সাইনবোর্ড-সর্বস্ব হাসপাতাল- নিমজ্জমান স্বাস্থ্যসেবা উদ্ধার করুন
জেলা-উপজেলা বা প্রত্যন্ত অঞ্চলের স্বাস্থ্যসেবার পরিস্থিতির পূর্ণাঙ্গ ছবি সচরাচর মেলে না। মাঝে মধ্যে বিভিন্ন অঘটনের সংবাদে বোঝা যায়, স্বাস্থ্যসেবা ও চিকিৎসার নামে অনেক স্থানেই রীতিমতো প্রহসন চলছে।
প্রশাসনের হাতের নাগালের বাইরে আছে বলে মফস্বলের অনেক ঘটনাকে খুব গুরুত্ব সহকারে বিবেচনা করা হয় না। কিন্তু ঢাকা শহরে প্রশাসনের নাকের ডগায় বসে যখন স্বাস্থ্য ও চিকিৎসা সেবার নামে প্রহসন চলতে থাকে, তখন একে কী বলা যায়? শনিবারের সমকালে পুরান ঢাকার কয়েকটি হাসপাতাল ও ক্লিনিক সম্পর্কে যে প্রতিবেদনগুচ্ছ প্রকাশিত হয়েছে, তা যে কাউকে হতাশ করবে। হাসপাতাল স্থাপনের নূ্যনতম যোগ্যতা, দক্ষতা যাদের নেই, তারা হাসপাতাল ও ক্লিনিক স্থাপন করে বসে আছে। সেবার মানসিকতা দূরে থাকুক, রোগীদের ঠকিয়ে, প্রতারণা করে টুপাইস কামানোর দিকেই তাদের ঝোঁক। এসব ক্লিনিক ও হাসপাতালে রোগীরা ভর্তি হয়ে সেরে উঠছেন, নাকি নতুন রোগ বাধিয়ে ঘরে ফিরছেন, সে প্রশ্ন ওঠাও সঙ্গত। খুব সাধারণ চোখেই এ হাসপাতালগুলোর বৈধতা নিয়ে প্রশ্ন উঠবে। স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তদারকির আওতায় এলে এগুলো বন্ধ হয়ে যাওয়ার কথা। বিস্ময়কর হলেও সত্য, সবার চোখের সামনে এই হাসপাতালগুলো ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছে। তদারকির কেউ নেই। কমিশনের বিনিময়ে লোক নিয়োগ করে সে লোকদের মারফত তারা রোগী সংগ্রহ করছে। নানা প্রতারণার আশ্রয় নিয়ে তারা রোগীদের এসব হাসপাতালে নিয়ে আসছে। সরলমনা, নিরুপায় রোগীরা প্রতারিত হচ্ছেন। আছে বাহারি সাইনবোর্ডও। কিন্তু সাইনবোর্ডের সঙ্গে বাস্তবের কোনো মিল নেই। ফলে চিকিৎসার্থীরা প্রতারিত হচ্ছেন প্রতিদিন। এ ধরনের হাসপাতাল, ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টার দিনের পর দিন চলতে পারে না। এগুলোকে নিয়মিত তদারকির মাধ্যমে হয় সংশোধন, নয়তো বন্ধ করে দিতে হবে। নইলে এগুলোর অস্তিত্ব মানুষকে নিয়মিতভাবে প্রতারিত করতে থাকবে। শুধু তাই নয়, দেশের স্বাস্থ্যসেবা সম্পর্কে একটা নেতিবাচক ধারণা তৈরির পেছনেও এ হাসপাতালগুলোর রয়েছে বিশেষ ভূমিকা। সারাদেশেই এ হাসপাতালগুলোর বিরুদ্ধে অভিযান পরিচালিত হওয়া উচিত। আমরা আশা করব, অযোগ্য, অদক্ষ, ভুয়া হাসপাতাল ও ক্লিনিকগুলোর বিরুদ্ধে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। প্রশাসনের নাকের ডগা থেকে অর্থাৎ ঢাকা থেকেই এ অভিযান শুরু হোক।
No comments