মালয়েশিয়া যেতে ১০ লাখ ২৪ হাজার কর্মীর রেজিস্ট্রেশন- চট্টগ্রাম ও খুলনা বিভাগের কার্যক্রম শুরু by ফিরোজ মান্না
মালয়েশিয়া যাওয়ার জন্য ৫ বিভাগে ১০ লাখ ২৪ হাজার কর্মী রেজিস্ট্রেশন করেছে। চট্টগ্রাম ও খুলনা বিভাগের রেজিস্ট্রেশন কার্যক্রম শুরু হয়েছে শনিবার থেকে। রেজিস্ট্রেশন চলবে আগামীকাল ২১ জানুয়ারি পর্যন্ত।
এরপর কম্পিউটারে ‘র্যান্ডম সিলেকশনের’ মাধ্যমে কর্মী নির্বাচিত করা হবে। ৫ বিভাগের কর্মী নির্বাচিত করা হয়েছে। অন্যদিকে, বাহরাইন থেকে নিহত বাংলাদেশী ১৩ শ্রমিকের লাশ আগামী মঙ্গলবার দেশে আনা হবে। এর আগে লাশ গ্রহণের জন্য সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের একটি প্রতিনিধিদল বাহরাইনে যাওয়ার কথা রয়েছে। প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান সচিব ড. জাফর আহমেদ খান জনকণ্ঠকে বলেন, মালয়েশিয়া যাওয়ার জন্য একজন কর্মী তার টাকা তিনিই খরচ করবেন। এখানে কোন মধ্যস্বত্ত্বভোগী থাকবে না। যারা সরকারের এ উদ্যোগকে সমালোচনা করছেন তারা বিষয়টি নিয়ে একটা মিথ্যাচার করে যাচ্ছেন। একজন কর্মী যখন মাত্র ৪০ হাজার টাকা খরচ করে মালয়েশিয়া যেতে পারবেন-তখন তাদের সমালোচনা করা মোটেই ঠিক হচ্ছে না। ইউনিয়ন তথ্য কেন্দ্রের মাধ্যমে ৫ বিভাগে ১০ লাখ ২৪ হাজার কর্মী নিবন্ধন করেছেন। কম্পিটারের মাধ্যমে লটারি করে তিন ধাপে ৩০ হাজার কর্মীকে মালয়েশিয়া পাঠানো হবে। প্রথম ধাপে ১০ হাজার কর্মী যাবেন। লটারিতে বিজয়ী প্রতিজন কর্মীকে সরকারী প্রশিক্ষণ কেন্দ্রে প্রশিক্ষণ দেয়া হবে। তারা মালয়েশিয়া গিয়ে যেন কোন প্রকার সমস্যায় না পড়েন। মালয়েশিয়া যেতে একজন কর্মীকে ৪০ হাজার টাকা খরচ করতে হবে। উড়োজাহাজ ভাড়ার (একপথ) জন্য শ্রমিকদের খরচ হবে ৩১ হাজার পাঁচশ টাকা। এছাড়া স্বাস্থ্য পরীক্ষার জন্য তিন হাজার পাঁচশ টাকা, কল্যাণ ফি ২৫০ টাকা, নন-জুডিশিয়াল স্ট্যাম্প তিনশ টাকা, ভিসা ফি এক হাজার একশ টাকা, সার্ভিস চার্জ দুই হাজার টাকা, আয়কর দুইশ টাকা, ওরিয়েন্টেশন ট্রেনিং এক হাজার টাকা এবং বিবিধ খরচ হিসেবে ধরা হয়েছে ১৫০ টাকা।প্রধানমন্ত্রী কার্যালয়ের (এটুআই) জনপ্রেক্ষিত বিশেষজ্ঞ নাঈমুজ্জামান মুক্তা জনকণ্ঠকে বলেন, শনিবার নাগাদ ১০ লাখ ২৪ হাজার কর্মী নিবন্ধন করেছে। এখন থেকে জন সংখ্যার আনুপাতিক হারে কর্মী নিবার্চিত করা হবে। সারাদেশে ইউনিয়ন পর্যন্ত লোকসংখ্যার অনুপাতে কর্মী নির্বাচনের সংখ্যা ধরা হয়েছে। ঢাকা ও বরিশাল বিভাগে ৪ লাখ ২৫ জন, রাজশাহীতে এক লাখ ৭৮ হাজার, রংপুর ২ লাখ ৩ হাজার ও সিলেট বিভাগে এক লাখ ১৩ হাজার কর্মীর নাম নিবন্ধিত হয়েছে। বাকি দুই বিভাগের রেজিস্ট্রেশন কাজ শনিবার থেকে শুরু হয়েছে। চলবে ২১ জানুয়ারি পর্যন্ত। এরপর লটারিতে বিজয়ীদের বিএমইটিতে প্রশিক্ষণের জন্য ডাকা হবে। বিএমইটি এ কাজের জন্য বুয়েটের সহযোগিতা নেবে। প্রধানমন্ত্রী কার্যালয়ের এক্সসেস টু ইনফরমেশনের (এটুআই) মাধ্যমে রেজিস্ট্রেশনের কাজ চলছে। এক থেকে দেড় মিনিটে এ ফরম পূরণ করে দেয়া হচ্ছে।
এদিকে, বাহরাইনের রাজধানী মানামায় একটি ভবনে অগ্নিকা-ে নিহত বাংলাদেশীদের মৃতদেহ আগামী মঙ্গলবার দেশে ফেরত আনা হচ্ছে। বাহরাইনে নিহত শ্রমিকদের সরকারের পক্ষ থেকে ক্ষতিপূরণ দেয়া হবে। তারা যে কোম্পানি কাজ করতেন সেই কোম্পানির কাছ থেকেও ক্ষতিপূরণের ব্যবস্থা করা হবে বলে প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রী ইঞ্জিনিয়ার খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেন। বাহরাইনে ১৩ কর্মী অগ্নিদগ্ধ হয়ে মারা যাওয়ার পরের দিন বাহরাইন পার্লামেন্টের সদস্য মোঃ ইউসুফ আল মাহমুদের নেতৃত্বে ৫ সদস্যবিশিষ্ট বাহরাইন পার্লামেন্টের এক প্রতিনিধিদল প্রবাসী কল্যাণমন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাত করেন। প্রতিনিধিদলের অন্যান্য সদস্য ছিলেন সংসদ সদস্য মোঃ সেলিম বুকাইস, খালিদ জসিম আলমালদসহ সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাবৃন্দ। প্রতিনিধিদল এ ঘটনায় মর্মাহত। সরকার নিহত শ্রমিকদের জন্য ক্ষতিপূরণের ব্যবস্থা করবেন।
No comments