ফের ঘাতক বাস চাপা দিয়ে হত্যা করল আরেকটি শিশু- 'মা' ডেকেই নিথর হয়ে গেল সুমী
দু'দিন না যেতেই ঘাতক বাস কেড়ে নিল আরও এক ছোট্ট সোনামণি সুমির প্রাণ। এবার শুধু শিশুর প্রাণই কেড়ে নিল না, আহত করে গেল শিশুটির মা ও দেড় বছরের একমাত্র ভাই হাসানকে। একদিকে মেয়ে মারা যাওয়ার শোক।
আরেক দিকে স্ত্রী ও একমাত্র জীবিত সনত্মান আহত হয়ে হাসপাতালে মৃতু্যর সঙ্গে লড়ার শোকে পাগলপ্রায় সুমির পিতা রিক্সাচালক মঞ্জু সর্দ্দার। তার কান্নায় আকাশ-বাতাস থমথমে। পুরো শহীদবাগ এলাকায় নেমেছে শোকের ছায়া। বোবা আর্তনাদে ভাষাহীন সবাই। দিনদুপুরে এভাবে ছোট্ট শিশুকে মেরে পালিয়ে গেল ঘাতক বাস। চালকের কি হৃদয় নেই। না সে কোন ভিন গ্রহের প্রাণী!শুক্রবার দুপুর ২টার দিকে রাজধানীর তেজগাঁও বিমানবাহিনীর অফিসের কাছে ফেলকন টাওয়ারের পাশে ছোট্ট মেয়ে সুমিকে হাতে ধরে ও দেড় বছরের শিশু হাসানকে বুকে আগলে রাসত্মা পার হচ্ছিলেন মা হাসিনা বেগম। এ সময় মহাখালীর দিক থেকে আসা মহাখালী-গুলশানগামী একটি দ্রম্নতগতির বাস তাদের সজোরে আঘাত করে। বাসের ধাক্কায় সুমি ছিটকে রাসত্মার পাশে পড়ে যায়। পড়ে গিয়ে পৃথিবীর সবচেয়ে প্রিয় মধুর সেই ডাক মা বলে চিৎকার দেয়। এরপর সুমির সবশেষ ডাক থেমে যায়। অপরদিকে মা বুকের ধন হাসানকে নিয়ে আরেক দিকে ছিটকে পড়ে। হুড়মুড়িয়ে মা দৌড়ে যায় সুমির কাছে। কাছে গিয়ে ডাকতে থাকে সুমি সুমি, সুমি মা আমার কথা বল। সুমি আর কথা বলে না। সুমির কথা চিরতরে বন্ধ হয়ে গেছে। শুরম্ন হয় মায়ের বিলাপ। হায়রে কি হলো রে! তখনও মায়ের কপাল বেয়ে দরদর করে রক্ত ঝরছিল। ততৰণে বাসটি দ্রম্নত পালিয়ে যায়। এ সময় পৃথিবীর সমসত্ম দুঃখ বেদনা যেন ভর করে আশপাশের পরিবেশের ওপর। পরে স্থানীয়রা আহতদের দ্রম্নত ফার্মগেট আলরাজী হাসপাতালে ভর্তি করে। পরে আহতদের ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। আহতদের অবস্থা আশঙ্কাজনক। সুমিরা রাজধানীর তেজগাঁওয়ের শাহীনবাগের ৭৪২ নম্বর বাড়িতে ভাড়ায় বসবাস করে।
এর আগে গত বুধবার উইলস লিটল ফাওয়ার স্কুলের ফুটফুটে শিশু হামীমের প্রাণ কেড়ে নেয় ঘাতক বাস।
No comments