ঢাকা-মস্কো সফরে বন্ধুত্বের বীজ বপনঃ প্রধানমন্ত্রী
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তার মস্কো সফরকে
পরাশক্তির সঙ্গে অভিন্ন বন্ধুত্ব ও সহযোগিতার বীজ বপনের প্রয়াস হিসেবে
অভিহিত করে বলেছেন, দু’দেশে এমন অনেক ক্ষেত্র রয়েছে যেখানে বাংলাদেশ ও
রাশিয়া পারস্পরিক স্বার্থে কাজ করতে পারে।
প্রধানমন্ত্রী
বলেন, “সম্পর্ক গড়ার ক্ষেত্রে বাংলাদেশ ও মস্কোর রয়েছে এক ঐতিহাসিক ও
আবেগপূর্ণ ভিত্তি। আমি এখানে প্রেসিডেন্ট পুতিনের সঙ্গে আমাদের অভিন্ন
বন্ধুত্ব ও সহযোগিতার বীজ বপন করতে এসেছি এবং আমাদের ভবিষ্যত প্রজন্ম এর ফল
ভোগ করবে।” খবর বাসসের।
বুধবার শেখ হাসিনা মস্কো স্টেট ইউনিভার্সিটিতে ‘সমসাময়িক বাংলাদেশ-রাশিয়ার সঙ্গে সম্পর্কের প্রেক্ষাপট’ বিষয়ে বক্তৃতা দেন।
তিনি বলেন, “আমরা আমাদের অভিযাত্রা, আকাঙ্ক্ষা ও উদ্দেশ্য সংযুক্ত করতে পারলে দু’দেশের এবং জনগণের সমৃদ্ধি ও অগ্রগতি অর্জনে আমাদের এই বন্ধুত্ব অবিরত জোরদার হবে।”
প্রধানমন্ত্রী এই বিশ্ববিদ্যালয়ে পৌঁছলে প্রতিষ্ঠানটির রেক্টর প্রফেসর ভিক্টর স্যাদোভনচি তাকে স্বাগত জানান। এ সময় বিভিন্ন ফ্যাকাল্টির সদস্য ও শিক্ষার্থীরা উপস্থিতি ছিলেন। তিনি ঐতিহাসিক যাদুঘর পরিদর্শন করেন।
এই মর্যাদাপূর্ণ প্রতিষ্ঠানে বক্তৃতা দেওয়ার সুযোগ লাভের জন্য গভীর সন্তোষ প্রকাশ করে শেখ হাসিনা বলেন, জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ১৯৭২ সালের এপ্রিলে এই গৌরবোজ্জ্বল প্রতিষ্ঠানটি পরিদর্শন করেন।
১৯৭১ সালে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে রাশিয়ার সমর্থনের জন্য কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, “চট্টগ্রাম বন্দর থেকে মাইন ও ধ্বংসাবশেষ অপসারণে রাশিয়ার অনেককে জীবন দিতে হয়েছে। কেবল আমাদের রক্তক্ষয়ী যুদ্ধেই নয়, বাংলাদেশের পুনর্বাসন কাজেও সোভিয়েত ইউনিয়ন আমাদের পাশে দাঁড়িয়েছিল।”
শেখ হাসিনা বলেন, “২০০৯ সালে দেশ পরিচালনার দায়িত্ব নেওয়ার পর মস্কোর সঙ্গে সম্পর্ক জোরদার ও বহুমুখীকরণ হচ্ছে তার সরকারের অন্যতম প্রধান উদ্যোগ। প্রেসিডেন্ট পুতিন দেশ দু’টির মধ্যে ফলপ্রসূ সম্পর্ক স্থাপনে স্বত:স্ফূর্তভাবে সাড়া দিয়েছেন।”
“ফলপ্রসূ সম্পর্ক স্থাপনে বাংলাদেশ ও রাশিয়ার রয়েছে বিপুল সম্ভাবনা”—উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, “৭০-এর দশকে দু’দেশের মধ্যে উল্লেখযোগ্য বাণিজ্য ছিল। বর্তমান এই বাণিজ্যের পরিমাণ হচ্ছে প্রায় আধা-বিলিয়ন ডলার এবং এর প্রায় সবটাই রাশিয়ার অনুকূলে।”
তিনি বলেন, “অদম্য বিশ্বায়ন ও প্রতিযোগিতা দ্রুততার এই যুগেও বাংলাদেশ অতি আকর্ষণীয় এক আর্থিক প্রণোদনা ঘোষণা করেছে। দক্ষিণ ও দক্ষিণ পূর্ব এশিয়ার মাঝে বাংলাদেশের অবস্থান হওয়ায় এদেশ বিশাল বাজার ও বড় বড় অর্থনীতির গেটওয়েতে পরিণত হয়েছে।”
শেখ হাসিনা বলেন, “বাংলাদেশের স্বাধীনতার পরপরই সাবেক সোভিয়েত ইউনিয়ন কয়েকটি বিদ্যুৎ কেন্দ্র স্থাপনে সহায়তা করেছে। এখন এসব বিদ্যুৎ কেন্দ্র সংস্কারে রাশিয়ার সহযোগিতা প্রয়োজন।”
তিনি বলেন, “রাশিয়ার কারিগরি ও আর্থিক সহযোগিতায় ২০০০ মেগাওয়াট পারমাণবিক বিদ্যুৎ প্লান্ট হবে ভবিষ্যতে আরো বিদ্যুৎ প্লান্ট স্থাপনের সূচনা মাত্র।”
শেখ হাসিনা বলেন, “বাংলাদেশ ও রাশিয়া কৃষি ক্ষেত্রেও বড় ধরনের সহযোগিতা গড়ে তুলবে। উৎপাদন ও প্রক্রিয়াকরণ উভয় ক্ষেত্রেই বাংলাদেশের কৃষি প্রযুক্তি নির্ভর হচ্ছে।”
তিনি আরো বলেন, “রাশিয়ার বিনিয়োগকারীরা বাংলাদেশকে তাদের প্রবেশ পথ হিসেবে দেখতে পারেন।”
প্রধানমন্ত্রী বেসরকারি খাত ও দুই দেশের জনগণের মধ্যে যোগাযোগের বিষয়ে গভীরভাবে সংশ্লিষ্ট হওয়ার ওপর গুরুত্ব আরোপ করেন এবং উভয় দেশের ব্যবসায়ী সংগঠনগুলোর মধ্যে সহযোগিতা বাড়াতে একটি যৌথ বিজনেস কাউন্সিল গঠনের প্রস্তাব করেন।
তিনি উভয় দেশের মধ্যে ব্যাপক শিক্ষার্থী ও সাংস্কৃতিক বিনিময় কর্মসূচি গ্রহণের প্রস্তাব করে বলেন, “৭০-এর দশকে রাশিয়া থেকে শিক্ষা গ্রহণ করা বহু বাংলাদেশি শিক্ষার্থী এখন দেশে উচ্চ পদে রয়েছেন।”
শেখ হাসিনা বলেন, জাতিসংঘ ও অন্যান্য আঞ্চলিক অথবা আন্তর্জাতিক প্লাটফর্মে বাংলাদেশের ইতিবাচক কর্মকাণ্ড এবং মূল্যবোধ ও প্রতিশ্র“তি সমুন্নত রাখার অঙ্গীকার গত কয়েক দশক ধরে এ দেশকে বিশ্ব দরবারে সম্মানের আসনে রেখেছে।
তিনি আশা প্রকাশ করে বলেন, “বাংলাদেশ সম্প্রতি আসেম-এ যোগদান করেছে। একইভাবে আমরা রাশিয়ার সহযোগিতা নিয়ে সাংহাই কোঅপারেশন অর্গানাইজেশ-এ যোগদানের আশা করছি।”
বাংলাদেশের বর্তমান আর্থ-সামাজিক ও রাজনৈতিক অবস্থার উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, তার সরকার অগ্রগতির ১ নম্বর শত্র দারিদ্র্য মোকাবেলায় নীতি গ্রহণ করেছে। তিনি আরো বলেন, “দারিদ্র্য মোকাবেলায় শিক্ষিত সমাজ ও জনগণের ক্ষমতায়ন খুবই গুরুত্বপূর্ণ।”
শেখ হাসিনা বলেন, “জনগণের ক্ষমতায়নের জন্য অত্যন্ত প্রয়োজনীয় বিষয় হওয়ায় তার সরকার বার্ষিক জাতীয় বাজেট বরাদ্দে শিক্ষার প্রতি সর্বাধিক গুরুত্ব দিচ্ছে। তিনি আরো বলেন, “এর ফলে বিশেষ করে নারী শিক্ষা ও আইসিটি গবেষণার উন্নয়নে ব্যাপক সাফল্য এসেছে।”
প্রধানমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশের দক্ষ ও প্রশিক্ষণযোগ্য কর্মশক্তি রাশিয়ার প্রযুক্তি ও অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডে অবদান রাখতে পারে এবং ওই কর্মশক্তির একাংশ রাশিয়ার অর্থনীতি বিশেষ করে উৎপাদন ও সেবা খাতে কাজ করতে পারে।
তিনি বলেন, সামরিক একনায়ক ও তাদের কাছ থেকে সুবিধাপ্রাপ্তরা বাংলাদেশকে সন্ত্রাসের স্বর্গরাজ্য বানাতে চায়। এমনকি তার জীবনের ওপর একের পর এক হামলা চালাচ্ছে। অবশ্য তিনি সৌভাগ্যক্রমে ওই সব হামলা থেকে প্রাণে বেঁচে যাচ্ছেন। তিনি আরো বলেন, গত চার বছরে তাঁর সরকার সাফল্যজনকভাবে সন্ত্রাসের বিস্তার রোধ করেছে।
তিনি বাংলাদেশের অর্থনৈতিক অগ্রগতির উল্লেখ করে বলেন, গড় বার্ষিক প্রবৃদ্ধি ৬ দশমিক ৫ শতাংশ হওয়ায় বহু আন্তর্জাতিক প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশকে নেক্সট-১১ এ অন্তর্ভুক্ত করেছে।
তিনি বলেন, “আমাদের জনসংখ্যা বৃদ্ধির চেয়েও দ্রুততার সঙ্গে বাড়ছে কৃষি উৎপাদন, আর গত চার দশকে খাদ্য উৎপাদন বেড়েছে চার গুণেরও অধিক।”
সফর এবং শিক্ষক শিক্ষার্থীদের উদ্দেশ্যে ভাষণ দেওয়ার জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের রেক্টর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ডিপ্লোমা প্রদান করেন।
প্রধানমন্ত্রী বিশ্ববিদ্যালয়কে কিছু বই ও একটি চিত্রকর্ম প্রদান করেন।
পরে প্রশ্নোত্তর পর্বে প্রধানমন্ত্রী বলেন, তাঁর সরকার ক্ষুধা ও সন্ত্রাস নির্মূলের মাধ্যমে দক্ষিণ এশিয়ার মধ্যে বাংলাদেশকে একটি শান্তির আবাস হিসেবে গড়ে তুলতে চায়।
তিনি বলেন, স্বাক্ষরিত চুক্তি ও সমঝোতা স্মারক (এমওইউ) বাংলাদেশ ও রাশিয়ার মধ্যে বিদ্যমান সম্পর্ক আরও দৃঢ় করবে।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডা. দীপু মনি, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী স্থপতি ইয়াফেস ওসমান, অ্যাম্বাসেডর অ্যাট লার্জ এম জিয়াউদ্দিন, প্রধানমন্ত্রীর ছেলে বিশিষ্ট আইটি বিশেষজ্ঞ সজীব ওয়াজেদ জয়, ভাগ্নি আমরিনা সিদ্দিকী রুপন্তী এসময় উপস্থিত ছিলেন।
তিনি বলেন, “আমরা আমাদের অভিযাত্রা, আকাঙ্ক্ষা ও উদ্দেশ্য সংযুক্ত করতে পারলে দু’দেশের এবং জনগণের সমৃদ্ধি ও অগ্রগতি অর্জনে আমাদের এই বন্ধুত্ব অবিরত জোরদার হবে।”
প্রধানমন্ত্রী এই বিশ্ববিদ্যালয়ে পৌঁছলে প্রতিষ্ঠানটির রেক্টর প্রফেসর ভিক্টর স্যাদোভনচি তাকে স্বাগত জানান। এ সময় বিভিন্ন ফ্যাকাল্টির সদস্য ও শিক্ষার্থীরা উপস্থিতি ছিলেন। তিনি ঐতিহাসিক যাদুঘর পরিদর্শন করেন।
এই মর্যাদাপূর্ণ প্রতিষ্ঠানে বক্তৃতা দেওয়ার সুযোগ লাভের জন্য গভীর সন্তোষ প্রকাশ করে শেখ হাসিনা বলেন, জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ১৯৭২ সালের এপ্রিলে এই গৌরবোজ্জ্বল প্রতিষ্ঠানটি পরিদর্শন করেন।
১৯৭১ সালে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে রাশিয়ার সমর্থনের জন্য কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, “চট্টগ্রাম বন্দর থেকে মাইন ও ধ্বংসাবশেষ অপসারণে রাশিয়ার অনেককে জীবন দিতে হয়েছে। কেবল আমাদের রক্তক্ষয়ী যুদ্ধেই নয়, বাংলাদেশের পুনর্বাসন কাজেও সোভিয়েত ইউনিয়ন আমাদের পাশে দাঁড়িয়েছিল।”
শেখ হাসিনা বলেন, “২০০৯ সালে দেশ পরিচালনার দায়িত্ব নেওয়ার পর মস্কোর সঙ্গে সম্পর্ক জোরদার ও বহুমুখীকরণ হচ্ছে তার সরকারের অন্যতম প্রধান উদ্যোগ। প্রেসিডেন্ট পুতিন দেশ দু’টির মধ্যে ফলপ্রসূ সম্পর্ক স্থাপনে স্বত:স্ফূর্তভাবে সাড়া দিয়েছেন।”
“ফলপ্রসূ সম্পর্ক স্থাপনে বাংলাদেশ ও রাশিয়ার রয়েছে বিপুল সম্ভাবনা”—উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, “৭০-এর দশকে দু’দেশের মধ্যে উল্লেখযোগ্য বাণিজ্য ছিল। বর্তমান এই বাণিজ্যের পরিমাণ হচ্ছে প্রায় আধা-বিলিয়ন ডলার এবং এর প্রায় সবটাই রাশিয়ার অনুকূলে।”
তিনি বলেন, “অদম্য বিশ্বায়ন ও প্রতিযোগিতা দ্রুততার এই যুগেও বাংলাদেশ অতি আকর্ষণীয় এক আর্থিক প্রণোদনা ঘোষণা করেছে। দক্ষিণ ও দক্ষিণ পূর্ব এশিয়ার মাঝে বাংলাদেশের অবস্থান হওয়ায় এদেশ বিশাল বাজার ও বড় বড় অর্থনীতির গেটওয়েতে পরিণত হয়েছে।”
শেখ হাসিনা বলেন, “বাংলাদেশের স্বাধীনতার পরপরই সাবেক সোভিয়েত ইউনিয়ন কয়েকটি বিদ্যুৎ কেন্দ্র স্থাপনে সহায়তা করেছে। এখন এসব বিদ্যুৎ কেন্দ্র সংস্কারে রাশিয়ার সহযোগিতা প্রয়োজন।”
তিনি বলেন, “রাশিয়ার কারিগরি ও আর্থিক সহযোগিতায় ২০০০ মেগাওয়াট পারমাণবিক বিদ্যুৎ প্লান্ট হবে ভবিষ্যতে আরো বিদ্যুৎ প্লান্ট স্থাপনের সূচনা মাত্র।”
শেখ হাসিনা বলেন, “বাংলাদেশ ও রাশিয়া কৃষি ক্ষেত্রেও বড় ধরনের সহযোগিতা গড়ে তুলবে। উৎপাদন ও প্রক্রিয়াকরণ উভয় ক্ষেত্রেই বাংলাদেশের কৃষি প্রযুক্তি নির্ভর হচ্ছে।”
তিনি আরো বলেন, “রাশিয়ার বিনিয়োগকারীরা বাংলাদেশকে তাদের প্রবেশ পথ হিসেবে দেখতে পারেন।”
প্রধানমন্ত্রী বেসরকারি খাত ও দুই দেশের জনগণের মধ্যে যোগাযোগের বিষয়ে গভীরভাবে সংশ্লিষ্ট হওয়ার ওপর গুরুত্ব আরোপ করেন এবং উভয় দেশের ব্যবসায়ী সংগঠনগুলোর মধ্যে সহযোগিতা বাড়াতে একটি যৌথ বিজনেস কাউন্সিল গঠনের প্রস্তাব করেন।
তিনি উভয় দেশের মধ্যে ব্যাপক শিক্ষার্থী ও সাংস্কৃতিক বিনিময় কর্মসূচি গ্রহণের প্রস্তাব করে বলেন, “৭০-এর দশকে রাশিয়া থেকে শিক্ষা গ্রহণ করা বহু বাংলাদেশি শিক্ষার্থী এখন দেশে উচ্চ পদে রয়েছেন।”
শেখ হাসিনা বলেন, জাতিসংঘ ও অন্যান্য আঞ্চলিক অথবা আন্তর্জাতিক প্লাটফর্মে বাংলাদেশের ইতিবাচক কর্মকাণ্ড এবং মূল্যবোধ ও প্রতিশ্র“তি সমুন্নত রাখার অঙ্গীকার গত কয়েক দশক ধরে এ দেশকে বিশ্ব দরবারে সম্মানের আসনে রেখেছে।
তিনি আশা প্রকাশ করে বলেন, “বাংলাদেশ সম্প্রতি আসেম-এ যোগদান করেছে। একইভাবে আমরা রাশিয়ার সহযোগিতা নিয়ে সাংহাই কোঅপারেশন অর্গানাইজেশ-এ যোগদানের আশা করছি।”
বাংলাদেশের বর্তমান আর্থ-সামাজিক ও রাজনৈতিক অবস্থার উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, তার সরকার অগ্রগতির ১ নম্বর শত্র দারিদ্র্য মোকাবেলায় নীতি গ্রহণ করেছে। তিনি আরো বলেন, “দারিদ্র্য মোকাবেলায় শিক্ষিত সমাজ ও জনগণের ক্ষমতায়ন খুবই গুরুত্বপূর্ণ।”
শেখ হাসিনা বলেন, “জনগণের ক্ষমতায়নের জন্য অত্যন্ত প্রয়োজনীয় বিষয় হওয়ায় তার সরকার বার্ষিক জাতীয় বাজেট বরাদ্দে শিক্ষার প্রতি সর্বাধিক গুরুত্ব দিচ্ছে। তিনি আরো বলেন, “এর ফলে বিশেষ করে নারী শিক্ষা ও আইসিটি গবেষণার উন্নয়নে ব্যাপক সাফল্য এসেছে।”
প্রধানমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশের দক্ষ ও প্রশিক্ষণযোগ্য কর্মশক্তি রাশিয়ার প্রযুক্তি ও অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডে অবদান রাখতে পারে এবং ওই কর্মশক্তির একাংশ রাশিয়ার অর্থনীতি বিশেষ করে উৎপাদন ও সেবা খাতে কাজ করতে পারে।
তিনি বলেন, সামরিক একনায়ক ও তাদের কাছ থেকে সুবিধাপ্রাপ্তরা বাংলাদেশকে সন্ত্রাসের স্বর্গরাজ্য বানাতে চায়। এমনকি তার জীবনের ওপর একের পর এক হামলা চালাচ্ছে। অবশ্য তিনি সৌভাগ্যক্রমে ওই সব হামলা থেকে প্রাণে বেঁচে যাচ্ছেন। তিনি আরো বলেন, গত চার বছরে তাঁর সরকার সাফল্যজনকভাবে সন্ত্রাসের বিস্তার রোধ করেছে।
তিনি বাংলাদেশের অর্থনৈতিক অগ্রগতির উল্লেখ করে বলেন, গড় বার্ষিক প্রবৃদ্ধি ৬ দশমিক ৫ শতাংশ হওয়ায় বহু আন্তর্জাতিক প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশকে নেক্সট-১১ এ অন্তর্ভুক্ত করেছে।
তিনি বলেন, “আমাদের জনসংখ্যা বৃদ্ধির চেয়েও দ্রুততার সঙ্গে বাড়ছে কৃষি উৎপাদন, আর গত চার দশকে খাদ্য উৎপাদন বেড়েছে চার গুণেরও অধিক।”
সফর এবং শিক্ষক শিক্ষার্থীদের উদ্দেশ্যে ভাষণ দেওয়ার জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের রেক্টর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ডিপ্লোমা প্রদান করেন।
প্রধানমন্ত্রী বিশ্ববিদ্যালয়কে কিছু বই ও একটি চিত্রকর্ম প্রদান করেন।
পরে প্রশ্নোত্তর পর্বে প্রধানমন্ত্রী বলেন, তাঁর সরকার ক্ষুধা ও সন্ত্রাস নির্মূলের মাধ্যমে দক্ষিণ এশিয়ার মধ্যে বাংলাদেশকে একটি শান্তির আবাস হিসেবে গড়ে তুলতে চায়।
তিনি বলেন, স্বাক্ষরিত চুক্তি ও সমঝোতা স্মারক (এমওইউ) বাংলাদেশ ও রাশিয়ার মধ্যে বিদ্যমান সম্পর্ক আরও দৃঢ় করবে।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডা. দীপু মনি, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী স্থপতি ইয়াফেস ওসমান, অ্যাম্বাসেডর অ্যাট লার্জ এম জিয়াউদ্দিন, প্রধানমন্ত্রীর ছেলে বিশিষ্ট আইটি বিশেষজ্ঞ সজীব ওয়াজেদ জয়, ভাগ্নি আমরিনা সিদ্দিকী রুপন্তী এসময় উপস্থিত ছিলেন।
No comments