স্বাস্থ্য খাত-অভাব সুব্যবস্থাপনার বেড়েছে সুবিধা by তৌফিক মারুফ
সরকারের চার বছর পূর্তির শেষ ভাগে এসে সবচেয়ে বেশি দুর্নীতি বাড়ার দুর্নাম মাথায় নিতে হলো দেশের স্বাস্থ্য খাতকে। তবে এর আগে সেবাজনিত পরিধি বৃদ্ধির জন্য এ খাতের হাত ধরেই একাধিক আন্তর্জাতিক বড় স্বীকৃতি অর্জন করতে সক্ষম হয়েছে বাংলাদেশ।
বিশেষজ্ঞদের মতে, স্বাস্থ্য খাতে এখন সেবার গুণগত মান নিয়ে প্রশ্ন থাকলেও সেবা কার্যক্রমের পরিধি সম্প্রসারণ এবং অবকাঠামোগত অগ্রগতি অবশ্যই সাধুবাদ পেতে পারে। বিশেষ করে আগের তুলনায় গত চার বছরে স্বাস্থ্যকেন্দ্রগুলো অনেকাংশেই মানুষের নাগালে এসেছে। এখন কেবল জরুরি হয়ে পড়েছে সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনা নিশ্চিত করা। জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ ও বাংলাদেশ মেডিক্যাল অ্যাসোসিয়েশনের সাবেক সভাপতি অধ্যাপক ডা. রশিদ-ই-মাহবুব কালের কণ্ঠকে বলেন, এ সরকারের গত চার বছরে স্বাস্থ্য খাতের তাৎক্ষণিক মূল্যায়ন করতে গেলে বলতে হবে- জনস্বাস্থ্য সেবায় আগের তুলনায় অনেক উন্নতি হয়েছে, অনেক ব্যবস্থা চালু হয়েছে, নতুন নতুন অনেক অবকাঠামো হয়েছে। তবে সমস্যা হচ্ছে, এগুলোর উপযুক্ত ব্যবস্থাপনা নিয়ে। প্রতিটি ক্ষেত্রেই ব্যাপক দুর্বলতা রয়ে যাচ্ছে, পর্যাপ্ত মনিটরিং নেই।
ডা. মাহবুব বলেন, এককথায় বলা যায় স্বাস্থ্য খাতে সেবার পরিধি বেড়েছে কিন্তু মানগত সুরক্ষার অভাব আছে। এ জন্যই দুর্নীতির সুযোগ সৃষ্টি হয়। সুব্যবস্থাপনা ও সুষ্ঠু-সুপরিকল্পিত পরিচালনা খুবই জরুরি, নয়তো অগ্রগতিগুলোর সুফল ভোগ করতে পারবে না মানুষ।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সাবেক মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. শাহ মো. মনির হোসেন কালের কণ্ঠকে বলেন, এ সরকারের সময় স্বাস্থ্য ক্ষেত্রের সবদিকেই উন্নয়ন হয়েছে, তবে ব্যবস্থাপনা, দক্ষতা ও মনিটরিংয়ের জায়গায় ঘাটতি রয়েছে। এ ছাড়া জনবলের ঘাটতির কারণেও অনেক পদক্ষেপের সুফল পাচ্ছে না মানুষ। এ সরকারের সময় দীর্ঘদিনের বহু শূন্যপদ পূরণ হলেও নতুন পদ সৃষ্টির হার বাড়েনি, তাই এ দিকে নজর দেওয়া দরকার।
স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, এ সরকারের আওতায় কর্মতৎপরতার কারণে দেশে পাঁচ বছরের নিচে শিশু মৃত্যুর হার কমে এখন প্রতি হাজার জীবিত-জন্মে ৫৩-তে দাঁড়িয়েছে। ২০০৭ সালে যা ছিল ৬৫। এক বছরের নিচে শিশুমৃত্যু প্রতি হাজার জীবিত-জন্মে হয়েছে ৪৩। ২০০৭ সালে যা ছিল ৫৩। সমপ্রসারিত টিকাদান কর্মসূচি, শিশু রোগের সমন্বিত ব্যবস্থাপনা, ডায়রিয়া ও শ্বাসতন্ত্রের সংক্রমণজনিত রোগের সঠিক চিকিৎসার মাধ্যমে এ অর্জন সম্ভব হয়েছে। বর্তমানে ৯টি রোগের টিকা প্রদান করা হয়, আগে এই সংখ্যা ছিল সাত। শিশুস্বাস্থ্য উন্নয়নে গৃহীত পদক্ষেপ ও অগ্রগতির স্বীকৃতিস্বরূপ জাতিসংঘ কর্তৃক বাংলাদেশ পুরস্কৃত হয়েছে। নিয়মিত টিকাদান কর্মসূচির ধারাবাহিক সাফল্যের জন্য বাংলাদেশ ২০০৯ সালে এবং ২০১২ সালে গ্লোবাল অ্যালায়েন্স ফর ভ্যাকসিনস অ্যান্ড ইম্যুনাইজেশনে শ্রেষ্ঠ অ্যাওয়ার্ড লাভ করেছে। এ ছাড়া মাতৃমৃত্যু হ্রাস পেয়ে বর্তমানে প্রতি লাখ জীবিত-জন্মে ১৯৪-তে দাঁড়িয়েছে; ২০০১ সালে তা ছিল ৩২০। সংক্রামক ব্যাধি নিয়ন্ত্রণ এ সরকারের আরেকটি বড় সাফল্য। কুষ্ঠ ও পোলিও রোগ দৃশ্যত নির্মূল হয়েছে। যক্ষ্মা, ম্যালেরিয়া, কালাজ্বর, ফাইলেরিয়া, এভিয়ান ইনফ্লুয়েঞ্জা, অ্যানথ্রাক্স, নিপাহ, সার্স, ডেঙ্গুসহ অন্যান্য সংক্রামক রোগ নিয়ন্ত্রণের ক্ষেত্রে ব্যাপক উন্নতি হয়েছে। যক্ষ্মা রোগ নিরাময়ের হার ৯২ শতাংশে উন্নীত হয়েছে, আগে যা ছিল ৮৭ শতাংশ। ম্যালেরিয়ায় ২০১১ সালে ৩৬ জনের মৃত্যু হয়েছে। ২০০৮ সালে এই রোগে ১৫০ জনের মৃত্যু হয়েছিল। এইচআইভি সংক্রমণ ১ শতাংশের নিচে রাখা সম্ভব হয়েছে। মানুষের গড় আয়ু বৃদ্ধি পেয়েছে। ২০০৮ সালে ছিল ৬৫, এখন ৬৭.৭।
জনসংখ্যা নিয়ন্ত্রণ : জনসংখ্যা বৃদ্ধির হার ক্রমান্বয়ে হ্রাস পাচ্ছে। ২০০৮ সালের ১.৪১ শতাংশ থেকে কমে এখন জনসংখ্যা বৃদ্ধির হার ১.৩৭। পরিবার পরিকল্পনাবিষয়ক শিক্ষামূলক কর্মসূচি গ্রহণ করা, জনসংখ্যা নিয়ন্ত্রণ কর্মসূচিতে কমিউনিটিকে সম্পৃক্ত করা, পরিবার পরিকল্পনা সামগ্রীর নিয়মিত সরবরাহ নিশ্চিত করার ফলে পরিবার পরিকল্পনা পদ্ধতি গ্রহণের হার ২০০৭ সালের ৫৮ থেকে বর্তমানে ৬১.২-এ উন্নীত হয়েছে।
পুষ্টিসেবা : জাতীয় পুষ্টিসেবা কার্যক্রমকে মূল ধারায় আনা হয়েছে। মন্ত্রণালয়ের আওতাভুক্ত প্রতিষ্ঠানগুলোর কর্মীদের মাধ্যমে দেশব্যাপী পুষ্টিসেবা প্রদান করা হচ্ছে। ভিটামিন 'এ' গ্রহণের হার বর্তমানে ৯৫ শতাংশে উন্নীত হয়েছে। অপুষ্টিজনিত কম ওজনের শিশু ২০০৭ সালের ৪১ শতাংশ থেকে কমে ৩৬ শতাংশে এসেছে।
ওষুধশিল্প : এখন দেশীয় চাহিদার ৯৭ ভাগ ওষুধ স্থানীয়ভাবে উৎপাদিত হচ্ছে, আগে যা ছিল ৯২ ভাগ। উৎপাদিত ওষুধ এখন ৮৭টি দেশে রপ্তানি হচ্ছে। জাতীয় ওষুধনীতি যুগোপযোগী ও হালনাগাদ করা প্রক্রিয়াধীন। আর্য়ুবেদিক, হোমিও ও দেশজ চিকিৎসাকে গুরুত্ব দিয়ে বিভিন্ন কার্যক্রম হাতে নেওয়া হয়েছে।
কমিউনিটি ক্লিনিক : ১৮ হাজার কমিউনিটি ক্লিনিক স্থাপনের পরিকল্পনার আওতায় এ সরকারের সময় ১২ হাজার ২১৭টি ক্লিনিক চালু করা হয়েছে। প্রতিটি ক্লিনিকে একজন করে মোট ১৩ হাজার ২৪০ জন কমিউনিটি হেলথ কেয়ার প্রোভাইডার নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। বিগত চার বছরে প্রায় ৪০০ কোটি টাকার ২৯ প্রকারের ওষুধ কমিউনিট ক্লিনিকগুলোতে সরবরাহ করা হয়েছে। এ সময়ে প্রায় ১২ কোটির বেশি মানুষ এসব ক্লিনিকে সেবা পেয়েছে বলে দাবি করা হয় সরকারের পক্ষ থেকে।
স্বাস্থ্য জনশক্তি নিয়োগ ও উন্নয়ন : বর্তমান সরকারের আমলে চার হাজার ১৩৩ জন চিকিৎসককে এডহক ভিত্তিতে এবং বিসিএসের মাধ্যমে এক হাজার ৫৯৭ জনকে নিয়োগ দিয়ে সবাইকে গ্রামাঞ্চলে পদায়ন করা হয়েছে। এ ছাড়া এক হাজার ৭৪৭ জন নার্স নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। আরো প্রায় সাত হাজার ডাক্তার, পাঁচ হাজার নার্স, তিন হাজার মিডওয়াইফ (ধাত্রী) নিয়োগের প্রক্রিয়া চলছে। স্বাস্থ্যসেবা সমপ্রসারণ ও চিকিৎসা জনশক্তি বৃদ্ধির লক্ষ্যে চারটি নতুন মেডিক্যাল কলেজে শিক্ষা কার্যক্রম শুরু এবং পুরনো মেডিক্যাল কলেজগুলোতে ডেন্টাল ইউনিট স্থাপনসহ আসনসংখ্যা বৃদ্ধি করা হয়েছে। এ ছাড়া অবকাঠামোগত ব্যাপক উন্নয়ন হয়েছে এ সরকারের সময়কালে।
আইন ও নীতি প্রণয়ন : স্বাস্থ্যব্যবস্থা গতিশীল ও যুগোপযোগী করার জন্য জাতীয় স্বাস্থ্যনীতি ২০১১ প্রণয়ন করা হয়েছে। বাংলাদেশ জনসংখ্যানীতি ২০১২ মন্ত্রিসভায় নীতিগতভাবে অনুমোদিত হয়েছে। বঙ্গবন্ধু মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয় আইন (সংশোধন) ২০১২ প্রণয়ন করা হয়েছে। বাংলাদেশ মেডিক্যাল অ্যান্ড ডেন্টাল কাউন্সিল আইন-২০১১ প্রণয়ন করা হয়েছে। ধূমপান এবং তামাকজাত দ্রব্য ব্যবহার (নিয়ন্ত্রণ) (সংশোধন) আইন ২০১২ মন্ত্রিসভায় অনুমোদিত হয়েছে। শতাব্দী পুরনো অমানবিক কুষ্ঠ আইন 'লেপ্রসি অ্যাক্ট-১৮৯৮' জাতীয় সংসদে বাতিল করা হয়েছে। ওষুধ নীতিমালা ২০০৫ হালনাগাদ চূড়ান্ত করা হয়েছে।
ডা. মাহবুব বলেন, এককথায় বলা যায় স্বাস্থ্য খাতে সেবার পরিধি বেড়েছে কিন্তু মানগত সুরক্ষার অভাব আছে। এ জন্যই দুর্নীতির সুযোগ সৃষ্টি হয়। সুব্যবস্থাপনা ও সুষ্ঠু-সুপরিকল্পিত পরিচালনা খুবই জরুরি, নয়তো অগ্রগতিগুলোর সুফল ভোগ করতে পারবে না মানুষ।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সাবেক মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. শাহ মো. মনির হোসেন কালের কণ্ঠকে বলেন, এ সরকারের সময় স্বাস্থ্য ক্ষেত্রের সবদিকেই উন্নয়ন হয়েছে, তবে ব্যবস্থাপনা, দক্ষতা ও মনিটরিংয়ের জায়গায় ঘাটতি রয়েছে। এ ছাড়া জনবলের ঘাটতির কারণেও অনেক পদক্ষেপের সুফল পাচ্ছে না মানুষ। এ সরকারের সময় দীর্ঘদিনের বহু শূন্যপদ পূরণ হলেও নতুন পদ সৃষ্টির হার বাড়েনি, তাই এ দিকে নজর দেওয়া দরকার।
স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, এ সরকারের আওতায় কর্মতৎপরতার কারণে দেশে পাঁচ বছরের নিচে শিশু মৃত্যুর হার কমে এখন প্রতি হাজার জীবিত-জন্মে ৫৩-তে দাঁড়িয়েছে। ২০০৭ সালে যা ছিল ৬৫। এক বছরের নিচে শিশুমৃত্যু প্রতি হাজার জীবিত-জন্মে হয়েছে ৪৩। ২০০৭ সালে যা ছিল ৫৩। সমপ্রসারিত টিকাদান কর্মসূচি, শিশু রোগের সমন্বিত ব্যবস্থাপনা, ডায়রিয়া ও শ্বাসতন্ত্রের সংক্রমণজনিত রোগের সঠিক চিকিৎসার মাধ্যমে এ অর্জন সম্ভব হয়েছে। বর্তমানে ৯টি রোগের টিকা প্রদান করা হয়, আগে এই সংখ্যা ছিল সাত। শিশুস্বাস্থ্য উন্নয়নে গৃহীত পদক্ষেপ ও অগ্রগতির স্বীকৃতিস্বরূপ জাতিসংঘ কর্তৃক বাংলাদেশ পুরস্কৃত হয়েছে। নিয়মিত টিকাদান কর্মসূচির ধারাবাহিক সাফল্যের জন্য বাংলাদেশ ২০০৯ সালে এবং ২০১২ সালে গ্লোবাল অ্যালায়েন্স ফর ভ্যাকসিনস অ্যান্ড ইম্যুনাইজেশনে শ্রেষ্ঠ অ্যাওয়ার্ড লাভ করেছে। এ ছাড়া মাতৃমৃত্যু হ্রাস পেয়ে বর্তমানে প্রতি লাখ জীবিত-জন্মে ১৯৪-তে দাঁড়িয়েছে; ২০০১ সালে তা ছিল ৩২০। সংক্রামক ব্যাধি নিয়ন্ত্রণ এ সরকারের আরেকটি বড় সাফল্য। কুষ্ঠ ও পোলিও রোগ দৃশ্যত নির্মূল হয়েছে। যক্ষ্মা, ম্যালেরিয়া, কালাজ্বর, ফাইলেরিয়া, এভিয়ান ইনফ্লুয়েঞ্জা, অ্যানথ্রাক্স, নিপাহ, সার্স, ডেঙ্গুসহ অন্যান্য সংক্রামক রোগ নিয়ন্ত্রণের ক্ষেত্রে ব্যাপক উন্নতি হয়েছে। যক্ষ্মা রোগ নিরাময়ের হার ৯২ শতাংশে উন্নীত হয়েছে, আগে যা ছিল ৮৭ শতাংশ। ম্যালেরিয়ায় ২০১১ সালে ৩৬ জনের মৃত্যু হয়েছে। ২০০৮ সালে এই রোগে ১৫০ জনের মৃত্যু হয়েছিল। এইচআইভি সংক্রমণ ১ শতাংশের নিচে রাখা সম্ভব হয়েছে। মানুষের গড় আয়ু বৃদ্ধি পেয়েছে। ২০০৮ সালে ছিল ৬৫, এখন ৬৭.৭।
জনসংখ্যা নিয়ন্ত্রণ : জনসংখ্যা বৃদ্ধির হার ক্রমান্বয়ে হ্রাস পাচ্ছে। ২০০৮ সালের ১.৪১ শতাংশ থেকে কমে এখন জনসংখ্যা বৃদ্ধির হার ১.৩৭। পরিবার পরিকল্পনাবিষয়ক শিক্ষামূলক কর্মসূচি গ্রহণ করা, জনসংখ্যা নিয়ন্ত্রণ কর্মসূচিতে কমিউনিটিকে সম্পৃক্ত করা, পরিবার পরিকল্পনা সামগ্রীর নিয়মিত সরবরাহ নিশ্চিত করার ফলে পরিবার পরিকল্পনা পদ্ধতি গ্রহণের হার ২০০৭ সালের ৫৮ থেকে বর্তমানে ৬১.২-এ উন্নীত হয়েছে।
পুষ্টিসেবা : জাতীয় পুষ্টিসেবা কার্যক্রমকে মূল ধারায় আনা হয়েছে। মন্ত্রণালয়ের আওতাভুক্ত প্রতিষ্ঠানগুলোর কর্মীদের মাধ্যমে দেশব্যাপী পুষ্টিসেবা প্রদান করা হচ্ছে। ভিটামিন 'এ' গ্রহণের হার বর্তমানে ৯৫ শতাংশে উন্নীত হয়েছে। অপুষ্টিজনিত কম ওজনের শিশু ২০০৭ সালের ৪১ শতাংশ থেকে কমে ৩৬ শতাংশে এসেছে।
ওষুধশিল্প : এখন দেশীয় চাহিদার ৯৭ ভাগ ওষুধ স্থানীয়ভাবে উৎপাদিত হচ্ছে, আগে যা ছিল ৯২ ভাগ। উৎপাদিত ওষুধ এখন ৮৭টি দেশে রপ্তানি হচ্ছে। জাতীয় ওষুধনীতি যুগোপযোগী ও হালনাগাদ করা প্রক্রিয়াধীন। আর্য়ুবেদিক, হোমিও ও দেশজ চিকিৎসাকে গুরুত্ব দিয়ে বিভিন্ন কার্যক্রম হাতে নেওয়া হয়েছে।
কমিউনিটি ক্লিনিক : ১৮ হাজার কমিউনিটি ক্লিনিক স্থাপনের পরিকল্পনার আওতায় এ সরকারের সময় ১২ হাজার ২১৭টি ক্লিনিক চালু করা হয়েছে। প্রতিটি ক্লিনিকে একজন করে মোট ১৩ হাজার ২৪০ জন কমিউনিটি হেলথ কেয়ার প্রোভাইডার নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। বিগত চার বছরে প্রায় ৪০০ কোটি টাকার ২৯ প্রকারের ওষুধ কমিউনিট ক্লিনিকগুলোতে সরবরাহ করা হয়েছে। এ সময়ে প্রায় ১২ কোটির বেশি মানুষ এসব ক্লিনিকে সেবা পেয়েছে বলে দাবি করা হয় সরকারের পক্ষ থেকে।
স্বাস্থ্য জনশক্তি নিয়োগ ও উন্নয়ন : বর্তমান সরকারের আমলে চার হাজার ১৩৩ জন চিকিৎসককে এডহক ভিত্তিতে এবং বিসিএসের মাধ্যমে এক হাজার ৫৯৭ জনকে নিয়োগ দিয়ে সবাইকে গ্রামাঞ্চলে পদায়ন করা হয়েছে। এ ছাড়া এক হাজার ৭৪৭ জন নার্স নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। আরো প্রায় সাত হাজার ডাক্তার, পাঁচ হাজার নার্স, তিন হাজার মিডওয়াইফ (ধাত্রী) নিয়োগের প্রক্রিয়া চলছে। স্বাস্থ্যসেবা সমপ্রসারণ ও চিকিৎসা জনশক্তি বৃদ্ধির লক্ষ্যে চারটি নতুন মেডিক্যাল কলেজে শিক্ষা কার্যক্রম শুরু এবং পুরনো মেডিক্যাল কলেজগুলোতে ডেন্টাল ইউনিট স্থাপনসহ আসনসংখ্যা বৃদ্ধি করা হয়েছে। এ ছাড়া অবকাঠামোগত ব্যাপক উন্নয়ন হয়েছে এ সরকারের সময়কালে।
আইন ও নীতি প্রণয়ন : স্বাস্থ্যব্যবস্থা গতিশীল ও যুগোপযোগী করার জন্য জাতীয় স্বাস্থ্যনীতি ২০১১ প্রণয়ন করা হয়েছে। বাংলাদেশ জনসংখ্যানীতি ২০১২ মন্ত্রিসভায় নীতিগতভাবে অনুমোদিত হয়েছে। বঙ্গবন্ধু মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয় আইন (সংশোধন) ২০১২ প্রণয়ন করা হয়েছে। বাংলাদেশ মেডিক্যাল অ্যান্ড ডেন্টাল কাউন্সিল আইন-২০১১ প্রণয়ন করা হয়েছে। ধূমপান এবং তামাকজাত দ্রব্য ব্যবহার (নিয়ন্ত্রণ) (সংশোধন) আইন ২০১২ মন্ত্রিসভায় অনুমোদিত হয়েছে। শতাব্দী পুরনো অমানবিক কুষ্ঠ আইন 'লেপ্রসি অ্যাক্ট-১৮৯৮' জাতীয় সংসদে বাতিল করা হয়েছে। ওষুধ নীতিমালা ২০০৫ হালনাগাদ চূড়ান্ত করা হয়েছে।
No comments