অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনই মূল লক্ষ্য হওয়া উচিত by মমতাজউদ্দীন পাটোয়ারী
বিরোধী দল এবং বেশিরভাগ প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ার সুর প্রায় এক-তা হচ্ছে অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্যে নির্বাচনকালীন একটি সরকার হতে হবে যেটি কারও ভাষায় নির্দলীয় কারও ভাষায় তত্ত্বাবধায়ক, কারও ভাষায় অন্তর্বর্তীকালীন সরকার, কোন অবস্থাতেই ক্ষমতাসীন হতে পারবে না।
ধারণাটি প্রতিদিন এমনভাবে প্রচার পাচ্ছে যে, সাধারণ মানুষ এখন এই গোলক ধাঁধার বাইরে এসে বাস্তব কিছু ভিন্ন চিন্তা করতে পারছেই না। যে ধরনের ব্যবস্থার কথা তারা বলছেন, দাবি করছেন তাতে আমরা ১৯৯০ সাল থেকে ২০০৮ সাল পর্যন্ত সময়ে নির্বাচনকালে ছিলাম। এতে কিছু অর্জন থাকলেও নির্ভর করার কোন স্থায়ী ব্যবস্থা হিসেবে এটি ভিত্তি তৈরি করতে পারেনি। প্রথম প্রথম এই ব্যবস্থা অপেক্ষাকৃত গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের আয়োজন করতে পারলেও ক্রমান্বয়ে এর দুর্বলতা ও ত্রুটি বড় হয়ে উঠতে থাকে। এক সময় (২০০৬ সালে) তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা পূর্ববর্তী জোট বা দলীয় সরকারের ক্রীড়নকে পরিণত হয়, অবাধ নির্বাচনকে প্রহসনে পরিণত করে, দেশে সংঘাত (২০০৬-০৭) চূড়ান্ত পর্যায়ে পৌঁছে, তত্ত্বাবধায়ক সরকারের কাছে দেশের অবাধ, সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন বলির পাঁঠায় পরিণত যখন আমি ইয়াজউদ্দিন আহম্মেদের তত্ত্বাবধায়ক সরকারের কথাই সবাইকে স্মরণ করতে বলছি। সেই সরকারকে তখন কে পেছন থেকে পরিচালিত করেছিল? হাওয়া ভবন নয় কি? ইয়াজউদ্দিন সাহেবকে প্রধান উপদেষ্টার পদে বসানোর সিদ্ধান্ত কার ছিল? বিএনপি বা চারদলীয় জোটের নয় কি? ইয়াজউদ্দিন সাহেব উপদেষ্টাদের উপদেশ মতো চলতেন কি? না মোটেও না। আওয়ামী লীগ তো রাষ্ট্রপতিকে প্রধার উপদেষ্টা পদে নিরপেক্ষতা বজায় রেখে চলার জন্যে সময়ও দিয়েছিল। তিনি কি আওয়ামী লীগের কথা শুনেছিলেন? না, শোনেননি। তিনি কার কথায় তখন চলতেন? বেগম খালেদা জিয়ার পরামর্শ মতো চলতেন। এখন আমাদের সমাজের কিছু জ্ঞানী মানুষের কথা যখন মিডিয়ায় শুনি তখন ভাবতে পারি না- এসব মানুষ ২০০৬ সালের অক্টোবর থেকে ২০০৭ সালের ১/১১-এর আগ পর্যন্ত দেশে ছিলেন কি-না? ইয়াজউদ্দিন আহম্মেদের মেরুদ-হীন তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা দেখার পর চিন্তাশীল কোন মানুষ তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থার পক্ষে ওকালতি করেন কী করে? ইয়াজউদ্দিন আহম্মেদ তো কোন অবাধ বা সুষ্ঠু নির্বাচন অনুষ্ঠিত করার মিশন নিয়ে প্রধান উপদেষ্টার পদ গ্রহণ করেননি। তিনি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করতেই ম্যাডামের ইচ্ছা পূরণ করতে ঐ দায়িত্ব গ্রহণ করেছিলেন। ঐ দায়িত্ব গ্রহণ করার পর চারদলীয় জোটকে কিভাবে পুনরায় বিজয়ী ঘোষণাকে ক্ষমতায় আনা যায় সেই পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করার বেশি বা কম কিছু তিনি করছিলেন না। নির্বাচন কমিশন তো তখন চালাতে চারদলীয় জোট সমর্থক একজন সচিবই, তিনিই তখন বঙ্গভবন এবং নির্বাচন কমিশনের মধ্যে সমন্বয় সাধন করে চারদলীয় জোটকে বিজয়ী করার জন্য যা যা দরকার ছিল তাই করতেন। নির্বাচন কমিশনে চারদলীয় জোট সমর্থক বেশক’জন নির্বাচন কমিশন ঘটা করে নিয়োগ দেয়া হয়েছিল যারা ২২ জানুয়ারির তথাকথিত নির্বাচনের বাস্তবায়নে ব্যস্ত ছিলেন। তত্ত্বাবধায়ক সরকার এবং নির্বাচন কমিশনের এমন নির্লজ্জ আচরণে তখন ক্ষুব্ধ হয়েছিল গোটা জাতি। ২০০৬ সালের নবেম্বর-ডিসেম্বর এবং ২০০৭ সালের ১/১১-এর আগের দিনগুলোতে বাংলাদেশ তেমনই এক অপ্রত্যাশিত সংঘাতের দিকে ক্রমশ এগিয়ে গিয়েছিল, সংঘাত দেশে অনিবার্য হয়েছিল। প্রশ্ন হচ্ছে, কারা পেছন থেকে বুদ্ধি-পরামর্শ ও সমর্থন দিয়ে ইয়াজউদ্দিনের তত্ত্বাবধায়ক সরকারকে এমন বেপরোয়া হতে সাহায্য করেছিল? তারা কি আজকের বিএনপি বা চারদলীয় জোট নয়? তারাই ঐ অবস্থাটি তখন তৈরি করে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থাটিকে মেরুদ-হীন, অকার্যকর এবং নগ্নভাবে দলীয় প্রভাবাধীন সরকারে পরিণত করেছিল। বিচারপতি কে এম হাসান স্বাভাবিক নিয়মে প্রধান উপদেষ্টার রেসে এসে গেলে আওয়ামী লীগের তাঁকে বিরোধী তা করা খুব একটা জনসমর্থন লাভ করত না, আওয়ামী লীগও তা তখন করত কি না জানি না। তেমনটি করে জনসমর্থন পাওয়ার সম্ভাবনা ছিল বলে মনে হয় না। বিএনপি এখানে সুনির্দিষ্ট লক্ষ্য থেকেই বিচারপতিদের বয়স বাড়ানোর ফলে সন্দেহটি বদ্ধমূল হয়েছিল। বিচারপতি কে এম হাসানের সঙ্গে বিএনপির কোন কোন মাঝারি নেতার দেখা সাক্ষাতের খবর পত্রপত্রিকায় ফাঁস হয়ে যাওয়ায় আওয়ামী লীগই শুধু নয়, সুশীল সমাজ এবং মিডিয়াও তাঁর ব্যাপারে প্রতিক্রিয়া জানাতে বেশ তৎপর হয়ে উঠে। বিষয়টিকে সেভাবে তখন গুরুত্ব দেয়ার পেছনে ২০০১ সালে বিচারপতি লতিফুর রহমানের অগ্রিম প্রস্তুতি, হোমওয়ার্ক নেয়াসহ নির্বাচনকালে আওয়ামী লীগকে কোণঠাসা করে ফেলার বিষয়গুলো নতুনভাবে বিবেচনায় চলে আসে। তাছাড়া নির্বাচন কমিশন নিয়ে চারদলীয় জোটের কার্যক্রম এবং ইলেকশন ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের বিষয়টি তখন ব্যাপকভাবে আলোচিত ছিল। ফলে আওয়ামী লীগ, ১৪ দল ও জাতীয় পার্টিসহ বিভিন্ন দল ২০০৬ সালে তত্ত্বাবধায়ক সরকার গঠন নিয়ে বেশ সমালোচনামুখর ছিল, পুরো ঘটনাবলির ওপর নজরদারি বেশ শক্ত ছিল। তেমন অবস্থায় দুই প্রধান দলের মধ্যে সমঝোতার কোন উদ্যোগ সফল করতে না দেয়ার বিষয়টি বিএনপি বা চারদলীয় জোটের পক্ষ থেকে পূর্বনির্ধারিত ছিল।ইয়াজউদ্দিন আহম্মেদের তত্ত্বাবধায়ক সরকার শুরু থেকেই নির্দলীয় আচরণ না করে চারদলীয় জোটের চাইতেও বেশি দলীয় বা জোটের প্রতি পক্ষপাতিত্ব করার ফলে দেশে অনিবার্য সংঘাতের একটি অবস্থা থেকে শেষ পর্যন্ত ১/১১ সৃষ্টি হয়েছিল। এটিকে তত্ত্বাবধায়ক বলে দাবি করার কোন সাংবিধানিক ব্যাখ্যা নেই। তারপরও দেশ দু’বছর সেই সরকারের অধীনে শাসিত হয়েছিল। তবে অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য তখন পুনর্গঠিত নির্বাচন কমিশন বেশকিছু কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করেছিল যার ফলে ২০০৮ সালের ২৯ ডিসেম্বর দেশে একটি অবাধ, সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন অনুষ্ঠিত করা সম্ভব হয়। দেখা যাচ্ছে অবাধ এবং সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য বাংলাদেশকে বেশ চড়া মূল্য দিতে হয়েছে। দেশে সত্যি সত্যিই একটি সরকারকে এর মেয়াদ শেষে বিদায় নিতে হয়, ক্ষমতাটি একটি ১১ সদস্যবিশিষ্ট তত্ত্বাবধায়ক সরকারের হাতে দিয়ে যারা ৯০ দিনে দেশকে একটি অবাধ নির্বাচন উপহার দেবেন বলে কথা থাকলেও শেষ পর্যন্ত দেশ একটি মস্তবড় শূন্যতায় হঠাৎ পড়ে যেতে পারে, দেশে যা খুশি তা হওয়ার সম্ভাবনাও কাল্পনিক কিছু নয়, একটা সংঘাত লেগে যেতে পারে কে হবেন প্রধান, কে হবেন স্রেফ উপদেষ্টা হিসেবে, কারও পছন্দ না হলেই সংঘাত ও সংঘর্ষ, ঝুলে যাওয়ারসমূহ সম্ভাবনা লুকিয়ে আছে। সেই তত্ত্বাবধায়ক সরকারকে দিয়েও তো ২২ জানুয়ারির মতো ভোটবিহীন নির্বাচন করানোর চেষ্টা কেউ কেউ করতে পারে, রায় হাইজাক করার সম্ভাবনাকেও উড়িয়ে দেয়া যায় না। তেমন পরিস্থিতিতে ১/১১-এর মতো বিশেষ সরকারের উত্থানকেও বাদ দেয়া যাচ্ছে না। বাংলাদেশ আসলে প্রতিবার নির্বাচনের আগে একটি মস্তবড় অনিশ্চয়তার সঙ্কটে পড়েছে।
২০০১ সালে আওয়ামী লীগ তো তেমন কিছু করেনি। তারা তত্ত্বাবধায়ক সরকারের মর্যাদা রক্ষা করেছিল। এখন জাতিকে ভাবতে হবে আসলে অবাধ, সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের জন্য এ ধরনের অনিশ্চয়তার মধ্যে ঝাঁপ দেয়া নাকি পৃথিবীব্যাপী অবাধ, সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের স্বীকৃত পথেই চলার অভিজ্ঞতা অর্জন করা, অভ্যস্ত হওয়া, নির্বাচন কমিশন কে যথার্থ-অর্থে স্বাধীন ও দক্ষ করা, নির্বাচনী আচরণবিধি প্রশাসন ও নির্বাচনকালীন সরকার ব্যবস্থার অবস্থান সুনির্দিষ্ট করে দেয়া। আমরা ২০০৬ সাল পর্যন্ত এক্ষেত্রে মনোনিবেশ করিনি, কার অধীনে নির্বাচন হবে তেমনটি প্রাধান্য দিয়েছি। অতীতে সরকারগুলো ক্ষমতাকে অপব্যবহার করে কারচুপির নির্বাচন করিয়েছিল বলেই জনগণও বিরোধী দলগুলোর মনে এমন ধারণা তৈরি হয়েছিল। একটি সময় পর্যন্ত সেই ধারণা অনেকটাই যথার্থ ছিল। তবে আমরা অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য নির্বাচন কমিশনসহ ওপরে উল্লিখিত বিষয়গুলোর প্রয়োগের গুরুত্বকে তখন সেভাবে উপলব্ধি করিনি। কিন্তু ২০০৭ পরবর্তী সময় আমরা বিশেষ পরিস্থিতিতে নির্বাচন কমিশন, ছবিযুক্ত ভোটারতালিকা, আচরণবিধি ইত্যাদি ক্ষেত্রে একটি নিয়মতান্ত্রিক ধারায় যাত্রা শুরু করেছি। এর প্রয়োগ ২০০৮ সালের সকল সিটি ও পৌর নির্বাচন দিয়ে শুরু হয়, ২৯ ডিসেম্বরের জাতীয় সংসদ এবং ২০০৯ সালে উপজেলা নির্বাচনে এর কার্যকারিতা স্বীকৃতি লাভ করে। ২০০৯ থেকে ২০১২ সাল পর্যন্ত দেশে অনুষ্ঠিত সকল স্থানীয় এবং উপনির্বাচনে নির্বাচন কমিশন স্বাধীন প্রতিষ্ঠানের স্বাক্ষর রাখার যথেষ্ট নজির স্থাপন করছে অবাধ, সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন অনুষ্ঠানে সকল রাজনৈতিক ও নাগরিক সমাজের দৃষ্টি আরও বেশি বেশি করে পৃথিবীব্যাপী স্বীকৃত ও গৃহীত পন্থার দিকে ছেড়ে দেয়া ছাড়া অন্য কোন উপায় যখন নেই তখন এ দেশে ব্যর্থ তত্ত্বাবধায়ক সরকারের কঙ্কাল কবর থেকে তুলে এনে কান্নাকাটি কারার আকুতিতে বাঙালীর বুদ্ধি ও চিন্তাশক্তির দৈন্যদশাই ফুটে ওঠে। যারা তত্ত্বাবধায়ক তত্ত্বাবধায়ক বলে মুখে ফেনা তুলছেন তারা যদি নির্বাচনকালে কোন প্রকার অবৈধ হস্তক্ষেপ করার ছিদ্রান্বেষণ করে তা নির্বাচন কমিশনকে ধরিয়ে দিয়ে ধন্য করত তাহলে অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনে এগিয়ে যাওয়ার ক্ষেত্রে বাংলাদেশ সত্যি সত্যিই সফল হতে পারত। কিন্তু তারা কেউই তা করছেন না। কেউ কেউ তত্ত্বাবধায়ক বা নির্দলীয় সরকারের নানা ফর্মুলা দিচ্ছেন।
গত ১১ জানুয়ারি জাতির উদ্দেশে দেয়া ভাষণে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, যে দল জনগণের ভোটাধিকার প্রতিষ্ঠায় দীর্ঘদিন আন্দোলন-সংগ্রাম করেছে সেই দল জনগণের ভোট ছাড়া অন্য কোন উপায়ে ক্ষমতায় যেতে চায় না। এর মাধ্যমে আওয়ামী লীগের দৃষ্টিভঙ্গি অনেকটা পরিষ্কার হয়ে পড়েছে। এরপরও অনেকে বলছেন আস্থা স্থাপনের জন্যে এটি যথেষ্ট নয়। বিএনপি আওয়াামী লীগের অবস্থানকে কারচুপি করে নির্বাচনে জয়লাভের পাঁয়তারা হিসেবে অভিহিত করছে। কিন্তু যে বিষটি মনে রাখতে হবে তা হচ্ছে কারচুপি করে আওয়ামী লীগ কেন কোন দলই এখন আর ক্ষমতায় যেতে পারবে না। এটি ১৯৯৬ সালে ১৫ ফেব্রুয়ারি তারিখ এবং ২০০৭ সালের ২২ জানুয়ারি প্রমাণিত হয়ে গেছে। আওয়ামী লীগ বিষয়টি জানেনা তা ভাবার কোন কারণ নেই। বরং মনে হচ্ছে আওয়ামী লীগ নির্বাচন কালে অন্যান্য গণতান্ত্রিক দেশে কমিশন এবং সরকার যেভাবে যার যার দায়িত্ব পালন করে সেই ধারায় দেশকে ফিরিয়ে নেয়ার একটি বড় চ্যালেঞ্জ গ্রহণ করতে চায়। বিএনপি সেই ক্রেডিট আওয়ামী লীগ নিতে পারুক তা চায় বলে মনে হয় না। বিএনপি তত্ত্বাবধায়ক সরকারের ইস্যুটিকে নিয়ে আরও সম্মুখে অগ্রসর হতে চায়। যদি ১৯৯৬ অথবা ২০০৬ সালের পরিস্থিতি সৃষ্টি করা যায় তাহলে আওয়ামী লীগের রাজনীতি চিরকালের জন্যে কলঙ্কিত হবে। আওয়ামী লীগ দলীয় সরকারের অধীন অবাধ, সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচনে সফল হোক এটি হতে দিয়ে বিএনপি নিজেদের রাজনীতিকে কঠিন চ্যালেঞ্জের মুখে ফেলে দিতে চায় না। সে কারণেই তত্ত্বাবধায়ক নিয়ে তাদের এত চেঁচামেচি সেই চেঁচামেচিতে বিভ্রান্ত হচ্ছেন অনেকেই, মিডিয়া এবং সুশীল সমাজও। তবে আওয়ামী লীগ যদি নিজেদের নৈতিক অবস্থানটি জনগণের কাছে আরও স্পষ্ট করে তুলে ধরতে পারে, জনগণের মনের মধ্যে যে আস্থার সমস্যাটি রয়েছে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের বিপদসমূহ তুলে ধরতে পারে তা হলে জনমত অবাধ, সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের মূলধারায় ফিরে আসতে পারে। সেক্ষেত্রে তত্ত্বাবধায়কের ইস্যুটি দুর্বল হতে পারে। এজন্য একদিকে অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের ক্ষেত্র তৈরি করা, অন্যদিকে জনগণের আস্থা ফিরিয়ে আনাই হলো মূল কাজ যা আওয়ামী লীগ যথাযথভাবে করতে সক্ষম হলে বাংলাদেশের গণতন্ত্র তত্ত্বাবধায়ক ধারণা থেকে মুক্ত হতে পারে।
লেখক : শিক্ষাবিদ ও কলামিস্ট
No comments