পবিত্র কোরআনের আলো-নবী-রাসুলগণ (আ.) বারবার বলেছেন আল্লাহর রহস্য বোঝা কঠিন
৭০. ফালাম্মা- জাহ্হাযাহুম বিজাহা-যিহিম
জা'আলাস সিকা-য়াতা ফী রাহলি আখীহি ছুম্মা আযযানা মুআযযিনুন আয়্যাতুহাল 'ঈরু
ইন্নাকুম লা সা-রিকূনা। সুরা ইউসুফ।
অনুবাদ : ৭০. এরপর
ইউসুফ যখন তাদের রসদপত্র প্রস্তুত করে দিলেন, তখন পানি পান করার পেয়ালা*
নিজের (সহোদর) ভাইয়ের রসদপত্রের মধ্যে গুঁজে রাখলেন। (এমন কৌশলের পর) একজন
ঘোষক ডেকে ডেকে বলল, হে কাফেলার লোকজন, অবশ্যই তোমরা চোর!*
তাফসির : * কোরআন শরিফে পাত্রটিকে আরেক জায়গায় 'আস সিকায়াতা' শব্দ দ্বারা এবং এখানে 'সুওয়া'আল মালিকি' শব্দদ্বয় দ্বারা বর্ণনা করা হয়েছে। প্রথম শব্দটির অর্থ, পানি পান করার পেয়ালা। দ্বিতীয় শব্দ দুটির মাধ্যমেও একই ধরনের অর্থ বোঝানো হয়। একে বাদশাহর সঙ্গে সম্পর্কিত করায় প্রমাণিত হয়, পাত্রটি অত্যন্ত মূল্যবান, আকর্ষণীয় ও ঐতিহ্যবাহী ছিল। বর্ণিত আছে, এটি 'যবরজদ' পাথর বা স্বর্ণ অথবা রুপার দ্বারা নির্মিত ছিল। বাদশাহ নিজে এটি ব্যবহার করতেন।
* তাদের মালপত্রের ভেতর নিজের পক্ষ থেকেই পেয়ালাটি গুঁজে রাখা হয়েছিল। এ ঘটনায় সন্দেহ করার কোনো সুযোগ বা প্রয়োজন ছিল না। তাই এ ঘটনায় প্রশ্ন জাগতে পারে, এতটা সন্দেহমুক্ত জানাশোনা থাকার পরও তাদের কিভাবে এবং কেন চোর সাব্যস্ত করা হলো? এটি জুলুম বা অবৈধ আচরণ কি না? এমন প্রশ্নের সম্ভাব্য বহু উত্তর তাফসিরের বিভিন্ন কিতাবে বরেণ্য মুফাসসিরে কোরআনগণ নিজেদের মতো করে তুলে ধরেছেন। একদল বলেছেন, হজরত ইউসুফ (আ.) পেয়ালাটি গুঁজে রেখেছিলেন খুবই গোপনে। পরে কর্মচারী প্রয়োজনের সময় খোঁজাখুঁজি করে না পেয়ে নিজেদের তরফ থেকেই তারা তাদের চোর সাব্যস্ত করেছিল। এই চোর সাব্যস্ত করার ঘটনাটি হজরত ইউসুফ (আ.)-এর নির্দেশে ঘটেনি। কোরআন শরিফের বর্ণনা ভঙ্গিতে এই ব্যাখ্যা অন্যরকম মনে হয়। আরেক দল মুফাসসিরে কোরআন বলেছেন, তাদের চোর সাব্যস্ত করা হয়েছিল মূলত অন্য একটি ঘটনার দিকে ইঙ্গিত করে। তা হলো, সৎ ভাইয়েরা হজরত ইউসুফ (আ.)-কে শৈশবে একবার বাবা ইয়াকুব (আ.)-এর কাছ থেকে চুরি করে নিয়ে গিয়েছিল। ওই কারণেই তাদের চোর বলে অভিযুক্ত করা হয়েছে। আরেক দলের ব্যাখ্যা হলো, সামনের ৭৬ নম্বর আয়াতে আলোচনা করা হয়েছে, এই কৌশলী ঘটনাটি আল্লাহ তায়ালাই হজরত ইউসুফ (আ.)-কে শিখিয়ে দিয়েছিলেন। তাই যা কিছু ঘটেছিল, সবই আল্লাহ তায়ালার হুকুমে ঘটেছিল। সুতরাং এ বিষয়ে অভিযোগ করা বা কোনো ধরনের প্রশ্ন তোলার সুযোগ নেই। এ ঘটনাটি সুরা কাহাফে উল্লিখিত হজরত খিজির (আ.)-এর জীবনে সংঘটিত ঘটনার মতোই ব্যতিক্রম বলে গণ্য করতে হবে; যা স্বাভাবিক দৃষ্টিতে শরিয়তবিরোধী মনে হলেও প্রকৃতপক্ষে তা নয়। আল্লাহ তায়ালার জটিল কঠিন অসংখ্য রহস্যের কয়টিই বা জানার ও বোঝার ক্ষমতা আছে মানুষের? তাঁর কুদরতের ব্যাখ্যা ও লক্ষ্য একমাত্র তিনিই ভালো জানেন। অনুগ্রহ করে যৎসামান্য শিক্ষা দিয়ে থাকেন, আমাদের জন্য এর বাইরে কিছুই বোঝার ক্ষমতা নেই। হজরত খিজির (আ.)-এর ঘটনাটির মতো এখানে উল্লিখিত হজরত ইউসুফ (আ.)-এর কাহিনীও তেমনি একটি ব্যতিক্রম নজির, যাকে আরবি ভাষায় তাকবিনি বলা হয়। মানে এটি আল্লাহ তায়ালার অদৃশ্য রহস্যজগতীয় ঘটনা।
তাফসিরে মাআরেফুল কোরআন ও তাওযিহুল কোরআন অবলম্বনে হাসানুল কাদির
তাফসির : * কোরআন শরিফে পাত্রটিকে আরেক জায়গায় 'আস সিকায়াতা' শব্দ দ্বারা এবং এখানে 'সুওয়া'আল মালিকি' শব্দদ্বয় দ্বারা বর্ণনা করা হয়েছে। প্রথম শব্দটির অর্থ, পানি পান করার পেয়ালা। দ্বিতীয় শব্দ দুটির মাধ্যমেও একই ধরনের অর্থ বোঝানো হয়। একে বাদশাহর সঙ্গে সম্পর্কিত করায় প্রমাণিত হয়, পাত্রটি অত্যন্ত মূল্যবান, আকর্ষণীয় ও ঐতিহ্যবাহী ছিল। বর্ণিত আছে, এটি 'যবরজদ' পাথর বা স্বর্ণ অথবা রুপার দ্বারা নির্মিত ছিল। বাদশাহ নিজে এটি ব্যবহার করতেন।
* তাদের মালপত্রের ভেতর নিজের পক্ষ থেকেই পেয়ালাটি গুঁজে রাখা হয়েছিল। এ ঘটনায় সন্দেহ করার কোনো সুযোগ বা প্রয়োজন ছিল না। তাই এ ঘটনায় প্রশ্ন জাগতে পারে, এতটা সন্দেহমুক্ত জানাশোনা থাকার পরও তাদের কিভাবে এবং কেন চোর সাব্যস্ত করা হলো? এটি জুলুম বা অবৈধ আচরণ কি না? এমন প্রশ্নের সম্ভাব্য বহু উত্তর তাফসিরের বিভিন্ন কিতাবে বরেণ্য মুফাসসিরে কোরআনগণ নিজেদের মতো করে তুলে ধরেছেন। একদল বলেছেন, হজরত ইউসুফ (আ.) পেয়ালাটি গুঁজে রেখেছিলেন খুবই গোপনে। পরে কর্মচারী প্রয়োজনের সময় খোঁজাখুঁজি করে না পেয়ে নিজেদের তরফ থেকেই তারা তাদের চোর সাব্যস্ত করেছিল। এই চোর সাব্যস্ত করার ঘটনাটি হজরত ইউসুফ (আ.)-এর নির্দেশে ঘটেনি। কোরআন শরিফের বর্ণনা ভঙ্গিতে এই ব্যাখ্যা অন্যরকম মনে হয়। আরেক দল মুফাসসিরে কোরআন বলেছেন, তাদের চোর সাব্যস্ত করা হয়েছিল মূলত অন্য একটি ঘটনার দিকে ইঙ্গিত করে। তা হলো, সৎ ভাইয়েরা হজরত ইউসুফ (আ.)-কে শৈশবে একবার বাবা ইয়াকুব (আ.)-এর কাছ থেকে চুরি করে নিয়ে গিয়েছিল। ওই কারণেই তাদের চোর বলে অভিযুক্ত করা হয়েছে। আরেক দলের ব্যাখ্যা হলো, সামনের ৭৬ নম্বর আয়াতে আলোচনা করা হয়েছে, এই কৌশলী ঘটনাটি আল্লাহ তায়ালাই হজরত ইউসুফ (আ.)-কে শিখিয়ে দিয়েছিলেন। তাই যা কিছু ঘটেছিল, সবই আল্লাহ তায়ালার হুকুমে ঘটেছিল। সুতরাং এ বিষয়ে অভিযোগ করা বা কোনো ধরনের প্রশ্ন তোলার সুযোগ নেই। এ ঘটনাটি সুরা কাহাফে উল্লিখিত হজরত খিজির (আ.)-এর জীবনে সংঘটিত ঘটনার মতোই ব্যতিক্রম বলে গণ্য করতে হবে; যা স্বাভাবিক দৃষ্টিতে শরিয়তবিরোধী মনে হলেও প্রকৃতপক্ষে তা নয়। আল্লাহ তায়ালার জটিল কঠিন অসংখ্য রহস্যের কয়টিই বা জানার ও বোঝার ক্ষমতা আছে মানুষের? তাঁর কুদরতের ব্যাখ্যা ও লক্ষ্য একমাত্র তিনিই ভালো জানেন। অনুগ্রহ করে যৎসামান্য শিক্ষা দিয়ে থাকেন, আমাদের জন্য এর বাইরে কিছুই বোঝার ক্ষমতা নেই। হজরত খিজির (আ.)-এর ঘটনাটির মতো এখানে উল্লিখিত হজরত ইউসুফ (আ.)-এর কাহিনীও তেমনি একটি ব্যতিক্রম নজির, যাকে আরবি ভাষায় তাকবিনি বলা হয়। মানে এটি আল্লাহ তায়ালার অদৃশ্য রহস্যজগতীয় ঘটনা।
তাফসিরে মাআরেফুল কোরআন ও তাওযিহুল কোরআন অবলম্বনে হাসানুল কাদির
No comments