মালালার সমাজ বদলের লড়াই
তালেবানের কট্টর বিধিনিষেধের বিরুদ্ধে সোচ্চার ছোট্ট মেয়েটিই আজ বিশ্বব্যাপী ‘লড়াইয়ের প্রতীক’। ধর্মান্ধতা আর গোঁড়ামির অভিশাপ থেকে সমাজকে রক্ষায় আপসহীন সংগ্রামে নেমেছিল সে। জঙ্গিবাদী প্রতিহিংসায় তার জীবন এখন বিপন্ন
‘আমি গত রাতে ভয়ানক এক স্বপ্ন দেখেছি। সামরিক হেলিকপ্টারের বহর আর তালেবান। সোয়াতে সামরিক অভিযান শুরুর পর থেকেই আমি এমন স্বপ্ন দেখছি। এখন স্কুলে যেতে ভয় করে। কারণ, মেয়েদের স্কুলে যাওয়া নিষিদ্ধ করেছে তালেবান।’
পাকিস্তানের অকুতোভয় কিশোরী মালালা ইউসুফজাই ২০০৯ সালের ৩ জানুয়ারি বিবিসির ওয়েব ব্লগের উর্দু সংস্করণে কথাগুলো লিখেছে। এক দিনের ব্যবধানে ৪ জানুয়ারি সে লেখে, ‘আজ ছুটির দিন। দেরিতে ১০টার দিকে ঘুম থেকে জেগে বাবাকে বলতে শুনি, গ্রিন চকে (স্থানীয় ক্রসিং) আরও তিনটি মরদেহ পড়ে আছে। খবরটা শুনে আমার মন খারাপ হয়ে যায়।’ ৫ জানুয়ারি সে আবার লেখে, ‘তালেবানের ভয়ে শিক্ষকেরা আমাদের ইউনিফর্ম পরে স্কুলে যেতে নিষেধ করেছেন। তাই আমি আমার প্রিয় গোলাপি পোশাকটা পরেই স্কুলে যাই। অন্য মেয়েরাও রঙিন পোশাক পরে। স্কুলটা বাড়ির মতোই মনে হয়েছে।’
তালেবানের গুলিতে মালালা এখন বিক্ষত হলেও সে জঙ্গিদের রোষানলে পড়ে সেই চার বছর আগেই। তখন তার বয়স ছিল মাত্র ১১ বছর। সোয়াত অঞ্চলে নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা করে তালেবান শুরুতেই নারীদের ওপর হুকুম জারি করে। বোরকা ছাড়া বাইরে যাওয়া চলবে না। বাজারে গমন, কেনাকাটা করতে পারবেন না তাঁরা। রাতারাতি বন্ধ করে দেওয়া হলো চার শতাধিক স্কুল। এই হুকুমের ব্যত্যয় হলেই চালানো হতো হত্যাযজ্ঞ। ভুক্তভোগীদের শিরশ্ছেদ করা দেহ ঝুলিয়ে রাখা হতো মিংগোরা শহরের মোড়ে মোড়ে। যাতে অন্যরা এই ভয়াবহ পরিণতি দেখে তালেবান শাসনের অনুগত হয়।
কিন্তু তালেবানের এই বর্বরতা, নিষ্ঠুরতা আর নৃশংসতা অন্যরা মেনে নিলেও স্বাধীনচেতা মালালা মেনে নেয়নি। কলম হাতে রুখে দাঁড়াল সে। মাধ্যম হিসেবে বেছে নিল বিবিসির ওয়েব ব্লগ। ব্লগে নিয়মিত লিখতে শুরু করল সে। দমবন্ধ তালেবানি শাসন, বিশেষ করে নারীশিক্ষার বিরুদ্ধে তাদের ক্রূরতা উঠে এল তার লেখায়। আর মালালাও তালেবানের নিশানা সেই থেকেই। অপেক্ষা ছিল শুধু সুযোগের। অবশেষে গত মঙ্গলবার রাজধানী ইসলামাবাদের উত্তর-পশ্চিমে সোয়াত উপত্যকার মিংগোরায় স্কুলের বাসে হামলা চালায় বন্দুকধারীরা। এ সময় মাথায় গুলিবিদ্ধ হয় মালালা।
২০০৯ সালের ১৪ জানুয়ারি মালালা ব্লগে লিখেছিল, ‘স্কুলে যেতে যেতে আজ মনটাই খারাপ হয়ে গেল। কারণ, কাল থেকে স্কুলে শীতকালীন ছুটি শুরু। কিন্তু প্রিন্সিপাল স্কুল ছুটির ঘোষণা দিলেও কবে স্কুল খুলবে সে বিষয়ে কিছুই বলেননি।’
মালালার এই আপসহীন সংগ্রাম আর সমাজ বদলের স্বপ্নের পেছনে একজন কারিগর আছেন, তিনি তারই বাবা জিয়াউদ্দিন। তিনিও একটি বেসরকারি স্কুল পরিচালনা করছেন। মেয়েকে তালেবানের বিরুদ্ধে ব্লগে লিখতে তিনিই উৎসাহিত করেন। এতে মারাত্মক ঝুঁকি থাকা সত্ত্বেও তাঁর হাতে অন্য কিছু করার ছিল না। জিয়াউদ্দিন বলেন, ‘অবশ্যই এটা ছিল ঝুঁকিপূর্ণ। কিন্তু আমি মনে করি, মুখ বন্ধ করে থাকাটা ছিল এর চেয়েও বিপজ্জনক। কেননা, ততক্ষণে সন্ত্রাস-জঙ্গিবাদের দাসত্ব ও বশ্যতার কাছে আমাদের হার মানতে হয়েছে।’ বিবিসি, দ্য ইনডিপেন্ডেন্ট।
পাকিস্তানের অকুতোভয় কিশোরী মালালা ইউসুফজাই ২০০৯ সালের ৩ জানুয়ারি বিবিসির ওয়েব ব্লগের উর্দু সংস্করণে কথাগুলো লিখেছে। এক দিনের ব্যবধানে ৪ জানুয়ারি সে লেখে, ‘আজ ছুটির দিন। দেরিতে ১০টার দিকে ঘুম থেকে জেগে বাবাকে বলতে শুনি, গ্রিন চকে (স্থানীয় ক্রসিং) আরও তিনটি মরদেহ পড়ে আছে। খবরটা শুনে আমার মন খারাপ হয়ে যায়।’ ৫ জানুয়ারি সে আবার লেখে, ‘তালেবানের ভয়ে শিক্ষকেরা আমাদের ইউনিফর্ম পরে স্কুলে যেতে নিষেধ করেছেন। তাই আমি আমার প্রিয় গোলাপি পোশাকটা পরেই স্কুলে যাই। অন্য মেয়েরাও রঙিন পোশাক পরে। স্কুলটা বাড়ির মতোই মনে হয়েছে।’
তালেবানের গুলিতে মালালা এখন বিক্ষত হলেও সে জঙ্গিদের রোষানলে পড়ে সেই চার বছর আগেই। তখন তার বয়স ছিল মাত্র ১১ বছর। সোয়াত অঞ্চলে নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা করে তালেবান শুরুতেই নারীদের ওপর হুকুম জারি করে। বোরকা ছাড়া বাইরে যাওয়া চলবে না। বাজারে গমন, কেনাকাটা করতে পারবেন না তাঁরা। রাতারাতি বন্ধ করে দেওয়া হলো চার শতাধিক স্কুল। এই হুকুমের ব্যত্যয় হলেই চালানো হতো হত্যাযজ্ঞ। ভুক্তভোগীদের শিরশ্ছেদ করা দেহ ঝুলিয়ে রাখা হতো মিংগোরা শহরের মোড়ে মোড়ে। যাতে অন্যরা এই ভয়াবহ পরিণতি দেখে তালেবান শাসনের অনুগত হয়।
কিন্তু তালেবানের এই বর্বরতা, নিষ্ঠুরতা আর নৃশংসতা অন্যরা মেনে নিলেও স্বাধীনচেতা মালালা মেনে নেয়নি। কলম হাতে রুখে দাঁড়াল সে। মাধ্যম হিসেবে বেছে নিল বিবিসির ওয়েব ব্লগ। ব্লগে নিয়মিত লিখতে শুরু করল সে। দমবন্ধ তালেবানি শাসন, বিশেষ করে নারীশিক্ষার বিরুদ্ধে তাদের ক্রূরতা উঠে এল তার লেখায়। আর মালালাও তালেবানের নিশানা সেই থেকেই। অপেক্ষা ছিল শুধু সুযোগের। অবশেষে গত মঙ্গলবার রাজধানী ইসলামাবাদের উত্তর-পশ্চিমে সোয়াত উপত্যকার মিংগোরায় স্কুলের বাসে হামলা চালায় বন্দুকধারীরা। এ সময় মাথায় গুলিবিদ্ধ হয় মালালা।
২০০৯ সালের ১৪ জানুয়ারি মালালা ব্লগে লিখেছিল, ‘স্কুলে যেতে যেতে আজ মনটাই খারাপ হয়ে গেল। কারণ, কাল থেকে স্কুলে শীতকালীন ছুটি শুরু। কিন্তু প্রিন্সিপাল স্কুল ছুটির ঘোষণা দিলেও কবে স্কুল খুলবে সে বিষয়ে কিছুই বলেননি।’
মালালার এই আপসহীন সংগ্রাম আর সমাজ বদলের স্বপ্নের পেছনে একজন কারিগর আছেন, তিনি তারই বাবা জিয়াউদ্দিন। তিনিও একটি বেসরকারি স্কুল পরিচালনা করছেন। মেয়েকে তালেবানের বিরুদ্ধে ব্লগে লিখতে তিনিই উৎসাহিত করেন। এতে মারাত্মক ঝুঁকি থাকা সত্ত্বেও তাঁর হাতে অন্য কিছু করার ছিল না। জিয়াউদ্দিন বলেন, ‘অবশ্যই এটা ছিল ঝুঁকিপূর্ণ। কিন্তু আমি মনে করি, মুখ বন্ধ করে থাকাটা ছিল এর চেয়েও বিপজ্জনক। কেননা, ততক্ষণে সন্ত্রাস-জঙ্গিবাদের দাসত্ব ও বশ্যতার কাছে আমাদের হার মানতে হয়েছে।’ বিবিসি, দ্য ইনডিপেন্ডেন্ট।
No comments