সরকার কাউকেই এমএলএম ব্যবসার লাইসেন্স দিচ্ছে না by ফখরুল ইসলাম
বহুস্তর বিপণন (এমএলএম) পদ্ধতিতে ব্যবসা করার জন্য কাউকেই আর লাইসেন্স দিচ্ছে না সরকার। গত দেড় মাসে চার দফায় প্রস্তাবিত সব এমএলএম কোম্পানির আবেদনই চূড়ান্তভাবে নাকচ করে দিয়েছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়। নাকচের কথা প্রস্তাবিত কোম্পানিগুলোর চেয়ারম্যানদের চিঠি পাঠিয়ে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে। বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ গতকাল মঙ্গলবার এ বিষয়ে প্রথম আলোকে বলেন, ‘এমএলএম কোম্পানিগুলোর প্রতারণার কথা সবাই জানেন। লাইসেন্সের জন্য যারা আবেদন করেছিল, যাচাই করে দেখা হয়েছে তাদের কাউকেই লাইসেন্স দেওয়া যায় না। এর আগে যে চারটিকে লাইসেন্স দেওয়া হয়েছিল সেগুলোর ব্যাপারেও তদন্ত করছি।’
মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, এমএলএম পদ্ধতিতে ব্যবসা করার লাইসেন্স চেয়ে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের কাছে মোট ১৯টি আবেদন জমা পড়েছিল। এর মধ্যে প্রথম দফায় পাঁচটি, দ্বিতীয় দফায় ছয়টি ও তৃতীয় দফায় চারটি ও চতুর্থ দফায় চারটি প্রস্তাবিত এমএলএম কোম্পানির আবেদন নাকচ করা হয়। নাকচ হওয়া কোম্পানিগুলো হচ্ছে: ডেসটিনি ২০০০ লিমিটেড, পিনাকল সোর্সিং, সানুস লাইফ বিডি, এবি নিউট্রিক ইন্টারন্যাশনাল, এমওয়ে ইন্টারন্যাশনাল বিডি, ভিশন ইন্ডাস্ট্রিজ বিডি, লাইফওয়ে বিডি, ম্যাকনাম ইন্টারন্যাশনাল, লাক্সার গ্লোবাল নেটওয়ার্কিং, ডি-ক্লাসিক লাইফ বিডি, অ্যাডভান্স বাংলা, ড্রিম টুগেদার, দেশান বিডি, একসিলেন্ট ফিউচার মার্কেটিং, ফরেভার লিভিং প্রডাক্টস বিডি, টিয়ানসি (বিডি), মিশন-১০, এসএমএন গ্লোবাল এবং ইনফিনিটি। এদের মধ্যে কয়েকটি কোম্পানি লাইসেন্স পাওয়ার জন্য আদালতের দ্বারস্থ হয়েছে বলে বাণিজ্য মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে।
এমএলএম পদ্ধতিতে ব্যবসা করার কোনো আইন ছিল না দেশে। তা সত্ত্বেও যৌথ মূলধন কোম্পানি ও ফার্মগুলোর নিবন্ধকের (রেজসকো) কার্যালয় থেকে কোম্পানির নিবন্ধন নিয়ে শতাধিক এমএলএম কোম্পানি গড়ে উঠেছিল। ২০১২ সালে ডেসটিনি ২০০০ লিমিটেডের অনিয়ম-দুর্নীতি ফাঁস হওয়ার পর ২০১৩ সালের অক্টোবরে মাল্টিলেভেল মার্কেটিং কার্যক্রম (নিয়ন্ত্রণ) আইন প্রণয়ন করে সরকার। এই আইনের অধীনে চলতি বছরের ফেব্রুয়ারিতে করা হয় বিধিমালা, যা আবার সংশোধন করা হয় গত ২২ জুলাই।
আইনে এমএলএম পদ্ধতিতে ব্যবসার জন্য লাইসেন্স নেওয়ার বাধ্যবাধকতা আরোপ করা হয়। লাইসেন্স দেওয়ার দায়িত্বপ্রাপ্ত সংস্থা করা হয় রেজসকোকে। এমএলএম পদ্ধতিতে ব্যবসা করার জন্য এ যাবৎ রেজসকোতে লাইসেন্স নেওয়ার জন্য আবেদন পড়ে ২৩টি। এর মধ্যে গত মার্চে রেজসকো চারটি প্রতিষ্ঠানকে লাইসেন্স দেয়। এগুলো হচ্ছে ওয়ার্ল্ড ভিশন ২১, স্বাধীন অনলাইন পাবলিক লিমিটেড, রিচ বিজনেস সিস্টেম ও এমএক্সএন মডার্ন হারবাল ফুড।
আইনে রেজসকো থেকে লাইসেন্স না পেলে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ে আপিল করার সুযোগ রাখা হয়। সে অনুযায়ী রেজসকো থেকে লাইসেন্স না পাওয়া কোম্পানিগুলো পরে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ে আপিল করে। কয়েক মাস ধরেই আবেদনকারীদের দফায় দফায় শুনানি গ্রহণ করে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব মূর্তজা রেজা চৌধুরীর নেতৃত্বাধীন একটি কমিটি। কিন্তু লাইসেন্স পাওয়ার প্রয়োজনীয় শর্ত ও যোগ্যতা কেউই পূরণ করতে পারেনি বলে বাণিজ্য মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে।
বাণিজ্যসচিব হেদায়েতুল্লাহ আল মামুন প্রথম আলোকে বলেন, প্রস্তাবিত কোম্পানিগুলোর আবেদনগুলো পুঙ্খানুপুঙ্খরূপে যাচাই করা হয়েছে। আবেদনকারীদের শুনানিও গ্রহণ করা হয়েছে। দেখা গেছে যে কেউই লাইসেন্স পেতে পারে না। শর্ত পূরণের বিষয়ে জানতে চাইলে ডেসটিনি গ্রুপের কোম্পানি সচিব মিজানুর রহমান প্রথম আলোকে বলেন, ‘সব শর্ত পূরণ করা সত্ত্বেও মন্ত্রণালয় অন্যায়ভাবে আমাদের লাইসেন্স দেয়নি। আমরা এখন আদালতে যাব।’
লাইসেন্স ছাড়া এমএলএম পদ্ধতিতে ব্যবসা নিষিদ্ধ হলেও রাজধানীসহ দেশের আনাচে-কানাচে এখনো এই ব্যবসা চলছে বলে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের নজরে এসেছে। রাজধানীর হাতিরপুল ও পল্টন এলাকাতেই রয়েছে অন্তত ৫০টি প্রতিষ্ঠান। ব্যবসা করতে চাইলে আইন অনুযায়ী এদের লাইসেন্স নেওয়ার কথা। কিন্তু লাইসেন্স নেওয়ার জন্য কেউ আবেদনই করেনি। মাল্টিলেভেল মার্কেটিং কার্যক্রম (নিয়ন্ত্রণ) আইনের ১৪ ধারায় বলা হয়েছে, আইন কার্যকর হওয়ার ৯০ দিনের মধ্যে লাইসেন্স নেওয়ার জন্য সরকারের কাছে আবেদন করতে হবে। নইলে এমএলএম কার্যক্রম করা যাবে না। এই ধারা লঙ্ঘনকারীদের ১০ বছরের জেল ও ৫০ লাখ টাকা জরিমানার বিধান রয়েছে।
এদিকে রেজসকো থেকে চারটি প্রতিষ্ঠান কীভাবে লাইসেন্স পেল—গত রোববার তা নিয়ে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করেছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়। লাইসেন্স পেলেও প্রয়োজনীয় শর্ত পূরণের ঘাটতি থাকলে এখনো এদের লাইসেন্স বাতিল হতে পারে বলে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের শীর্ষ পর্যায়ের কর্মকর্তারা জানান। লাইসেন্স ছাড়াই যেসব প্রতিষ্ঠান এমএলএম পদ্ধতিতে ব্যবসা করছে, তাদের বিরুদ্ধে কী ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে—জানতে চাইলে বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, ‘শাস্তি দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। প্রক্রিয়া নিয়ে সরকারের সংশ্লিষ্ট দপ্তরের সঙ্গে আলোচনার দরকার রয়েছে।’ তিনি আরও বলেন, ‘বাংলাদেশে কোনো প্রতারণামূলক ব্যবসা চলতে দেওয়া হবে না।’
মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, এমএলএম পদ্ধতিতে ব্যবসা করার লাইসেন্স চেয়ে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের কাছে মোট ১৯টি আবেদন জমা পড়েছিল। এর মধ্যে প্রথম দফায় পাঁচটি, দ্বিতীয় দফায় ছয়টি ও তৃতীয় দফায় চারটি ও চতুর্থ দফায় চারটি প্রস্তাবিত এমএলএম কোম্পানির আবেদন নাকচ করা হয়। নাকচ হওয়া কোম্পানিগুলো হচ্ছে: ডেসটিনি ২০০০ লিমিটেড, পিনাকল সোর্সিং, সানুস লাইফ বিডি, এবি নিউট্রিক ইন্টারন্যাশনাল, এমওয়ে ইন্টারন্যাশনাল বিডি, ভিশন ইন্ডাস্ট্রিজ বিডি, লাইফওয়ে বিডি, ম্যাকনাম ইন্টারন্যাশনাল, লাক্সার গ্লোবাল নেটওয়ার্কিং, ডি-ক্লাসিক লাইফ বিডি, অ্যাডভান্স বাংলা, ড্রিম টুগেদার, দেশান বিডি, একসিলেন্ট ফিউচার মার্কেটিং, ফরেভার লিভিং প্রডাক্টস বিডি, টিয়ানসি (বিডি), মিশন-১০, এসএমএন গ্লোবাল এবং ইনফিনিটি। এদের মধ্যে কয়েকটি কোম্পানি লাইসেন্স পাওয়ার জন্য আদালতের দ্বারস্থ হয়েছে বলে বাণিজ্য মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে।
এমএলএম পদ্ধতিতে ব্যবসা করার কোনো আইন ছিল না দেশে। তা সত্ত্বেও যৌথ মূলধন কোম্পানি ও ফার্মগুলোর নিবন্ধকের (রেজসকো) কার্যালয় থেকে কোম্পানির নিবন্ধন নিয়ে শতাধিক এমএলএম কোম্পানি গড়ে উঠেছিল। ২০১২ সালে ডেসটিনি ২০০০ লিমিটেডের অনিয়ম-দুর্নীতি ফাঁস হওয়ার পর ২০১৩ সালের অক্টোবরে মাল্টিলেভেল মার্কেটিং কার্যক্রম (নিয়ন্ত্রণ) আইন প্রণয়ন করে সরকার। এই আইনের অধীনে চলতি বছরের ফেব্রুয়ারিতে করা হয় বিধিমালা, যা আবার সংশোধন করা হয় গত ২২ জুলাই।
আইনে এমএলএম পদ্ধতিতে ব্যবসার জন্য লাইসেন্স নেওয়ার বাধ্যবাধকতা আরোপ করা হয়। লাইসেন্স দেওয়ার দায়িত্বপ্রাপ্ত সংস্থা করা হয় রেজসকোকে। এমএলএম পদ্ধতিতে ব্যবসা করার জন্য এ যাবৎ রেজসকোতে লাইসেন্স নেওয়ার জন্য আবেদন পড়ে ২৩টি। এর মধ্যে গত মার্চে রেজসকো চারটি প্রতিষ্ঠানকে লাইসেন্স দেয়। এগুলো হচ্ছে ওয়ার্ল্ড ভিশন ২১, স্বাধীন অনলাইন পাবলিক লিমিটেড, রিচ বিজনেস সিস্টেম ও এমএক্সএন মডার্ন হারবাল ফুড।
আইনে রেজসকো থেকে লাইসেন্স না পেলে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ে আপিল করার সুযোগ রাখা হয়। সে অনুযায়ী রেজসকো থেকে লাইসেন্স না পাওয়া কোম্পানিগুলো পরে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ে আপিল করে। কয়েক মাস ধরেই আবেদনকারীদের দফায় দফায় শুনানি গ্রহণ করে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব মূর্তজা রেজা চৌধুরীর নেতৃত্বাধীন একটি কমিটি। কিন্তু লাইসেন্স পাওয়ার প্রয়োজনীয় শর্ত ও যোগ্যতা কেউই পূরণ করতে পারেনি বলে বাণিজ্য মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে।
বাণিজ্যসচিব হেদায়েতুল্লাহ আল মামুন প্রথম আলোকে বলেন, প্রস্তাবিত কোম্পানিগুলোর আবেদনগুলো পুঙ্খানুপুঙ্খরূপে যাচাই করা হয়েছে। আবেদনকারীদের শুনানিও গ্রহণ করা হয়েছে। দেখা গেছে যে কেউই লাইসেন্স পেতে পারে না। শর্ত পূরণের বিষয়ে জানতে চাইলে ডেসটিনি গ্রুপের কোম্পানি সচিব মিজানুর রহমান প্রথম আলোকে বলেন, ‘সব শর্ত পূরণ করা সত্ত্বেও মন্ত্রণালয় অন্যায়ভাবে আমাদের লাইসেন্স দেয়নি। আমরা এখন আদালতে যাব।’
লাইসেন্স ছাড়া এমএলএম পদ্ধতিতে ব্যবসা নিষিদ্ধ হলেও রাজধানীসহ দেশের আনাচে-কানাচে এখনো এই ব্যবসা চলছে বলে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের নজরে এসেছে। রাজধানীর হাতিরপুল ও পল্টন এলাকাতেই রয়েছে অন্তত ৫০টি প্রতিষ্ঠান। ব্যবসা করতে চাইলে আইন অনুযায়ী এদের লাইসেন্স নেওয়ার কথা। কিন্তু লাইসেন্স নেওয়ার জন্য কেউ আবেদনই করেনি। মাল্টিলেভেল মার্কেটিং কার্যক্রম (নিয়ন্ত্রণ) আইনের ১৪ ধারায় বলা হয়েছে, আইন কার্যকর হওয়ার ৯০ দিনের মধ্যে লাইসেন্স নেওয়ার জন্য সরকারের কাছে আবেদন করতে হবে। নইলে এমএলএম কার্যক্রম করা যাবে না। এই ধারা লঙ্ঘনকারীদের ১০ বছরের জেল ও ৫০ লাখ টাকা জরিমানার বিধান রয়েছে।
এদিকে রেজসকো থেকে চারটি প্রতিষ্ঠান কীভাবে লাইসেন্স পেল—গত রোববার তা নিয়ে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করেছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়। লাইসেন্স পেলেও প্রয়োজনীয় শর্ত পূরণের ঘাটতি থাকলে এখনো এদের লাইসেন্স বাতিল হতে পারে বলে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের শীর্ষ পর্যায়ের কর্মকর্তারা জানান। লাইসেন্স ছাড়াই যেসব প্রতিষ্ঠান এমএলএম পদ্ধতিতে ব্যবসা করছে, তাদের বিরুদ্ধে কী ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে—জানতে চাইলে বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, ‘শাস্তি দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। প্রক্রিয়া নিয়ে সরকারের সংশ্লিষ্ট দপ্তরের সঙ্গে আলোচনার দরকার রয়েছে।’ তিনি আরও বলেন, ‘বাংলাদেশে কোনো প্রতারণামূলক ব্যবসা চলতে দেওয়া হবে না।’
No comments