মালয়েশিয়াও সরবে না

বিশ্বব্যাংক যখন পদ্মা সেতু প্রকল্প থেকে নিজেদের সরিয়ে নেয়, তখনই মালয়েশিয়ার সহযোগিতা চায় বাংলাদেশ। এ নিয়ে দুই দেশের মন্ত্রীদের সফরও হয়েছে। পদ্মা সেতুতে বিনিয়োগের আগ্রহ জানিয়ে মালয়েশিয়া লিখিতভাবে সরকারের কাছে প্রস্তাবও জমা দিয়েছে।


এরই মধ্যে ফিরে এলো বিশ্বব্যাংক। কিন্তু মালয়েশিয়া বলছে, তারা পদ্মা সেতুর বিনিয়োগ থেকে সরবে না। কারণ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার অনুরোধে তারা এ প্রকল্পে বিনিয়োগের জন্য এরই মধ্যে অনেক দূর এগিয়ে গেছে। এ জন্য অর্থও খরচ হয়েছে। চূড়ান্ত প্রস্তাব জমা দিতে বিশ্বমানের কনসালট্যান্টও নিয়োগ দিয়েছে দেশটি। এ অবস্থায় পদ্মা সেতু প্রকল্পে বিনিয়োগ করা থেকে সরতে রাজি নয় দেশটি।
পদ্মা সেতুতে অর্থায়ন করতে বিশ্বব্যাংক ফিরছে- এমন সংবাদ পাওয়ার পর গতকাল বিকেলে ভারতসহ দক্ষিণ এশিয়ার দায়িত্বপ্রাপ্ত মালয়েশিয়ার বিশেষ সহকারী এস সামি ভেল্লু ভারতের সাংবাদিকদের বলেছেন, 'আমরা প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী এ বছরই পদ্মা সেতুর কাজ শুরু করব। আর নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যেই এর নির্মাণকাজ শেষ করব।'
তিনি আরো বলেন, 'বিশ্বব্যাংক সরে যাওয়ার পর থেকেই মালয়েশিয়া সরকার এ সেতুতে অর্থায়নের বিষয়ে কাজ করছে। মালয়েশিয়া এখন বাংলাদেশের কাছে চূড়ান্তভাবে প্রস্তাব উপস্থাপনের প্রস্তুতি নিচ্ছে। খসড়া প্রস্তাবটি ইতিমধ্যে বাংলাদেশের কাছে জমা দেওয়া হয়েছে। আমরা জানি যে বিশ্বব্যাংক বাংলাদেশকে শর্তযুক্ত সম্মতির কথা জানিয়েছে। কিন্তু তা সত্ত্বেও বাংলাদেশ ও মালয়েশিয়ার মধ্যে স্বাক্ষরিত সমঝোতা স্মারকের (এমওইউ) কোনো ব্যত্যয় ঘটবে না। বাংলাদেশ সরকারের অনুরোধেই আমরা প্রকল্প ব্যয় পর্যালোচনা করে চূড়ান্ত করার কাজ করছি।'
বিশ্বব্যাংক ফিরে আসার পর মালয়েশিয়ার বিনিয়োগ প্রস্তাবের ভবিষ্যৎ সম্পর্কে জানতে গতকাল অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত ও যোগাযোগমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরের মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করার চেষ্টা করেও কথা বলা সম্ভব হয়নি।
সংশ্লিষ্টরা জানান, পদ্মা সেতুতে অর্থায়নের বিষয়ে বিশ্বব্যাংকের পিঠটান দেওয়ার পর সরকার চীন, মালয়েশিয়াসহ বিভিন্ন দেশের সহযোগিতা চায়। মালয়েশিয়া দ্রুত সরকারের আবেদনে সাড়া দেয়। যোগাযোগমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের মালয়েশিয়া সফর করে সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষর করেন। মালয়েশিয়ার মন্ত্রিসভা ওই সমঝোতা স্মারক অনুমোদনও দিয়েছে। সরকার মালয়েশিয়াকে হাতে রেখে বিশ্বব্যাংকের সঙ্গে আলোচনা চালিয়ে যাওয়ার কৌশল নেয়। তবে এ সেতুতে বিনিয়োগের ব্যাপারে মালয়েশিয়ার উৎসাহ অনেক বেশি। এ নিয়ে ঢাকায় নিযুক্ত মালয়েশিয়ার হাইকমিশনার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গেও সাক্ষাৎ করেন। গত মাসে মালয়েশিয়া সরকারের কাছে আনুষ্ঠানিকভাবে বিনিয়োগ প্রস্তাব দাখিল করে। তবে ওই প্রস্তাব অনুযায়ী বিশ্বব্যাংকের তুলনায় মালয়েশিয়ার অর্থায়ন বাংলাদেশের জন্য অনেক ব্যয়বহুল।

No comments

Powered by Blogger.