৩০ ফুট পানির নিচে জমি দেখিয়ে অর্থ আত্মসাত- অসাধুদের দুর্বৃত্তায়ন বন্ধ হলে আবাসন শিল্পে স্থিরতা আসবে মেলা উদ্বোধনীতে মান্নান খান
আবাসন ব্যবসার নামে কিছু অসাধু ব্যবসায়ী সাধারণ মানুষের সঙ্গে প্রতারণা করছে বলে অভিযোগ করেছেন গৃহায়ন ও গণপূর্ত প্রতিমন্ত্রী এ্যাডভোকেট আবদুল মান্নান খান। তিনি বলেন, এই ব্যবসায়ীরা ৩০ ফুট পানির নিচে জমি দেখিয়ে শুধু সাইনবোর্ড লাগিয়ে মানুষের কাছ থেকে অর্থ আত্মসাত করছে।
এসব অসাধু ব্যবসায়ীর দুর্বৃত্তায়ন বন্ধ করতে পারলে আবাসন শিল্পে স্থিরতা ফিরে আসবে বলে তিনি মনে করেন। বুধবার বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে রিয়েল এস্টেট এ্যান্ড হাউজিং এ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ আয়োজিত রিহ্যাব আবাসন মেলা-২০১২-এর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় তিনি এ অভিযোগ করেন। রিহ্যাবের সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট মোকাররম হোসেন খানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন রিহ্যাবের সাধারণ সম্পাদক প্রকৌশলী আনিসুজ্জামান ভূঁইয়া রানা, ফেয়ার স্ট্যান্ডিং কমিটির চেয়ারম্যান মোঃ আব্দুর রহিম খান, রিহ্যাবের ভাইস প্রেসিডেন্ট মেজর জেনারেল মোঃ আব্দুর রশীদ।প্রতিমন্ত্রী বলেন, এই শিল্পের সঙ্গে জড়িত দুই একজন ৩০ ফুট পানির নিচে জমি দেখিয়ে শুধু সাইনবোর্ড লাগিয়ে মানুষের কাছ থেকে টাকা নিয়ে গায়েব হয়ে যান। আবার অনেকে সুসজ্জিত অফিস নিয়ে ২২ বছর বয়সী সুন্দরী রিসেপশনিস্ট ও পিআরও রেখে প্রতারণা করছেন। তাদের দুই একজনের জন্য আজ পুরো শিল্পের সঙ্গে সম্পৃক্তদের ভূমিদস্যু হিসেবে চিহ্নিত করা হচ্ছে।
প্রতিমন্ত্রী বলেন, দু’একজনের জন্য কেন পুরো ব্যবসায়ী সমাজ কলুষিত হবে। তাই তো আমি দায়িত্ব পাওয়ার পর এসব ব্যবসায়ীর বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নিয়েছি। তাদের অনেকে আমার বিরুদ্ধে প্রধানমন্ত্রীর কাছে অভিযোগও করেছেন। অসাধু আবাসন খাতের ব্যবসায়ীদের উদ্দেশ করে মন্ত্রী বলেন, কিছুদিন আগেও তারা ভিন্ন ব্যবসা করেছেন, কিন্তু এখন করছেন ল্যান্ড, ফ্ল্যাট ও ইমারতের ব্যবসা। তিনি বলেন, এই অসাধু ব্যবসায়ীদের কারণেই মানুষের আস্থা দিন দিন কমে যাচ্ছে। এ সময় প্রতিমন্ত্রী রিহ্যাবের উদ্দেশ্যে বলেন, আপনারা এসব দুর্বৃত্ত দমন করুন। তাহলে আবাসন শিল্পে স্থিরতা ফিরে আসবে।
অনুষ্ঠানে রিহ্যাবের সাধারণ সম্পাদক আনিসুজ্জামান ভূঁইয়া রানা বলেন, আবাসন খাতে বিশেষ করে ক্রেতাদের মধ্যে স্বল্প সুদে দীর্ঘমেয়াদী ঋণের ব্যবস্থা করা হলে সমাজের সকল শ্রেণীর মানুষের জন্য আবাসনের ব্যবস্থা করা যাবে। তিনি বলেন, আমরা সব সময় বলে এসেছি সরকারীভাবে প্লট বণ্টনের মাধ্যমে মধ্যস্বত্বভোগী সৃষ্টি হয়েছে। যারা সরকারের কাছ থেকে স্বল্পমূল্যে প্লট পাচ্ছে, তারাই উচ্চমূল্যে আবাসন কোম্পানিগুলোকে সেসব প্লট দিয়ে দিচ্ছে। এতে প্রকৃত মূল্যে আবাসন কোম্পানিগুলো জমি পাচ্ছে না। অনুষ্ঠানে সভাপতির বক্তৃতায় রিহ্যাবের সিনিয়র সহ-সভাপতি মোকারকম হোসেন খান বলেন, আবাসন শিল্পকে টিকিয়ে রাখতে হলে অবিলম্বে নির্মিত ফ্ল্যাটগুলোতে গ্যাস ও বিদ্যুতের সংযোগ দিতে হবে। তিনি বলেন, আমরা সব সময় বলেছি, সরকার আমাদের কম মূল্যে জমির ব্যবস্থা করে দিক, আমরা সকল শ্রেণীর মানুষের জন্য আবাসনের ব্যবস্থা করব।
No comments