খেজুর রসে গুড় তৈরির ধুম
মাগুরা জেলার গ্রামাঞ্চলে শীত মৌসুমে খেজুর রস জ্বালিয়ে গুড় ও পাটালি তৈরির ধুম লেগেছে। খেজুর গাছ থেকে রস সংগ্রহ করে ৫ হাজার পরিবার জীবিকা নির্বাহ করছে। শীতের মৌসুমে খেজুর গুড় ও পাটালি দিয়ে নানা ধরনের পিঠা ও পায়েশ তৈরি করা হয়।
শীতে খেজুর রসের স্বাদই আলাদা। জানা গেছে, মাগুরা জেলার ৪টি উপজেলা সদর, শ্রীপুর, মহম্মদপুর ও শালিখা উপজেলার ৭৭২টি গ্রামে লৰাধিক খেজুর গাছ রয়েছে। শীত মৌসুমে এ খেজুর গাছ কেঁটে প্রায় ৫ হাজার পরিবার জীবিকা নির্বাহ করে। গাছ থেকে রস সংগ্রহ ও সেই রস জ্বালিয়ে তৈরি করা হচ্ছে জেলার ঐতিহ্যবাহী গুড় ও পাটালি। বর্তমানে প্রতিটি গ্রামে যারা খেজুর গাছ কাটেন স্থানীয়ভাবে তাদের গাছি নামে অভিহিত করা হয়। গাছিরা গাছ থেকে রস সংগ্রহ করে আনার পর কৃষক বধূরা সেই রস জ্বালিয়ে তৈরি করেন সুস্বাদু গুড় পাটালি। মাগুরার খেজুর গুড়ের তৈরি সন্দেশের সুনাম দেশব্যাপী। সরেজমিনে মাগুরা সদর উপজেলার হাজীপুর ইউনিয়নে নড়িহাটি গ্রামের গাছি কামাল উদ্দিন জানান, এ বছর তিনি প্রায় শতাধিক গাছ কাটছেন। প্রতিদিন গড়ে ৮ থেকে ১০ ঠিলা রস পেয়ে থাকেন। কাঁচা রস ঠিলা ৫০ টাকা দরে এবং প্রতি কেজি গুড় ও পাটালি ৬০ থেকে ৭০ টাকা দরে বিক্রি করছেন। প্রতিদিন তার গড়ে আয় ২শ' থেকে আড়াই শ' টাকা। খেজুর গাছ থেকে সপ্তাহে একদিন রস সংগ্রহ করা হয়। বাজারে কাঁচা রস ও পাটালির ব্যাপক চাহিদা রয়েছে। আনার সঙ্গেই বিক্রি হয়ে যায়। ফলে গাছিদের পরিবারে স্বাচ্ছন্দ্য এসেছে এবং মৌসুমি কর্মসংস্থানের সৃষ্টি হয়েছে। ইতোপূর্বে ইটভাটাগুলোতে খেজুর গাছ জ্বালানি হিসেবে ব্যবহার করা হলেও বর্তমানে সে প্রবণতা অনেক কমে গেছে। যারা গাছ কাটেন সেই গাছিরা গাছের মালিকদের উৎপন্ন রসের অর্ধেক দিয়ে থাকেন। এখানে সৃষ্টি হচ্ছে নতুন নতুন খেজুর বাগান। ফলে মাগুরার ঐতিহ্যবাহী খেজুর রস ও গুড় পাটালি তার হারানো গৌরব আবার ফিরে পেয়েছে। আর তাই মাগুরায় প্রতিদিন বিভিন্ন হাটবাজারে খেজুর পাটালি ও গুড়ের আলাদা বাজার বসে থাকে। যেখান থেকে ক্রেতারা তাদের চাহিদামত গুড় পাটালি ক্রয় করে আনেন। _সঞ্জয় রায় চৌধুরী, মাগুরা
No comments