প্রত্যর্পণের আইনি লড়াই কয়েক বছর চলতে পারে
যুক্তরাষ্ট্র এডওয়ার্ড স্নোডেনকে
প্রত্যর্পণের জন্য আনুষ্ঠানিকভাবে হংকংয়ের কাছে আবেদন জানালেও এ নিয়ে
আইনি লড়াই কয়েক বছর ধরে চলতে পারে। চীনের বিশেষ প্রশাসনিক অঞ্চল হংকংয়ের
সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের প্রত্যর্পণ চুক্তি থাকলেও তা এড়াতে স্নোডেনেরও
আইনের আশ্রয় নেওয়ার অধিকার রয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে হংকংয়ের
প্রত্যর্পণ চুক্তি কার্যকর হয় ১৯৯৮ সালে। এর পর থেকে হংকং অসংখ্য মার্কিন
নাগরিককে বিচারের মুখোমুখি করতে যুক্তরাষ্ট্র সরকারের কাছে প্রত্যর্পণও
করেছে। আইন বিশেষজ্ঞরা বলছেন, যুক্তরাষ্ট্র-হংকং প্রত্যর্পণ চুক্তিতে
সুনির্দিষ্টভাবে গুপ্তচরবৃত্তি বা রাষ্ট্রের গোপন তথ্য চুরির বিষয়টির
উল্লেখ নেই। তবে হংকং চাইলে স্নোডেনের অভিযোগকে সরকারি গোপনীয়তাবিষয়ক
অধ্যাদেশের আওতায় ফেলতে পারে। কিন্তু হংকং সেটা না করলে স্নোডেনকে
প্রত্যর্পণের বাধ্যবাধকতা থাকবে না। হংকং ইউনিভার্সিটির আইনের অধ্যাপক সিমন
ইয়ং বলেন, স্নোডেনের বিরুদ্ধে যে অভিযোগগুলো আনা হয়েছে, তার আইনি
প্রক্রিয়া শেষ করার সময়কাঠামো অস্পষ্ট। মানবাধিকার বিশেষজ্ঞ হেক্টর পুন
বলেন, এ ধরনের প্রত্যর্পণ-প্রক্রিয়া শেষ করতে দুই থেকে পাঁচ বছর পর্যন্ত
সময় লাগতে পারে। স্নোডেনের প্রত্যর্পণ-প্রক্রিয়ার শুরুতে কূটনৈতিক
পর্যায় থেকে যুক্তরাষ্ট্রের একটি আবেদন হংকং কর্তৃপক্ষের কাছে যাবে।
কর্তৃপক্ষ তা অনুমোদন করলে ম্যাজিস্ট্রেট স্নোডেনের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি
পরোয়ানা জারি করবেন। তাঁকে আদালতে হাজির করা হলে বিচারক তথ্য-প্রমাণ
সাপেক্ষে সিদ্ধান্ত দেবেন, স্নোডেনকে প্রত্যর্পণ করা হবে কি না। এ রায়ের
বিরুদ্ধে উচ্চ আদালতে আপিল করারও সুযোগ থাকবে। স্নোডেন হংকংয়ে রাজনৈতিক
আশ্রয়ও প্রার্থনা করতে পারবেন। তিনি আশঙ্কা প্রকাশ করতে পারেন যে
যুক্তরাষ্ট্রে ফেরত পাঠানো হলে তাঁর ওপর নির্যাতন চালানো হবে।
যুক্তরাষ্ট্র-হংকংয়ের প্রত্যর্পণ চুক্তির ৬ নম্বর অনুচ্ছেদে বলা আছে
‘রাজনৈতিক অপরাধের ক্ষেত্রে’ প্রত্যর্পণ প্রত্যাখ্যান করা যেতে পারে। এই
আইনি প্রক্রিয়ার বাইরেও রয়েছে হংকংয়ের ওপর চীনের প্রভাব, যা কম
গুরুত্বপূর্ণ নয়। হংকংয়ের অভিবাসনবিষয়ক আইনজীবী টিম পার্কার বলেন,
প্রত্যর্পণের ক্ষেত্রে চীনও বাধার সৃষ্টি করতে পারে। বেইজিং ‘জাতীয়
নিরাপত্তা, পররাষ্ট্র সম্পর্ক বা প্রতিরক্ষা’ বিষয়ে প্রশ্ন তুলে হংকংয়ের
যেকোনো প্রত্যর্পণ-প্রক্রিয়ায় হস্তক্ষেপ করতে পারে। স্নোডেন সম্প্রতি
বলেছেন, মার্কিন গোয়েন্দা কর্মকর্তারা চীনেরও বিভিন্ন কম্পিউটার ব্যবস্থা
হ্যাক করেছেন। স্নোডেনের এ অভিযোগ হ্যাকিং নিয়ে চীন-মার্কিন পাল্টাপাল্টি ও
তাঁর প্রত্যর্পণের বিষয়টিতে নতুন মাত্রা দিতে পারে। রয়টার্স, বিবিসি।
No comments