কূটনীতিতে ‘ধাক্কা’ খেল বিএনপি! by সেলিম জাহিদ
কমনওয়েলথ পার্লামেন্টারি অ্যাসোসিয়েশন (সিপিএ) ও ইন্টার পার্লামেন্টারি ইউনিয়নের (আইপিইউ) নির্বাচনে বর্তমান সরকারের দুজন প্রতিনিধির জয় এবং জাতিসংঘের মানবাধিকার কাউন্সিলে বাংলাদেশের সদস্যপদ পাওয়ার পর মানসিকভাবে বেশ চাপে এবং রাজনৈতিকভাবে অস্বস্তিতে পড়েছে বিএনপি। এ জয় কূটনৈতিক ক্ষেত্রে বিএনপির জন্য একটা ‘ধাক্কা’ বলেও মনে করা হচ্ছে। যদিও দলটির দায়িত্বশীল নেতারা প্রকাশ্যে ‘সরকারের এ বিজয়’কে আমলেই নিতে রাজি নন।
বিএনপির দায়িত্বশীল একাধিক সূত্র জানায়, ‘সরকারের এ বিজয়’ বিগত ৫ জানুয়ারির একতরফা সংসদ নির্বাচনের পর বর্তমান সরকার সম্পর্কে আন্তর্জাতিক মহলের এত দিনকার প্রদর্শিত মনোভাব পরিবর্তনের কোনো ইঙ্গিত কি না, সে দুর্ভাবনাও বিএনপিতে আছে।
৯ অক্টোবর সিপিএর চেয়ারপারসন নির্বাচিত হন জাতীয় সংসদের স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরী। ১৬ অক্টোবর আইপিইউর প্রেসিডেন্ট পদে নির্বাচিত হন সাংসদ সাবের হোসেন চৌধুরী। একই সঙ্গে জাতিসংঘের মানবাধিকার কাউন্সিলের সদস্যপদেও জয়ী হয়েছে বাংলাদেশ। তিনটি সংগঠনই গণতন্ত্র, সুশাসন ও মানবাধিকার নিয়ে কাজ করে। সর্বশেষ আবারও আন্তর্জাতিক টেলিযোগাযোগ ইউনিয়নের (আইটিইউ) কাউন্সিল সদস্য নির্বাচিত হয়েছে বাংলাদেশ।
বিএনপির দলীয় সূত্রগুলো জানায়, ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের ‘এই অর্জনের’ পর এখন পর্যন্ত এ বিষয়ে বিএনপির কোনো পর্যায়ে আলোচনা বা পর্যালোচনা হয়নি। তা না করেই এ বিষয়ে ২৪ অক্টোবর দলের ভাইস চেয়ারম্যান শমসের মবিন চৌধুরী সংবাদ সম্মেলন করে বলেছিলেন, এটা বিভিন্ন দেশের সাংসদদের ব্যক্তিগত মতামত, দেশগুলোর সরকারের মতামত নয়।
তবে দলটির আন্তর্জাতিক বিষয়াদি দেখেন—এমন তিন নেতার সঙ্গে কথা বলে দুই ধরনের মতামত ও মূল্যায়ন জানা গেছে। বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ওসমান ফারুক প্রথম আলোকে বলেন, ‘সিপিএ ও আইপিইউর নির্বাচনের ফলাফল এবং এর পরিপ্রেক্ষিত গভীরভাবে পর্যালোচনা ও বিশ্লেষণ করা হবে। দু-এক দিনের মধ্যে আমরা বসব।’ অবশ্য তিনি এও বলেন, ‘যেভাবেই হোক, এ জয় (সিপিএ ও আইপিইউ) দেশের জন্য সম্মানের। তবে, এটা কোনো দল বা সরকারের কৃতিত্ব নয়।’
তবে বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা সাবিহ উদ্দিন আহমদ দাবি করেন, ‘এখানে (সিপিএ ও আইপিইউ) কারা প্রতিযোগিতা করে, এটাও অনেকে জানে না।’
বর্তমান পরিস্থিতি কূটনৈতিক ক্ষেত্রে বিএনপির ব্যর্থতা বা আন্তর্জাতিক মহলে সরকারের গ্রহণযোগ্যতা পাওয়ার ইঙ্গিত কি না—জানতে চাইলে দলের ভাইস চেয়ারম্যান শমসের মবিন চৌধুরী তা নাকচ করে দেন। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, ‘প্রশ্নই ওঠে না। একদমই না।’ জাতিসংঘের মানবাধিকার কাউন্সিলের সদস্য হওয়াকেও গুরুত্বহীন বলে মনে করেন শমসের মবিন চৌধুরী। তিনি বলেন, এ কাউন্সিলের সদস্যপদে তালিকা ঘাঁটলে দেখবেন, সেখানে এমন দেশও আছে, যাদের দেশে গণতন্ত্রই নেই। অনেক দেশে সামরিক শাসন চলছে।
অবশ্য ওসমান ফারুক মনে করেন, জাতিসংঘের মানবাধিকার কাউন্সিলের সদস্য হওয়াটা বাংলাদেশের জন্য খুবই প্রয়োজন ছিল। তিনি বলেন, ‘এ সরকারের সময়ে দেশে মানবাধিকারের এত বেশি লঙ্ঘন হচ্ছে যে, এ কাউন্সিলের সদস্য হয়ে যদি সরকারের নীতিজ্ঞান একটু হলেও বাড়ে, তা-ই লাভ।’
২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারির সংসদ নির্বাচনের পর থেকেই বিএনপি বলে আসছে, বহির্বিশ্বের কাছে এ নির্বাচন গ্রহণযোগ্যতা পায়নি। বিএনপির দায়িত্বশীল নেতারা প্রায়ই বক্তৃতা-বিবৃতিতে বর্তমান সরকারকে ‘অবৈধ’ বলে অভিহিত করে আসছেন। দলটির শীর্ষ নেতৃত্ব আন্দোলনের প্রস্তুতির পাশাপাশি এখনো আশায় বুক বেঁধে আছেন যে, আন্তর্জাতিক মহলের চাপে বা মধ্যস্থতায় শিগগিরই সব দলের অংশগ্রহণে একটি মধ্যবর্তী নির্বাচন হবে। এই নেতারা এখনো সভা-সমাবেশে বলেছেন, সিপিএ ও আইপিইউর নির্বাচনে বিজয় মানে আন্তর্জাতিক মহলে বর্তমান সরকার গ্রহণযোগ্য হয়ে গেছে, তা নয়। ৫ জানুয়ারির নির্বাচনের পর যুক্তরাষ্ট্র, ইউরোপীয় ইউনিয়ন, কমনওয়েলথ ও জাতিসংঘ বাংলাদেশের নির্বাচন নিয়ে যে বক্তব্য দিয়েছিল, এখন পর্যন্ত তারা ওই অবস্থান পরিবর্তন করেনি।
দুই সংস্থায় নির্বাচনের বিষয়ে শমসের মবিন চৌধুরীর মত হচ্ছে, কোনো দেশের সংসদ একভাবে সিদ্ধান্ত নিতে পারে। কিন্তু তাতে রাষ্ট্রের নির্বাহী বিভাগের অবস্থানের কোনো পরিবর্তন হয়নি। আর ওসমান ফারুক মনে করেন, এ ধরনের সংগঠনে আঞ্চলিক কোটা থাকে, সে কোটায় হয়তো বাংলাদেশ জয়ী হয়েছে। তবে দুই নেতাই মনে করেন, সিপিএ ও আইপিইউর শীর্ষ পদে বিজয় বর্তমান সরকার সম্পর্কে আন্তর্জাতিক মহলের নেতিবাচক অবস্থানের পরিবর্তন নয়।
বিএনপির দায়িত্বশীল একাধিক সূত্র জানায়, ‘সরকারের এ বিজয়’ বিগত ৫ জানুয়ারির একতরফা সংসদ নির্বাচনের পর বর্তমান সরকার সম্পর্কে আন্তর্জাতিক মহলের এত দিনকার প্রদর্শিত মনোভাব পরিবর্তনের কোনো ইঙ্গিত কি না, সে দুর্ভাবনাও বিএনপিতে আছে।
৯ অক্টোবর সিপিএর চেয়ারপারসন নির্বাচিত হন জাতীয় সংসদের স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরী। ১৬ অক্টোবর আইপিইউর প্রেসিডেন্ট পদে নির্বাচিত হন সাংসদ সাবের হোসেন চৌধুরী। একই সঙ্গে জাতিসংঘের মানবাধিকার কাউন্সিলের সদস্যপদেও জয়ী হয়েছে বাংলাদেশ। তিনটি সংগঠনই গণতন্ত্র, সুশাসন ও মানবাধিকার নিয়ে কাজ করে। সর্বশেষ আবারও আন্তর্জাতিক টেলিযোগাযোগ ইউনিয়নের (আইটিইউ) কাউন্সিল সদস্য নির্বাচিত হয়েছে বাংলাদেশ।
বিএনপির দলীয় সূত্রগুলো জানায়, ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের ‘এই অর্জনের’ পর এখন পর্যন্ত এ বিষয়ে বিএনপির কোনো পর্যায়ে আলোচনা বা পর্যালোচনা হয়নি। তা না করেই এ বিষয়ে ২৪ অক্টোবর দলের ভাইস চেয়ারম্যান শমসের মবিন চৌধুরী সংবাদ সম্মেলন করে বলেছিলেন, এটা বিভিন্ন দেশের সাংসদদের ব্যক্তিগত মতামত, দেশগুলোর সরকারের মতামত নয়।
তবে দলটির আন্তর্জাতিক বিষয়াদি দেখেন—এমন তিন নেতার সঙ্গে কথা বলে দুই ধরনের মতামত ও মূল্যায়ন জানা গেছে। বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ওসমান ফারুক প্রথম আলোকে বলেন, ‘সিপিএ ও আইপিইউর নির্বাচনের ফলাফল এবং এর পরিপ্রেক্ষিত গভীরভাবে পর্যালোচনা ও বিশ্লেষণ করা হবে। দু-এক দিনের মধ্যে আমরা বসব।’ অবশ্য তিনি এও বলেন, ‘যেভাবেই হোক, এ জয় (সিপিএ ও আইপিইউ) দেশের জন্য সম্মানের। তবে, এটা কোনো দল বা সরকারের কৃতিত্ব নয়।’
তবে বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা সাবিহ উদ্দিন আহমদ দাবি করেন, ‘এখানে (সিপিএ ও আইপিইউ) কারা প্রতিযোগিতা করে, এটাও অনেকে জানে না।’
বর্তমান পরিস্থিতি কূটনৈতিক ক্ষেত্রে বিএনপির ব্যর্থতা বা আন্তর্জাতিক মহলে সরকারের গ্রহণযোগ্যতা পাওয়ার ইঙ্গিত কি না—জানতে চাইলে দলের ভাইস চেয়ারম্যান শমসের মবিন চৌধুরী তা নাকচ করে দেন। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, ‘প্রশ্নই ওঠে না। একদমই না।’ জাতিসংঘের মানবাধিকার কাউন্সিলের সদস্য হওয়াকেও গুরুত্বহীন বলে মনে করেন শমসের মবিন চৌধুরী। তিনি বলেন, এ কাউন্সিলের সদস্যপদে তালিকা ঘাঁটলে দেখবেন, সেখানে এমন দেশও আছে, যাদের দেশে গণতন্ত্রই নেই। অনেক দেশে সামরিক শাসন চলছে।
অবশ্য ওসমান ফারুক মনে করেন, জাতিসংঘের মানবাধিকার কাউন্সিলের সদস্য হওয়াটা বাংলাদেশের জন্য খুবই প্রয়োজন ছিল। তিনি বলেন, ‘এ সরকারের সময়ে দেশে মানবাধিকারের এত বেশি লঙ্ঘন হচ্ছে যে, এ কাউন্সিলের সদস্য হয়ে যদি সরকারের নীতিজ্ঞান একটু হলেও বাড়ে, তা-ই লাভ।’
২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারির সংসদ নির্বাচনের পর থেকেই বিএনপি বলে আসছে, বহির্বিশ্বের কাছে এ নির্বাচন গ্রহণযোগ্যতা পায়নি। বিএনপির দায়িত্বশীল নেতারা প্রায়ই বক্তৃতা-বিবৃতিতে বর্তমান সরকারকে ‘অবৈধ’ বলে অভিহিত করে আসছেন। দলটির শীর্ষ নেতৃত্ব আন্দোলনের প্রস্তুতির পাশাপাশি এখনো আশায় বুক বেঁধে আছেন যে, আন্তর্জাতিক মহলের চাপে বা মধ্যস্থতায় শিগগিরই সব দলের অংশগ্রহণে একটি মধ্যবর্তী নির্বাচন হবে। এই নেতারা এখনো সভা-সমাবেশে বলেছেন, সিপিএ ও আইপিইউর নির্বাচনে বিজয় মানে আন্তর্জাতিক মহলে বর্তমান সরকার গ্রহণযোগ্য হয়ে গেছে, তা নয়। ৫ জানুয়ারির নির্বাচনের পর যুক্তরাষ্ট্র, ইউরোপীয় ইউনিয়ন, কমনওয়েলথ ও জাতিসংঘ বাংলাদেশের নির্বাচন নিয়ে যে বক্তব্য দিয়েছিল, এখন পর্যন্ত তারা ওই অবস্থান পরিবর্তন করেনি।
দুই সংস্থায় নির্বাচনের বিষয়ে শমসের মবিন চৌধুরীর মত হচ্ছে, কোনো দেশের সংসদ একভাবে সিদ্ধান্ত নিতে পারে। কিন্তু তাতে রাষ্ট্রের নির্বাহী বিভাগের অবস্থানের কোনো পরিবর্তন হয়নি। আর ওসমান ফারুক মনে করেন, এ ধরনের সংগঠনে আঞ্চলিক কোটা থাকে, সে কোটায় হয়তো বাংলাদেশ জয়ী হয়েছে। তবে দুই নেতাই মনে করেন, সিপিএ ও আইপিইউর শীর্ষ পদে বিজয় বর্তমান সরকার সম্পর্কে আন্তর্জাতিক মহলের নেতিবাচক অবস্থানের পরিবর্তন নয়।
No comments