আবহাওয়া দপ্তরের ভুল, না গাফিলতি? by ভূঁইয়া নজরুল
উপকূলের মানুষ বুধবার রাতের ঝড়ের বিষয়ে খুব বেশি সতর্ক হওয়ার কিংবা আগাম প্রস্তুতি নেওয়ার সময় পায়নি। আবহাওয়া দপ্তর বুধবার রাত ১২টার বুলেটিনের আগে জানাতে পারেনি, উত্তর-পশ্চিম বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট লঘুচাপটি নিম্নচাপে পরিণত হয়েছে।
এর কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই নিম্নচাপটি উপকূল অতিক্রম করে। আবহাওয়া অফিস যুক্তি হিসেবে বলেছে, সুস্পষ্ট লঘুচাপটি দ্রুত নিম্নচাপে পরিণত হওয়ায় তারা আগে পূর্বাভাস দিতে পারেনি। তবে একজন বিশেষজ্ঞ বলেছেন, নিম্নচাপ কখন উপকূল অতিক্রম করবে তা ১৫-১৬ ঘণ্টা আগেই টের পাওয়া যায়। আবহাওয়া অফিসের মনে হয় পর্যবেক্ষণ ও পরিমাপে কোথাও না কোথাও ভুল হয়েছে।
তবে আবহাওয়া অফিস তাদের ভুল হওয়ার কথা স্বীকার করছে না। সঠিক সময়ে প্রচারমাধ্যমে আবহাওয়ার সংবাদ প্রচার না হওয়াকে ক্ষয়ক্ষতি বেশি হওয়ার অন্যতম কারণ বলছে তারা। নিম্নচাপের প্রভাবে বুধবার রাত ৩টা থেকে ভোর পর্যন্ত ঝড়ে কমপক্ষে ২৭ জন নিহত হয়েছে এবং পাঁচ শতাধিক জেলে নৌকা নিখোঁজ রয়েছে।
আবহাওয়া অফিস মঙ্গলবার উত্তর-পশ্চিম বঙ্গোপসাগরে লঘুচাপ সৃষ্টি হওয়ার পর চট্টগ্রাম, কক্সবাজার ও মংলা সমুদ্রবন্দরের জন্য তিন নম্বর স্থানীয় সতর্ক সংকেত দেখিয়ে যেতে বলে। এরপর জানানো হয়, বুধবার বিকেল ৩টায় লঘুচাপটি সুস্পষ্ট লঘুচাপে পরিণত হয়েছে এবং এর পরিপ্রেক্ষিতে উপকূলীয় এলাকায় স্বাভাবিকের চেয়ে এক থেকে তিন ফুটের অধিক জলোচ্ছ্বাস হতে পারে। বুধবার রাত সাড়ে ১২টার বুলেটিনে জানানো হয়, সুস্পষ্ট লঘুচাপটি মৌসুমি নিম্নচাপে পরিণত হয়েছে এবং তা উত্তর উত্তর-পূর্ব দিকে এগিয়ে চলছে। আবহাওয়া অফিস এ পর্যায়েও ৩ নম্বর স্থানীয় সতর্কতা সংকেত দেখিয়ে যেতে বলে।
লঘুচাপটি বুধবার বিকেলে সুস্পষ্ট লঘুচাপ ও রাত সাড়ে ১২টার পর মৌসুমি নিম্নচাপে পরিণত হওয়ার কয়েক ঘণ্টার মধ্যে উপকূল অতিক্রম করে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কেন্দ্রের সাবেক চেয়ারম্যান এবং ভূগোল ও পরিবেশবিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক এ কিউ এম মাহবুব বলেন, লঘুচাপ থেকে নিম্নচাপ সৃষ্টি হওয়া আকস্মিক কোনো বিষয় নয়, নিম্নচাপ উপকূল অতিক্রমের বিষয়টি ১৫-১৬ ঘণ্টা আগেই টের পাওয়া যায়। আবহাওয়া অফিস সম্ভবত লঘুচাপটির গতিবিধি ও দিকসহ বিভিন্ন বিষয়ে পরিমাপ করতে ব্যর্থ হয়েছে।
উপকূলের বাসিন্দা আবদুল মজিদ বলেন, 'আগে নিম্নচাপ উপকূল অতিক্রম করার ১২ থেকে ১৮ ঘণ্টা আগে মিডিয়ার মাধ্যমে আমরা খবর পেতাম। কিন্তু আজকের (বৃহস্পতিবার) জাতীয় বা স্থানীয় কোনো পত্রিকায় নিম্নচাপের খবর প্রকাশিত হয়নি। শুধু লঘুচাপের বিষয়টি প্রকাশিত হয়েছে। এতে বোঝা যায়, নিম্নচাপের পূর্বাভাস আবহাওয়া অধিদপ্তর সঠিক সময় দিতে পারেনি।'
আবহাওয়া অধিদপ্তর নীতিমালা অনুযায়ী সঠিক কাজ করেছে জানিয়ে ঢাকা আবহাওয়া অধিদপ্তরের সিনিয়র আবহাওয়াবিদ আবুল কালাম মল্লিক কালের কণ্ঠকে বলেন, 'লঘুচাপটি দ্রুত পরিবর্তন হয়ে নিম্নচাপে পরিণত হয়েছে। উপকূলের খুব কাছাকাছি থাকায় এবং এর অবস্থা অনুধাবন করে সতর্ক সংকেত বাড়ানো হয়নি। এই ধরনের ঝড়ের জন্য ৩ নম্বর স্থানীয় সতর্ক সংকেত ঠিকই আছে।'
আবুল কালাম আরো বলেন, 'বুধবার রাত সাড়ে ১২টার পর আমরা নিম্নচাপের সংবাদ আমাদের ওয়েবসাইটে প্রকাশ করেছি। কিন্তু দেশের মিডিয়াগুলো তা প্রচার না করলে আমাদের কিছুই করার নেই।'
কিন্তু রাত ১২টার পর মৌসুমি নিম্নচাপের খবর দেশের বেশির ভাগ গণমাধ্যমে প্রচারিত হয়নি। এ জন্য উল্টো আবহাওয়া অধিদপ্তরকে অভিযুক্ত করে বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেল টোয়েন্টি ফোর-এর চট্টগ্রামের ব্যুারো প্রধান কামাল পারভেজ কালের কণ্ঠকে বলেন, 'আবহাওয়া অধিদপ্তর নিজেই বিষয়টিকে গুরুত্ব দেয়নি। তারা আমাদের কাছে ফ্যাঙ্ করলে অবশ্যই আমরা বিষয়টি প্রচার করতাম। দেশের সব মিডিয়া আবহাওয়াবিষয়ক প্রতিবেদন গুরুত্বের সঙ্গে প্রচার করে আসছে।'
নিম্নচাপটি সকালে উপকূল অতিক্রম করবে- এই সংবাদ রাত সাড়ে ১২টায় ফ্যাক্সযোগে পাওয়া গেছে জানিয়ে চট্টগ্রামের জেলা প্রশাসক জয়নুল বারী বলেন, সতর্ক সংকেত জারির এত কম সময়ে আগে কখনো নিম্নচাপ উপকূল অতিক্রম করেনি। আরো আগে সংবাদ পেলে ভালো হতো। তবে ৩ নম্বর সতর্ক সংকেত বছরজুড়েই থাকে, তাই হয়তো স্থানীয় লোকজনের অনেকেই তা আমলে নেয়নি। জেলা প্রশাসন সূত্র জানায়, ঘূর্ণিঝড়-বিষয়ক স্ট্যান্ডিং কমিটি ৪ নম্বর সতর্ক সংকেত না পাওয়া পর্যন্ত কার্যকর হবে না। আর এ কারণে ঘণ্টায় ৫০ থেকে ৬০ কিলোমিটার গতিতে প্রবাহিত বায়ুপ্রবাহ উপকূলে আঘাত করলেও সতর্ক সংকেত না বাড়ার ফলে স্ট্যান্ডিং কমিটি কার্যত নীরব ছিল।
তবে আবহাওয়া অফিস তাদের ভুল হওয়ার কথা স্বীকার করছে না। সঠিক সময়ে প্রচারমাধ্যমে আবহাওয়ার সংবাদ প্রচার না হওয়াকে ক্ষয়ক্ষতি বেশি হওয়ার অন্যতম কারণ বলছে তারা। নিম্নচাপের প্রভাবে বুধবার রাত ৩টা থেকে ভোর পর্যন্ত ঝড়ে কমপক্ষে ২৭ জন নিহত হয়েছে এবং পাঁচ শতাধিক জেলে নৌকা নিখোঁজ রয়েছে।
আবহাওয়া অফিস মঙ্গলবার উত্তর-পশ্চিম বঙ্গোপসাগরে লঘুচাপ সৃষ্টি হওয়ার পর চট্টগ্রাম, কক্সবাজার ও মংলা সমুদ্রবন্দরের জন্য তিন নম্বর স্থানীয় সতর্ক সংকেত দেখিয়ে যেতে বলে। এরপর জানানো হয়, বুধবার বিকেল ৩টায় লঘুচাপটি সুস্পষ্ট লঘুচাপে পরিণত হয়েছে এবং এর পরিপ্রেক্ষিতে উপকূলীয় এলাকায় স্বাভাবিকের চেয়ে এক থেকে তিন ফুটের অধিক জলোচ্ছ্বাস হতে পারে। বুধবার রাত সাড়ে ১২টার বুলেটিনে জানানো হয়, সুস্পষ্ট লঘুচাপটি মৌসুমি নিম্নচাপে পরিণত হয়েছে এবং তা উত্তর উত্তর-পূর্ব দিকে এগিয়ে চলছে। আবহাওয়া অফিস এ পর্যায়েও ৩ নম্বর স্থানীয় সতর্কতা সংকেত দেখিয়ে যেতে বলে।
লঘুচাপটি বুধবার বিকেলে সুস্পষ্ট লঘুচাপ ও রাত সাড়ে ১২টার পর মৌসুমি নিম্নচাপে পরিণত হওয়ার কয়েক ঘণ্টার মধ্যে উপকূল অতিক্রম করে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কেন্দ্রের সাবেক চেয়ারম্যান এবং ভূগোল ও পরিবেশবিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক এ কিউ এম মাহবুব বলেন, লঘুচাপ থেকে নিম্নচাপ সৃষ্টি হওয়া আকস্মিক কোনো বিষয় নয়, নিম্নচাপ উপকূল অতিক্রমের বিষয়টি ১৫-১৬ ঘণ্টা আগেই টের পাওয়া যায়। আবহাওয়া অফিস সম্ভবত লঘুচাপটির গতিবিধি ও দিকসহ বিভিন্ন বিষয়ে পরিমাপ করতে ব্যর্থ হয়েছে।
উপকূলের বাসিন্দা আবদুল মজিদ বলেন, 'আগে নিম্নচাপ উপকূল অতিক্রম করার ১২ থেকে ১৮ ঘণ্টা আগে মিডিয়ার মাধ্যমে আমরা খবর পেতাম। কিন্তু আজকের (বৃহস্পতিবার) জাতীয় বা স্থানীয় কোনো পত্রিকায় নিম্নচাপের খবর প্রকাশিত হয়নি। শুধু লঘুচাপের বিষয়টি প্রকাশিত হয়েছে। এতে বোঝা যায়, নিম্নচাপের পূর্বাভাস আবহাওয়া অধিদপ্তর সঠিক সময় দিতে পারেনি।'
আবহাওয়া অধিদপ্তর নীতিমালা অনুযায়ী সঠিক কাজ করেছে জানিয়ে ঢাকা আবহাওয়া অধিদপ্তরের সিনিয়র আবহাওয়াবিদ আবুল কালাম মল্লিক কালের কণ্ঠকে বলেন, 'লঘুচাপটি দ্রুত পরিবর্তন হয়ে নিম্নচাপে পরিণত হয়েছে। উপকূলের খুব কাছাকাছি থাকায় এবং এর অবস্থা অনুধাবন করে সতর্ক সংকেত বাড়ানো হয়নি। এই ধরনের ঝড়ের জন্য ৩ নম্বর স্থানীয় সতর্ক সংকেত ঠিকই আছে।'
আবুল কালাম আরো বলেন, 'বুধবার রাত সাড়ে ১২টার পর আমরা নিম্নচাপের সংবাদ আমাদের ওয়েবসাইটে প্রকাশ করেছি। কিন্তু দেশের মিডিয়াগুলো তা প্রচার না করলে আমাদের কিছুই করার নেই।'
কিন্তু রাত ১২টার পর মৌসুমি নিম্নচাপের খবর দেশের বেশির ভাগ গণমাধ্যমে প্রচারিত হয়নি। এ জন্য উল্টো আবহাওয়া অধিদপ্তরকে অভিযুক্ত করে বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেল টোয়েন্টি ফোর-এর চট্টগ্রামের ব্যুারো প্রধান কামাল পারভেজ কালের কণ্ঠকে বলেন, 'আবহাওয়া অধিদপ্তর নিজেই বিষয়টিকে গুরুত্ব দেয়নি। তারা আমাদের কাছে ফ্যাঙ্ করলে অবশ্যই আমরা বিষয়টি প্রচার করতাম। দেশের সব মিডিয়া আবহাওয়াবিষয়ক প্রতিবেদন গুরুত্বের সঙ্গে প্রচার করে আসছে।'
নিম্নচাপটি সকালে উপকূল অতিক্রম করবে- এই সংবাদ রাত সাড়ে ১২টায় ফ্যাক্সযোগে পাওয়া গেছে জানিয়ে চট্টগ্রামের জেলা প্রশাসক জয়নুল বারী বলেন, সতর্ক সংকেত জারির এত কম সময়ে আগে কখনো নিম্নচাপ উপকূল অতিক্রম করেনি। আরো আগে সংবাদ পেলে ভালো হতো। তবে ৩ নম্বর সতর্ক সংকেত বছরজুড়েই থাকে, তাই হয়তো স্থানীয় লোকজনের অনেকেই তা আমলে নেয়নি। জেলা প্রশাসন সূত্র জানায়, ঘূর্ণিঝড়-বিষয়ক স্ট্যান্ডিং কমিটি ৪ নম্বর সতর্ক সংকেত না পাওয়া পর্যন্ত কার্যকর হবে না। আর এ কারণে ঘণ্টায় ৫০ থেকে ৬০ কিলোমিটার গতিতে প্রবাহিত বায়ুপ্রবাহ উপকূলে আঘাত করলেও সতর্ক সংকেত না বাড়ার ফলে স্ট্যান্ডিং কমিটি কার্যত নীরব ছিল।
No comments