নির্বাচন নিয়ে মন্ত্রণালয়ের অবস্থান অগ্রহণযোগ্য- ঢাকার দুই সিটি করপোরেশন

ঢাকার দুই সিটি করপোরেশনের নির্বাচন নিয়ে সরকার, বিশেষ করে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের ভূমিকা যে উদ্দেশ্যমূলক, সেটা আর বলার অপেক্ষা রাখে না। ঢাকার দুই সিটি করপোরেশনের নির্বাচনের ওপর যে স্থগিতাদেশ রয়েছে, তা আরও তিন মাস বাড়িয়েছেন হাইকোর্ট।


এর দায়টি স্পষ্টতই স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের। পরিস্থিতি এমন দাঁড়িয়েছে যে বর্তমান সরকারের মেয়াদে ঢাকার উত্তর ও দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের নির্বাচন অনুষ্ঠান অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে।
সামান্য কারণে ঢাকার এই দুটি সিটি করপোরেশনের নির্বাচন করা যাচ্ছে না। এটা হচ্ছে ওয়ার্ডগুলোর সীমানা নির্ধারণ। এই কাজ করার দায়িত্ব স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের। কিন্তু তারা কাজটি করছে না। এই আচরণটি যে ইচ্ছাকৃত, সেটাও স্পষ্ট। এটি জটিল কাজ নয়, এমনকি সময়সাপেক্ষও নয়। মন্ত্রণালয়ের যে কাজটি করা প্রয়োজন ছিল, তা হচ্ছে একজন কর্মকর্তা নিয়োগ করে গণবিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে সীমানা নির্ধারণ এবং এ নিয়ে কোনো আপত্তি এলে শুনানির মাধ্যমে তার নিষ্পত্তি। এ কাজই মন্ত্রণালয় করছে না। এ নিয়ে আদালত রুল জারি করলেও মন্ত্রণালয় এর জবাব দেয়নি।
এটা স্পষ্ট যে সরকার রাজনৈতিক বিবেচনা থেকে স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠানের এই নির্বাচন করতে চাইছে না এবং মন্ত্রণালয় নিষ্ক্রিয় ভূমিকা পালন করে সরকারের এই রাজনৈতিক ইচ্ছার বাস্তবায়ন ঘটাচ্ছে, যা কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য হতে পারে না। এর আগে সরকার প্রশাসনিক সুবিধার্থে ঢাকা সিটি করপোরেশনকে দুই ভাগে ভাগ করার কথা বললেও তার পেছনেও স্পষ্টতই কাজ করেছে রাজনৈতিক হিসাব-নিকাশ।
ঢাকার দুই সিটি করপোরেশনের নির্বাচন অনুষ্ঠানের জন্য ভোটার তালিকা হালনাগাদের কাজ নির্বাচন কমিশন এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছে। কমিশন সূত্রে জানা যাচ্ছে, আগামী জানুয়ারির মধ্যেই আইন মেনে নির্বাচন অনুষ্ঠান সম্ভব। কিন্তু স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয় যদি সীমানা নির্ধারণের কাজ শেষ না করে, তবে তা করা সম্ভব হবে না। দীর্ঘদিন ধরে ঝুলে থাকা ঢাকা সিটি করপোরেশনের নির্বাচন অনুষ্ঠানে মন্ত্রণালয়ের এই অনীহা ও নিষ্ক্রিয়তা কাটুক, সেটাই প্রত্যাশা।

No comments

Powered by Blogger.