নবীন প্রবীণ শিল্পীর কাজ, লক্ষ্য গণমানুষের কাছে পৌঁছে দেয়া- আর্ট সেন্টারে কিবরিয়া ছাপচিত্র মেলা by মোরসালিন মিজান
শুরু থেকেই ছাপচিত্রের ব্যাপারে বিশেষ মনোযোগী ঢাকা আর্ট সেন্টার। এ কাজের জন্য গ্যালারিটির রয়েছে আলাদা স্টুডিও। আধুনিক ছাপচিত্রের জনক শিল্পী কিবরিয়ার নামে স্থাপিত স্টুডিওতে সারা বছরই কাজ হয়। ঢাকা আর্ট সেন্টারে উঁকি দিলে দৃশ্যটি খুব দেখা যায়। তবে ঠিক এই মুহূর্তের দৃশ্যটি আরও সুন্দর। কারণ এখন চলছে কিবরিয়া ছাপচিত্র মেলা। হ্যাঁ, মোহাম্মদ কিবরিয়ার জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে এ আয়োজন। আর্ট সেন্টারের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উদ্যাপনেরও অংশ এটি। বলা বাহুল্য, বেশ বড়সড় আয়োজন। শুধু ঢাকার নয়, দেশের বিভিন্ন প্রান্তের শিল্পীরা এতে যোগ দিয়েছেন। সকলের ছাপচিত্র দিয়ে সাজানো হয়েছে গ্যালারি। অবশ্য গ্যালারি বললে ভুল হবে। গোটা আর্ট সেন্টার সেজেছে ছাপচিত্রে।
মঙ্গলবার পাঁচদিনব্যাপী প্রদর্শনীর আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করা হয়। প্রদর্শনীর উদ্বোধন করেন কিবরিয়ার অত্যন্ত ঘনিষ্ঠজন জাপানের প্রবীণ শিল্পী সহকর্মী কোইচি তাকিতা। যৌবনে তিনি বাংলাদেশে ছিলেন। আর্ট কলেজের সিরামিক বিভাগের শিক্ষক হিসেবে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন। এ সময় ঘনিষ্ঠতা হয় শিল্পী কিবরিয়ার সঙ্গে। খুব কাছ থেকে তিনি বাংলাদেশী শিল্পীকে দেখেন। সেই সূত্রে মেলায় আমন্ত্রিত হয়ে এসেছিলেন তিনি। তাঁর উপস্থিতি মেলার প্রথম দিবসটিকে দারুণ আলোকিত করে রাখে।
বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাপচিত্র বিভাগ, বিভাগের ছাত্র-শিক্ষক এবং সামষ্টিক উদ্যোগে গঠিত বিভিন্ন প্রিন্ট স্টুডিওসহ নবীন-প্রবীণ ছাপচিত্রশিল্পীরা এ মেলায় অংশগ্রহণ করেছে। দেশের ১১টি ছাপচিত্র প্রতিষ্ঠান অংশ নিয়েছে মেলায়। এ মেলার লক্ষ্য ছাপচিত্রকে গণমানুষের কাছে পৌঁছে দেয়া। সহজলভ্য ও জনপ্রিয় করতে ভূমিকা রাখা। কখনও ছবি কেনার কথা চিন্তা করেনি, এমন মানুষও ছাপচিত্র নিয়ে ঘরে ফিরবেন এমন আশা আয়োজকদের।
মঙ্গলবার পাঁচদিনব্যাপী প্রদর্শনীর আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করা হয়। প্রদর্শনীর উদ্বোধন করেন কিবরিয়ার অত্যন্ত ঘনিষ্ঠজন জাপানের প্রবীণ শিল্পী সহকর্মী কোইচি তাকিতা। যৌবনে তিনি বাংলাদেশে ছিলেন। আর্ট কলেজের সিরামিক বিভাগের শিক্ষক হিসেবে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন। এ সময় ঘনিষ্ঠতা হয় শিল্পী কিবরিয়ার সঙ্গে। খুব কাছ থেকে তিনি বাংলাদেশী শিল্পীকে দেখেন। সেই সূত্রে মেলায় আমন্ত্রিত হয়ে এসেছিলেন তিনি। তাঁর উপস্থিতি মেলার প্রথম দিবসটিকে দারুণ আলোকিত করে রাখে।
বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাপচিত্র বিভাগ, বিভাগের ছাত্র-শিক্ষক এবং সামষ্টিক উদ্যোগে গঠিত বিভিন্ন প্রিন্ট স্টুডিওসহ নবীন-প্রবীণ ছাপচিত্রশিল্পীরা এ মেলায় অংশগ্রহণ করেছে। দেশের ১১টি ছাপচিত্র প্রতিষ্ঠান অংশ নিয়েছে মেলায়। এ মেলার লক্ষ্য ছাপচিত্রকে গণমানুষের কাছে পৌঁছে দেয়া। সহজলভ্য ও জনপ্রিয় করতে ভূমিকা রাখা। কখনও ছবি কেনার কথা চিন্তা করেনি, এমন মানুষও ছাপচিত্র নিয়ে ঘরে ফিরবেন এমন আশা আয়োজকদের।
মঙ্গল ও বুধবার আর্ট সেন্টার ঘুরে দেখা যায়, সর্বত্র উৎসবের আমেজ। তরুণ শিল্পীরা রীতিমতো মাতিয়ে রেখেছেন প্রতিটি গ্যালারি। নিজেদের মধ্যে আলাপ জমাচ্ছেন তাঁরা। কাজের ভাল-মন্দ বিচারের চেষ্টা করছেন। সিনিয়ররাও লম্বা সময় মেলায় থাকছেন। সব মিলিয়ে সরগরম আর্ট সেন্টার। আলাদা আলাদা স্থানে ছাপচিত্র সাজিয়েছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়, খুলনা বিশ্ববিদ্যালয় ও ইউডা। এছাড়া রয়েছে শফিউদ্দিন বেঙ্গল প্রিন্টমেকিং স্টুডিও, আতেলিয়ার ৭১, কসমস আতেলিয়ার ৭১, বর্ণিকা প্রিন্ট স্টুডিও, বাংলাদেশে প্রিন্ট মেকার্স এ্যাসোসিয়েশন ও কিবরিয়া প্রিন্টমেকিং স্টুডিওর শিল্পীদের ছাপচিত্র। কিছু ছাপচিত্র দেয়ালে। কিছু পেতে রাখা হয়েছে টেবিলের ওপর। নিচ তলায় চোখে পড়ে কিবরিয়া প্রিন্টমেকিং স্টুডিওর কাজ। কিছু বড়। ছোট এবং মাঝারি কাজও আছে। অধিকাংশই নিখুঁত এবং অদ্ভুত সুন্দর। এর পাশেই রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাপচিত্র বিভাগের শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের কাজ। এই দলটির নেতৃত্ব দিচ্ছেন ড. গুল নাহার। তিনি জানান, ২৫ থেকে ৩০ শিল্পীর ৬০টা প্রিন্ট নিয়ে মেলায় এসেছেন তাঁরা। তো কী অভিজ্ঞতা? জানতে চাইলে এই শিক্ষক বলেন, খুব ভাল। আমাদের শিল্পীরা কাজও করেছেন চমৎকার। মেলায় আগত শিল্পপ্রেমী মানুষ খুব আগ্রহ নিয়ে কাজ দেখছেন। এটা খুব ভাল লাগছে। উপরের একটি কক্ষে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের শিল্পকর্ম। এই দলের অন্যতম সদস্য নিশাত কামাল জানান, তাঁরা প্রায় ১৯ জন। ১৫০ থেকে ১৭০টির মতো ছাপচিত্র নিয়ে এসেছেন। মেলায় অংশগ্রহণের অভিজ্ঞতা তুলে ধরে তিনি বলেন, আমরা যাঁরা ছাপচিত্রের কাজ করি তাঁদের জন্য এটি অসাধারণ প্ল্যাটফর্ম। পুরো সময়টাই উপভোগ করি আমরা। এবারও এর ব্যতিক্রম হচ্ছে না।
মেলায় আসা দর্শনার্থীর সংখ্যাও অনেক। খুঁটিয়ে খুঁটিয়ে ছাপচিত্র দেখছেন তাঁরা। সেই উত্তরা থেকে এসেছিলেন রীতা ভৌমিক। জনকণ্ঠকে তিনি বলেন, মেলায় বহু শিল্পীর কাজ একসঙ্গে পাশাপাশি রেখে দেখা যায়। এ কারণেই এসেছি। পুরো প্রদর্শনী দেখে মন ভরে গেছে আমার। দেখার পাশাপাশি কেনার সুযোগটাও অনেকে কাজে লাগাচ্ছেন। কারণ, যাঁদের সাধ্য সীমিত তাঁদের জন্য ছাপচিত্রের কোন বিকল্প হয় না। বিষয়টি মাথায় রেখেই চলছিল পছন্দের ছাপচিত্র সংগ্রহের কাজ। অবশ্য সবাই যে দামের ব্যাপারে সন্তুষ্ট তা বলা যাবে না। এ প্রসঙ্গে ধানম-ির সুলতানা আমিন বললেন, ছাপচিত্র তো, একটু কমে কেনার আশা নিয়ে এসেছি। কিন্তু দাম খুব কম না, আসলে। অবশ্য আয়োজকরা এটি পুরোপুরি মানতে নারাজ। এ প্রসঙ্গ শিল্পী নিসার হোসেন বলেন, ছাপচিত্রকে আরও জনপ্রিয় করার লক্ষ্য নিয়েই কাজ করছি আমরা। সে জন্য দাম যতটা সম্ভব কম রাখার চেষ্টা করা হয়েছে। সর্বনিম্ন ১৫০ টাকায় ছবি সংগ্রহ করতে পারছেন অনুরাগীরা। তিনি বলেন, বই উপহার দেয়ার রীতি অনুসরণ করে এ মেলা থেকে চিত্রকর্ম উপহার দেয়ার রীতি ছড়িয়ে দেয়ার চেষ্টা করা হচ্ছে।
মেলা প্রতিদিন বেলা ৩টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত উন্মুক্ত থাকবে।
মেলা প্রতিদিন বেলা ৩টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত উন্মুক্ত থাকবে।
No comments