লাভস্টোরি ‘ব্রেক কি বাদ’
সম্প্রতি মুক্তি পেয়েছে ‘ব্রেক কি বাদ’ ছবিটি। ছবিতে অভিনয় করেছেন বলিউডের নতুন নায়ক ইমরান খান এবং হার্টথ্রব নায়িকা দীপিকা পাড়–কোন। তাদের অনবদ্য অভিনয় শৈলিতে ছবিটির সব চরিত্রই ফুটে উঠেছে।
এ ছবির মাধ্যমে দু’জনের একটি সম্পর্ক যে মূল্যবোধের মাপকাঠিতে নির্ধারণযোগ্য নয় তা ফুটে উঠেছে। ছবিটি সম্পর্কে বিস্তারিত জানুন নিচের প্রতিবেদনে। লিখেছেন -খ. এনামুল হক মুকুল বলিউডের অন্যতম একজন গুণী পরিচালক হচ্ছেন দানিশ আসলাম। তিনি ‘ব্রেক কি বাদ’ ছবিটি পরিচালনা করেছেন অত্যন্ত যতœসহকারে। ছবির দুটি কেন্দ্রীয় চরিত্রে অভিনয় করেছে দীপিকা ও ইমরান। অভয় চরিত্রে ইমরান খান এবং অলিয়া চরিত্রে অভিনয় করেছেন দীপিকা পাড়ুকোন। ছবির অন্যান্য চরিত্রে অভিনয় করেছেন শর্মিলা ঠাকুর, নাভিন নিশ্চল, শাহানা গোস্বামী প্রমুখ। ছবিটি মুক্তি পেয়েছে সম্প্রতি। চিত্র নির্মাতা কুনাল কোহলি ছবিটি নিজ প্রযোজনা প্রতিষ্ঠান কুনাল কোহিল প্রোডাকশনস থেকে প্রযোজনা করেছেন। তিনি এর আগে হামতুম, ফানা, থোরা পেয়ার থোরা ম্যাজিক ছবিগুলো পরিচালনা করেছিলেন। পরিচালক দানিশ আসলাম এবং রেণেকা কুঞ্জুর যৌথভাবে এ ছবির কাহিনী লিখেছেন। ‘ব্রেক কি বাদ’ সিনেমাটি ড্রামা ও কমেডি নির্ভর লাভ স্টোরি বলা যায়। এক জোরা তরুণ তরুণীয় মধ্যে বিচ্ছেদ হয়ে যাবার পর তারা আবার কিভাবে একত্রিত হবার চেষ্টা করে সে বিষয়টিকে ঘিরে ছবির কাহিনী দীর্ঘায়িত হয়েছে। মাঝপথে তাদের সামনে উপস্থিত হয় নানা ধরনের বাধা প্রতিবন্ধকতা। অভয় গুলাটি এবং আলিয়া খান মাত্র ৪ বছর বয়স থেকে একে অন্যের খুব ভাল বন্ধু। এক সঙ্গে চলতে চলতে কখন যে বয়স বেড়ে গেছে তা কেউ জানে না। তবে ১৫ বছরে পা দেয়ার পর অভয় টের পেতে শুরু করে আলিয়াই তার জীবনের কাক্সিক্ষত নারী। পরবর্তীতে তাদের সম্পর্ক বন্ধুত্ব থেকে রূপান্তরিত হয় প্রেমে। অন্যদিকে অভয়কে ভালবাসলেও আলিয়ার জীবনের সবচেয়ে বড় স্বপ্ন একজন ভালো অভিনেত্রী হিসেবে নিজেকে গড়ে তোলা। আর এই স্বপ্ন বাস্তবায়নের পথে কী এবং কে তার জীবনে আসল বা গেল সে বিষয়টি তার কাছে মোটেও গুরুত্বপূর্ণ নয়। আলিয়ার পরিকল্পনা এবং স্বপ্ন পূরণের পথে অভয়ের ভালোবাসা একটি কঠিন চ্যালেঞ্জারের মুখোমুখি হয়। সে ভেবে পায় না তার কি করা উচিত? ব্যক্তিত্বের মধ্যে পার্থক্য সৃষ্টি হওয়ায় ধীরে ধীরে তাদের মধ্যে নীরব দূরত্ব সৃষ্টি হতে থাকে। এমন একটা সময়ে আলিয়া পড়ালেখার উদ্দেশ্যে অস্ট্রেলিয়া যাওয়ার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে। এর ফলে ভালবাসার মানুষটিকে চিরতরে হারিয়ে ফেলার আশঙ্কা ভীষণভাবে পোড়াতে শুরু করে অভয়কে। কিন্তু অভয় ভালবাসার প্রতি তার বিশ্বাসকে আরও মজবুত করে এবং তারা নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে আলাদা থাকার সিদ্ধান্ত নেয়। তারা দু’জনেই আসলে কি চায় তা খুঁজে বের করার জন্যই মূলত তাদের সম্পর্কের মধ্যে এই বিরতি। এটাকে তাদের সম্পর্কের একটা পরীক্ষা হিসেবেই নেয় তারা। একটা দীর্ঘ সময় আলাদা থাকার পর আলিয়া বুঝতে শুরু করে, একজন মানুষ যে কোন বড় স্বপ্ন পূরণের পরও তাতে কোন আনন্দ থাকে না, যদি তার পাশে এই আনন্দ ভাগাভাগি করার মতো বিশেষ কেউ না থাকে। অন্যদিকে অভয় তার আত্মসম্মানবোধ এবং মর্যাদার বিনিময়ে এটা বুঝতে পারে যে, কোন স্বপ্ন পূর্ণ হয়ে আসার চেয়ে জীবনে বড় আর কিছু হতে পারে না। অভয় ও আলিয়া দু’জনেই অনেক ভুল করে। তারা হতাশার মধ্যে দিন কাটায় এবং এক সময় একে অন্যকে হারিয়ে ফেলে। কিন্তু দু’জনেই নিজেদের আরও দৃঢ়ভাবে গড়ে তুলতে সমর্থ হয়। পরিবর্তনশীল এই পৃথিবীতে যেখানে সামান্য পার্থক্যের জন্যও সম্পর্কের ইতি ঘটে সেখানে চরম মনস্তাত্ত্বিক যুদ্ধ এবং ভৌগোলিক দূরত্বের পরও অভয় এবং আলিয়া শেষ পর্যন্ত তাদের সম্পর্ক রক্ষা করতে পারে। ছবিতে মোট ৮টি গান রয়েছে। এর সঙ্গীত পরিচালনা করেছেন ভিশাল শেখর। ছবিটি বাংলাদেশের ৮ যুবক, কলকাতার সূর্যদীঘল সিনেমা হলে প্রাণভরে উপভোগ করেন। এরা হলেন নাসির খান, হিটলু, জাকির, কামরুল, রফিক, বাসেদ, মাছুদ প্রমুখ। এরা প্রতিবেদককে জানান, এ রকম ছবি বাংলাদেশের পরিচালকের বানানো উচিত। তাহলে বাংলা চলচ্চিত্রের কিছুটা হলেও সুদিন ফিরে আসবে।খ. এনামুল হক মুকুল
No comments