সুখবর
নতুন বছর শুরুর আগেই একটি সুখবর পাওয়া গেছে। গত রবিবার মালয়েশিয়া থেকে ১০ হাজার কর্মীর একটি চাহিদাপত্র ঢাকায় এসে পৌঁছেছে। মালয়েশিয়ার বনায়ন খাতের (্প্লান্টেশন) জন্য এসব কর্মী নিয়োগের চাহিদাপত্র ঢাকায় পাঠিয়েছে সেখানকার মানব সম্পদ মন্ত্রণালয়।
পৃথিবীর যে দেশগুলোতে বাংলাদেশের বিপুলসংখ্যক মানুষের কর্মসংস্থান হয়েছে, তার মধ্যে মালয়েশিয়া অন্যতম। সেখানে কর্মরত বাঙালীদের অর্থ বাংলাদেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখছে। দুর্ভাগ্যবশত, গত চার বছর ধরে নানা কারণে মালয়েশিয়ায় বাংলাদেশের লোক নিয়োগ বন্ধ ছিল। এছাড়া ইতোপূর্বে বেসরকারী উদ্যোগে দালালদের মাধ্যমে মালয়েশিয়ায় কাজ করতে গিয়ে অনেকেই প্রতারিত হয়েছে; অনেকেই তাদের সর্বস্ব হারিয়েছে। এর ফলে অনেক পরিবার প্রতারণার শিকার হয়ে পথে বসে গেছে। অথচ মালয়েশিয়ায় সরকার সবসময় চেয়েছে, সেখানে যেন যথাযথ কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে যোগ্য লোক পাঠানো হয়। জানা গেছে, এবার সম্পূর্ণভাবে সমাঝোতার মাধ্যমে মালয়েশিয়া লোক পাঠানো হবে। এর ফলে যেসব কর্মী মালয়েশিয়ার বনায়ন খাতে কাজ করতে যাবে, তাদের প্রতারিত হওয়ার বা বিপদে পড়ার আশঙ্কা থাকবে না। কারণ সরকারীভাবে নিবন্ধনের মাধ্যমে এসব কর্মী মালয়েশিয়ায় পাঠানো হবে। এবার যেসব কর্মীকে মালয়েশিয়ায় পাঠানো হবে, তারা বেতন পাবে ন্যূনতম ৯০০ রিঙ্গিত বা ২৫ হাজার টাকা। এছাড়া প্রতিটি কর্মীর মালয়েশিয়ায় যেতে ৪০ হাজার টাকার বেশি লাগবে না।সরকার আগামী কয়েকদিনের মধ্যে কর্মী নিয়োগের নিবন্ধনের জন্যে বিজ্ঞপ্তি দেবে। এবার শুধু ইউনিয়ন তথ্যকেন্দ্রে নাম নিবন্ধনের সুযোগ দেয়া হবে। জেলা বা উপজেলা কোটা, ইউনিয়ন কোটার মাধ্যমে লোক নিয়োগ নিঃসন্দেহে একটি ইতিবাচক সিদ্ধান্ত। এর ফলে ইউনিয়ন পর্যায়ে অনেক সাধারণ মানুষ মালয়েশিয়ায় কর্মী হিসেবে যাওয়ার সুযোগ পাবে। কিন্তু সরকারীভাবে ইউনিয়ন তথ্যকেন্দ্রে নাম নিবন্ধনের বিষয়টি যেন সম্পূর্ণভাবে প্রভাবমুক্ত রাখা হয়। এক্ষেত্রে সর্বক্ষেত্রে সততা ও ন্যায়নীতিতে প্রাধান্য দিতে হবে। তা না হলে সংশ্লিষ্ট ইউনিয়নের প্রভাবশালী ব্যক্তিরা এ ক্ষেত্রে অন্যায়ভাবে প্রভাব বিস্তার করতে পারে ও দুর্নীতির আশ্রয় নিতে পারে। সরকারীভাবে সমঝোতার ভিত্তিতে মালয়েশিয়ায় লোক প্রেরণের সুফল থেকে সাধারণ মানুষ বঞ্চিত হবে।
মালয়েশিয়ায় উন্নয়ন কর্মকা-ে নানা ক্ষেত্রে বিপুলসংখ্যক কর্মীর প্রয়োজন। কিন্তু তারা চায় অভিবাসন ব্যয় কমাতে। কিন্তু দালালচক্র ও মধ্যস্বত্বভোগীদের মাধ্যমে কর্মী নিয়োগ হলে অভিবাসন ব্যয় অনেক বেড়ে যায়। তাই বাংলাদেশ থেকে ভবিষ্যতে জনশক্তি রফতানি সরকারীভাবে হতে হবে। এছাড়া বেসরকারী খাতেও সার্বক্ষণিক সরকারী নজরদারির ব্যবস্থা করা দরকার। এ ধরনের প্রতিটি কাজে স্বচ্ছতা অপরিহার্য। ইউনিয়ন তথ্যকেন্দ্র থেকে কর্মী নিবন্ধনকরণের বিষয়টি চালু রাখা দরকার। তবে বিদেশে গমনেচ্ছুক ব্যক্তিরা যাতে প্রতারণা বা হয়রানির শিকার না হয় তা দেখার দায়িত্ব সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের। এরা যাতে অনিয়ম না করতে পারে সে লক্ষ্যে নজরদারি দরকার।
No comments