সংসদীয় ভাষা by ড. মাহবুব হাসান
জাতীয় সংসদে একটি শব্দ ব্যবহার নিয়ে
শোরগোল শুরু হয়েছিল, সেটা থেমে যাওয়ার আগেই আরো একটি শব্দ সেখানে উচ্চারিত
হওয়ায় আবারও তা নিয়ে জোর প্রতিবাদ উঠেছে। 'চুদুরবুদুর' ও 'চুতমারানি'- এ
শব্দ দুটি সম্পর্কে বিতর্ক চলছে।
যিনি ও যাঁরা শব্দ দুটি
বলেছেন, তাঁরা বিরোধী রাজনৈতিক দলের [মহিলা] সংসদ সদস্য। বিরোধিতাকারীরা
সরকারি দলের সংসদ সদস্য। মূল বক্তব্য হচ্ছে, শব্দ দুটি শ্লীল কি অশ্লীল?
সংসদে তা উচ্চারণযোগ্য কি না? স্পিকার ড. শিরীন শারমিন বলেছেন, শব্দ দুটি
অসংসদীয় হলে তা কার্যবিবরণী থেকে ছেঁটে দেওয়া হবে। বিরোধী দলের সংসদ
সদস্যরা মনে করেন, শব্দ দুটি অশালীন নয়। দেশের বিভিন্ন এলাকায় শব্দ দুটির
বেশ ব্যবহার আছে। প্রশ্ন হচ্ছে, দেশের বিভিন্ন এলাকায় ব্যবহৃত হচ্ছে বলেই
সেই শব্দ সংসদে ব্যবহারযোগ্যতা পেতে পারে, এমন কোনো যুক্তি নেই আমাদের
হাতে। কলকাতার ভাষা বিশেষজ্ঞরাও বলেছেন, 'চুদুরবুদুর' অশালীন শব্দ নয়।
ঢাকার বুদ্ধিজীবীদের কোনো বয়ান পাইনি এখনো। আমার জানা মতে, তাঁরা মুখ
খোলেননি।
আর্থিকভাবে ও সম্পদের দিক থেকে দুর্বল গ্রামীণ সমাজেরই এ রকম কথ্য ও আঞ্চলিক শব্দের ব্যবহার এই ঢাকা মহানগরেই বিপুলভাবে আছে। রেহানা আকতার রানু জাতীয় সংসদে দাঁড়িয়ে সরকারের তত্ত্বাবধায়ক সরকার প্রশ্নে যে গড়িমসি বা সে ব্যাপারটি নিয়ে সরকার উল্টাপাল্টা কথা ও কাজ করছে এবং সরকারের অবস্থান যে নড়বড়ে নির্বাচন পদ্ধতি নিয়ে- সেসবই তিনি প্রকাশ করেছেন এক কথায় একটি শব্দে। আবার তিনি সেই কথাটি বলেছেন তাঁর নোয়াখালী এলাকার অ্যাকসেন্টে বা উচ্চারণে- 'চুদুরবুদুর চলত ন'।
এটা শুনতে মজাই লেগেছে, সন্দেহ নেই। কিন্তু কথা হচ্ছে, কেন সংসদ সদস্য ও মন্ত্রীরা, বিশেষ করে সরকারি জোটের লোকরা এই শব্দটিকে অশালীন বলছেন? কারণ তাঁদের রাজনৈতিক-সামাজিক-সাংস্কৃতিক ও অর্থনৈতিক শক্তি ও মর্যাদা কাজ করেছে তাঁদের মনন ও মানসগঠনে। চুদুরবুদুরকে চিনেছেন তাঁরা নিচু শ্রেণীর মানুষের শব্দ হিসেবে। তাঁরা মনে করেন, তাঁদের জ্ঞান-গরিমা, অর্থ-বিত্ত আর রাজনৈতিক পজিশন ওই শব্দটি গ্রহণে অপারগ। তাঁরা অনভ্যস্ত আজ ওই শব্দ গ্রহণে। রানু যদি বলতেন, কেন সরকার গড়িমসি করছে, তাহলে কিন্তু তিনি আলোচনায় আসতেন না। তাঁকে মূল্যও দিতেন না কেউ। তাঁর শব্দপ্রয়োগ নিয়ে দেশে-বিদেশে বাহাসও হতো না।
আমাদের মাননীয় সংসদ সদস্যরাও সেই রুচিরই উত্তরাধিকারী। তাঁরা আজ আর গ্রামের মানুষও নন, আর নন দুর্বল আর্থিক দিক থেকে। ফলে তাঁদের কানে চুদুরবুদুর অশালীন ঠেকবেই। আর যিনি শব্দটি বলেছেন, তিনি নোয়াখালীর মানুষ বলে স্থানীয় ভাষার শব্দটিকে জোর দিয়ে উচ্চারণ করেছেন।
কবি হেলাল হাফিজের একটি কবিতার কয়েকটি পঙ্ক্তি উচ্চারণ করে বক্তৃতা শেষ করেছেন বিএনপির আরেক [মহিলা] সংসদ সদস্য শাম্মী আখতার। উদ্ধৃতি বিষয়ে জাতীয় সংসদে কোনো রকম নীতি আছে কি না, আমি জানি না। তা খতিয়ে দেখা উচিত। এ নিয়ে হৈচৈ না করে বরং সরকারি দলের উচিত এ নিয়ে কাজ করা। 'চুতমারানি' শব্দটি শাহরিক কি গ্রাম্য, তা বড় কথা নয়, এই গালিটা কোনো সমাজেই গ্রহণযোগ্য নয়। যদিও গ্রামে রাগত স্বরে অনেক পুরুষই তার স্ত্রীকে বা পরনারীকে ওই গালিতে কুপোকাৎ করতে চায়। শাম্মী এই গালিটা দিতে চান সরকারকে, কারণ তিনি ও তাঁর দল ও জোট সরকারের টালবাহানায় ও অসৎ কর্মে, রাজনৈতিক বিরুদ্ধবাদীদের দলনে ক্ষুব্ধ। কাজটা তিনি সরাসরি না করে হেলাল হাফিজের কবিতার উদ্ধৃতির সাহায্যে করে চতুরতার পরিচয় দিয়েছেন সত্য, কিন্তু এটা তিনি ভুলে গেছেন যে ব্যক্তিগত ও সামাজিক জীবনের অনেক জানা সত্যই উচ্চারণ করা যায় না।
২.
দাবি নিয়ে দুপক্ষই শক্ত অবস্থানে। প্রধানমন্ত্রী বলেন, চারটি সিটিতে নির্বাচন সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন হয়েছে। এতে বিজয়ী হয়েছে সরকার, গণতন্ত্র আর জনগণ। তিনি সত্য উচ্চারণ করেছেন, তাতে কোনো সন্দেহ নেই। আর বিরোধী বিএনপি বলেছে, ভোটার জনগণ আওয়ামী লীগকে প্রত্যাখ্যান করেছে। এর ভেতর দিয়ে ভোটার জনগণের অনাস্থা প্রকাশ পেয়েছে। চারটি সিটি মেয়র নির্বাচনে সরকারি জোটের হেরে যাওয়ার কারণ বিচার-বিশ্লেষণ চলেছে। গত সাড়ে চার বছরের শাসনের নগ্নতাই যে এর জন্য দায়ী, তা সবাই বলেছেন। সরকারের উন্নয়নকাজ আছে কিছু, তা ডুবে গেছে নানা রকম লুটপাটের কেলেঙ্কারির নিচে। সরকারের দমন কাজ এতটাই নৃশংস যে তা ঢেকে রাখার জন্য রাতের আঁধারকে বেছে নিতে হয়। রাতের বেলা হেফাজতিদের ওপর অপারেশন চালাতে গিয়ে সরকার তার রাজনৈতিক হিংস্রতাই কেবল দেখায়নি, সেই সঙ্গে আন্তর্জাতিক সমাজকে জানিয়েছে যে হেফাজতিরা জঙ্গিবাদী। তাদের নির্মমভাবে দমন করে পশ্চিমাদের কাছে গ্রহণযোগতার সার্টিফিকেট তুলেছে হাসিনা সরকার।
প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, ভোট গণনার আগে বলে দিয়েছি কোনো রকম কিছু চলবে না। যা ফল হবে মেনে নেব। এটাও সুন্দর কথা, সত্য ভাষণ। কারণ তাঁর কথা থেকে এই সত্য বেরিয়ে এসেছে যে তাঁর দলীয় ও জোটীয় সহকর্মী-সহমর্মীরা তাঁকে বলেছিলেন ফল নিজেদের করে নেবেন কি না। তিনি না করে দেওয়ায় চার সিটিতেই 'সত্য' মাথা তুলতে পেরেছে। তিনি যদি চাইতেন, সেটা তাঁর কথা থেকেই বোঝা যায়, ফল উল্টে যেতে পারত। ভাগ্য ভালো বলতে হবে, তিনি চাননি। তিনি যে জাতীয় নির্বাচনেও এমনটা করবেন, সেই কথাটাও বলতে ভোলেননি। কিন্তু চুন খেয়ে যাদের জিভ পুড়েছে তারা তো এ কথা বিশ্বাস করতে পারে না।
উভয় পক্ষ যখন পরস্পরের প্রতি অবিশ্বাস-অনাস্থা জানিয়ে চলেছে, তাহলে জাতীয় নির্বাচনের জন্য তৃতীয় পক্ষকে দায়িত্ব দিতে হবে। অসাংবিধানিক বলে কিছু নেই। যা আমাদের জন্য কল্যাণকর এবং গণতন্ত্রের জন্য ভালো হবে, গণতন্ত্রকে প্রাতিষ্ঠানিকতা দেবে রাজনৈতিক দল ও সরকারে, সেটাই আমাদের জন্য কায়েম হোক। সংবিধান পরিবর্তনযোগ্য, এটা পবিত্র ধর্মগ্রন্থ নয়। এটা মনে রেখে বৃহত্তর জনগণের আশা-আকাঙ্ক্ষা পূরিত হয়, সে ব্যবস্থাই গৃহীত হোক। নিজেদের আর যুক্তিহীন গোয়ার্তুমির মধ্যে না রেখে বাস্তব আর প্রয়োজনের কাছে আত্মসমর্পণ করুন। সেটাই হবে দূরদর্শিতার মতো সিদ্ধান্ত।
লেখক : কবি, যুক্তরাষ্ট্র প্রবাসী সাংবাদিক
আর্থিকভাবে ও সম্পদের দিক থেকে দুর্বল গ্রামীণ সমাজেরই এ রকম কথ্য ও আঞ্চলিক শব্দের ব্যবহার এই ঢাকা মহানগরেই বিপুলভাবে আছে। রেহানা আকতার রানু জাতীয় সংসদে দাঁড়িয়ে সরকারের তত্ত্বাবধায়ক সরকার প্রশ্নে যে গড়িমসি বা সে ব্যাপারটি নিয়ে সরকার উল্টাপাল্টা কথা ও কাজ করছে এবং সরকারের অবস্থান যে নড়বড়ে নির্বাচন পদ্ধতি নিয়ে- সেসবই তিনি প্রকাশ করেছেন এক কথায় একটি শব্দে। আবার তিনি সেই কথাটি বলেছেন তাঁর নোয়াখালী এলাকার অ্যাকসেন্টে বা উচ্চারণে- 'চুদুরবুদুর চলত ন'।
এটা শুনতে মজাই লেগেছে, সন্দেহ নেই। কিন্তু কথা হচ্ছে, কেন সংসদ সদস্য ও মন্ত্রীরা, বিশেষ করে সরকারি জোটের লোকরা এই শব্দটিকে অশালীন বলছেন? কারণ তাঁদের রাজনৈতিক-সামাজিক-সাংস্কৃতিক ও অর্থনৈতিক শক্তি ও মর্যাদা কাজ করেছে তাঁদের মনন ও মানসগঠনে। চুদুরবুদুরকে চিনেছেন তাঁরা নিচু শ্রেণীর মানুষের শব্দ হিসেবে। তাঁরা মনে করেন, তাঁদের জ্ঞান-গরিমা, অর্থ-বিত্ত আর রাজনৈতিক পজিশন ওই শব্দটি গ্রহণে অপারগ। তাঁরা অনভ্যস্ত আজ ওই শব্দ গ্রহণে। রানু যদি বলতেন, কেন সরকার গড়িমসি করছে, তাহলে কিন্তু তিনি আলোচনায় আসতেন না। তাঁকে মূল্যও দিতেন না কেউ। তাঁর শব্দপ্রয়োগ নিয়ে দেশে-বিদেশে বাহাসও হতো না।
আমাদের মাননীয় সংসদ সদস্যরাও সেই রুচিরই উত্তরাধিকারী। তাঁরা আজ আর গ্রামের মানুষও নন, আর নন দুর্বল আর্থিক দিক থেকে। ফলে তাঁদের কানে চুদুরবুদুর অশালীন ঠেকবেই। আর যিনি শব্দটি বলেছেন, তিনি নোয়াখালীর মানুষ বলে স্থানীয় ভাষার শব্দটিকে জোর দিয়ে উচ্চারণ করেছেন।
কবি হেলাল হাফিজের একটি কবিতার কয়েকটি পঙ্ক্তি উচ্চারণ করে বক্তৃতা শেষ করেছেন বিএনপির আরেক [মহিলা] সংসদ সদস্য শাম্মী আখতার। উদ্ধৃতি বিষয়ে জাতীয় সংসদে কোনো রকম নীতি আছে কি না, আমি জানি না। তা খতিয়ে দেখা উচিত। এ নিয়ে হৈচৈ না করে বরং সরকারি দলের উচিত এ নিয়ে কাজ করা। 'চুতমারানি' শব্দটি শাহরিক কি গ্রাম্য, তা বড় কথা নয়, এই গালিটা কোনো সমাজেই গ্রহণযোগ্য নয়। যদিও গ্রামে রাগত স্বরে অনেক পুরুষই তার স্ত্রীকে বা পরনারীকে ওই গালিতে কুপোকাৎ করতে চায়। শাম্মী এই গালিটা দিতে চান সরকারকে, কারণ তিনি ও তাঁর দল ও জোট সরকারের টালবাহানায় ও অসৎ কর্মে, রাজনৈতিক বিরুদ্ধবাদীদের দলনে ক্ষুব্ধ। কাজটা তিনি সরাসরি না করে হেলাল হাফিজের কবিতার উদ্ধৃতির সাহায্যে করে চতুরতার পরিচয় দিয়েছেন সত্য, কিন্তু এটা তিনি ভুলে গেছেন যে ব্যক্তিগত ও সামাজিক জীবনের অনেক জানা সত্যই উচ্চারণ করা যায় না।
২.
দাবি নিয়ে দুপক্ষই শক্ত অবস্থানে। প্রধানমন্ত্রী বলেন, চারটি সিটিতে নির্বাচন সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন হয়েছে। এতে বিজয়ী হয়েছে সরকার, গণতন্ত্র আর জনগণ। তিনি সত্য উচ্চারণ করেছেন, তাতে কোনো সন্দেহ নেই। আর বিরোধী বিএনপি বলেছে, ভোটার জনগণ আওয়ামী লীগকে প্রত্যাখ্যান করেছে। এর ভেতর দিয়ে ভোটার জনগণের অনাস্থা প্রকাশ পেয়েছে। চারটি সিটি মেয়র নির্বাচনে সরকারি জোটের হেরে যাওয়ার কারণ বিচার-বিশ্লেষণ চলেছে। গত সাড়ে চার বছরের শাসনের নগ্নতাই যে এর জন্য দায়ী, তা সবাই বলেছেন। সরকারের উন্নয়নকাজ আছে কিছু, তা ডুবে গেছে নানা রকম লুটপাটের কেলেঙ্কারির নিচে। সরকারের দমন কাজ এতটাই নৃশংস যে তা ঢেকে রাখার জন্য রাতের আঁধারকে বেছে নিতে হয়। রাতের বেলা হেফাজতিদের ওপর অপারেশন চালাতে গিয়ে সরকার তার রাজনৈতিক হিংস্রতাই কেবল দেখায়নি, সেই সঙ্গে আন্তর্জাতিক সমাজকে জানিয়েছে যে হেফাজতিরা জঙ্গিবাদী। তাদের নির্মমভাবে দমন করে পশ্চিমাদের কাছে গ্রহণযোগতার সার্টিফিকেট তুলেছে হাসিনা সরকার।
প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, ভোট গণনার আগে বলে দিয়েছি কোনো রকম কিছু চলবে না। যা ফল হবে মেনে নেব। এটাও সুন্দর কথা, সত্য ভাষণ। কারণ তাঁর কথা থেকে এই সত্য বেরিয়ে এসেছে যে তাঁর দলীয় ও জোটীয় সহকর্মী-সহমর্মীরা তাঁকে বলেছিলেন ফল নিজেদের করে নেবেন কি না। তিনি না করে দেওয়ায় চার সিটিতেই 'সত্য' মাথা তুলতে পেরেছে। তিনি যদি চাইতেন, সেটা তাঁর কথা থেকেই বোঝা যায়, ফল উল্টে যেতে পারত। ভাগ্য ভালো বলতে হবে, তিনি চাননি। তিনি যে জাতীয় নির্বাচনেও এমনটা করবেন, সেই কথাটাও বলতে ভোলেননি। কিন্তু চুন খেয়ে যাদের জিভ পুড়েছে তারা তো এ কথা বিশ্বাস করতে পারে না।
উভয় পক্ষ যখন পরস্পরের প্রতি অবিশ্বাস-অনাস্থা জানিয়ে চলেছে, তাহলে জাতীয় নির্বাচনের জন্য তৃতীয় পক্ষকে দায়িত্ব দিতে হবে। অসাংবিধানিক বলে কিছু নেই। যা আমাদের জন্য কল্যাণকর এবং গণতন্ত্রের জন্য ভালো হবে, গণতন্ত্রকে প্রাতিষ্ঠানিকতা দেবে রাজনৈতিক দল ও সরকারে, সেটাই আমাদের জন্য কায়েম হোক। সংবিধান পরিবর্তনযোগ্য, এটা পবিত্র ধর্মগ্রন্থ নয়। এটা মনে রেখে বৃহত্তর জনগণের আশা-আকাঙ্ক্ষা পূরিত হয়, সে ব্যবস্থাই গৃহীত হোক। নিজেদের আর যুক্তিহীন গোয়ার্তুমির মধ্যে না রেখে বাস্তব আর প্রয়োজনের কাছে আত্মসমর্পণ করুন। সেটাই হবে দূরদর্শিতার মতো সিদ্ধান্ত।
লেখক : কবি, যুক্তরাষ্ট্র প্রবাসী সাংবাদিক
No comments