শওকত ওসমান স্মরণে আলোচনা মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরে- সংস্কৃতি সংবাদ
বাংলা সাহিত্যের অন্যতম কথাসাহিত্যিক শওকত ওসমানের ৯৭তম জন্মদিন উপলক্ষে মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরে বুধবার বিকেলে এক স্মরণসভা অনুষ্ঠিত হয়। শওকত ওসমান স্মৃতি পরিষদ আয়োজিত এ সভায় বক্তব্য রাখেন কথাসাহিত্যিক-শিল্পী বুলবন ওসমান, আন্দালিব রাশদী, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বাস্তবায়ন সচিব রফিকুল ইসলাম ও মনসুর মুসা।
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন রবীন্দ্র গবেষক, কবি ও কলামিস্ট আহমদ রফিক। শুরুতে স্বাগত বক্তব্য রাখেন পরিষদের সাধারণ সম্পাদক ডা. রাকিবুল ইসলাম লিটু। স্মৃতিচারণ করে বক্তব্য রাখেন লেখকের দুই ছেলে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী ইয়াফেস ওসমান ও বুলবন ওসমান। তাঁরা বলেন, আমাদের ছেলেবেলায় বাড়িতে বাবা যেমন কঠোর ছিলেন, বন্ধুমহলে ততটা ছিলেন না। তাঁর মধ্যে যতটা শিল্পবোধ ছিল, তারচেয়ে বেশি ছিল সমাজ সচেতনতাবোধ। তাঁর মধ্যে প্রথম থেকেই বামপন্থী চিন্তাটা প্রবল ছিল। তিনি যেমন ছিলেন নজরুল অনুসারী তেমনি রবীন্দ্র প্রভাবও তাঁর মধ্যে বিশেষ স্থান দখল করে ছিল। তাঁর গুণগুলো ছিল অসম্ভব মানবিক। শোষকের বিরুদ্ধে তিনি ছিলেন সোচ্চার। কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ সম্পর্কে তিনি বলতেন, ‘আমার কাছে এক ঠাকুর রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর।’ বাবা একজন দক্ষ রাজনীতিবিদও ছিলেন। হয়ত সাংসারিক নানা টানাপড়েনের কারণে তিনি সক্রিয় হয়ে রাজনীতি করেননি। রাজনৈতিক বিশ্লেষণ করার খুব প্রবণতা ছিল তাঁর। জীবন সায়াহ্নে এসে সমাজের অন্যায় অবিচারের বিরুদ্ধে সরাসরি আঘাত করেছেন তিনি। ধর্মীয় গোড়ামির বিরুদ্ধে তাঁর কলম ছিল সোচ্চার। তিনি চেয়েছিলেন মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বাংলাদেশ গড়ে উঠুক।সভায় অন্য বক্তারা বলেন, আমরা অধিকাংশ মানুষ সমাজকে উপর থেকে দেখি, কিন্তু শওকত ওসমান এই সমাজকে নিচ থেকেও দেখেছেন। যাঁরা তাঁর লেখা পড়েছেন, তাঁরাই জানেন কেমন ক্ষুরধার তাঁর লেখনী। তিনি নিজের ব্যর্থতাকে যেমন তুলে ধরেছেন তাঁর লেখায়, তেমনি অন্যেরটাও লিখতে ছাড়েননি। শওকত ওসমানের লেখা, চিন্তা ও ভাবনা ছিল একজন পূর্ণাঙ্গ রাজনীতিকের মতো।
শেষ হলো কলিম শরাফী নাট্যোৎসব ॥ নাগরিক নাট্যাঙ্গন অনসাম্বল আয়োজিত ‘ভরা থাক স্মৃতি সুধায় কলিম শরাফী নাট্যোৎসব’-এর শেষ দিন ছিল বুধবার। শিল্পকলা একাডেমীর জাতীয় নাট্যশালায় সন্ধ্যায় এ উপলক্ষে এক আলোচনানুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। পরে আব্দুল্লাহ্ আল মামুন রচিত মুক্তিযুদ্ধের নাটক ‘বিবিসাব’-এর শততম মঞ্চায়ন হয়। অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন আইটিআই সভাপতি রামেন্দু মজুমদার, সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটের সভাপতি নাসির উদ্দিন ইউসুফ, নাট্যজন মামুনুর রশীদ, বাংলাদেশ গ্রুপ থিয়েটার ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক ঝুনা চৌধুরী প্রমুখ। সভায় বক্তারা বলেন, ব্যক্তি জীবনে শিল্পী কলিম শরাফীর শুরুটা ছিল নাট্যাঙ্গনের মাধ্যমে, যদিও পরবর্তীতে এই মহান ব্যক্তি পরিচিতি লাভ করেন সঙ্গীত শিল্পী হিসেবে। তাঁকে নিয়ে নাট্যোৎসব করা নিঃসন্দেহে প্রসংসার দাবি রাখে।
বাউল কাসেমের সঙ্গীত সন্ধ্যা ॥ শিল্পকলা একাডেমীর সঙ্গীত ও নৃত্যকলা কেন্দ্র মিলনায়তনে বুধবার সন্ধ্যায় অনুষ্ঠিত হয় শিল্পী বাউল কাশেমের একক সঙ্গীতের আসর। বাংলার বাউল সাংস্কৃতিক দল আয়োজিত এ অনুষ্ঠানে শিল্পী কাসেম পরিবেশন করে লালনগীতি, বিজয় সরকারের গানসহ বিভিন্ন বাউল সঙ্গীত। শিল্পী একাধারে প্রায় দেড় ঘণ্টা প্রথিতযশা বাউল শিল্পীদের গান পরিবেশন করে শ্রোতাদের মন্ত্রমুগ্ধ করে রাখেন। অনুষ্ঠানে শিল্পী স্বরচিত কিছু গানও পরিবেশন করেন।
No comments