলঙ্কা থেকে একটি প্রতিনিধিদল আসার পর আগামী ১০ থেকে ১৫ দিনের মধ্যে চাল রপ্তানির প্রক্রিয়া শুরু হবে। খাদ্যমন্ত্রীর দাবি যে চাল ?রপ্তানি করা হবে তার উৎপাদন খরচ ৪৩৬ ডলার, এ হিসাবে ১৪ ডলার লাভ থাকবে। কমিটির সভায় অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত, বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদসহ বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
বেড়েছে চালের দাম: রাজধানীর খুচরা বাজারে সব ধরনের চালের দাম বেড়েছে। ঈদের পর থেকে বাড়া শুরু হলেও গত সপ্তাহ থেকে চোখে পড়ার মতো। এ সময় খুচরা পর্যায়ে হঠাৎ করে সব ধরনের চালের দাম বাড়ে। নাহিদের হরিণ মার্কা নাজিরশাইল চাল খুচরা পর্যায়ে বিক্রি হচ্ছে ৬৫ টাকা দরে। যা গত সপ্তাহে ছিল ৬০ টাকা। এছাড়া অন্যান্য নাজিরশাইল চালের দাম মানভেদে প্রতি কেজি ৪৪ থেকে ৪৬ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। কেজিতে দাম বেড়েছে ৪ টাকা পর্যন্ত। মিনিকেটের দামও বেড়েছে একই হারে। মানভেদে প্রতি কেজি বিক্রি হচ্ছে ৫২ থেকে ৫৪ টাকায়। কেজিতে ৪ টাকা বেড়ে পারিজা চালের দাম মানভেদে ৩৯ থেকে ৪২ টাকা। ব্রি-২৮ বা মোটা চালের দামও কেজিতে বেড়েছে ৩-৪ টাকা। চালটি ৩২ টাকায় বিক্রি হলেও এখন বিক্রি হচ্ছে ৩৬ টাকায়। কাওরান বাজারের পাইকারি ব্যবসায়ী জালাল আহমেদ মানবজমিনকে জানান, প্রতি বস্তায় বেড়েছে ২০০ টাকা। আর খুচরা পর্যায়ে বাড়ে ৩ থেকে ৫ টাকা পর্যন্ত। তবে ঠিক কি কারণে চালের বাজার ঊর্ধ্বগতি তা তিনি বলতে পারেননি। অপর এক খুচরা ব্যবসায়ী জানান, সামনে আমনের মওসুম তাই এখন বিক্রি কম। এছাড়া ঈদের সময় থেকে পরিবহন সমস্যাসহ বিভিন্ন কারণে চালের দাম কিছুটা বেড়েছে। কোন সিন্ডিকেট হচ্ছে কিনা এমন প্রশ্নে তিনি হেসে উঠে বলেন, তা তো কিছু আছে। তবে সেটা এখানে নয়, মূল মোকামে; যেখানে চাল উৎপাদন হয়। সব মিলিয়ে নতুন চাল বাজারে আসলে এ দাম কমতে শুরু করবে বলে জানান তিনি।
ভোগ্যপণ্যের রপ্তানিও বেড়েছে: শুধু চালই নয়, অর্থবছরের জুলাই-সেপ্টেম্বরে সব ধরনের ভোগ্যপণ্য আমদানিই বেড়েছে। এই সময়ে আমদানির জন্য সর্বমোট ১ হাজার ৮৩ কোটি ৫০ লাখ ডলারের এলসি খোলা হয়েছে, যা আগের অর্থবছরের একই সময়ের তুলনায় ১২ দশমিক ৮১ শতাংশ বেশি। এই সময়ে চিনি আমদানিতে ৪৬ শতাংশ, ডাল আমদানিতে ৮৯ দশমিক ১০ শতাংশ, দুগ্ধজাত খাবার আমদানিতে ৪৩ দশমিক ৭৪ শতাংশ, পরিশোধিত ভোজ্যতেল আমদানিতে ৩০ দশমিক ২০ শতাংশ এলসি খোলার হার বেড়েছে। এই সময়ে মূলধনী যন্ত্রপাতির জন্য খোলা আমদানির এলসিও গত বছরের একই সময়ের চেয়ে ৯ দশমিক ৮২ শতাংশ বেড়েছে।
বেড়েছে চালের দাম: রাজধানীর খুচরা বাজারে সব ধরনের চালের দাম বেড়েছে। ঈদের পর থেকে বাড়া শুরু হলেও গত সপ্তাহ থেকে চোখে পড়ার মতো। এ সময় খুচরা পর্যায়ে হঠাৎ করে সব ধরনের চালের দাম বাড়ে। নাহিদের হরিণ মার্কা নাজিরশাইল চাল খুচরা পর্যায়ে বিক্রি হচ্ছে ৬৫ টাকা দরে। যা গত সপ্তাহে ছিল ৬০ টাকা। এছাড়া অন্যান্য নাজিরশাইল চালের দাম মানভেদে প্রতি কেজি ৪৪ থেকে ৪৬ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। কেজিতে দাম বেড়েছে ৪ টাকা পর্যন্ত। মিনিকেটের দামও বেড়েছে একই হারে। মানভেদে প্রতি কেজি বিক্রি হচ্ছে ৫২ থেকে ৫৪ টাকায়। কেজিতে ৪ টাকা বেড়ে পারিজা চালের দাম মানভেদে ৩৯ থেকে ৪২ টাকা। ব্রি-২৮ বা মোটা চালের দামও কেজিতে বেড়েছে ৩-৪ টাকা। চালটি ৩২ টাকায় বিক্রি হলেও এখন বিক্রি হচ্ছে ৩৬ টাকায়। কাওরান বাজারের পাইকারি ব্যবসায়ী জালাল আহমেদ মানবজমিনকে জানান, প্রতি বস্তায় বেড়েছে ২০০ টাকা। আর খুচরা পর্যায়ে বাড়ে ৩ থেকে ৫ টাকা পর্যন্ত। তবে ঠিক কি কারণে চালের বাজার ঊর্ধ্বগতি তা তিনি বলতে পারেননি। অপর এক খুচরা ব্যবসায়ী জানান, সামনে আমনের মওসুম তাই এখন বিক্রি কম। এছাড়া ঈদের সময় থেকে পরিবহন সমস্যাসহ বিভিন্ন কারণে চালের দাম কিছুটা বেড়েছে। কোন সিন্ডিকেট হচ্ছে কিনা এমন প্রশ্নে তিনি হেসে উঠে বলেন, তা তো কিছু আছে। তবে সেটা এখানে নয়, মূল মোকামে; যেখানে চাল উৎপাদন হয়। সব মিলিয়ে নতুন চাল বাজারে আসলে এ দাম কমতে শুরু করবে বলে জানান তিনি।
ভোগ্যপণ্যের রপ্তানিও বেড়েছে: শুধু চালই নয়, অর্থবছরের জুলাই-সেপ্টেম্বরে সব ধরনের ভোগ্যপণ্য আমদানিই বেড়েছে। এই সময়ে আমদানির জন্য সর্বমোট ১ হাজার ৮৩ কোটি ৫০ লাখ ডলারের এলসি খোলা হয়েছে, যা আগের অর্থবছরের একই সময়ের তুলনায় ১২ দশমিক ৮১ শতাংশ বেশি। এই সময়ে চিনি আমদানিতে ৪৬ শতাংশ, ডাল আমদানিতে ৮৯ দশমিক ১০ শতাংশ, দুগ্ধজাত খাবার আমদানিতে ৪৩ দশমিক ৭৪ শতাংশ, পরিশোধিত ভোজ্যতেল আমদানিতে ৩০ দশমিক ২০ শতাংশ এলসি খোলার হার বেড়েছে। এই সময়ে মূলধনী যন্ত্রপাতির জন্য খোলা আমদানির এলসিও গত বছরের একই সময়ের চেয়ে ৯ দশমিক ৮২ শতাংশ বেড়েছে।
No comments