বৌদ্ধ জনপদে হামলা-ছবি বিলিয়ে উসকানির কথা স্বীকার মুক্তাদির-ফারুকের by তোফায়েল আহমদ
কক্সবাজারের রামুতে ২৯ সেপ্টেম্বর রাতে বৌদ্ধপল্লীতে সহিংস ঘটনার উসকানির অভিযোগে গ্রেপ্তার আবদুল মুক্তাদির ও ওমর ফারুককে গতকাল মুখোমুখি জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে। ডিবি পুলিশের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে গতকাল কক্সবাজারের সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের বিচারক তৌহিদুল ইসলাম তাদের চার দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
কক্সবাজার জেলা গোয়েন্দা পুলিশের পরিদর্শক বসুমিত্র চাকমা কালের কণ্ঠকে জানান, মুক্তাদিরের ১০ দিন এবং ওমর ফারুকের সাত দিনের রিমান্ডের আবেদন করা হয়েছিল।
জানা গেছে, ডিবি পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদে মুক্তাদির ও ফারুক দুজনই স্বীকার করেছে, সেদিন রাত ৮টার দিকে তারা ফারুকের কম্পিউটার-মোবাইল মেরামতের দোকান থেকে কোরআন শরিফের অবমাননাকর ছবিটি নিয়ে লোকজনের কাছে বিলি করার কাজে জড়িত ছিল। সেদিন উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়েছিল ওই ছবি নিয়েই। এই উত্তেজনাকে পুঁজি করে সেই রাতে উগ্র রোহিঙ্গা, জামায়াত-শিবির, ইসলামী ঐক্যজোটসহ অন্যরা মিলে রামু উপজেলা সদরের চারটি বৌদ্ধপল্লীর ১২টি ঐতিহ্যবাহী বৌদ্ধমন্দির ও বিহার এবং শতাধিক বৌদ্ধ বসতিতে অগ্নিসংযোগ ও ভাঙচুর করে।
কক্সবাজার জেলা গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) পরিদর্শক কালের কণ্ঠকে জানান, রামু উপজেলা সদরের দক্ষিণ শ্রীকুল গ্রামের সৌদি প্রবাসী শাহাবুদ্দিনের ছেলে আবদুল মুক্তাদির (১৯) চট্টগ্রামের শ্যামলী পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের কম্পিউটার বিভাগের সপ্তম সেমিস্টারের ছাত্র। সে ইসলামী ছাত্রশিবিরের একজন সক্রিয় কর্মী। গত মঙ্গলবার রাতে চট্টগ্রামের পাঁচলাইশ থানার পুলিশ মুক্তাদিরকে চট্টগ্রাম শহর থেকে গ্রেপ্তার করে কক্সবাজার পুলিশের কাছে হস্তান্তর করে।
ডিবি পুলিশের পাশাপাশি রামুর ঘটনা তদন্তে গঠিত স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের তদন্ত কমিটির সদস্যরাও মুক্তাদিরকে বুধবার জিজ্ঞাসাবাদ করেন। পরে তাঁরা সিদ্ধান্ত নেন ফারুককেও রিমান্ডে নিয়ে দুজনকে মুখোমুখি করে জিজ্ঞাসাবাদ করার। গ্রেপ্তারকৃত ওমর ফারুক (১৮) রামু সদরের একই গ্রামের বাসিন্দা সাবের আহমদের ছেলে। সে রামুর ফকিরাবাজারের 'ফারুক কম্পিউটার টেলিকমের' মালিক। ঘটনায় জড়িত থাকার দায়ে গত ৭ অক্টোবর পুলিশ তাকে গ্রেপ্তার করেছিল। পুলিশ তার দোকানের কম্পিউটারসহ অন্যান্য মালামালও জব্দ করে।
সূত্র জানায়, জিজ্ঞাসাবাদে ফারুক বলেছে, "২৯ সেপ্টেম্বর সন্ধ্যার পর রামুর ফকিরাবাজারে অবস্থিত আমার দোকানে আসে মুক্তাদির নামের স্থানীয় শিবিরকর্মী। এরপর আমি এবং মুক্তাদির উত্তম কুমার বড়ুয়ার ফেসবুক থেকে বিতর্কিত সেই ছবিটি বের করি। ছবিটি দেখেই মুক্তাদির 'অ মারে-অ মারে, এন্ডিলা ছবি' (অ মারে অ মারে, এ রকম ছবি) বলে চিল্লাচিল্লি করে ওঠে।" ফারুক জানায়, বাজার এলাকা হওয়ায় সেখানে প্রচুর দোকানপাট রয়েছে। মুক্তাদিরের চিল্লাচিল্লিতে অনেক লোকের ভিড় জমে যায়। এর পরপরই ছবিটি শত শত কপি প্রিন্ট করে সরবরাহ করা হয়।
জিজ্ঞাসাবাদে মুক্তাদির বলে, 'আসলে আমি ছবিটি দেখে অন্য রকমের অনুভূতির কারণে বড় করে শব্দ করি। হয়তো বা লোকজন তা শুনে সেখানে জমায়েত হয়। তারাই প্রবল আগ্রহ সহকারে এ ছবি প্রিন্ট করে নিয়ে যায়।' মুক্তাদির স্বীকার করে যে, ছবিটি এই দোকান থেকেই সর্বত্র ছড়িয়ে পড়ে এবং রামু বাজারের এই স্থান থেকেই সর্বপ্রথম প্রতিবাদ মিছিল বের হয়।
ডিবি পুলিশের এক কর্মকর্তা জানিয়েছেন, বুধবার রাতে মুক্তাদিরকে ব্যাপক জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে। সে নিজে জড়িত থাকার পাশাপাশি ঘটনার নেপথ্যে থাকা আরো কয়েকজনের নাম প্রকাশ করেছে। ওই সব ব্যক্তিকে আটকের জন্য অভিযানও চলছে। তদন্তের স্বার্থে পুলিশ তাদের নাম প্রকাশে বিরত রয়েছে বলে তিনি জানান।
এদিকে রামুর ঘটনা তদন্তে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় গঠিত চার সদস্যের কমিটি গতকাল পর্যন্ত তাদের প্রতিবেদন জমা দিতে পারেনি। তদন্ত-সংশ্লিষ্ট একজন কর্মকর্তা কালের কণ্ঠকে বলেন, 'গত বুধবার রিপোর্ট জমা দেওয়ার কথা ছিল। কিন্তু মুক্তাদির ও ফারুককে জিজ্ঞাসাবাদ করা প্রয়োজনীয় বলে মনে হওয়ায় কিছুটা বিলম্বে রিপোর্ট দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।' ওই কর্মকর্তা আরো বলেন, 'এটি অনেক বড় ঘটনা হলেও আমরা তদন্তে সময় পেয়েছি খুবই কম। তা ছাড়া শুক্র ও শনিবার- এ দুটি সাপ্তাহিক ছুটির দিন থাকায় আমরা সেই ছুটির সময়টুকুও অধিকতর তদন্তের জন্য চাচ্ছি।'
জানা গেছে, ডিবি পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদে মুক্তাদির ও ফারুক দুজনই স্বীকার করেছে, সেদিন রাত ৮টার দিকে তারা ফারুকের কম্পিউটার-মোবাইল মেরামতের দোকান থেকে কোরআন শরিফের অবমাননাকর ছবিটি নিয়ে লোকজনের কাছে বিলি করার কাজে জড়িত ছিল। সেদিন উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়েছিল ওই ছবি নিয়েই। এই উত্তেজনাকে পুঁজি করে সেই রাতে উগ্র রোহিঙ্গা, জামায়াত-শিবির, ইসলামী ঐক্যজোটসহ অন্যরা মিলে রামু উপজেলা সদরের চারটি বৌদ্ধপল্লীর ১২টি ঐতিহ্যবাহী বৌদ্ধমন্দির ও বিহার এবং শতাধিক বৌদ্ধ বসতিতে অগ্নিসংযোগ ও ভাঙচুর করে।
কক্সবাজার জেলা গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) পরিদর্শক কালের কণ্ঠকে জানান, রামু উপজেলা সদরের দক্ষিণ শ্রীকুল গ্রামের সৌদি প্রবাসী শাহাবুদ্দিনের ছেলে আবদুল মুক্তাদির (১৯) চট্টগ্রামের শ্যামলী পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের কম্পিউটার বিভাগের সপ্তম সেমিস্টারের ছাত্র। সে ইসলামী ছাত্রশিবিরের একজন সক্রিয় কর্মী। গত মঙ্গলবার রাতে চট্টগ্রামের পাঁচলাইশ থানার পুলিশ মুক্তাদিরকে চট্টগ্রাম শহর থেকে গ্রেপ্তার করে কক্সবাজার পুলিশের কাছে হস্তান্তর করে।
ডিবি পুলিশের পাশাপাশি রামুর ঘটনা তদন্তে গঠিত স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের তদন্ত কমিটির সদস্যরাও মুক্তাদিরকে বুধবার জিজ্ঞাসাবাদ করেন। পরে তাঁরা সিদ্ধান্ত নেন ফারুককেও রিমান্ডে নিয়ে দুজনকে মুখোমুখি করে জিজ্ঞাসাবাদ করার। গ্রেপ্তারকৃত ওমর ফারুক (১৮) রামু সদরের একই গ্রামের বাসিন্দা সাবের আহমদের ছেলে। সে রামুর ফকিরাবাজারের 'ফারুক কম্পিউটার টেলিকমের' মালিক। ঘটনায় জড়িত থাকার দায়ে গত ৭ অক্টোবর পুলিশ তাকে গ্রেপ্তার করেছিল। পুলিশ তার দোকানের কম্পিউটারসহ অন্যান্য মালামালও জব্দ করে।
সূত্র জানায়, জিজ্ঞাসাবাদে ফারুক বলেছে, "২৯ সেপ্টেম্বর সন্ধ্যার পর রামুর ফকিরাবাজারে অবস্থিত আমার দোকানে আসে মুক্তাদির নামের স্থানীয় শিবিরকর্মী। এরপর আমি এবং মুক্তাদির উত্তম কুমার বড়ুয়ার ফেসবুক থেকে বিতর্কিত সেই ছবিটি বের করি। ছবিটি দেখেই মুক্তাদির 'অ মারে-অ মারে, এন্ডিলা ছবি' (অ মারে অ মারে, এ রকম ছবি) বলে চিল্লাচিল্লি করে ওঠে।" ফারুক জানায়, বাজার এলাকা হওয়ায় সেখানে প্রচুর দোকানপাট রয়েছে। মুক্তাদিরের চিল্লাচিল্লিতে অনেক লোকের ভিড় জমে যায়। এর পরপরই ছবিটি শত শত কপি প্রিন্ট করে সরবরাহ করা হয়।
জিজ্ঞাসাবাদে মুক্তাদির বলে, 'আসলে আমি ছবিটি দেখে অন্য রকমের অনুভূতির কারণে বড় করে শব্দ করি। হয়তো বা লোকজন তা শুনে সেখানে জমায়েত হয়। তারাই প্রবল আগ্রহ সহকারে এ ছবি প্রিন্ট করে নিয়ে যায়।' মুক্তাদির স্বীকার করে যে, ছবিটি এই দোকান থেকেই সর্বত্র ছড়িয়ে পড়ে এবং রামু বাজারের এই স্থান থেকেই সর্বপ্রথম প্রতিবাদ মিছিল বের হয়।
ডিবি পুলিশের এক কর্মকর্তা জানিয়েছেন, বুধবার রাতে মুক্তাদিরকে ব্যাপক জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে। সে নিজে জড়িত থাকার পাশাপাশি ঘটনার নেপথ্যে থাকা আরো কয়েকজনের নাম প্রকাশ করেছে। ওই সব ব্যক্তিকে আটকের জন্য অভিযানও চলছে। তদন্তের স্বার্থে পুলিশ তাদের নাম প্রকাশে বিরত রয়েছে বলে তিনি জানান।
এদিকে রামুর ঘটনা তদন্তে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় গঠিত চার সদস্যের কমিটি গতকাল পর্যন্ত তাদের প্রতিবেদন জমা দিতে পারেনি। তদন্ত-সংশ্লিষ্ট একজন কর্মকর্তা কালের কণ্ঠকে বলেন, 'গত বুধবার রিপোর্ট জমা দেওয়ার কথা ছিল। কিন্তু মুক্তাদির ও ফারুককে জিজ্ঞাসাবাদ করা প্রয়োজনীয় বলে মনে হওয়ায় কিছুটা বিলম্বে রিপোর্ট দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।' ওই কর্মকর্তা আরো বলেন, 'এটি অনেক বড় ঘটনা হলেও আমরা তদন্তে সময় পেয়েছি খুবই কম। তা ছাড়া শুক্র ও শনিবার- এ দুটি সাপ্তাহিক ছুটির দিন থাকায় আমরা সেই ছুটির সময়টুকুও অধিকতর তদন্তের জন্য চাচ্ছি।'
No comments