শিক্ষা- জিপিএ-৫ পাওয়াই সব নয় by শেখ হাফিজুর রহমান ও ফারহানা হেলাল মেহতাব
গত ২৭ ডিসেম্বর প্রকাশিত হয়েছে প্রাথমিক শিক্ষা সমাপনী ও জুনিয়র স্কুল সার্টিফিকেট (জেএসসি) পরীক্ষার ফলাফল। ২৮ ডিসেম্বরের পত্রিকার পাতাজুড়ে ওই পরীক্ষাগুলোর ফলাফলের খবর, আর সঙ্গে শিশু ও কিশোর-কিশোরীদের মনজুড়ানো সব ছবি।
বাচ্চাদের এবং মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক পর্যায়ের শিক্ষার্থীদের এমন হাসিমুখই আমরা দেখতে চাই। প্রাণচাঞ্চল্যে ভরা শিশু ও কিশোরদের হাসিমুখই তো আমাদের সামনে চলার প্রেরণা! কিন্তু যখন দেখি জিপিএ-৫ পাওয়া শিক্ষার্থীরা ভালো শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ভর্তি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হতে পারছে না, জিপিএ-৫ পাওয়া অনেক শিক্ষার্থী বাংলা ও ইংরেজিতে শুদ্ধ করে বাক্য রচনা করতে পারে না, তখন বুঝতে পারি, আমাদের প্রাথমিক থেকে উচ্চমাধ্যমিক পর্যায়ের শিক্ষায় গুরুতর গলদ রয়ে গেছে।
২০১২ সালের ১৮ জুলাই প্রকাশিত উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষায় পাসের হার ছিল ৭৬ দশমিক ৫০ শতাংশ এবং ওই পরীক্ষায় জিপিএ-৫ পেয়েছিল ৫১ হাজার ৪৬৯ জন শিক্ষার্থী। ২৭ ডিসেম্বর প্রকাশিত প্রাথমিক শিক্ষা সমাপনী পরীক্ষায় পাসের হার ৯৭ দশমিক ২৫ শতাংশ। এ পরীক্ষায় জিপিএ-৫ পেয়েছে দুই লাখ ৩৩ হাজার ১৪০ জন। ওই একই দিন প্রকাশিত জুনিয়র স্কুল সার্টিফিকেট (জেএসসি) পরীক্ষায় পাসের হার ৮৬ দশমিক ১১ শতাংশ। এ পরীক্ষায় জিপিএ-৫ পেয়েছে ৪৪ হাজার ১৫৮ জন।
পাসের হার বেশি হলে সমস্যা নেই, আমরা তাতে আনন্দিত। কিন্তু প্রকৃত অবস্থা সম্পর্কে ওয়াকিবহাল বলে আনন্দে উল্লসিত হতে পারি না, বরং ভয়ে ও শঙ্কায় বুক কেঁপে ওঠে। উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষার ফলাফলের কথাই ধরুন না কেন। এ পরীক্ষায় জিপিএ-৫ পেলেন ৫১ হাজার ৪৬৯ জন শিক্ষার্থী, অথচ এঁদের মধ্যে যাঁরা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষায় অংশ নিলেন, তাঁদের মধ্যে ৫৫ শতাংশ পাসই করতে পারলেন না।
কয়েক মাস আগে ভর্তি পরীক্ষা ছাড়াই উচ্চমাধ্যমিকের ফলাফলের ভিত্তিতে মেডিকেলে ভর্তির সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হলে, মেডিকেল কলেজের সাধারণ শিক্ষার্থীরা ওই সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে রাস্তায় নেমে এসেছিলেন। দিনের পর দিন প্রতিবাদ, বিক্ষোভ ও সড়ক অবরোধ করে মেডিকেল কলেজের সাধারণ শিক্ষার্থীরা ওই সরকারি সিদ্ধান্ত রদ করেছিলেন। আমাদের বিবেচনায় ওটি ছিল অভূতপূর্ব একটি ঘটনা। আমরা মেডিকেল কলেজের সাধারণ শিক্ষার্থীদের এ জন্য অভিবাদন ও অভিনন্দন জানাই। কেননা, মেডিকেল, বুয়েট, ঢাকা, চট্টগ্রাম, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়সহ পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলোয় যে ভর্তি পরীক্ষা নেওয়া হয়, কিছু সীমাবদ্ধতা সত্ত্বেও তাতে মোটামুটি মান যাচাই-বাছাই হয়। সে জন্য পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় এবং মেডিকেল ও বুয়েট থেকে যাঁরা পড়াশোনা শেষ করে সরকারি বা বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে কাজ করেন বা উচ্চশিক্ষার্থে বিদেশে পাড়ি দেন, তাঁদের মধ্যে মান ও দক্ষতার প্রতিফলন দেখা যায়। আমরা চাইব না, পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলো, মেডিকেল ও বুয়েট ভর্তি পরীক্ষা ছাড়া কোনো ছাত্রছাত্রী ভর্তি করুক। কেননা, প্রাথমিক থেকে উচ্চমাধ্যমিক পর্যন্ত নীতিনির্ধারকেরা এখন যে নীতি গ্রহণ করেছেন, তা হচ্ছে পরীক্ষা দিলেই পাস করিয়ে দাও, আর সবাইকে জিপিএ-৫ দিয়ে দাও। এ অবস্থায় মেডিকেল, বুয়েট, কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় ও পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি পরীক্ষার মাধ্যমে মান যাচাই-বাছাইয়ের ব্যবস্থা না থাকলে শিক্ষার মানাবনতি ঠেকানো যাবে না।
পাসের হার বেশি দেখিয়ে এবং অধিকসংখ্যক শিক্ষার্থীকে জিপিএ-৫ প্রদান করার ব্যবস্থা করে সরকারের শিক্ষাবিষয়ক নীতিনির্ধারকেরা কী উদ্দেশ্য অর্জন করতে চান? বড় দাগে দুটি বিবেচনা থাকতে পারে। এক. খুদে ও তরুণ শিক্ষার্থী ও তাদের অভিভাবকদের চাপমুক্ত রাখা। দুই. পাসের উচ্চহার ও অধিকসংখ্যক জিপিএ-৫ প্রদানের মাধ্যমে শিক্ষাক্ষেত্রে সহস্রাব্দ উন্নয়ন লক্ষ্য অর্জন করা। পাসের হার বেশি দেখিয়ে এবং অধিকসংখ্যক শিক্ষার্থীকে জিপিএ-৫ প্রদান করে শিক্ষার্থী এবং অভিভাবকদের খুশি করা এবং ওই একই পরিসংখ্যানের বলে সহস্রাব্দ উন্নয়ন লক্ষ্য অর্জন এ দুটো নীতিই ভুল। কেননা, জিপিএ-৫-এর যোগ্য না হয়েও যারা জিপিএ-৫ পাচ্ছে, তারা পরে ভালো কোনো শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ভর্তি পরীক্ষায় পাস করতে পারছে না এবং যাঁরা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হতে সক্ষম হচ্ছেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়াশোনা শেষ করার পর তাঁরা ভালো কোনো চাকরি পাচ্ছেন না। তাহলে উদারভাবে নম্বর দিয়ে অধিকসংখ্যক শিক্ষার্থীকে জিপিএ-৫ প্রদানের ফলে শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের তরফে আমরা যে উচ্ছ্বাস ও সন্তোষ দেখতে পাচ্ছি, তা অত্যন্ত সাময়িক। শিক্ষার ক্ষেত্রে মানের ওপর গুরুত্ব না দিয়ে, সংখ্যার ওপর গুরুত্ব দিলে ব্যক্তি, পরিবার ও সামাজিক পর্যায়ে তা শুধু হতাশাই তৈরি করবে। আর খুবই বিশেষায়িত ও মৌলিক বিষয়ে পড়াশোনা করার জন্য যে ন্যূনতম যোগ্যতা দরকার, সেটি না থাকার পরও যদি কোনো শিক্ষার্থীকে ওই বিষয়ে পড়াশোনা করার সুযোগ প্রদান করা হয়, তাহলে তা দেশ ও জাতির জন্য বিপর্যয় ডেকে আনবে। ন্যূনতম যোগ্যতা না থাকলে একজন শিক্ষার্থীর পক্ষে আইন, অর্থনীতি, চিকিৎসাবিদ্যা, প্রকৌশলবিদ্যা, গণিত, পদার্থবিদ্যা ইত্যাদি বিষয়ে অধ্যয়ন করা সম্ভব নয়।
শিক্ষানীতি প্রণয়ন করা, বিনা মূল্যে ঠিক সময়ে শিক্ষার্থীদের হাতে পাঠ্যপুস্তক পৌঁছে দেওয়া, শিক্ষাবিদদের সঙ্গে পরামর্শ করে পরীক্ষাপদ্ধতি ও প্রশ্নের ধরন নির্ধারণ, ধনী ও দরিদ্র শিক্ষার্থীদের মধ্যকার বৈষম্য কমিয়ে আনার ব্যাপারে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ এবং শিক্ষার বিষয়ে ব্যাপক আগ্রহ তৈরির ব্যাপারে শিক্ষা মন্ত্রণালয় উল্লেখযোগ্য সাফল্য অর্জন করেছে। কিন্তু শিক্ষার মান উপেক্ষা করে নীতিনির্ধারকেরা যদি সংখ্যা নিয়ে মেতে ওঠেন, তাহলে সব অর্জন ধূলিসাৎ হয়ে যাবে। আমরা চাই, প্রকৃত মেধাবীরাই যেন জিপিএ-৫ পায়। আর জিপিএ-৫ পাওয়া শিক্ষার্থী মানে হচ্ছে এক একটি নক্ষত্র! ভাষার ব্যবহারে, বিষয়ভিত্তিক জ্ঞানে, মেধার প্রকাশে তারা নক্ষত্রের মতো জ্বলজ্বল করবে। জিপিএ-৫ পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই আমরা ধরে নেব যে ওই শিক্ষার্থী যেকোনো জাতীয় বা আন্তর্জাতিক প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষায় নিজের মেধা ও যোগ্যতা প্রমাণ করতে সক্ষম।
শেখ হাফিজুর রহমান: সহযোগী অধ্যাপক, আইন বিভাগ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়।
ফারহানা হেলাল মেহতাব: সহযোগী অধ্যাপক, আইন বিভাগ, ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি।
২০১২ সালের ১৮ জুলাই প্রকাশিত উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষায় পাসের হার ছিল ৭৬ দশমিক ৫০ শতাংশ এবং ওই পরীক্ষায় জিপিএ-৫ পেয়েছিল ৫১ হাজার ৪৬৯ জন শিক্ষার্থী। ২৭ ডিসেম্বর প্রকাশিত প্রাথমিক শিক্ষা সমাপনী পরীক্ষায় পাসের হার ৯৭ দশমিক ২৫ শতাংশ। এ পরীক্ষায় জিপিএ-৫ পেয়েছে দুই লাখ ৩৩ হাজার ১৪০ জন। ওই একই দিন প্রকাশিত জুনিয়র স্কুল সার্টিফিকেট (জেএসসি) পরীক্ষায় পাসের হার ৮৬ দশমিক ১১ শতাংশ। এ পরীক্ষায় জিপিএ-৫ পেয়েছে ৪৪ হাজার ১৫৮ জন।
পাসের হার বেশি হলে সমস্যা নেই, আমরা তাতে আনন্দিত। কিন্তু প্রকৃত অবস্থা সম্পর্কে ওয়াকিবহাল বলে আনন্দে উল্লসিত হতে পারি না, বরং ভয়ে ও শঙ্কায় বুক কেঁপে ওঠে। উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষার ফলাফলের কথাই ধরুন না কেন। এ পরীক্ষায় জিপিএ-৫ পেলেন ৫১ হাজার ৪৬৯ জন শিক্ষার্থী, অথচ এঁদের মধ্যে যাঁরা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষায় অংশ নিলেন, তাঁদের মধ্যে ৫৫ শতাংশ পাসই করতে পারলেন না।
কয়েক মাস আগে ভর্তি পরীক্ষা ছাড়াই উচ্চমাধ্যমিকের ফলাফলের ভিত্তিতে মেডিকেলে ভর্তির সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হলে, মেডিকেল কলেজের সাধারণ শিক্ষার্থীরা ওই সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে রাস্তায় নেমে এসেছিলেন। দিনের পর দিন প্রতিবাদ, বিক্ষোভ ও সড়ক অবরোধ করে মেডিকেল কলেজের সাধারণ শিক্ষার্থীরা ওই সরকারি সিদ্ধান্ত রদ করেছিলেন। আমাদের বিবেচনায় ওটি ছিল অভূতপূর্ব একটি ঘটনা। আমরা মেডিকেল কলেজের সাধারণ শিক্ষার্থীদের এ জন্য অভিবাদন ও অভিনন্দন জানাই। কেননা, মেডিকেল, বুয়েট, ঢাকা, চট্টগ্রাম, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়সহ পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলোয় যে ভর্তি পরীক্ষা নেওয়া হয়, কিছু সীমাবদ্ধতা সত্ত্বেও তাতে মোটামুটি মান যাচাই-বাছাই হয়। সে জন্য পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় এবং মেডিকেল ও বুয়েট থেকে যাঁরা পড়াশোনা শেষ করে সরকারি বা বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে কাজ করেন বা উচ্চশিক্ষার্থে বিদেশে পাড়ি দেন, তাঁদের মধ্যে মান ও দক্ষতার প্রতিফলন দেখা যায়। আমরা চাইব না, পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলো, মেডিকেল ও বুয়েট ভর্তি পরীক্ষা ছাড়া কোনো ছাত্রছাত্রী ভর্তি করুক। কেননা, প্রাথমিক থেকে উচ্চমাধ্যমিক পর্যন্ত নীতিনির্ধারকেরা এখন যে নীতি গ্রহণ করেছেন, তা হচ্ছে পরীক্ষা দিলেই পাস করিয়ে দাও, আর সবাইকে জিপিএ-৫ দিয়ে দাও। এ অবস্থায় মেডিকেল, বুয়েট, কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় ও পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি পরীক্ষার মাধ্যমে মান যাচাই-বাছাইয়ের ব্যবস্থা না থাকলে শিক্ষার মানাবনতি ঠেকানো যাবে না।
পাসের হার বেশি দেখিয়ে এবং অধিকসংখ্যক শিক্ষার্থীকে জিপিএ-৫ প্রদান করার ব্যবস্থা করে সরকারের শিক্ষাবিষয়ক নীতিনির্ধারকেরা কী উদ্দেশ্য অর্জন করতে চান? বড় দাগে দুটি বিবেচনা থাকতে পারে। এক. খুদে ও তরুণ শিক্ষার্থী ও তাদের অভিভাবকদের চাপমুক্ত রাখা। দুই. পাসের উচ্চহার ও অধিকসংখ্যক জিপিএ-৫ প্রদানের মাধ্যমে শিক্ষাক্ষেত্রে সহস্রাব্দ উন্নয়ন লক্ষ্য অর্জন করা। পাসের হার বেশি দেখিয়ে এবং অধিকসংখ্যক শিক্ষার্থীকে জিপিএ-৫ প্রদান করে শিক্ষার্থী এবং অভিভাবকদের খুশি করা এবং ওই একই পরিসংখ্যানের বলে সহস্রাব্দ উন্নয়ন লক্ষ্য অর্জন এ দুটো নীতিই ভুল। কেননা, জিপিএ-৫-এর যোগ্য না হয়েও যারা জিপিএ-৫ পাচ্ছে, তারা পরে ভালো কোনো শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ভর্তি পরীক্ষায় পাস করতে পারছে না এবং যাঁরা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হতে সক্ষম হচ্ছেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়াশোনা শেষ করার পর তাঁরা ভালো কোনো চাকরি পাচ্ছেন না। তাহলে উদারভাবে নম্বর দিয়ে অধিকসংখ্যক শিক্ষার্থীকে জিপিএ-৫ প্রদানের ফলে শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের তরফে আমরা যে উচ্ছ্বাস ও সন্তোষ দেখতে পাচ্ছি, তা অত্যন্ত সাময়িক। শিক্ষার ক্ষেত্রে মানের ওপর গুরুত্ব না দিয়ে, সংখ্যার ওপর গুরুত্ব দিলে ব্যক্তি, পরিবার ও সামাজিক পর্যায়ে তা শুধু হতাশাই তৈরি করবে। আর খুবই বিশেষায়িত ও মৌলিক বিষয়ে পড়াশোনা করার জন্য যে ন্যূনতম যোগ্যতা দরকার, সেটি না থাকার পরও যদি কোনো শিক্ষার্থীকে ওই বিষয়ে পড়াশোনা করার সুযোগ প্রদান করা হয়, তাহলে তা দেশ ও জাতির জন্য বিপর্যয় ডেকে আনবে। ন্যূনতম যোগ্যতা না থাকলে একজন শিক্ষার্থীর পক্ষে আইন, অর্থনীতি, চিকিৎসাবিদ্যা, প্রকৌশলবিদ্যা, গণিত, পদার্থবিদ্যা ইত্যাদি বিষয়ে অধ্যয়ন করা সম্ভব নয়।
শিক্ষানীতি প্রণয়ন করা, বিনা মূল্যে ঠিক সময়ে শিক্ষার্থীদের হাতে পাঠ্যপুস্তক পৌঁছে দেওয়া, শিক্ষাবিদদের সঙ্গে পরামর্শ করে পরীক্ষাপদ্ধতি ও প্রশ্নের ধরন নির্ধারণ, ধনী ও দরিদ্র শিক্ষার্থীদের মধ্যকার বৈষম্য কমিয়ে আনার ব্যাপারে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ এবং শিক্ষার বিষয়ে ব্যাপক আগ্রহ তৈরির ব্যাপারে শিক্ষা মন্ত্রণালয় উল্লেখযোগ্য সাফল্য অর্জন করেছে। কিন্তু শিক্ষার মান উপেক্ষা করে নীতিনির্ধারকেরা যদি সংখ্যা নিয়ে মেতে ওঠেন, তাহলে সব অর্জন ধূলিসাৎ হয়ে যাবে। আমরা চাই, প্রকৃত মেধাবীরাই যেন জিপিএ-৫ পায়। আর জিপিএ-৫ পাওয়া শিক্ষার্থী মানে হচ্ছে এক একটি নক্ষত্র! ভাষার ব্যবহারে, বিষয়ভিত্তিক জ্ঞানে, মেধার প্রকাশে তারা নক্ষত্রের মতো জ্বলজ্বল করবে। জিপিএ-৫ পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই আমরা ধরে নেব যে ওই শিক্ষার্থী যেকোনো জাতীয় বা আন্তর্জাতিক প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষায় নিজের মেধা ও যোগ্যতা প্রমাণ করতে সক্ষম।
শেখ হাফিজুর রহমান: সহযোগী অধ্যাপক, আইন বিভাগ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়।
ফারহানা হেলাল মেহতাব: সহযোগী অধ্যাপক, আইন বিভাগ, ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি।
No comments