দূরে কোথাও by নুসরাত শাহ্পার
সবকিছু অন্ধকার মনে হয় মুনিয়ার। তবু
তড়িঘড়ি বিছানা থেকে উঠে মুখে একটু পানির ছিটা দিয়েই আলমারির দিকে এগোতে
থাকে। আলমারি থেকে নেওয়া কাপড়গুলো অনেকটা ছুড়েই স্যুটকেসে ফেলছে সে।
রাজ্যের রাগ যেন এই কাপড়গুলোর ওপর। হঠাৎ বিয়ের শাড়িটার দিকে হাত পড়তেই
অঝোর ধারায় কেঁদে উঠল। মা-বাবার অমতে মিলনকে ভালোবেসে বিয়ে করেছিল। মিলনের
পরিবারও মেনে নেয়নি এই বিয়ে। কত যে সুখের ছিল সেই দিনগুলো—আজ ভাবলেই অবাক
লাগে মুনিয়ার।
আগের দিনগুলোর সঙ্গে আজকের সময়টাকে কিছুতেই মেলাতে পারছে না মুনিয়া। কত কষ্টই না তাদের ছিল সে সময়। মিলনের অল্প বেতনের একটা চাকরি। যা আয় হয় তা দিয়ে চলে পুরো সংসার। মুনিয়া যদিও একটা পার্টটাইম চাকরি করত, কিন্তু তা দিয়ে নিজের পড়াশোনার খরচ চালাতেই হিমশিম খেতে হতো তাকে। তার পরও মিলনের জীবনে শুধু নিজের অস্তিত্বই সে খুঁজে পেত সব সময়। অথচ এক রাতেই কেমন করে যেন এলোমেলো হয়ে গেল সবকিছু।
গতকাল রাতে অফিস থেকে এসে মিলন একটা ডিভোর্স লেটার এনে মুনিয়ার সামনে দিয়ে তাতে সই করে দিতে বলল। মুনিয়ার সঙ্গে তার নাকি আর সংসার করা সম্ভব নয়। সে এখন অন্য একজনকে ভালোবেসে ফেলেছে। নিজের চোখ আর কানকে ঠিক বিশ্বাস করতে পারছিল না মুনিয়া। একি সেই মিলন, যাকে ভালোবেসে পরিবার, বাবা-মা আর বন্ধুবান্ধবের কাছ থেকে আজ সে অনেক দূরে চলে এসেছে! কী করেনি সে এই সংসারের জন্য। সন্তানের মতো করে আগলে রেখেছিল এই সংসার। সুখে-দুঃখে সব সময় তো সে মিলনের পাশে ছায়ার মতো ছিল! তাহলে কী এমন দোষ যে আজ সুখের দিনে তার আর কোনো প্রয়োজন নেই এই সংসারে! এই প্রশ্ন শুনে মিলন বলেছিল, ‘তোমার দোষ নেই মুনিয়া। দোষ আমার যে, আমার কাছে সেই মিতু আবারও ফিরে এসেছে। তোমার জায়গাটা এখন ও নিয়ে নিয়েছে।’ এ কথা শুনে কান-মাথা রীতিমতো ঝাঁ ঝাঁ করছিল তার। বুকের ভেতরটা কেমন গুমরে উঠছিল। যেন একটা ঘোর থেকে বের হয়ে এল মুনিয়া। মিলনের অতীত এখন বর্তমান হয়ে যে তার ভবিষ্যৎকে গহিন অন্ধকারে ঠেলে দিল, তা বুঝতে খুব একটা বেগ পেতে হলো না। একটা রাতেই কীভাবে পাল্টে গেল জীবন, দূরে সরে গেল প্রিয় মুখ; স্বপ্নের সংসার।
সকালে অফিসে চলে গেছে মিলন। ফিরতে ফিরতে রাত হবে। যাওয়ার সময় মিলনের মুখ দেখে নিজেকে সামলাতে পারবে না মুনিয়া। তাই ও আসার আগেই তাকে চলে যেতে হবে। দেরি না করে স্যুটকেসটা নিয়ে বেরিয়ে যাওয়ার সময় দেখল, রাত থেকেই টেবিলের ওপর ডিভোর্স লেটার পড়ে আছে। সই করা হয়নি। ঝটপট লেটারটাতে সই করেই বেরিয়ে পড়ল সে। হলুদ একটা ক্যাবে উঠে পড়ল। ড্রাইভার জিজ্ঞেস করল, ‘আপা কোথায় যাবেন?’ প্রশ্নটা শুনে সংবিৎ ফিরে পেল সে। কোথায় যাবে, কার কাছে যাবে তা তো তার জানা নেই। এই পৃথিবীতে আজ নিজেকে বড় একা লাগছে তার। বাধ্য হয়ে ড্রাইভারকে বলল, ‘আমার যাওয়ার তো কোনো ঠিকানা জানা নেই। এক কাজ করুন, আমাকে দূরে কোথাও নামিয়ে দিয়ে আসুন’—এ কথা বলেই ডুকরে কেঁদে উঠল মুনিয়া। আর সঙ্গে সঙ্গে গাড়ি স্টার্ট দিল ড্রাইভার।
আগের দিনগুলোর সঙ্গে আজকের সময়টাকে কিছুতেই মেলাতে পারছে না মুনিয়া। কত কষ্টই না তাদের ছিল সে সময়। মিলনের অল্প বেতনের একটা চাকরি। যা আয় হয় তা দিয়ে চলে পুরো সংসার। মুনিয়া যদিও একটা পার্টটাইম চাকরি করত, কিন্তু তা দিয়ে নিজের পড়াশোনার খরচ চালাতেই হিমশিম খেতে হতো তাকে। তার পরও মিলনের জীবনে শুধু নিজের অস্তিত্বই সে খুঁজে পেত সব সময়। অথচ এক রাতেই কেমন করে যেন এলোমেলো হয়ে গেল সবকিছু।
গতকাল রাতে অফিস থেকে এসে মিলন একটা ডিভোর্স লেটার এনে মুনিয়ার সামনে দিয়ে তাতে সই করে দিতে বলল। মুনিয়ার সঙ্গে তার নাকি আর সংসার করা সম্ভব নয়। সে এখন অন্য একজনকে ভালোবেসে ফেলেছে। নিজের চোখ আর কানকে ঠিক বিশ্বাস করতে পারছিল না মুনিয়া। একি সেই মিলন, যাকে ভালোবেসে পরিবার, বাবা-মা আর বন্ধুবান্ধবের কাছ থেকে আজ সে অনেক দূরে চলে এসেছে! কী করেনি সে এই সংসারের জন্য। সন্তানের মতো করে আগলে রেখেছিল এই সংসার। সুখে-দুঃখে সব সময় তো সে মিলনের পাশে ছায়ার মতো ছিল! তাহলে কী এমন দোষ যে আজ সুখের দিনে তার আর কোনো প্রয়োজন নেই এই সংসারে! এই প্রশ্ন শুনে মিলন বলেছিল, ‘তোমার দোষ নেই মুনিয়া। দোষ আমার যে, আমার কাছে সেই মিতু আবারও ফিরে এসেছে। তোমার জায়গাটা এখন ও নিয়ে নিয়েছে।’ এ কথা শুনে কান-মাথা রীতিমতো ঝাঁ ঝাঁ করছিল তার। বুকের ভেতরটা কেমন গুমরে উঠছিল। যেন একটা ঘোর থেকে বের হয়ে এল মুনিয়া। মিলনের অতীত এখন বর্তমান হয়ে যে তার ভবিষ্যৎকে গহিন অন্ধকারে ঠেলে দিল, তা বুঝতে খুব একটা বেগ পেতে হলো না। একটা রাতেই কীভাবে পাল্টে গেল জীবন, দূরে সরে গেল প্রিয় মুখ; স্বপ্নের সংসার।
সকালে অফিসে চলে গেছে মিলন। ফিরতে ফিরতে রাত হবে। যাওয়ার সময় মিলনের মুখ দেখে নিজেকে সামলাতে পারবে না মুনিয়া। তাই ও আসার আগেই তাকে চলে যেতে হবে। দেরি না করে স্যুটকেসটা নিয়ে বেরিয়ে যাওয়ার সময় দেখল, রাত থেকেই টেবিলের ওপর ডিভোর্স লেটার পড়ে আছে। সই করা হয়নি। ঝটপট লেটারটাতে সই করেই বেরিয়ে পড়ল সে। হলুদ একটা ক্যাবে উঠে পড়ল। ড্রাইভার জিজ্ঞেস করল, ‘আপা কোথায় যাবেন?’ প্রশ্নটা শুনে সংবিৎ ফিরে পেল সে। কোথায় যাবে, কার কাছে যাবে তা তো তার জানা নেই। এই পৃথিবীতে আজ নিজেকে বড় একা লাগছে তার। বাধ্য হয়ে ড্রাইভারকে বলল, ‘আমার যাওয়ার তো কোনো ঠিকানা জানা নেই। এক কাজ করুন, আমাকে দূরে কোথাও নামিয়ে দিয়ে আসুন’—এ কথা বলেই ডুকরে কেঁদে উঠল মুনিয়া। আর সঙ্গে সঙ্গে গাড়ি স্টার্ট দিল ড্রাইভার।
No comments