অলিম্পিক মেড ইন চায়না by দিবাকর আচার্য্য
এক জরিপে জানা গেছে, পৃথিবীতে এখন সবচেয়ে বেশি লিখিত বাক্যটি হলো—মেড ইন চায়না; মানুষ ছাড়া প্রায় সবকিছুর পেছনে লেখা থাকে! ‘এক জরিপে জানা গেছে’ শীর্ষক এই কথাটি বিশ্বাস করা না-করার দায়িত্ব আপনার। তবে এটা ঠিক, খোদ ব্রিটিশরা পর্যন্ত এই ‘মেড ইন চায়না’ বাক্যের ওপর রীতিমতো চটে গেছে।
না ভাই, ওই সব স্নায়ুযুদ্ধটুদ্ধ না। ব্রিটিশরা আপাতত চটে আছে ‘মেড ইন চায়না’ অলিম্পিক উদ্বোধনী অনুষ্ঠান নিয়ে। এত কষ্ট করে তারা অস্কারজয়ী পরিচালক ড্যানি বয়েলকে দিয়ে লন্ডনে বানাল একটা উদ্বোধনী অনুষ্ঠান; তার পরও লোকে বলে, এর চেয়ে বেইজিংয়ের উদ্বোধনী অনুষ্ঠান ঢের ভালো ছিল! অন্যদের কথা কী বলবেন, খোদ ড্যানি বয়েল তাঁর বক্তব্যে বললেন, বেইজিং উদ্বোধনী অনুষ্ঠান নাকি একটা চূড়ান্ত প্রদর্শনী ছিল; তিনি সেটার অনুকরণ করার চেষ্টা করেছেন মাত্র!
কী কেলেঙ্কারি! এরপর ব্রিটিশরা ‘মেড ইন চায়না’ বাক্যের ওপর না চটে পারে?
ব্রিটিশদের কথা কী বলছেন? সবচেয়ে বেশি চটেছে তো মার্কিনরা। গত অলিম্পিকে স্বাগতিক চীন অলিম্পিক শ্রেষ্ঠত্বটা ছিনিয়ে নিয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের কাছ থেকে। সেবার তাও ‘নিজেদের দেশে কী কায়দা করেছে কে জানে’ বলে পার পাওয়া গিয়েছিল। কিন্তু এবার? এখন পর্যন্ত ভাবভঙ্গিতে মনে হচ্ছে; চীন এবার আরও বড় ব্যবধানে এগিয়ে থাকবে অলিম্পিকে।
প্রতিটা ইভেন্ট থেকে চীনারা এই পরিমাণে সোনা জিতছে যে, মনে হচ্ছে সোনার পদকগুলোও বোধ হয় চীনারা বানিয়ে নিয়ে এসেছে; মানে—মেড ইন চায়না!
অবশ্য এখানে অর্থনীতিবিদেরাও নাক বা তত্ত্ব গলাতে শুরু করেছেন। তাঁরা বলছেন, এখন বিশ্বে সোনার রিজার্ভ যেহেতু চীনের সবচেয়ে বেশি; তারা অলিম্পিকে বেশি বেশি সোনা জিতবে, এতে আশ্চর্যের কিছু নেই!
এসব তত্ত্বে যুক্তরাষ্ট্রের লোকজনের মাথা ঠান্ডা হচ্ছে না। তাঁরা এই নিয়ে বিস্তর গবেষণা করছেন। এক মার্কিন সাংবাদিক অনেক গবেষণা করে বলেছেন, পারবে কী করে? মার্কিনরা যে বন্দুক দিয়ে শ্যুটিং করছে, তির-ধনুক দিয়ে আর্চারি খেলছে, যে স্যুট পরে সাঁতরাচ্ছে, যে বুট পরে দৌড়াচ্ছে, এমনকি যে খাবার খাচ্ছে; সবই মেড ইন চায়না। চায়নার তৈজসপত্র দিয়ে কি আর মার্কিন সাফল্য আসে?
আরেক ওয়েবসাইট আবার আরেকটু সূক্ষ্ম একটা কারণ বের করে ফেলেছে অলিম্পিকে মার্কিন আধিপত্য খর্ব হওয়ার। তাদের বক্তব্য, মার্কিন অ্যাথলেটরা আসলে উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের দিনই ভেঙে পড়েছে। অনুষ্ঠান শেষে সবাই ভিলেজে ফিরে দেখে, জ্যাকেটের পেছনে লেখা—মেড ইন চায়না। এরপর আর খেলায় কারও মন বসে?
একটা পুরোনো এবং বহুল ব্যবহূত কৌতুক মনে করে দেখুন। একবার এক মার্কিন পদার্থবিজ্ঞানী বা কোনো একজন গবেষক দিন কয়েকের সফরে চীনে গেলেন। সেখান থেকে ফেরার পর নিউইয়র্কের গবেষণাগারে ঢোকার পথে বাধা পেলেন সেই বিজ্ঞানী।
—কী ব্যাপার?
—আপনার শরীরের বায়ো-মেকানিক পরীক্ষা-নিরীক্ষা করতে হবে।
—মানে কী! আমার পরীক্ষা কেন করতে হবে?
—হবে না! আপনি চীন থেকে এসেছেন। ওরা আপনাকেই পাঠিয়েছে, নাকি আপনার একটা কপি পাঠিয়ে দিয়েছে; সেটা বুঝতে হবে না!
—হ্যাঁ, এই সন্দেহ অমূলক না। চীনা প্রকৌশলীরা মিসাইল থেকে শুরু করে মোবাইল, জাহাজ থেকে শুরু করে মশার কয়েল যে ‘কপি’ করে ফেলছে; তাতে সন্দেহ নেই। আশপাশে চোখ বোলালেই বুঝতে পারবেন। আর এই বোঝা থেকে আরেকটা সন্দেহ দানা বেঁধেছে মার্কিনদের মাথায়।
সন্দেহটা মাইকেল ফেল্প্সকে নিয়ে। ফেল্প্স বেইজিংয়ে আট ইভেন্টে অংশ নিয়ে সব কটিতে বিশ্ব রেকর্ড করে ফেললেন। কিন্তু বেইজিং থেকে ফেরার পরই কেমন বদলে গেলেন এই তরুণ মার্কিন কিংবদন্তি। মাদক সেবন করতে গিয়ে বেপর্দা হলেন, সাঁতার ছেড়ে দিতে চাইলেন, বিভিন্ন রেসে নিয়ম করে হারতে থাকলেন। এমনকি লন্ডন গেমসে এসে ক্যারিয়ারের মোট পদকের রেকর্ড করে ফেললেও সাফল্য তেমন পাচ্ছেন না। তাহলে কী হলো ফেল্পেসর?
এ রহস্যের সমাধান করে ফেলেছে যুক্তরাষ্ট্রের লোকজন। তাদের ঘোরতর সন্দেহ, ফেল্প্স আসলে বেইজিং থেকে ফেরেনইনি। তাঁর বদলে একটা ‘কপি’ ফেল্প্স পাঠিয়ে দিয়েছে ওরা। মানে বর্তমান ফেল্প্স মেড ইন চায়না!
চীনাদের ‘বিপক্ষে’ এত সব কথা হচ্ছে; কিন্তু চীনারা চুপ। চুপ মানে, মুখে কোনো কথা নেই। পুলে, ট্র্যাকে, মাঠে নিজেদের কাজ করে যাচ্ছে আর সোনা জিতে চলেছে। এর মধ্যে এক চীনা পত্রিকা একটু মুচকি হেসে অবশ্য বলেছে, নাহ্। আমাদের এত সোনা জেতা ঠিক হচ্ছে না। ইউরোপ-আমেরিকার কিছু সোনা জেতা দরকার। সেগুলো বিক্রি করে ওদের বাণিজ্য-মন্দা যদি একটু কাটে!
মার্কিনরা এই খোঁচা সহ্য করে যাওয়ার পাত্তর? তারাও বলেছে, এই অলিম্পিকের সোনা জিতে লাভ নেই; এতে মন্দা কাটবে না। কারণ, এই মেডেল নাকি দোকানে নেওয়ার আগেই ভেঙে যাচ্ছে; ইতিমধ্যে ব্রাজিলের এক অ্যাথলেটের মেডেল ভেঙে গেছে। আর মেডেল দোকানে নিলেও নাকি দাম পাওয়া যাচ্ছে না।
কারণ?
দোকানি মুখ কালো করে বলছে, আমরা সেকেন্ডহ্যান্ড চীনা পণ্য কিনি না।
এই মেডেল তাহলে আসলেই মেড ইন চায়না!
কী কেলেঙ্কারি! এরপর ব্রিটিশরা ‘মেড ইন চায়না’ বাক্যের ওপর না চটে পারে?
ব্রিটিশদের কথা কী বলছেন? সবচেয়ে বেশি চটেছে তো মার্কিনরা। গত অলিম্পিকে স্বাগতিক চীন অলিম্পিক শ্রেষ্ঠত্বটা ছিনিয়ে নিয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের কাছ থেকে। সেবার তাও ‘নিজেদের দেশে কী কায়দা করেছে কে জানে’ বলে পার পাওয়া গিয়েছিল। কিন্তু এবার? এখন পর্যন্ত ভাবভঙ্গিতে মনে হচ্ছে; চীন এবার আরও বড় ব্যবধানে এগিয়ে থাকবে অলিম্পিকে।
প্রতিটা ইভেন্ট থেকে চীনারা এই পরিমাণে সোনা জিতছে যে, মনে হচ্ছে সোনার পদকগুলোও বোধ হয় চীনারা বানিয়ে নিয়ে এসেছে; মানে—মেড ইন চায়না!
অবশ্য এখানে অর্থনীতিবিদেরাও নাক বা তত্ত্ব গলাতে শুরু করেছেন। তাঁরা বলছেন, এখন বিশ্বে সোনার রিজার্ভ যেহেতু চীনের সবচেয়ে বেশি; তারা অলিম্পিকে বেশি বেশি সোনা জিতবে, এতে আশ্চর্যের কিছু নেই!
এসব তত্ত্বে যুক্তরাষ্ট্রের লোকজনের মাথা ঠান্ডা হচ্ছে না। তাঁরা এই নিয়ে বিস্তর গবেষণা করছেন। এক মার্কিন সাংবাদিক অনেক গবেষণা করে বলেছেন, পারবে কী করে? মার্কিনরা যে বন্দুক দিয়ে শ্যুটিং করছে, তির-ধনুক দিয়ে আর্চারি খেলছে, যে স্যুট পরে সাঁতরাচ্ছে, যে বুট পরে দৌড়াচ্ছে, এমনকি যে খাবার খাচ্ছে; সবই মেড ইন চায়না। চায়নার তৈজসপত্র দিয়ে কি আর মার্কিন সাফল্য আসে?
আরেক ওয়েবসাইট আবার আরেকটু সূক্ষ্ম একটা কারণ বের করে ফেলেছে অলিম্পিকে মার্কিন আধিপত্য খর্ব হওয়ার। তাদের বক্তব্য, মার্কিন অ্যাথলেটরা আসলে উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের দিনই ভেঙে পড়েছে। অনুষ্ঠান শেষে সবাই ভিলেজে ফিরে দেখে, জ্যাকেটের পেছনে লেখা—মেড ইন চায়না। এরপর আর খেলায় কারও মন বসে?
একটা পুরোনো এবং বহুল ব্যবহূত কৌতুক মনে করে দেখুন। একবার এক মার্কিন পদার্থবিজ্ঞানী বা কোনো একজন গবেষক দিন কয়েকের সফরে চীনে গেলেন। সেখান থেকে ফেরার পর নিউইয়র্কের গবেষণাগারে ঢোকার পথে বাধা পেলেন সেই বিজ্ঞানী।
—কী ব্যাপার?
—আপনার শরীরের বায়ো-মেকানিক পরীক্ষা-নিরীক্ষা করতে হবে।
—মানে কী! আমার পরীক্ষা কেন করতে হবে?
—হবে না! আপনি চীন থেকে এসেছেন। ওরা আপনাকেই পাঠিয়েছে, নাকি আপনার একটা কপি পাঠিয়ে দিয়েছে; সেটা বুঝতে হবে না!
—হ্যাঁ, এই সন্দেহ অমূলক না। চীনা প্রকৌশলীরা মিসাইল থেকে শুরু করে মোবাইল, জাহাজ থেকে শুরু করে মশার কয়েল যে ‘কপি’ করে ফেলছে; তাতে সন্দেহ নেই। আশপাশে চোখ বোলালেই বুঝতে পারবেন। আর এই বোঝা থেকে আরেকটা সন্দেহ দানা বেঁধেছে মার্কিনদের মাথায়।
সন্দেহটা মাইকেল ফেল্প্সকে নিয়ে। ফেল্প্স বেইজিংয়ে আট ইভেন্টে অংশ নিয়ে সব কটিতে বিশ্ব রেকর্ড করে ফেললেন। কিন্তু বেইজিং থেকে ফেরার পরই কেমন বদলে গেলেন এই তরুণ মার্কিন কিংবদন্তি। মাদক সেবন করতে গিয়ে বেপর্দা হলেন, সাঁতার ছেড়ে দিতে চাইলেন, বিভিন্ন রেসে নিয়ম করে হারতে থাকলেন। এমনকি লন্ডন গেমসে এসে ক্যারিয়ারের মোট পদকের রেকর্ড করে ফেললেও সাফল্য তেমন পাচ্ছেন না। তাহলে কী হলো ফেল্পেসর?
এ রহস্যের সমাধান করে ফেলেছে যুক্তরাষ্ট্রের লোকজন। তাদের ঘোরতর সন্দেহ, ফেল্প্স আসলে বেইজিং থেকে ফেরেনইনি। তাঁর বদলে একটা ‘কপি’ ফেল্প্স পাঠিয়ে দিয়েছে ওরা। মানে বর্তমান ফেল্প্স মেড ইন চায়না!
চীনাদের ‘বিপক্ষে’ এত সব কথা হচ্ছে; কিন্তু চীনারা চুপ। চুপ মানে, মুখে কোনো কথা নেই। পুলে, ট্র্যাকে, মাঠে নিজেদের কাজ করে যাচ্ছে আর সোনা জিতে চলেছে। এর মধ্যে এক চীনা পত্রিকা একটু মুচকি হেসে অবশ্য বলেছে, নাহ্। আমাদের এত সোনা জেতা ঠিক হচ্ছে না। ইউরোপ-আমেরিকার কিছু সোনা জেতা দরকার। সেগুলো বিক্রি করে ওদের বাণিজ্য-মন্দা যদি একটু কাটে!
মার্কিনরা এই খোঁচা সহ্য করে যাওয়ার পাত্তর? তারাও বলেছে, এই অলিম্পিকের সোনা জিতে লাভ নেই; এতে মন্দা কাটবে না। কারণ, এই মেডেল নাকি দোকানে নেওয়ার আগেই ভেঙে যাচ্ছে; ইতিমধ্যে ব্রাজিলের এক অ্যাথলেটের মেডেল ভেঙে গেছে। আর মেডেল দোকানে নিলেও নাকি দাম পাওয়া যাচ্ছে না।
কারণ?
দোকানি মুখ কালো করে বলছে, আমরা সেকেন্ডহ্যান্ড চীনা পণ্য কিনি না।
এই মেডেল তাহলে আসলেই মেড ইন চায়না!
No comments