রাজধানীতে প্রিমিয়ার ব্যাংকের 'জেল', তিন কর্মকর্তা বন্দি! by শেখ শাফায়াত হোসেন
প্রিমিয়ার ব্যাংকের তিন শাখার তিন কর্মকর্তাকে রাজধানীর কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে খবর দিয়ে এনে আটক রাখা হয়েছে। অভিযোগ পেয়ে গতকাল শনিবার বনানী থানার ওসি ফোর্স নিয়ে বনানীর ইকবাল সেন্টারে অভিযানও চালান। তবে সুনির্দিষ্ট কোনো অভিযোগ না থাকায় পুলিশ শেষ পর্যন্ত কোনো ব্যবস্থা নেয়নি।
অভিযান চালানোর সময় প্রিমিয়ার ব্যাংকের চেয়ারম্যান ডা. এইচ বি এম ইকবাল পুলিশকে বলেন, 'হিসাব নিয়ে ঝামেলা হওয়ায় তিন কর্মকর্তাকে খবর দিয়ে এনে কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে রাখা হয়েছে। হিসাব মেলানো হয়ে গেলেই তাঁদের ছেড়ে দেওয়া হবে।' তিন কর্মকর্তার মধ্যে একজনকে গত ৫ জানুয়ারি এবং দুজনকে গত সপ্তাহ থেকে আটক রাখা হয়েছে বলে জানা যায়।
প্রিমিয়ার ব্যাংক লিমিটেডের অতিরিক্ত ব্যবস্থাপনা পরিচালক আবু হানিফ খান গতকাল কালের কণ্ঠকে বলেছেন, তাঁর জানা মতে একটি ঋণ অনিয়মের ঘটনাকে একজন কর্মকর্তাকে সেখানে আটক রাখা হয়েছে। এদিকে আটক ব্যাংক কর্মকর্তাদের পরিবার আতঙ্কে আছে। স্বজনরা বলছেন, আটককৃতদের অভুক্ত রেখে নির্যাতন করা হচ্ছে বলে তাঁরা জানতে পেরেছেন।
বনানী থানা জানায়, প্রিমিয়ার ব্যাংকের অতিরিক্ত ব্যবস্থাপনা পরিচালক আবু হানিফ খান গতকাল থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেন। জিডিতে ব্যাংকের মতিঝিল শাখায় ঋণ অনিয়মের অভিযোগে ছয়-সাতজন কর্মকর্তা-কর্মচারীর বিরুদ্ধে অভিযোগ আনা হয়। এ ব্যাপারে জানতে রাতে যোগাযোগ করা হলে আবু হানিফ খান কালের কণ্ঠকে বলেন, বনানী থানায় তিনি গতকালই একটি জিডি করেছেন। জিডিতে মতিঝিল শাখার সাবেক ব্যবস্থাপকসহ কয়েকজনকে অভিযুক্ত করা হয়েছে।
জানা যায়, গোপন সূত্রে খবর পেয়ে গতকাল শনিবার সকাল ১১টার দিকে রাজধানীর বনানীর ইকবাল সেন্টারে অভিযান চালায় বনানী থানার ওসি ভূঁইয়া মাহাবুব হাসানের নেতৃত্বে একটি দল। অভিযানের বিষয়টি নিশ্চিত করে ওসি গতকাল শনিবার সন্ধ্যায় কালের কণ্ঠকে বলেন, অভিযান চলাকালে পুলিশ দেখতে পায়, ভবনটির পৃথক দুটি কক্ষে তিন কর্মকর্তাকে আটক রাখা হয়েছে। তবে ব্যাংকের চেয়ারম্যান এইচ বি এম ইকবাল ঘটনাস্থলে এসে পুলিশকে বলেন, ওই তিন কর্মকর্তার বিরুদ্ধে ব্যাংকের ৮০ কোটি টাকার ঋণ-সংক্রান্ত অনিয়মের সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগ রয়েছে। ঋণের হিসাব মেলানোর সুবিধার জন্য ওই তিন কর্মকর্তাকে আটকে রাখা হয়েছে।
কর্মকর্তাদের উদ্ধার করা হলো না কেন জানতে চাইলে ওসি কালের কণ্ঠকে বলেন, 'তিন কর্মকর্তার কেউই পুলিশের কাছে অভিযোগ করেনি বলে আমরা কোনো ব্যবস্থা নিতে পারিনি।' ওসি আরো জানান, ব্যাংক কর্তৃপক্ষ আশ্বাস দিয়েছে, হিসাব মেলানোর পর নিয়ম অনুযায়ী পদক্ষেপ নেওয়া হবে। এরপর পুলিশ ঘটনাস্থল ত্যাগ করে। ওসি মাহবুব কালের কণ্ঠকে আরো বলেন, পুলিশের অভিযানের পর এক পর্যায়ে ব্যাংকের পক্ষ থেকে বনানী থানায় এসে একটি ডায়েরি করা হয়।
ইকবাল সেন্টারের ঘটনার বিষয়ে প্রিমিয়ার ব্যাংক লিমিটেডের অতিরিক্ত ব্যবস্থাপনা পরিচালক আবু হানিফ খান কালের কণ্ঠকে বলেন, 'আমার জানা মতে একজন কর্মকর্তাকে সেখানে আটক রাখা হয়েছে। সম্প্রতি প্রকাশিত একটি ঋণ অনিয়মের ঘটনাকে কেন্দ্র করে ব্যাংকের অভ্যন্তরীণ পরিদর্শনের কাজে সংশ্লিষ্ট শাখার একজন কর্মকর্তাকে সেখানে রাখা হয়েছে। অন্য দুজন কর্মকর্তা সম্পর্কে আমার কিছু জানা নেই।' তবে তাঁদের কোনো ধরনের নির্যাতন করা হচ্ছে না এবং নিয়মিত খাবার দেওয়া হচ্ছে বলে তিনি দাবি করেন।
জানা যায়, তিন কর্মকর্তার একজনকে গত ৫ জানুয়ারি, একজন ১৫ জানুয়ারি এবং আরেকজনকে ১৭ জানুয়ারি কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে ডেকে এনে আটক করা হয়। তবে বিষয়টি এত দিন গোপন রাখা হয়েছিল। গতকাল পুলিশের অভিযানের পরপরই এ বিষয়ে বনানী থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করেন ব্যাংকের চেয়ারম্যান। গত ১৫ জানুয়ারি যে কর্মকর্তাকে আটক করা হয় তিনি মতিঝিল শাখার সাবেক ব্যবস্থাপক। গতকাল শনিবার ওই শাখায় গিয়ে দেখা যায়, এ দায়িত্বে কে এম ইদ্রিস আলী ফকির নামে একজন কর্মকর্তাকে বসানো হয়েছে। কালের কণ্ঠের এক প্রশ্নের জবাবে ইদ্রিস আলী বলেন, তিনি গত সপ্তাহে এই পদে যোগ দিয়েছেন। আগের ব্যবস্থাপকের বিষয়ে তিনি কিছুই জানেন না বলে দাবি করেন। বাকি দুই কর্মকর্তার একজন বংশাল এবং অন্যজন ময়মনসিংহের এক শাখার কর্মকর্তা বলে জানা গেছে।
বনানীর ইকবাল সেন্টারে প্রিমিয়ার ব্যাংকের প্রধান কার্যালয়। জানা গেছে, তিন কর্মকর্তার দুজনকে শুক্রবার বেদম মারধর করা হয়েছে এবং ঠিকমতো খাবারও দেওয়া হয়নি বলে কর্মকর্তাদের পারিবারিক একটি সূত্র জানিয়েছে। নির্যাতনের কথা প্রকাশ পেলে ওই কর্মকর্তাদের ক্ষতি হবে- এই ভয়ে গণমাধ্যমে সরাসরি কোনো বক্তব্য দিতে রাজি হয়নি পারিবারিক ওই সূত্রটি।
পুলিশ ও প্রিমিয়ার ব্যাংকের একাধিক সূত্রে জানা গেছে, গত ৫ জানুয়ারি থেকে বংশাল শাখার ক্যাশ কর্মকর্তাকে ইকবাল সেন্টারে আটকে রাখা হয়েছে। ১৫ জানুয়ারি থেকে আটক আছেন মতিঝিল শাখার ব্যবস্থাপক। ১৭ জানুয়ারি থেকে আটক রয়েছেন ময়মনসিংহ শাখার ব্যবস্থাপক। ব্যাংকটির একটি সূত্রে জানা যায়, একটি ব্যবসায়ী গ্রুপকে ঋণ দেওয়াসহ আরো বেশ কিছু অভিযোগে এই তিন কর্মকর্তাকে ডেকে এনে আটকে রাখা হয়।
কোনো অভিযোগ ওঠার পর এভাবে ব্যাংকের কোনো কর্মকর্তাকে আটক করা যেতে পারে কি না জানতে চাইলে বাংলাদেশ ব্যাংকের মুখপাত্র নির্বাহী পরিচালক ম. মাহফুজুর রহমান গতকাল রাতে কালের কণ্ঠকে বলেন, 'ব্যাংক যেটা করছে, তারা সেটা কোনোভাবেই করতে পারে না। ব্যাংকের কোনো কর্মকর্তার বিরুদ্ধে ঋণ অনিয়মের অভিযোগ উঠলে সেটা আইনগতভাবে সমাধান করতে হবে। এর বাইরে গিয়ে ব্যাংক কর্তৃপক্ষ যদি নিজেদের মতো করে কোনো কিছু করার চেষ্টা করে তবে সেটা আইন হাতে তুলে নেওয়ার শামিল হবে।'
এদিকে আটক কর্মকর্তাদের জীবনের নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন তাঁদের সহকর্মী ও পরিবারের সদস্যরা। গতকাল সকালে প্রিমিয়ার ব্যাংকের মতিঝিল শাখায় গিয়ে সেখানকার কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, শাখাটিতে এক ধরনের থমথমে অবস্থা বিরাজ করছে।
আটক এক কর্মকর্তার স্বজনদের সূত্রে জানা গেছে, পুলিশে জানালে আটক কর্মকর্তার লাশ ফিরবে- এমন হুমকির পর তাঁরা মুখ খুলতেও সাহস পাচ্ছেন না। একজন স্বজন বলেন, 'অপরাধ করলে আইনগত ব্যবস্থা নিতেই পারে। কিন্তু সে কাজটি না করে ব্যাংক কর্তৃপক্ষ যা করছে তা আইন নিজের হাতে তুলে নেওয়ার শামিল।'
গতকাল শনিবার বিকেলে ইকবাল সেন্টারে গিয়ে ওই তিন কর্মকর্তার খোঁজ নিতে চেষ্টা করলে ভবনের নিরাপত্তাকর্মীরা প্রতিবেদককে বাধা দিয়ে বলেন, এ রকম কোনো কিছু তাঁদের জানা নেই। তবে ভবনে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের কয়েকজন কর্মকর্তা-কর্মচারীর সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, কয়েক দিন ধরে তিনজন লোককে ধরে এনে আটকে রাখা হয়েছে বলে কানাঘুষা শুনছেন। তাঁদের মধ্যে দুজনকে রাখা হয়েছে আট তলায় এবং একজনকে রাখা হয়েছে ৯ অথবা সাত তলায়। গতকাল ওই কর্মকর্তাদের খোঁজে পুলিশ এলে ঘটনাটি যাঁরা প্রত্যক্ষ করেছেন তাঁদের একজন নাম গোপন রাখার শর্তে কালের কণ্ঠকে বলেন, 'আট তলায় আটকে রাখা দুজনকে দেখে মনে হয়েছে তাঁদের মারধর করা হয়েছে।'
এ বিষয়ে ব্যাংকের চেয়ারম্যান ডা. এইচ বি এম ইকবাল ও ব্যবস্থাপনা পরিচালক কে এ এম মাজেদুর রহমানের সঙ্গে মোবাইল ফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলে তাঁদের কেউই ফোনকলে সাড়া দেননি। পরে তাঁদের খুদে বার্তাও (এসএমএস) পাঠানো হয়। এরও কোনো উত্তর দেননি তাঁরা।
প্রিমিয়ার ব্যাংক লিমিটেডের অতিরিক্ত ব্যবস্থাপনা পরিচালক আবু হানিফ খান গতকাল কালের কণ্ঠকে বলেছেন, তাঁর জানা মতে একটি ঋণ অনিয়মের ঘটনাকে একজন কর্মকর্তাকে সেখানে আটক রাখা হয়েছে। এদিকে আটক ব্যাংক কর্মকর্তাদের পরিবার আতঙ্কে আছে। স্বজনরা বলছেন, আটককৃতদের অভুক্ত রেখে নির্যাতন করা হচ্ছে বলে তাঁরা জানতে পেরেছেন।
বনানী থানা জানায়, প্রিমিয়ার ব্যাংকের অতিরিক্ত ব্যবস্থাপনা পরিচালক আবু হানিফ খান গতকাল থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেন। জিডিতে ব্যাংকের মতিঝিল শাখায় ঋণ অনিয়মের অভিযোগে ছয়-সাতজন কর্মকর্তা-কর্মচারীর বিরুদ্ধে অভিযোগ আনা হয়। এ ব্যাপারে জানতে রাতে যোগাযোগ করা হলে আবু হানিফ খান কালের কণ্ঠকে বলেন, বনানী থানায় তিনি গতকালই একটি জিডি করেছেন। জিডিতে মতিঝিল শাখার সাবেক ব্যবস্থাপকসহ কয়েকজনকে অভিযুক্ত করা হয়েছে।
জানা যায়, গোপন সূত্রে খবর পেয়ে গতকাল শনিবার সকাল ১১টার দিকে রাজধানীর বনানীর ইকবাল সেন্টারে অভিযান চালায় বনানী থানার ওসি ভূঁইয়া মাহাবুব হাসানের নেতৃত্বে একটি দল। অভিযানের বিষয়টি নিশ্চিত করে ওসি গতকাল শনিবার সন্ধ্যায় কালের কণ্ঠকে বলেন, অভিযান চলাকালে পুলিশ দেখতে পায়, ভবনটির পৃথক দুটি কক্ষে তিন কর্মকর্তাকে আটক রাখা হয়েছে। তবে ব্যাংকের চেয়ারম্যান এইচ বি এম ইকবাল ঘটনাস্থলে এসে পুলিশকে বলেন, ওই তিন কর্মকর্তার বিরুদ্ধে ব্যাংকের ৮০ কোটি টাকার ঋণ-সংক্রান্ত অনিয়মের সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগ রয়েছে। ঋণের হিসাব মেলানোর সুবিধার জন্য ওই তিন কর্মকর্তাকে আটকে রাখা হয়েছে।
কর্মকর্তাদের উদ্ধার করা হলো না কেন জানতে চাইলে ওসি কালের কণ্ঠকে বলেন, 'তিন কর্মকর্তার কেউই পুলিশের কাছে অভিযোগ করেনি বলে আমরা কোনো ব্যবস্থা নিতে পারিনি।' ওসি আরো জানান, ব্যাংক কর্তৃপক্ষ আশ্বাস দিয়েছে, হিসাব মেলানোর পর নিয়ম অনুযায়ী পদক্ষেপ নেওয়া হবে। এরপর পুলিশ ঘটনাস্থল ত্যাগ করে। ওসি মাহবুব কালের কণ্ঠকে আরো বলেন, পুলিশের অভিযানের পর এক পর্যায়ে ব্যাংকের পক্ষ থেকে বনানী থানায় এসে একটি ডায়েরি করা হয়।
ইকবাল সেন্টারের ঘটনার বিষয়ে প্রিমিয়ার ব্যাংক লিমিটেডের অতিরিক্ত ব্যবস্থাপনা পরিচালক আবু হানিফ খান কালের কণ্ঠকে বলেন, 'আমার জানা মতে একজন কর্মকর্তাকে সেখানে আটক রাখা হয়েছে। সম্প্রতি প্রকাশিত একটি ঋণ অনিয়মের ঘটনাকে কেন্দ্র করে ব্যাংকের অভ্যন্তরীণ পরিদর্শনের কাজে সংশ্লিষ্ট শাখার একজন কর্মকর্তাকে সেখানে রাখা হয়েছে। অন্য দুজন কর্মকর্তা সম্পর্কে আমার কিছু জানা নেই।' তবে তাঁদের কোনো ধরনের নির্যাতন করা হচ্ছে না এবং নিয়মিত খাবার দেওয়া হচ্ছে বলে তিনি দাবি করেন।
জানা যায়, তিন কর্মকর্তার একজনকে গত ৫ জানুয়ারি, একজন ১৫ জানুয়ারি এবং আরেকজনকে ১৭ জানুয়ারি কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে ডেকে এনে আটক করা হয়। তবে বিষয়টি এত দিন গোপন রাখা হয়েছিল। গতকাল পুলিশের অভিযানের পরপরই এ বিষয়ে বনানী থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করেন ব্যাংকের চেয়ারম্যান। গত ১৫ জানুয়ারি যে কর্মকর্তাকে আটক করা হয় তিনি মতিঝিল শাখার সাবেক ব্যবস্থাপক। গতকাল শনিবার ওই শাখায় গিয়ে দেখা যায়, এ দায়িত্বে কে এম ইদ্রিস আলী ফকির নামে একজন কর্মকর্তাকে বসানো হয়েছে। কালের কণ্ঠের এক প্রশ্নের জবাবে ইদ্রিস আলী বলেন, তিনি গত সপ্তাহে এই পদে যোগ দিয়েছেন। আগের ব্যবস্থাপকের বিষয়ে তিনি কিছুই জানেন না বলে দাবি করেন। বাকি দুই কর্মকর্তার একজন বংশাল এবং অন্যজন ময়মনসিংহের এক শাখার কর্মকর্তা বলে জানা গেছে।
বনানীর ইকবাল সেন্টারে প্রিমিয়ার ব্যাংকের প্রধান কার্যালয়। জানা গেছে, তিন কর্মকর্তার দুজনকে শুক্রবার বেদম মারধর করা হয়েছে এবং ঠিকমতো খাবারও দেওয়া হয়নি বলে কর্মকর্তাদের পারিবারিক একটি সূত্র জানিয়েছে। নির্যাতনের কথা প্রকাশ পেলে ওই কর্মকর্তাদের ক্ষতি হবে- এই ভয়ে গণমাধ্যমে সরাসরি কোনো বক্তব্য দিতে রাজি হয়নি পারিবারিক ওই সূত্রটি।
পুলিশ ও প্রিমিয়ার ব্যাংকের একাধিক সূত্রে জানা গেছে, গত ৫ জানুয়ারি থেকে বংশাল শাখার ক্যাশ কর্মকর্তাকে ইকবাল সেন্টারে আটকে রাখা হয়েছে। ১৫ জানুয়ারি থেকে আটক আছেন মতিঝিল শাখার ব্যবস্থাপক। ১৭ জানুয়ারি থেকে আটক রয়েছেন ময়মনসিংহ শাখার ব্যবস্থাপক। ব্যাংকটির একটি সূত্রে জানা যায়, একটি ব্যবসায়ী গ্রুপকে ঋণ দেওয়াসহ আরো বেশ কিছু অভিযোগে এই তিন কর্মকর্তাকে ডেকে এনে আটকে রাখা হয়।
কোনো অভিযোগ ওঠার পর এভাবে ব্যাংকের কোনো কর্মকর্তাকে আটক করা যেতে পারে কি না জানতে চাইলে বাংলাদেশ ব্যাংকের মুখপাত্র নির্বাহী পরিচালক ম. মাহফুজুর রহমান গতকাল রাতে কালের কণ্ঠকে বলেন, 'ব্যাংক যেটা করছে, তারা সেটা কোনোভাবেই করতে পারে না। ব্যাংকের কোনো কর্মকর্তার বিরুদ্ধে ঋণ অনিয়মের অভিযোগ উঠলে সেটা আইনগতভাবে সমাধান করতে হবে। এর বাইরে গিয়ে ব্যাংক কর্তৃপক্ষ যদি নিজেদের মতো করে কোনো কিছু করার চেষ্টা করে তবে সেটা আইন হাতে তুলে নেওয়ার শামিল হবে।'
এদিকে আটক কর্মকর্তাদের জীবনের নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন তাঁদের সহকর্মী ও পরিবারের সদস্যরা। গতকাল সকালে প্রিমিয়ার ব্যাংকের মতিঝিল শাখায় গিয়ে সেখানকার কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, শাখাটিতে এক ধরনের থমথমে অবস্থা বিরাজ করছে।
আটক এক কর্মকর্তার স্বজনদের সূত্রে জানা গেছে, পুলিশে জানালে আটক কর্মকর্তার লাশ ফিরবে- এমন হুমকির পর তাঁরা মুখ খুলতেও সাহস পাচ্ছেন না। একজন স্বজন বলেন, 'অপরাধ করলে আইনগত ব্যবস্থা নিতেই পারে। কিন্তু সে কাজটি না করে ব্যাংক কর্তৃপক্ষ যা করছে তা আইন নিজের হাতে তুলে নেওয়ার শামিল।'
গতকাল শনিবার বিকেলে ইকবাল সেন্টারে গিয়ে ওই তিন কর্মকর্তার খোঁজ নিতে চেষ্টা করলে ভবনের নিরাপত্তাকর্মীরা প্রতিবেদককে বাধা দিয়ে বলেন, এ রকম কোনো কিছু তাঁদের জানা নেই। তবে ভবনে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের কয়েকজন কর্মকর্তা-কর্মচারীর সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, কয়েক দিন ধরে তিনজন লোককে ধরে এনে আটকে রাখা হয়েছে বলে কানাঘুষা শুনছেন। তাঁদের মধ্যে দুজনকে রাখা হয়েছে আট তলায় এবং একজনকে রাখা হয়েছে ৯ অথবা সাত তলায়। গতকাল ওই কর্মকর্তাদের খোঁজে পুলিশ এলে ঘটনাটি যাঁরা প্রত্যক্ষ করেছেন তাঁদের একজন নাম গোপন রাখার শর্তে কালের কণ্ঠকে বলেন, 'আট তলায় আটকে রাখা দুজনকে দেখে মনে হয়েছে তাঁদের মারধর করা হয়েছে।'
এ বিষয়ে ব্যাংকের চেয়ারম্যান ডা. এইচ বি এম ইকবাল ও ব্যবস্থাপনা পরিচালক কে এ এম মাজেদুর রহমানের সঙ্গে মোবাইল ফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলে তাঁদের কেউই ফোনকলে সাড়া দেননি। পরে তাঁদের খুদে বার্তাও (এসএমএস) পাঠানো হয়। এরও কোনো উত্তর দেননি তাঁরা।
No comments