ধর্ষকের সাজা হতেই হবে by খন্দকার মাহবুব হোসেন
কাপাসিয়ার সেই পশুদম্পতির দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি প্রয়োজন কাপাসিয়া উপজেলার আওয়ামী লীগ নেতার বিরুদ্ধে গৃহকর্মীকে ধর্ষণসহ পাশবিক নির্যাতনের অভিযোগ উঠেছে। এখন প্রশাসনের ওপর প্রভাব খাটিয়ে ঘটনা ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা চালানো হচ্ছে।
এ প্রসঙ্গে কালের কণ্ঠের কাছে প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেছেন বার কাউন্সিলের ভাইস চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট খন্দকার মাহবুব হোসেন এবং বিশিষ্ট রাজনীতিবিদ মাহমুদুর রহমান মান্নাগাজীপুর জেলার একজন সংসদ সদস্যের এপিএসের বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠেছে ধর্ষণ ও নারী নির্যাতনের। এ ধরনের সংবাদ অবশ্যই উদ্বেগজনক ও অপ্রত্যাশিত। আজ সারাদেশে নারী ও শিশু নির্যাতনের হার যেভাবে বেড়ে চলেছে তাকে এখনই নিয়ন্ত্রণে আনতে হবে। নতুবা সামাজিক অশান্তি নাগরিক জীবনকে দুর্বিষহ করে দেবে। বিভিন্ন সংবাদপত্রের খবর অনুযায়ী গত এক বছরে প্রায় সাড়ে পাঁচ হাজারের বেশি নারী নির্যাতনের শিকার হয়েছেন। এ নির্যাতন বিভিন্ন ধরনের। বেশির ভাগ ক্ষেত্রে দেখা যায়, নানারকম প্রলোভন দেখিয়ে বিশেষ করে বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে অল্প বয়সের মেয়েদের যৌন নির্যাতন করা হচ্ছে। আছে চাকরির প্রলোভন, বিদেশ পাঠানোর প্রলোভন, বিয়ের প্রলোভন ইত্যাদি। এর পরও রয়েছে পাশবিক নির্যাতন, অর্থাৎ ধর্ষণের নজির। এ ক্ষেত্রে শিশু থেকে বিবাহিত, বিধবা নারী কেউ বাদ পড়ছেন না। অথচ আমাদের দেশে এ নারী নির্যাতনের বিরুদ্ধে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান উচ্চকণ্ঠে প্রতিবাদ জানাচ্ছে এবং কোনো কোনো ক্ষেত্রে নির্যাতনের ব্যাপারে তারা নিজেদের উদ্যোগে আইনগত ব্যবস্থা নিচ্ছে। সরকারি পর্যায়ে ধর্ষণ, নারী নির্যাতন বন্ধ করার জন্য বিভিন্ন পর্যায়ে কঠিন আইন করা হয়েছে। কিন্তু আইন প্রয়োগের ক্ষেত্রে সরকারের দক্ষতা, বিশেষ করে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী, যারা ধর্ষণ ও নির্যাতনজনিত অপরাধে অপরাধীদের আদালতে সোপর্দ করবে, তাদের মানসিকতা এ ধরনের অপরাধ দমনের জন্য কতটা স্বচ্ছ এবং ইতিবাচক- এ ব্যাপারে প্রশ্ন রয়েছে। বর্তমানে যে ধরনের আইন রয়েছে এবং ধর্ষণজনিত অপরাধ প্রমাণের সুবিধার্থে ডিএনএ পরীক্ষা চালু হয়েছে। এতে করে পর বিচারপদ্ধতি সহজ হয়ে পড়েছে। তদন্তকারী কর্মকর্তা ডিএনএ টেস্টের মাধ্যমে অনায়াসে অপরাধীকে কাঠগড়ায় দাঁড় করাতে পারেন। কিন্তু আমরা দেখছি সহজ পদ্ধতিতে না গিয়ে দিনের পর দিন কালক্ষেপণ করা হয়। আবার বিচার শুরু হলে অযথা সরকারের পক্ষ থেকে সাক্ষী হাজির করা হয়। যার ফলে বিচার প্রলম্বিত হয়। দীর্ঘ সময়ে বিচারপ্রার্থী ও পরিবারের ওপর সমাজের প্রভাবশালী ব্যক্তিরা প্রভাব বিস্তার করে ধর্ষককে রক্ষা করার জন্য সচেষ্ট হন, এর ফলে সাক্ষীর কাঠগড়ায় সাক্ষী পাওয়া সম্ভব হয় না। অনেক ক্ষেত্রে বিচারক অসহায় হয়ে ধর্ষককে বেকসুর খালাস দেন। এর ফলে সাধারণ মানুষ নির্যাতন, ধর্ষণজনিত অপরাধের ব্যাপারে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী কিংবা আদালতে আসতে দ্বিধাগ্রস্ত হয়। এর ওপর সমাজের উঁচু স্তরের ব্যক্তি কর্তৃক সংঘটিত নারী-সংক্রান্ত কোনো অপরাধমূলক ঘটনা ক্ষমতা কিংবা অর্থের বিনিময়ে ধামাচাপা পড়ে যায়। তাই অপরাধকারী এ ধরনের নারীঘটিত জঘন্য অপরাধের ক্ষেত্রে উৎসাহিত বোধ করে। সর্বোপরি আমরা নারীঘটিত যেকোনো অপরাধকে অপরাধ হিসেবে যতটা গুরুত্ব দিই, এর চেয়ে অপরাধের যাঁরা শিকার হন তাঁদের সামাজিকভাবে হেয়প্রতিপন্ন করি বেশি। এবং তাঁদের পরিবারগুলো এই কারণে অপমানিত বোধ করে। ফলে বেশির ভাগ ক্ষেত্রে দেখা যায়, নারী-সংক্রান্ত অপরাধগুলো ধামাচাপা পড়ে যায়।
এ অবস্থা থেকে উত্তরণের জন্য কঠিন আইন করেই পরিত্রাণ পাওয়া যাবে না। আমাদের সামাজিক মূল্যবোধ পরিবর্তনের প্রয়োজন রয়েছে। আরেকটি কথা বলতে চাই, আমরা একটি রক্ষণশীল সমাজ থেকে বের হওয়ার পথে। তাই আমাদের সে কথা মনে রেখে পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে। আমাদের নারীসমাজকে অবশ্যই মনে রাখতে হবে এই রক্ষণশীল সমাজের আচরণ খুলে ফেলে বাইরে আসতে হলে তাদের মধ্যেও সতর্কতা বোধ থাকতে হবে। অবশ্যই আমরা আমাদের রক্ষণশীল আচরণ থেকে বের হয়ে আসব। আধুনিক হব। এ ব্যাপারে কোনো দ্বিমত নেই। তবে তা সহনীয় পর্যায়ে ধীরগতিতে
আসতে হবে।
কাপাসিয়ার একজন উঁচু স্তরের সরকারি দলের এমপির এপিএসের বিরুদ্ধে যে অভিযোগ এসেছে, তা অত্যন্ত জঘন্যতম। আমরা আশা করি, এটা ধামাচাপার চেষ্টা না করে সরকার উদ্যোগী হয়ে বিষয়টি যাতে বিচারিক আদালতে যায় এবং কথিত ধর্ষক যাতে সাজা পায় তার পদক্ষেপ নেবে। নতুবা এটি ভুল দৃষ্টান্ত হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হবে। তা কোনো অবস্থায় কাম্য হতে পারে না।
বিশেষ করে কাপাসিয়ায় সাম্প্রতিক যে ঘটনাটা ঘটেছে তা শুধু নির্মম নয়, তা আমাদের সামাজিক জীবনে দরিদ্র পরিবারের মেয়েদের অসহায়ত্বের প্রমাণ বহন করে। এই সুযোগ নিয়ে কারো কারো পশুবৃত্তি চরিতার্থ করা হচ্ছে। প্রভাবশালীরা যে কী আচরণ করতে পারে তার জ্বলন্ত দৃষ্টান্ত এটা।
এর বিরুদ্ধে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। আমি আশা করব, নারী সংগঠনগুলো এবং সাংবাদিক বন্ধুরা সোচ্চার হবেন, যাতে ভবিষ্যতে এ ধরনের জঘন্য অপরাধ আমাদের সমাজে প্রশ্রয় না পায়।
এ অবস্থা থেকে উত্তরণের জন্য কঠিন আইন করেই পরিত্রাণ পাওয়া যাবে না। আমাদের সামাজিক মূল্যবোধ পরিবর্তনের প্রয়োজন রয়েছে। আরেকটি কথা বলতে চাই, আমরা একটি রক্ষণশীল সমাজ থেকে বের হওয়ার পথে। তাই আমাদের সে কথা মনে রেখে পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে। আমাদের নারীসমাজকে অবশ্যই মনে রাখতে হবে এই রক্ষণশীল সমাজের আচরণ খুলে ফেলে বাইরে আসতে হলে তাদের মধ্যেও সতর্কতা বোধ থাকতে হবে। অবশ্যই আমরা আমাদের রক্ষণশীল আচরণ থেকে বের হয়ে আসব। আধুনিক হব। এ ব্যাপারে কোনো দ্বিমত নেই। তবে তা সহনীয় পর্যায়ে ধীরগতিতে
আসতে হবে।
কাপাসিয়ার একজন উঁচু স্তরের সরকারি দলের এমপির এপিএসের বিরুদ্ধে যে অভিযোগ এসেছে, তা অত্যন্ত জঘন্যতম। আমরা আশা করি, এটা ধামাচাপার চেষ্টা না করে সরকার উদ্যোগী হয়ে বিষয়টি যাতে বিচারিক আদালতে যায় এবং কথিত ধর্ষক যাতে সাজা পায় তার পদক্ষেপ নেবে। নতুবা এটি ভুল দৃষ্টান্ত হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হবে। তা কোনো অবস্থায় কাম্য হতে পারে না।
বিশেষ করে কাপাসিয়ায় সাম্প্রতিক যে ঘটনাটা ঘটেছে তা শুধু নির্মম নয়, তা আমাদের সামাজিক জীবনে দরিদ্র পরিবারের মেয়েদের অসহায়ত্বের প্রমাণ বহন করে। এই সুযোগ নিয়ে কারো কারো পশুবৃত্তি চরিতার্থ করা হচ্ছে। প্রভাবশালীরা যে কী আচরণ করতে পারে তার জ্বলন্ত দৃষ্টান্ত এটা।
এর বিরুদ্ধে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। আমি আশা করব, নারী সংগঠনগুলো এবং সাংবাদিক বন্ধুরা সোচ্চার হবেন, যাতে ভবিষ্যতে এ ধরনের জঘন্য অপরাধ আমাদের সমাজে প্রশ্রয় না পায়।
No comments