তানজানিয়ার কারাগার থেকে ফিরেছে ২০ হতভাগ্য

বিদেশ কত কষ্টের তা দেশে থাকতে বুঝিনি। দেশের সীমানা পার হবার পর থেকে প্রতিটি মুহূর্তে হাড়ে হাড়ে তা টের পেয়েছি। তখন মনে হয়েছে দেশের মাটিতে না খেয়ে থাকলেও শান্তি। তওবা করেছি জীবনে আর কোন দিন বিদেশের নাম মুখে নেব না।


তানজানিয়ায় দীর্ঘদিন কারাভোগের পর দেশে ফিরে এভাবেই তিক্ত অভিজ্ঞতা বর্ণনা করেন হতভাগ্যরা। শুক্রবার সকালে ২০ বাংলাদেশী দেশে ফিরে সাংবাদিকদের শাহজালাল বিমানবন্দরে তাদের সীমাহীন দুর্ভোগ বর্ণনা করেন। তাঁরা গত বছর দালালের মাধ্যমে দক্ষিণ আফ্রিকায় যাওয়ার পথে পুলিশের হাতে ধরা পড়েন। ফিরে আসা হতভাগারা হচ্ছেন- আনিস খান, বিটু মিয়া, আলী নূর, ওহিদ হাওলাদার, মোহাম্মদ রাসেল, ফারুক হাওলাদার, জাহিনুর রহমান, আমানুল হক, ফজলুল হক, কালা চান, বিল্লাল, আবদুল মালেক, জামাল হোসেন, আবু নাসের, আলাউদ্দিন, রমজান মিয়া, মাসুম মিয়া, কাবিল মিয়া, শহীদ আহমেদ ও হেলালউদ্দিন। তবে এদের মধ্যে হেলালউদ্দিনকে আটক রেখে বাকিদের নিজ নিজ বাড়িতে পাঠিয়ে দিয়েছে শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের ইমিগ্রেশন পুলিশ। সহকারী পুলিশ কমিশনার (ইমিগ্রেশন) কামালউদ্দিন জনকণ্ঠকে বলেন- শুক্রবার ভোর ৫টার দিকে টার্কিশ এয়ারলাইন্সের একটি বিমানে করে এই ২০ জন ঢাকা পৌঁছান।
তিনি জানান, হেলাল বাকি ১৯জনকে দক্ষিণ আফ্রিকায় পাচারের সঙ্গে জড়িত এমন তথ্য ‘সংশ্লিষ্ট দূতাবাস’ বাংলাদেশ পুলিশকে দিয়েছে। এ কারণে তাকে আটক রেখে বাকিদের ছেড়ে দেয়া হয়েছে। গত বছর কাজের খোঁজে দালালদের মাধ্যমে দক্ষিণ আফ্রিকায় যাওয়ার পথে তানজানিয়া পুলিশের হাতে আটক হয়ে কারাগারে যেতে হয় এই বাংলাদেশীদের।
আটক ব্যক্তিরা অধিকাংশই দরিদ্র হওয়ায় তাদের ফিরিয়ে আনার ব্যাপারে অনিশ্চয়তা তৈরি হয়। পরে বেসরকারী সংস্থা এমজিএইচের আর্থিক সহায়তা এবং জনশক্তি, কর্মসংস্থান ও প্রশিক্ষণ ব্যুরোর (বিএমইটি) এবং কেনিয়া দূতাবাসের মধ্যস্থতায় তাদের ফিরিয়ে আনা হয়।
জানা যায়, চলতি বছরের শুরুতে দালাল ধরে দক্ষিণ আফ্রিকায় প্রবেশের পথে ৩৭২ বাংলাদেশী গ্রেফতার হয়েছেন। আর গত বছর লাইবেরিয়ায় গিয়ে তিন মাস জেল খেটে দেশে ফিরেছেন ৩৯ বাংলাদেশী। এছাড়া বুরু-ি পুলিশ গত বছর আরও ২৩ বাংলাদেশীকে আটক করে।

No comments

Powered by Blogger.