চোরাবালি চলচ্চিত্রে অভিনয় করে নিজেকে নতুনভাবে হাজির করেছেন শহীদুজ্জামান সেলিম। নতুন এই সেলিমের মুখোমুখি...- ‘আলী ওসমান’ ও খলনায়ক সেলিম by মেহেদী মাসুদ
২৩ সেপ্টেম্বর ২০১১। রাজধানীর পুরান ঢাকার রোজ গার্ডেন। শুরু হচ্ছে রেদওয়ান রনির প্রথম চলচ্চিত্র চোরাবালি ছবির শুটিং। ইউনিটের সবাই প্রস্তুত। শুরুতেই শুভেচ্ছা জানানোর পালা।
শুভেচ্ছা জানাতে এলেন হুমায়ুন ফরীদি। চোরাবালির অন্যতম একটি চরিত্র ‘আলী ওসমান’। এই চরিত্রে অভিনয় করছেন তিনি। তিনি বলেন, ‘হুমায়ুন ফরিদীর জন্ম হয়েছে চোরাবালি চলচ্চিত্রে অভিনয় করার জন্য।’
কিন্তু না, শুরুতেই শট দিতে গিয়ে অসুস্থ হয়ে যান হুমায়ুন ফরীদি। দ্বিতীয় দিনের শুটিংয়ে প্রথম শট দাবার একটি চাল দিতে হবে তাঁকে। না, এবারো পারলেন না। আরও বেশি অসুস্থ হয়ে পড়লেন। পড়ে যান মেঝেতে। ক্যামেরার পেছন থেকে তাঁর কাছে ছুটে যান পরিচালক রেদওয়ান রনি ও চিত্রগ্রাহক খায়ের খন্দকার।
এদিকে নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে শুটিং শেষ করতে হবে। কারণ, ছবির আরেকজন শিল্পী ইন্দ্রনীল ভারতে ফিরে যাবেন। ওদিকে শুটিংয়ের সময় বাড়ানোর কোনো উপায় নেই। কারণ, চোরবালির পর আরেকটি ধারাবাহিক নাটকের ইউনিট ঢুকবে রোজ গার্ডেনে। পরিচালককে এবার দ্রুত সিদ্ধান্ত নিতে হবে। হুমায়ুন ফরীদির পর তখন তাঁর সামনে ছিল শহীদুজ্জামান সেলিমের নামটি। প্রস্তাব নিয়ে তিনি ছুটলেন তাঁর বাসায়। ছবির চিত্রনাট্য পড়ার পর একমুহূর্ত দেরি করেননি সেলিম, রাজি হয়ে গেলেন।
এবার হুমায়ুন ফরীদির কাছ থেকে অনুমতি নিতে হবে। হুমায়ুন ফরিদীর বাসায় গেলেন পরিচালক, প্রযোজক ও চিত্রগ্রাহক। সেদিন হুমায়ুন ফরীদি নবীন পরিচালক রেদওয়ান রনিকে আশীর্বাদ করে বলেছিলেন, ‘এই মুহূর্তে ইন্ডাস্ট্রির জন্য চোরাবালির মতো চলচ্চিত্রের খুব দরকার। আমি কাজ করতে না পারলেও আমার শুভকামনা সব সময় চোরাবালির সঙ্গে আছে। তোমরা আবার কাজ শুরু করো।’
আলী ওসমান। শহীদুজ্জামান সেলিমের ভাষায়, ‘এই একটি মাত্র চরিত্র আমার জীবনের মোড় ঘুরিয়ে দিয়েছে।’
ঠিক তাই, দর্শক অনেক দিন চলচ্চিত্রে যে ধরনের খলনায়ক দেখেছিলেন, আলী ওসমান সেসব থেকে একেবারেই আলাদা। আর নিজের অভিনয়ক্ষমতা দিয়ে এই চরিত্রটিকে পুরোপুরি বাস্তব করে তুলেছেন শহীদুজ্জামান সেলিম।
চোরাবালি ছবিটি প্রেক্ষাগৃহে মুক্তি পেয়েছে ২০১২ সালের ২১ ডিসেম্বর। পরদিন ঢাকা থিয়েটারের দ্য টেম্পেস্ট নাটকের প্রদর্শনী হয় ভারতের কলকাতায় একাডেমি অব ফাইন আর্টসে, নান্দিকার আয়োজিত জাতীয় নাট্যোৎসবে। এই নাটকে অভিনয় করেছেন সেলিম। কলকাতা থেকে তিনি দেশে ফেরেন ২৫ ডিসেম্বর। পরদিন চলে যান কক্সবাজারে। সেখানে সমুদ্রসৈকতে ২৮ ডিসেম্বর দ্য টেম্পেস্ট এবং পরদিন ২৯ ডিসেম্বর রামুতে ধাবমান নাটকের প্রদর্শনীতে অংশ নেন তিনি। ঢাকায় ফিরে আসেন ৩০ ডিসেম্বর সন্ধ্যায়। কথা ছিল, ওই দিন সন্ধ্যায় স্টার সিনেপ্লেক্সে বন্ধুদের সঙ্গে চোরাবালি ছবিটি দেখবেন। কিন্তু ফিরতে দেরি হওয়ায় তা সম্ভব হয়নি। ওই রাতেই তাঁর বাসায় তাঁর সঙ্গে কথা হয় ছবিটি নিয়ে। আড্ডার শুরুতেই প্রয়াত হুমায়ুন ফরীদির প্রতি শ্রদ্ধা জানান তিনি।
১৩৯ মিনিটের ছবি চোরাবালি। এর মধ্যে পর্দায় আলী ওসমানের উপস্থিতি ৬৭ মিনিট। এই পুরো সময়টায় দর্শক মুগ্ধ হয়ে দেখেছেন একজন নতুন খলনায়কের অভিনয়। সেলিমের ভাষায়, ‘একটা ছবিতে মুখ্য চরিত্রে অভিনয় করেন নায়ক-নায়িকা। কিন্তু চোরাবালি ছবিতে মুখ্য চরিত্র আলী ওসমান—একজন খলনায়ক।’
শহীদুজ্জামান সেলিমের খুব প্রিয় একটি ছবি দ্য গডফাদার। কতবার যে ছবিটি তিনি দেখেছেন, এর কোনো হিসাব নেই। ছবিতে মার্লোন ব্র্যান্ডো আর আল পাচিনোর অভিনয় মুগ্ধ হয়ে দেখেছেন তিনি। কিন্তু কখনোই ভাবেননি, একদিন একজন গডফাদারের চরিত্রে তাঁকেই অভিনয় করতে হবে।
ক্লান্ত শহীদুজ্জামান সেলিমকে বিশ্রাম নেওয়ার জন্য ছাড়তে হবে।
তিনি বললেন, ‘আমি এ পর্যন্ত কয়েকটি ছবিতে অভিনয় করেছি—এর মধ্যে মুক্তি পেয়েছে নাসির উদ্দিন ইউসুফের একাত্তরের যীশু, আব্দুল্লাহ আল মামুনের বিহঙ্গ, মোস্তফা সরয়ার ফারুকীর মেড ইন বাংলাদেশ, মুরাদ পারভেজের চন্দ্রগ্রহণ। সোহেল আরমানের এই তো প্রেম আর চাষী নজরুল ইসলামের দেবদাস এখনো মুক্তি পায়নি। চোরাবালির সাফল্যের পর আমি চলচ্চিত্রে ঝাঁপিয়ে পড়ব? মোটেও না। আমার কাঁড়ি কাঁড়ি টাকার প্রয়োজন নেই। মঞ্চ আমার কাছে বিরাট প্ল্যাটফর্ম। থিয়েটার করেও ভালো ছবি করা যায়, ভালো নাটক করা যায়। আমার পরবর্তী ছবির চরিত্র ইতিবাচক না নেতিবাচক হবে, জানি না; তবে তা কেন্দ্রীয় চরিত্র হতে হবে। তবেই করব।’
কিন্তু না, শুরুতেই শট দিতে গিয়ে অসুস্থ হয়ে যান হুমায়ুন ফরীদি। দ্বিতীয় দিনের শুটিংয়ে প্রথম শট দাবার একটি চাল দিতে হবে তাঁকে। না, এবারো পারলেন না। আরও বেশি অসুস্থ হয়ে পড়লেন। পড়ে যান মেঝেতে। ক্যামেরার পেছন থেকে তাঁর কাছে ছুটে যান পরিচালক রেদওয়ান রনি ও চিত্রগ্রাহক খায়ের খন্দকার।
এদিকে নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে শুটিং শেষ করতে হবে। কারণ, ছবির আরেকজন শিল্পী ইন্দ্রনীল ভারতে ফিরে যাবেন। ওদিকে শুটিংয়ের সময় বাড়ানোর কোনো উপায় নেই। কারণ, চোরবালির পর আরেকটি ধারাবাহিক নাটকের ইউনিট ঢুকবে রোজ গার্ডেনে। পরিচালককে এবার দ্রুত সিদ্ধান্ত নিতে হবে। হুমায়ুন ফরীদির পর তখন তাঁর সামনে ছিল শহীদুজ্জামান সেলিমের নামটি। প্রস্তাব নিয়ে তিনি ছুটলেন তাঁর বাসায়। ছবির চিত্রনাট্য পড়ার পর একমুহূর্ত দেরি করেননি সেলিম, রাজি হয়ে গেলেন।
এবার হুমায়ুন ফরীদির কাছ থেকে অনুমতি নিতে হবে। হুমায়ুন ফরিদীর বাসায় গেলেন পরিচালক, প্রযোজক ও চিত্রগ্রাহক। সেদিন হুমায়ুন ফরীদি নবীন পরিচালক রেদওয়ান রনিকে আশীর্বাদ করে বলেছিলেন, ‘এই মুহূর্তে ইন্ডাস্ট্রির জন্য চোরাবালির মতো চলচ্চিত্রের খুব দরকার। আমি কাজ করতে না পারলেও আমার শুভকামনা সব সময় চোরাবালির সঙ্গে আছে। তোমরা আবার কাজ শুরু করো।’
আলী ওসমান। শহীদুজ্জামান সেলিমের ভাষায়, ‘এই একটি মাত্র চরিত্র আমার জীবনের মোড় ঘুরিয়ে দিয়েছে।’
ঠিক তাই, দর্শক অনেক দিন চলচ্চিত্রে যে ধরনের খলনায়ক দেখেছিলেন, আলী ওসমান সেসব থেকে একেবারেই আলাদা। আর নিজের অভিনয়ক্ষমতা দিয়ে এই চরিত্রটিকে পুরোপুরি বাস্তব করে তুলেছেন শহীদুজ্জামান সেলিম।
চোরাবালি ছবিটি প্রেক্ষাগৃহে মুক্তি পেয়েছে ২০১২ সালের ২১ ডিসেম্বর। পরদিন ঢাকা থিয়েটারের দ্য টেম্পেস্ট নাটকের প্রদর্শনী হয় ভারতের কলকাতায় একাডেমি অব ফাইন আর্টসে, নান্দিকার আয়োজিত জাতীয় নাট্যোৎসবে। এই নাটকে অভিনয় করেছেন সেলিম। কলকাতা থেকে তিনি দেশে ফেরেন ২৫ ডিসেম্বর। পরদিন চলে যান কক্সবাজারে। সেখানে সমুদ্রসৈকতে ২৮ ডিসেম্বর দ্য টেম্পেস্ট এবং পরদিন ২৯ ডিসেম্বর রামুতে ধাবমান নাটকের প্রদর্শনীতে অংশ নেন তিনি। ঢাকায় ফিরে আসেন ৩০ ডিসেম্বর সন্ধ্যায়। কথা ছিল, ওই দিন সন্ধ্যায় স্টার সিনেপ্লেক্সে বন্ধুদের সঙ্গে চোরাবালি ছবিটি দেখবেন। কিন্তু ফিরতে দেরি হওয়ায় তা সম্ভব হয়নি। ওই রাতেই তাঁর বাসায় তাঁর সঙ্গে কথা হয় ছবিটি নিয়ে। আড্ডার শুরুতেই প্রয়াত হুমায়ুন ফরীদির প্রতি শ্রদ্ধা জানান তিনি।
১৩৯ মিনিটের ছবি চোরাবালি। এর মধ্যে পর্দায় আলী ওসমানের উপস্থিতি ৬৭ মিনিট। এই পুরো সময়টায় দর্শক মুগ্ধ হয়ে দেখেছেন একজন নতুন খলনায়কের অভিনয়। সেলিমের ভাষায়, ‘একটা ছবিতে মুখ্য চরিত্রে অভিনয় করেন নায়ক-নায়িকা। কিন্তু চোরাবালি ছবিতে মুখ্য চরিত্র আলী ওসমান—একজন খলনায়ক।’
শহীদুজ্জামান সেলিমের খুব প্রিয় একটি ছবি দ্য গডফাদার। কতবার যে ছবিটি তিনি দেখেছেন, এর কোনো হিসাব নেই। ছবিতে মার্লোন ব্র্যান্ডো আর আল পাচিনোর অভিনয় মুগ্ধ হয়ে দেখেছেন তিনি। কিন্তু কখনোই ভাবেননি, একদিন একজন গডফাদারের চরিত্রে তাঁকেই অভিনয় করতে হবে।
ক্লান্ত শহীদুজ্জামান সেলিমকে বিশ্রাম নেওয়ার জন্য ছাড়তে হবে।
তিনি বললেন, ‘আমি এ পর্যন্ত কয়েকটি ছবিতে অভিনয় করেছি—এর মধ্যে মুক্তি পেয়েছে নাসির উদ্দিন ইউসুফের একাত্তরের যীশু, আব্দুল্লাহ আল মামুনের বিহঙ্গ, মোস্তফা সরয়ার ফারুকীর মেড ইন বাংলাদেশ, মুরাদ পারভেজের চন্দ্রগ্রহণ। সোহেল আরমানের এই তো প্রেম আর চাষী নজরুল ইসলামের দেবদাস এখনো মুক্তি পায়নি। চোরাবালির সাফল্যের পর আমি চলচ্চিত্রে ঝাঁপিয়ে পড়ব? মোটেও না। আমার কাঁড়ি কাঁড়ি টাকার প্রয়োজন নেই। মঞ্চ আমার কাছে বিরাট প্ল্যাটফর্ম। থিয়েটার করেও ভালো ছবি করা যায়, ভালো নাটক করা যায়। আমার পরবর্তী ছবির চরিত্র ইতিবাচক না নেতিবাচক হবে, জানি না; তবে তা কেন্দ্রীয় চরিত্র হতে হবে। তবেই করব।’
No comments