রাজস্ব হারাচ্ছে সরকার, নিশ্চুপ বিটিআরসি- অবৈধ ইন্টারনেট ব্যবসা করছে ওলো by অনিকা ফারজানা
ওলো ওয়্যারলেস ইন্টারনেট। বিনা লাইসেন্সেই তারবিহীন ইন্টারনেট-সেবা দিচ্ছে এই প্রতিষ্ঠান। প্রতিষ্ঠানটির নামে তারসহ ইন্টারনেট-সেবা বা ব্রডব্যান্ড অর্থাৎ ‘ইন্টারনেট সার্ভিস প্রোভাইডার (আইএসপি) লাইসেন্সও নেই। কিন্তু একাধিক প্রতিষ্ঠানের তরঙ্গ নিয়ে দিব্যি ইন্টারনেট ব্যবসা চালাচ্ছে ওলো।
এমনকি ওলোর বিল পরিশোধের জন্য একটি মুঠোফোন অপারেটর তাদের মোবাইল ক্যাশ পয়েন্ট ব্যবহারের জন্য মুঠোফোনে বিজ্ঞাপনও দিয়েছে। ওলোর ই-মেইল ঠিকানা: ollo@bd.multinet.net।
পাশাপাশি রাশিয়ার এক প্রতিষ্ঠান মাল্টিনেট গ্রুপ তাদের ওয়েবসাইটে দাবি করেছে, প্রতিষ্ঠানটি বাংলাদেশে তারবিহীন ইন্টারনেট-সেবা দেয়। ওয়েবসাইটে আরও জানানো হয়েছে, স্থানীয় একটি আইএসপি প্রতিষ্ঠানের স্বত্ব নিয়ে মাল্টিনেট বাংলাদেশে এই সেবা দিচ্ছে। তাদের ই-মেইল ঠিকানা: info@multinet.net। দুটি প্রতিষ্ঠানেরই ইন্টারনেট ব্যবসা অবৈধ, বেআইনি। কারণ, টেলিযোগাযোগ আইন অনুযায়ী, ওয়াইম্যাক্স প্রযুক্তিতে (ওয়ার্ল্ডওয়াইড ইন্টার অপারেবিলিটি ফর মাইক্রোওয়েভ এক্সেস) তারবিহীন ইন্টারনেট-সেবা দেওয়ার লাইসেন্স ও অনুমতি রয়েছে মাত্র দুটি প্রতিষ্ঠানের। বাংলালায়ন ও কিউবি লিমিটেড। পুরো বিষয়টি বেআইনি ও অবৈধ হওয়া সত্ত্বেও এবং এ নিয়ে বিটিআরসির কাছে বারবার অভিযোগ করার পরও কোনো পদক্ষেপ নেয়নি কর্তৃপক্ষ।
অনুসন্ধানে জানা গেছে, মাল্টিনেট ও ওলো ওয়্যারলেস ইন্টারনেট মূলত একটিই প্রতিষ্ঠান। নিউ/নেক্সট জেনারেশন গ্রাফিক্স লিমিটেড (এনজিজিএল) ও বাংলাদেশ ইন্টারনেট এক্সচেঞ্জ লিমিটেড (বিআইইএল) নামের দুটি স্থানীয় আইএসপি প্রতিষ্ঠানের ৬০ শতাংশ করে শেয়ার কিনে বাংলাদেশে অবৈধ উপায়ে তারবিহীন ইন্টারনেট-সেবা দিচ্ছে ওলো ওয়্যারলেস ইন্টারনেট তথা মাল্টিনেট। অথচ টেলিযোগাযোগ আইনে সব ধরনের লাইসেন্স হস্তান্তর ও বিক্রি নিষিদ্ধ।
রাজস্ব হারাচ্ছে সরকার: ওয়াইম্যাক্স লাইসেন্সের দাম ২১৫ কোটি টাকা। এ ছাড়া ওয়াইম্যাক্স লাইসেন্সপ্রাপ্ত প্রতিষ্ঠানগুলো তারবিহীন ইন্টারনেট-সেবার মাধ্যমে আয়ের একটি নির্ধারিত অংশ সরকারকে লভ্যাংশ হিসেবে কোষাগারে জমা দেয়।
বাংলালায়নের সূত্রে জানা গেছে, তারা বছরে সরকারকে ছয় থেকে ১০ কোটি টাকা পর্যন্ত লভ্যাংশ দেয়। এর সঙ্গে রয়েছে ১৫ শতাংশ ভ্যাট। আর তরঙ্গ বরাদ্দ ফি হিসেবে প্রতিবছরে বিটিআরসিকে দেয় ২০ কোটি টাকা। বার্ষিক লাইসেন্স ফি তিন কোটি টাকা। প্রায় একই ধরনের অর্থ কিউবিও সরকারকে দেয়। অথচ একটি টাকাও সরকারকে দেয় না ওলো তথা মাল্টিনেট। বরং এনজিজিএল ও বিআইইএলকে বরাদ্দ করা পৃথক তরঙ্গ বিনা মূল্যে নিয়ে, তা একসঙ্গে ব্যবহার করে অবৈধ উপায়ে ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছে মাল্টিনেট।
বিটিআরসির তদন্ত: ওলোর অবৈধ ব্যবসা নিয়ে একটি আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে বিটিআরসিকে তদন্তের নির্দেশ দেন আদালত। চলতি বছরের ৮ এপ্রিল মো. রকিবুল হাসানের নেতৃত্বে তিন সদস্যের কমিটি তৈরি করে বিটিআরসি। ১০ দিনের অনুসন্ধান শেষে তাঁরা প্রতিবেদন জমা দেয়। তদন্ত প্রতিবেদনে ওলোর অবৈধ কর্মকাণ্ডের প্রমাণ দেওয়া হয়েছে।
তবে বিটিআরসি তদন্ত, আদালতের নির্দেশ—এত কিছুর পরেও ওলো বা মাল্টিনেট নির্বিঘ্নে ইন্টারনেট ব্যবসা করছে। অভিযোগ রয়েছে, এর সঙ্গে বিটিআরসির ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা ও সরকারের উচ্চপর্যায়ের ব্যক্তিরা জড়িত। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বিটিআরসির একাধিক কর্মকর্তা আরও জানান, গত বছরের শুরু থেকেই ওলো দেশে কার্যক্রম শুরু করে। তখনই বাংলালায়ন, কিউবি এবং কিছু আইএসপি প্রতিষ্ঠান আপত্তি জানায়। কিন্তু সে সময় কোনো ব্যবস্থা নেয়নি বিটিআরসি। এমনকি, তারবিহীন ইন্টারনেট-সেবা দিতে উপযুক্ত যন্ত্রপাতি (১৬ ই), যা ওয়াইম্যাক্স প্রতিষ্ঠান ব্যবহার করে, তাও ওলোকে আমদানির অনুমতি দেয় বিটিআরসি। এসব বিষয়ে জানতে চাইলে বিটিআরসির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান গিয়াসউদ্দিন আহমেদ কোনো কিছু বলতে অস্বীকৃতি জানান।
বক্তব্য: এনজিজিএলের ব্যবস্থাপনা পরিচালক খান মোহাম্মদ আহসানের সঙ্গে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি। উত্তরার কার্যালয়ের কর্মচারীরা প্রতিবেদকের পরিচয় জেনে জানান, ‘এমডির সঙ্গে যোগাযোগ করা যাবে না। মানা আছে।’ তবে কথা প্রসঙ্গে তাঁরা জানিয়ে দেন, ব্রডব্যান্ড ব্যবসার জন্য লাইসেন্স (আইএসপি লাইসেন্স) নিয়েছে প্রতিষ্ঠানটি। আর প্রতিষ্ঠানের কিছু অংশের মালিক ‘রাশিয়ার কেউ একজন’। একইভাবে বিআইইএলের মহাখালী করপোরেট কার্যালয়েও কর্মকর্তাদের কাউকে পাওয়া যায়নি।
পাশাপাশি রাশিয়ার এক প্রতিষ্ঠান মাল্টিনেট গ্রুপ তাদের ওয়েবসাইটে দাবি করেছে, প্রতিষ্ঠানটি বাংলাদেশে তারবিহীন ইন্টারনেট-সেবা দেয়। ওয়েবসাইটে আরও জানানো হয়েছে, স্থানীয় একটি আইএসপি প্রতিষ্ঠানের স্বত্ব নিয়ে মাল্টিনেট বাংলাদেশে এই সেবা দিচ্ছে। তাদের ই-মেইল ঠিকানা: info@multinet.net। দুটি প্রতিষ্ঠানেরই ইন্টারনেট ব্যবসা অবৈধ, বেআইনি। কারণ, টেলিযোগাযোগ আইন অনুযায়ী, ওয়াইম্যাক্স প্রযুক্তিতে (ওয়ার্ল্ডওয়াইড ইন্টার অপারেবিলিটি ফর মাইক্রোওয়েভ এক্সেস) তারবিহীন ইন্টারনেট-সেবা দেওয়ার লাইসেন্স ও অনুমতি রয়েছে মাত্র দুটি প্রতিষ্ঠানের। বাংলালায়ন ও কিউবি লিমিটেড। পুরো বিষয়টি বেআইনি ও অবৈধ হওয়া সত্ত্বেও এবং এ নিয়ে বিটিআরসির কাছে বারবার অভিযোগ করার পরও কোনো পদক্ষেপ নেয়নি কর্তৃপক্ষ।
অনুসন্ধানে জানা গেছে, মাল্টিনেট ও ওলো ওয়্যারলেস ইন্টারনেট মূলত একটিই প্রতিষ্ঠান। নিউ/নেক্সট জেনারেশন গ্রাফিক্স লিমিটেড (এনজিজিএল) ও বাংলাদেশ ইন্টারনেট এক্সচেঞ্জ লিমিটেড (বিআইইএল) নামের দুটি স্থানীয় আইএসপি প্রতিষ্ঠানের ৬০ শতাংশ করে শেয়ার কিনে বাংলাদেশে অবৈধ উপায়ে তারবিহীন ইন্টারনেট-সেবা দিচ্ছে ওলো ওয়্যারলেস ইন্টারনেট তথা মাল্টিনেট। অথচ টেলিযোগাযোগ আইনে সব ধরনের লাইসেন্স হস্তান্তর ও বিক্রি নিষিদ্ধ।
রাজস্ব হারাচ্ছে সরকার: ওয়াইম্যাক্স লাইসেন্সের দাম ২১৫ কোটি টাকা। এ ছাড়া ওয়াইম্যাক্স লাইসেন্সপ্রাপ্ত প্রতিষ্ঠানগুলো তারবিহীন ইন্টারনেট-সেবার মাধ্যমে আয়ের একটি নির্ধারিত অংশ সরকারকে লভ্যাংশ হিসেবে কোষাগারে জমা দেয়।
বাংলালায়নের সূত্রে জানা গেছে, তারা বছরে সরকারকে ছয় থেকে ১০ কোটি টাকা পর্যন্ত লভ্যাংশ দেয়। এর সঙ্গে রয়েছে ১৫ শতাংশ ভ্যাট। আর তরঙ্গ বরাদ্দ ফি হিসেবে প্রতিবছরে বিটিআরসিকে দেয় ২০ কোটি টাকা। বার্ষিক লাইসেন্স ফি তিন কোটি টাকা। প্রায় একই ধরনের অর্থ কিউবিও সরকারকে দেয়। অথচ একটি টাকাও সরকারকে দেয় না ওলো তথা মাল্টিনেট। বরং এনজিজিএল ও বিআইইএলকে বরাদ্দ করা পৃথক তরঙ্গ বিনা মূল্যে নিয়ে, তা একসঙ্গে ব্যবহার করে অবৈধ উপায়ে ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছে মাল্টিনেট।
বিটিআরসির তদন্ত: ওলোর অবৈধ ব্যবসা নিয়ে একটি আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে বিটিআরসিকে তদন্তের নির্দেশ দেন আদালত। চলতি বছরের ৮ এপ্রিল মো. রকিবুল হাসানের নেতৃত্বে তিন সদস্যের কমিটি তৈরি করে বিটিআরসি। ১০ দিনের অনুসন্ধান শেষে তাঁরা প্রতিবেদন জমা দেয়। তদন্ত প্রতিবেদনে ওলোর অবৈধ কর্মকাণ্ডের প্রমাণ দেওয়া হয়েছে।
তবে বিটিআরসি তদন্ত, আদালতের নির্দেশ—এত কিছুর পরেও ওলো বা মাল্টিনেট নির্বিঘ্নে ইন্টারনেট ব্যবসা করছে। অভিযোগ রয়েছে, এর সঙ্গে বিটিআরসির ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা ও সরকারের উচ্চপর্যায়ের ব্যক্তিরা জড়িত। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বিটিআরসির একাধিক কর্মকর্তা আরও জানান, গত বছরের শুরু থেকেই ওলো দেশে কার্যক্রম শুরু করে। তখনই বাংলালায়ন, কিউবি এবং কিছু আইএসপি প্রতিষ্ঠান আপত্তি জানায়। কিন্তু সে সময় কোনো ব্যবস্থা নেয়নি বিটিআরসি। এমনকি, তারবিহীন ইন্টারনেট-সেবা দিতে উপযুক্ত যন্ত্রপাতি (১৬ ই), যা ওয়াইম্যাক্স প্রতিষ্ঠান ব্যবহার করে, তাও ওলোকে আমদানির অনুমতি দেয় বিটিআরসি। এসব বিষয়ে জানতে চাইলে বিটিআরসির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান গিয়াসউদ্দিন আহমেদ কোনো কিছু বলতে অস্বীকৃতি জানান।
বক্তব্য: এনজিজিএলের ব্যবস্থাপনা পরিচালক খান মোহাম্মদ আহসানের সঙ্গে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি। উত্তরার কার্যালয়ের কর্মচারীরা প্রতিবেদকের পরিচয় জেনে জানান, ‘এমডির সঙ্গে যোগাযোগ করা যাবে না। মানা আছে।’ তবে কথা প্রসঙ্গে তাঁরা জানিয়ে দেন, ব্রডব্যান্ড ব্যবসার জন্য লাইসেন্স (আইএসপি লাইসেন্স) নিয়েছে প্রতিষ্ঠানটি। আর প্রতিষ্ঠানের কিছু অংশের মালিক ‘রাশিয়ার কেউ একজন’। একইভাবে বিআইইএলের মহাখালী করপোরেট কার্যালয়েও কর্মকর্তাদের কাউকে পাওয়া যায়নি।
No comments