মানবতাবিরোধী অপরাধের বিচার- আলীম তিনটি হিন্দু গ্রাম সেনাদের দেখিয়ে দেন
বিএনপির নেতা ও সাবেক প্রতিমন্ত্রী আবদুল আলীমের বিরুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় গতকাল বৃহস্পতিবার জবানবন্দি দিয়েছেন রাষ্ট্রপক্ষের চতুর্থ সাক্ষী মোল্লা শামসুল আলম। জবানবন্দিতে তিনি বলেন, আলীমের দেখিয়ে দেওয়া হিন্দু অধ্যুষিত তিনটি গ্রাম থেকে পাকিস্তানি সেনারা ৩৭০ জনকে ধরে আনে।
তাঁদের মধ্যে ২৬ জনকে গুলি করে হত্যার ঘটনা তিনি দেখেছেন।
বিচারপতি এ টি এম ফজলে কবীরের নেতৃত্বে তিন সদস্যের আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-২-এ আবদুল আলীমের উপস্থিতিতে জবানবন্দি দেন শামসুল আলম (৫৮)। শারীরিক কারণে আলীম জামিনে আছেন।
শামসুল আলম জবানবন্দিতে বলেন, আলীম ও স্থানীয় জামায়াতে ইসলামীর অন্য নেতারা, বিশেষ করে মৃত আব্বাস আলী খান (জামায়াতের সাবেক ভারপ্রাপ্ত আমির) জয়পুরহাটে শান্তি কমিটি গঠন করেন। এর নেতৃত্বে ছিলেন আলীম। একাত্তরের ১২ এপ্রিল মেজর আফজাল পাকিস্তানি সেনাদের নিয়ে জয়পুরহাটে গেলে আলীম ব্যবসায়ী শাওনলাল বাজলার গদিঘর, পাটের গুদাম ও চাতাল দখল করে সেখানে পাকিস্তানি সেনা ও রাজাকারদের ক্যাম্প করেন। জয়পুরহাট থানার পাশে আলীমের নিজ বাড়িতে রাজাকার নিয়োগের ক্যাম্প করা হয়েছিল।
রাষ্ট্রপক্ষের এই সাক্ষী বলেন, একাত্তরের ২৬ এপ্রিল দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে তিনি কাদিপুর গ্রামের করাল পুকুরের কাছে কয়েকজনের সঙ্গে কথা বলছিলেন। এ সময় পাকিস্তানি সেনাদের একটি জিপ সেখানে থামে। কিছুক্ষণ পর একটি ট্রাকে কয়েকজন পাকিস্তানি সেনা আসে। ওই সেনাদের সঙ্গে আলীম ছিলেন। পাকিস্তানি সেনাদের ইশারা দিয়ে আলীম হিন্দু অধ্যুষিত গ্রাম সোনারপাড়া, যুগীপাড়া ও পালপাড়া দেখিয়ে দেন। কিছুক্ষণ পর আলীমের কয়েকজন লোক নিয়ে পাকিস্তানি সেনারা ওই গ্রামগুলোতে গিয়ে বাড়িঘর লুট করে আগুন ধরিয়ে দেয়। তারা গ্রামগুলো থেকে ৩৭০ জনকে ধরে করাল পুকুরের কাছে নিয়ে যায়। তাঁর চোখের সামনে তাঁদের মধ্যে ২৬ জনকে গুলি করে হত্যা করা হয়। লাশগুলো কাদিপুর গ্রামের উত্তরে একটি আখের চুল্লিতে ফেলে দেওয়া হয়। দামপুকুরে হত্যা করা হয় ৮৫ জনকে। এটি এখন বধ্যভূমি হিসেবে সংরক্ষিত। বটগাছে লুকিয়ে থাকা পাঁচজনকেও গুলি করে মারে পাকিস্তানি সেনারা। ৯০ বছরের কাঁচিরা মোহান্তকে খুঁচিয়ে হত্যা করা হয়।
শামসুল আলম বলেন, ৭ বা ৮ অক্টোবর তিনি জয়পুরহাট আদালতে ছিলেন। দুপুর ১২টার দিকে পাকিস্তানি সেনাদের একটি ট্রাক সেখানে যায়। ট্রাকে তিনজন মুক্তিযোদ্ধা ছিলেন, তাঁদের একজন ছিলেন আহত। তাঁদের মধ্যে ফজলুকে তিনি চিনতেন। সেখানে পাকিস্তানি মেজর আফজাল ও আলীম মাইকে বক্তব্য দেন। আলীম বক্তব্যে বলেন, ‘ফজলুর বাবা আমার বন্ধু। তাঁকে আমি ভুল পথ থেকে ছেলেকে ফিরিয়ে আনতে বলেছিলাম। তার পরও সে (ফজলু) আমার দেশ পাকিস্তানের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করেছে। এ জন্য সে শাস্তি পেয়েছে।’ সেখানে উপস্থিত একজন সাংবাদিক পাকিস্তানি সেনাদের নারী নির্যাতনের বিষয়ে জানতে চাইলে আলীম বলেন, ‘যেকোনো যুদ্ধের সময় সেনারা এমন কাজ করে। দেশের জন্য আমাদের এটি মেনে নিতে হবে।’
সাক্ষী বলেন, তিনি শুনেছেন, ৯ অক্টোবর ওই তিন মুক্তিযোদ্ধার মুখে চুনকালি মাখিয়ে সারা শহর ঘোরানোর পর কুঠিবাড়িতে নিয়ে তাঁদের হত্যা করা হয়। জবানবন্দি শেষে সাক্ষীকে জেরা শুরু করেন আসামিপক্ষের আইনজীবী খলিলুর রহমান। পরে জেরা অসমাপ্ত অবস্থায় এই মামলার কার্যক্রম ১৪ অক্টোবর পর্যন্ত মুলতবি করা হয়।
কামারুজ্জামানের বিরুদ্ধে ক্যামেরা ট্রায়ালে তিন সাক্ষীর জবানবন্দি: একই ট্রাইব্যুনালে গতকাল জামায়াতে ইসলামীর সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল মোহাম্মদ কামারুজ্জামানের বিরুদ্ধে ক্যামেরা ট্রায়ালে তিন নারী জবানবন্দি দিয়েছেন। রাষ্ট্রপক্ষের কৌঁসুলি নূরজাহান মুক্তা পরে প্রথম আলোকে বলেন, ‘তিন নারী সাক্ষীর জবানবন্দি হয়েছে। তাঁদের মধ্যে একজনের জেরাও শেষ হয়েছে। ১৪ অক্টোবর বাকি দুজনকে জেরা করা হবে।’
এ ছাড়া একই ট্রাইব্যুনাল গতকাল জামায়াতের সাবেক সদস্য (রুকন) আবুল কালাম আযাদের বিরুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় অভিযোগ গঠনের বিষয়ে শুনানির জন্য ২১ অক্টোবর দিন ধার্য করেন।
বিচারপতি এ টি এম ফজলে কবীরের নেতৃত্বে তিন সদস্যের আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-২-এ আবদুল আলীমের উপস্থিতিতে জবানবন্দি দেন শামসুল আলম (৫৮)। শারীরিক কারণে আলীম জামিনে আছেন।
শামসুল আলম জবানবন্দিতে বলেন, আলীম ও স্থানীয় জামায়াতে ইসলামীর অন্য নেতারা, বিশেষ করে মৃত আব্বাস আলী খান (জামায়াতের সাবেক ভারপ্রাপ্ত আমির) জয়পুরহাটে শান্তি কমিটি গঠন করেন। এর নেতৃত্বে ছিলেন আলীম। একাত্তরের ১২ এপ্রিল মেজর আফজাল পাকিস্তানি সেনাদের নিয়ে জয়পুরহাটে গেলে আলীম ব্যবসায়ী শাওনলাল বাজলার গদিঘর, পাটের গুদাম ও চাতাল দখল করে সেখানে পাকিস্তানি সেনা ও রাজাকারদের ক্যাম্প করেন। জয়পুরহাট থানার পাশে আলীমের নিজ বাড়িতে রাজাকার নিয়োগের ক্যাম্প করা হয়েছিল।
রাষ্ট্রপক্ষের এই সাক্ষী বলেন, একাত্তরের ২৬ এপ্রিল দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে তিনি কাদিপুর গ্রামের করাল পুকুরের কাছে কয়েকজনের সঙ্গে কথা বলছিলেন। এ সময় পাকিস্তানি সেনাদের একটি জিপ সেখানে থামে। কিছুক্ষণ পর একটি ট্রাকে কয়েকজন পাকিস্তানি সেনা আসে। ওই সেনাদের সঙ্গে আলীম ছিলেন। পাকিস্তানি সেনাদের ইশারা দিয়ে আলীম হিন্দু অধ্যুষিত গ্রাম সোনারপাড়া, যুগীপাড়া ও পালপাড়া দেখিয়ে দেন। কিছুক্ষণ পর আলীমের কয়েকজন লোক নিয়ে পাকিস্তানি সেনারা ওই গ্রামগুলোতে গিয়ে বাড়িঘর লুট করে আগুন ধরিয়ে দেয়। তারা গ্রামগুলো থেকে ৩৭০ জনকে ধরে করাল পুকুরের কাছে নিয়ে যায়। তাঁর চোখের সামনে তাঁদের মধ্যে ২৬ জনকে গুলি করে হত্যা করা হয়। লাশগুলো কাদিপুর গ্রামের উত্তরে একটি আখের চুল্লিতে ফেলে দেওয়া হয়। দামপুকুরে হত্যা করা হয় ৮৫ জনকে। এটি এখন বধ্যভূমি হিসেবে সংরক্ষিত। বটগাছে লুকিয়ে থাকা পাঁচজনকেও গুলি করে মারে পাকিস্তানি সেনারা। ৯০ বছরের কাঁচিরা মোহান্তকে খুঁচিয়ে হত্যা করা হয়।
শামসুল আলম বলেন, ৭ বা ৮ অক্টোবর তিনি জয়পুরহাট আদালতে ছিলেন। দুপুর ১২টার দিকে পাকিস্তানি সেনাদের একটি ট্রাক সেখানে যায়। ট্রাকে তিনজন মুক্তিযোদ্ধা ছিলেন, তাঁদের একজন ছিলেন আহত। তাঁদের মধ্যে ফজলুকে তিনি চিনতেন। সেখানে পাকিস্তানি মেজর আফজাল ও আলীম মাইকে বক্তব্য দেন। আলীম বক্তব্যে বলেন, ‘ফজলুর বাবা আমার বন্ধু। তাঁকে আমি ভুল পথ থেকে ছেলেকে ফিরিয়ে আনতে বলেছিলাম। তার পরও সে (ফজলু) আমার দেশ পাকিস্তানের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করেছে। এ জন্য সে শাস্তি পেয়েছে।’ সেখানে উপস্থিত একজন সাংবাদিক পাকিস্তানি সেনাদের নারী নির্যাতনের বিষয়ে জানতে চাইলে আলীম বলেন, ‘যেকোনো যুদ্ধের সময় সেনারা এমন কাজ করে। দেশের জন্য আমাদের এটি মেনে নিতে হবে।’
সাক্ষী বলেন, তিনি শুনেছেন, ৯ অক্টোবর ওই তিন মুক্তিযোদ্ধার মুখে চুনকালি মাখিয়ে সারা শহর ঘোরানোর পর কুঠিবাড়িতে নিয়ে তাঁদের হত্যা করা হয়। জবানবন্দি শেষে সাক্ষীকে জেরা শুরু করেন আসামিপক্ষের আইনজীবী খলিলুর রহমান। পরে জেরা অসমাপ্ত অবস্থায় এই মামলার কার্যক্রম ১৪ অক্টোবর পর্যন্ত মুলতবি করা হয়।
কামারুজ্জামানের বিরুদ্ধে ক্যামেরা ট্রায়ালে তিন সাক্ষীর জবানবন্দি: একই ট্রাইব্যুনালে গতকাল জামায়াতে ইসলামীর সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল মোহাম্মদ কামারুজ্জামানের বিরুদ্ধে ক্যামেরা ট্রায়ালে তিন নারী জবানবন্দি দিয়েছেন। রাষ্ট্রপক্ষের কৌঁসুলি নূরজাহান মুক্তা পরে প্রথম আলোকে বলেন, ‘তিন নারী সাক্ষীর জবানবন্দি হয়েছে। তাঁদের মধ্যে একজনের জেরাও শেষ হয়েছে। ১৪ অক্টোবর বাকি দুজনকে জেরা করা হবে।’
এ ছাড়া একই ট্রাইব্যুনাল গতকাল জামায়াতের সাবেক সদস্য (রুকন) আবুল কালাম আযাদের বিরুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় অভিযোগ গঠনের বিষয়ে শুনানির জন্য ২১ অক্টোবর দিন ধার্য করেন।
No comments