পদ্মা সেতুর অর্থায়নে বিশ্বব্যাংক-অনিশ্চয়তার অবসানে পূরণ হোক স্বপ্ন
অবশেষে স্বস্তি। পদ্মা সেতুর অর্থায়নে সম্মতি জানিয়েছে বিশ্বব্যাংক। বলা যায়, সব নাটকীয়তার অবসান হয়েছে। পদ্মা সেতুর অর্থায়নে বিশ্বব্যাংকের অনীহা প্রকাশের পর নতুন দাতা সন্ধান, বিকল্প অর্থায়নের চিন্তা- আপাতত সব দূর হলো।
অনেকটা ঘাম দিয়ে জ্বর সেরে যাওয়ার মতো। এখন অপেক্ষা একটি প্রতিনিধিদলের। বিশ্বব্যাংকের এই প্রতিনিধিদল ঢাকায় এসে প্রকল্প বাস্তবায়নের ব্যাপারে আলোচনা করবে। এ সরকারের আমলে কোনোভাবেই পদ্মা সেতুর কাজ সম্পন্ন করা সম্ভব নয়। কিন্তু বিশ্বব্যাংকের অর্থায়নে এই সেতুর নির্মাণকাজ অন্তত এ সরকারের আমলে শুরু করা যাবে- এটাও কম গুরুত্বপূর্ণ নয়।
পদ্মা সেতু দেশের দক্ষিণাঞ্চলের মানুষের কাছে দেওয়া মহাজোটের নির্বাচনী অঙ্গীকার। নির্বাচনী অঙ্গীকারের বিষয়টি গৌণ বিবেচনা করলেও পদ্মা সেতু দেশের উন্নয়নের জন্য কম গুরুত্বপূর্ণ নয়। ওই সেতুর ওপর নির্ভর করছে দক্ষিণাঞ্চলের সঙ্গে যোগাযোগব্যবস্থা সহজতর হওয়া। একটি সমুদ্রবন্দরের অবস্থান দেশের ওই অঞ্চলে হওয়ায় সেতুটির অর্থনৈতিক গুরুত্ব রয়েছে। সব দিক বিবেচনা করেই পদ্মা সেতু নির্মাণ জরুরি। প্রয়োজনীয় এই সেতু নির্মাণের জন্য কথাবার্তা হয় অনেক আগে থেকেই। ১৯৯৬ সালে তৎকালীন সরকার পদ্মা সেতু নির্মাণের উদ্যোগ নিলেও ২০০১ সালে সরকার পরিবর্তনের পর এ সম্পর্কিত কর্মকাণ্ড থেমে যায়। বিগত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলে একনেকে পাস হয় পদ্মা সেতু প্রকল্প। বর্তমান সরকার ২০০৯ সালে দায়িত্ব গ্রহণের পর পদ্মা সেতু নির্মাণের উদ্যোগ নেয়। একই বছর প্রধান দাতা সংস্থা হিসেবে এগিয়ে আসে বিশ্বব্যাংক। ২০১১ সালের এপ্রিলে প্রধান দাতা সংস্থা হিসেবে ১২০ কোটি ডলারের ঋণচুক্তি করে বিশ্বব্যাংক। একই বছর দুর্নীতির অভিযোগ এনে প্রকল্পে অর্থ বরাদ্দ স্থগিত করে। ২০১২ সালের জুন মাসের শেষার্ধে একই অভিযোগে ঋণচুক্তি বাতিল করে দেয় বিশ্বব্যাংক। সেপ্টেম্বরে আবার অর্থায়নের আশ্বাস পাওয়া গেল।
মোট ২৯০ কোটি ডলার প্রাক্কলিত ব্যয়ের এই সেতু প্রকল্পে বিশ্বব্যাংক ছাড়াও এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক ৬১ কোটি ৫০ লাখ ডলার, জাইকা ৪০ কোটি ডলার, ইসলামিক ডেভেলপমেন্ট ব্যাংক বা আইডিবির ১৪ কোটি ডলার দেওয়ার কথা রয়েছে।
পদ্মা সেতুর জন্য বিশ্বব্যাংক ১২০ কোটি ডলার ঋণ দিতে সম্মত হয়েছে, এটা এখন সবার জানা। সংস্থাটির পক্ষ থেকে এ বিষয়ে একটি বিবৃতি প্রকাশ করা হয়েছে। বিবৃতিতে বলা হয়েছে, 'বাংলাদেশ সরকার বিশ্বব্যাংকের চারটি শর্ত সন্তোষজনকভাবে পূরণ করায় এবং ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদ সম্মত হওয়ায় পদ্মা বহুমুখী সেতু প্রকল্পে নতুন করে বিশ্বব্যাংক যোগ দিচ্ছে।'
পদ্মা সেতু প্রকল্পে দুর্নীতির গন্ধ পেয়েছিল বিশ্বব্যাংক। বিষয়টি তখন বাংলাদেশকে জানানো হলেও সরকার প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে ব্যর্থ হওয়ার পাশাপাশি দাতা সংস্থাটির শর্ত পালনেও অনীহা প্রকাশ করে। শেষ পর্যন্ত গত ২৯ জুন বিশ্বব্যাংকের ঋণচুক্তি বাতিল হয়ে যাওয়ার পর সহযোগী দাতাদের সহায়তাও অনিশ্চিত হয়ে পড়ে। অর্থায়ন বাতিলের পর সরকার এ বিষয়ে সক্রিয় হয়। বিশ্বব্যাংকের শর্ত মেনে গত ২৩ জুলাই সৈয়দ আবুল হোসেন যোগাযোগমন্ত্রীর পদ থেকে পদত্যাগ করেন। ছুটিতে পাঠানো হয় সেতু বিভাগের সাবেক সচিব মোশাররফ হোসেন ভুঁইয়াকে। একইভাবে পদ্মা সেতু প্রকল্পের প্রকল্প পরিচালক রফিকুল ইসলামের চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ বাতিল করা হয়। এ ছাড়া এ বিষয়ে বিশ্বব্যাংকের অন্যতম একটি শর্ত ছিল, ইন্টারন্যাশনাল ইনভেস্টিগেশন অ্যান্ড প্রসিকিউশনে দক্ষ তিন সদস্যের একটি প্যানেল অব ইনভেস্টিগেটিভ এক্সপার্ট গঠন। দুর্নীতি দমন কমিশন এ বিষয়টিও মেনে নেয়। প্রধানমন্ত্রীর অর্থনৈতিক উপদেষ্টা ড. মসিউর রহমানের ছুটি-রহস্যের নেপথ্যেও রয়েছে বিশ্বব্যাংকের শর্ত। সব শর্ত পূরণ হওয়ায়ই আবার অর্থায়নে রাজি হয়েছে বিশ্বব্যাংক।
বিশ্বব্যাংক ফিরে আসায় পদ্মা সেতু নির্মাণে আর কোনো অনিশ্চয়তা নেই বলে আমরা মনে করি। কিন্তু পদ্মা সেতু নিয়ে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে বাংলাদেশকে যেভাবে হেনস্তা হতে হয়েছে, সেটা কারো কাম্য ছিল না। সর্বত্র স্বচ্ছতা থাকবে- এটাই চাইব আমরা। স্বপ্নের পদ্মা সেতু নিয়ে আর কোনো নাটক নয়। হাসি ফুটুক দেশের দক্ষিণাঞ্চলের মানুষের মুখে।
পদ্মা সেতু দেশের দক্ষিণাঞ্চলের মানুষের কাছে দেওয়া মহাজোটের নির্বাচনী অঙ্গীকার। নির্বাচনী অঙ্গীকারের বিষয়টি গৌণ বিবেচনা করলেও পদ্মা সেতু দেশের উন্নয়নের জন্য কম গুরুত্বপূর্ণ নয়। ওই সেতুর ওপর নির্ভর করছে দক্ষিণাঞ্চলের সঙ্গে যোগাযোগব্যবস্থা সহজতর হওয়া। একটি সমুদ্রবন্দরের অবস্থান দেশের ওই অঞ্চলে হওয়ায় সেতুটির অর্থনৈতিক গুরুত্ব রয়েছে। সব দিক বিবেচনা করেই পদ্মা সেতু নির্মাণ জরুরি। প্রয়োজনীয় এই সেতু নির্মাণের জন্য কথাবার্তা হয় অনেক আগে থেকেই। ১৯৯৬ সালে তৎকালীন সরকার পদ্মা সেতু নির্মাণের উদ্যোগ নিলেও ২০০১ সালে সরকার পরিবর্তনের পর এ সম্পর্কিত কর্মকাণ্ড থেমে যায়। বিগত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলে একনেকে পাস হয় পদ্মা সেতু প্রকল্প। বর্তমান সরকার ২০০৯ সালে দায়িত্ব গ্রহণের পর পদ্মা সেতু নির্মাণের উদ্যোগ নেয়। একই বছর প্রধান দাতা সংস্থা হিসেবে এগিয়ে আসে বিশ্বব্যাংক। ২০১১ সালের এপ্রিলে প্রধান দাতা সংস্থা হিসেবে ১২০ কোটি ডলারের ঋণচুক্তি করে বিশ্বব্যাংক। একই বছর দুর্নীতির অভিযোগ এনে প্রকল্পে অর্থ বরাদ্দ স্থগিত করে। ২০১২ সালের জুন মাসের শেষার্ধে একই অভিযোগে ঋণচুক্তি বাতিল করে দেয় বিশ্বব্যাংক। সেপ্টেম্বরে আবার অর্থায়নের আশ্বাস পাওয়া গেল।
মোট ২৯০ কোটি ডলার প্রাক্কলিত ব্যয়ের এই সেতু প্রকল্পে বিশ্বব্যাংক ছাড়াও এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক ৬১ কোটি ৫০ লাখ ডলার, জাইকা ৪০ কোটি ডলার, ইসলামিক ডেভেলপমেন্ট ব্যাংক বা আইডিবির ১৪ কোটি ডলার দেওয়ার কথা রয়েছে।
পদ্মা সেতুর জন্য বিশ্বব্যাংক ১২০ কোটি ডলার ঋণ দিতে সম্মত হয়েছে, এটা এখন সবার জানা। সংস্থাটির পক্ষ থেকে এ বিষয়ে একটি বিবৃতি প্রকাশ করা হয়েছে। বিবৃতিতে বলা হয়েছে, 'বাংলাদেশ সরকার বিশ্বব্যাংকের চারটি শর্ত সন্তোষজনকভাবে পূরণ করায় এবং ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদ সম্মত হওয়ায় পদ্মা বহুমুখী সেতু প্রকল্পে নতুন করে বিশ্বব্যাংক যোগ দিচ্ছে।'
পদ্মা সেতু প্রকল্পে দুর্নীতির গন্ধ পেয়েছিল বিশ্বব্যাংক। বিষয়টি তখন বাংলাদেশকে জানানো হলেও সরকার প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে ব্যর্থ হওয়ার পাশাপাশি দাতা সংস্থাটির শর্ত পালনেও অনীহা প্রকাশ করে। শেষ পর্যন্ত গত ২৯ জুন বিশ্বব্যাংকের ঋণচুক্তি বাতিল হয়ে যাওয়ার পর সহযোগী দাতাদের সহায়তাও অনিশ্চিত হয়ে পড়ে। অর্থায়ন বাতিলের পর সরকার এ বিষয়ে সক্রিয় হয়। বিশ্বব্যাংকের শর্ত মেনে গত ২৩ জুলাই সৈয়দ আবুল হোসেন যোগাযোগমন্ত্রীর পদ থেকে পদত্যাগ করেন। ছুটিতে পাঠানো হয় সেতু বিভাগের সাবেক সচিব মোশাররফ হোসেন ভুঁইয়াকে। একইভাবে পদ্মা সেতু প্রকল্পের প্রকল্প পরিচালক রফিকুল ইসলামের চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ বাতিল করা হয়। এ ছাড়া এ বিষয়ে বিশ্বব্যাংকের অন্যতম একটি শর্ত ছিল, ইন্টারন্যাশনাল ইনভেস্টিগেশন অ্যান্ড প্রসিকিউশনে দক্ষ তিন সদস্যের একটি প্যানেল অব ইনভেস্টিগেটিভ এক্সপার্ট গঠন। দুর্নীতি দমন কমিশন এ বিষয়টিও মেনে নেয়। প্রধানমন্ত্রীর অর্থনৈতিক উপদেষ্টা ড. মসিউর রহমানের ছুটি-রহস্যের নেপথ্যেও রয়েছে বিশ্বব্যাংকের শর্ত। সব শর্ত পূরণ হওয়ায়ই আবার অর্থায়নে রাজি হয়েছে বিশ্বব্যাংক।
বিশ্বব্যাংক ফিরে আসায় পদ্মা সেতু নির্মাণে আর কোনো অনিশ্চয়তা নেই বলে আমরা মনে করি। কিন্তু পদ্মা সেতু নিয়ে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে বাংলাদেশকে যেভাবে হেনস্তা হতে হয়েছে, সেটা কারো কাম্য ছিল না। সর্বত্র স্বচ্ছতা থাকবে- এটাই চাইব আমরা। স্বপ্নের পদ্মা সেতু নিয়ে আর কোনো নাটক নয়। হাসি ফুটুক দেশের দক্ষিণাঞ্চলের মানুষের মুখে।
No comments