শ্রেষ্ঠ ইবাদত ও আমল রোজা by মাওলানা শাহ আবদুস সাত্তার
রমজানুল মোবারকের রোজা ফরজে আইন, এটি ইসলামের পাঁচ স্তম্ভের অন্যতম। এটি শরিয়তের নির্দেশ। শরিয়তে এ ইবাদতটিকে ফরজ করার মধ্যে বহু যুক্তি ও কল্যাণ রয়েছে। নামাজে যেমন অসংখ্য কল্যাণ ও উপকারিতা, রোজায়ও সে রকম বহুবিধ কল্যাণ ও উপকারিতা নিহিত রয়েছে।
রোজা সূর্য উদয়ের আগ থেকে সূর্যাস্ত পর্যন্ত পানাহার ও সহবাসাদি থেকে বিরত থাকার নাম। এটা অবশ্যই কষ্টকর ব্যাপার। সুতরাং এর দ্বারা ক্ষুধা-তৃষ্ণায় সহিষ্ণুতার শিক্ষা হয়। বছরে ১১ মাস স্বাধীনভাবে পানাহারের ফলে শরীরে নানাবিধ রোগ-ব্যাধি সৃষ্টি হতে পারে। রমজানের নিয়মিত এক মাস রোজা দ্বারা শরীরকে বিশুদ্ধ করা হয়। এতে স্বাস্থ্য ভালো হয় এবং শরীরের বহু রোগ দূর হয়। প্রিয় নবী রাসুলে করিম (সা.) বলেছেন, 'রোজা রাখো, সুস্থ থাকবে।'
রোজা সাম্যের জ্বলন্ত শিক্ষা। আল্লাহ পাক ধনী-গরিব সবার জন্য রোজা ফরজ করেছেন। রোজা ফরজ হওয়ার ফলে ধনী, আমির, রাজা-বাদশাহ সবাই দরিদ্রের ক্ষুধার ক্লেশ অনুভব করতে পারে। সুতরাং ধনীরা দরিদ্রের প্রতি সহানুভূতিশীল হয় এবং তাদের সাহায্য করে থাকে। ইসলাম যে সাম্যের ধর্ম অর্থাৎ উঁচু-নিচু ও ধনী-দরিদ্র সবাই আল্লাহর দরবারে সমান, রোজায় এর উজ্জ্বল প্রমাণ বিদ্যমান। আল্লাহর দৃষ্টিতে সব বান্দা সমান, আল্লাহর হুকুমের সামনে সবাই সমভাবে দায়ী। নামাজে যেমন এর প্রমাণ দেখা যায়, তেমনি রোজায়ও এর কোনো ব্যতিক্রম নেই। হোক না সে আরব আজমের বাদশাহ; কিন্তু তাকেও রোজামুখে ইফতারি সামনে নিয়ে একজন অতি দীনহীন ব্যক্তির মতোই সূর্যাস্ত পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হয়। এক মিনিট আগে ইফতার করার অধিকার কারো নেই। ব্যতিক্রম এতটুকু যে, সচ্ছল এবং আমির ওমরাহরা নানা রকম ইফতারি দিয়ে রোজা খুলবে, আর গরিব বেচারা হয়তো এক ঢোক পানি, একমুষ্টি চাল বা একটি খেজুর দিয়েই ইফতার করবে। কিন্তু দরিদ্রের এক ঢোক পানিতে আল্লাহ বেহেশতের শরাবান তহুরার ফোঁটা ফেলবেন এবং এর স্বাদও অতুলনীয় ও অপূর্ব- এতে সন্দেহ নেই। তবে ধনীরা অবশ্যই এ মাসে অফুরন্ত সাওয়াব কামাই করে থাকেন। তাঁরা অবশ্যই নিজেদের ইফতারে বহু লোককে শরিক করেন। গরিব প্রতিবেশীকে ইফতারি পাঠিয়ে তাদের রোজার সওয়াবে অংশীদার হন। দরিদ্র ও অনাহারক্লিষ্ট অগণিত আল্লাহর বান্দা ক্ষুধায় কীরূপ জ্বালা ভোগ করে, রোজার বিধান চালু না হলে ধনীরা তা সত্যিকার অর্থে কোনো দিন উপলব্ধি করতে পারত না। সুতরাং রোজার এ একটি অপূর্ব মাহাত্ম্য যে, এটা দরিদ্রের প্রতি ধনীদের সহানুভূতি জাগ্রত করে। এভাবে বিশ্ব-মানবতার প্রতি কল্যাণ কামনারও একটি উৎস। শত বক্তৃতা ও গলাবাজি, শত পুঁথি-পুস্তক ও লেখা ধনী মানুষের মনে যে সহায়তা জাগ্রত করতে সমর্থ না হয়, একটি রোজা নীরবে-নিভৃতে মানুষকে সে সহানুভূতিতে জাগ্রত করে। সুতরাং এর মাধ্যমে বিশ্ব-মানবতাবোধ জাগ্রত হয়। এ জন্যই দীন ইসলাম শান্তির বাহক, শান্তির অগ্রদূত, বিশ্বজনীন ভ্রাতৃত্ব ও প্রেম-ভালোবাসার শিক্ষাদাতা। ইসলামের প্রতিটি ইবাদত-বন্দেগি শিক্ষা ও আদর্শের মর্মমূলে সাম্য, ভ্রাতৃত্ব, ত্যাগ ও সহিষ্ণুতা, প্রেম, ঔদার্যের আহ্বান রয়েছে। রোজা এমন একটি ইবাদত, এর কল্যাণস্পর্শ, ব্যক্তি থেকে বিশ্ব-মানবের কল্যাণ কামনায় পরিব্যাপ্ত হয়। এর জাজ্বল্যমান প্রমাণ রয়েছে ঈদের দিনে। অবশ্য ঈদ একটি স্বতন্ত্র ইবাদত হলেও রমজানের রোজার সঙ্গে এটা ওতপ্রোতভাবে জড়িত। কারণ ঈদুল ফিতর হলো রোজা ভঙ্গের ঈদ। এ ঈদে রমজানের অন্তর্নিহিত শিক্ষার একটি সামাজিক অনুষ্ঠান হয় এবং সে জন্যই এটিও একটি দায়িত্বপূর্ণ ইবাদত ওয়াজিব নামাজ এবং সে উপলক্ষে একটি বার্ষিক মিলন ও আনন্দের মহড়া বা উৎসব। এ জন্য রোজার সঙ্গে ঈদুল ফিতরের কল্যাণ ও উপকারিতা সম্পর্কে সংক্ষেপে একটু আলোচনা করা অপ্রাসঙ্গিক হবে না।
লেখক : সভাপতি, বাংলাদেশ সীরাত মিশন
রোজা সাম্যের জ্বলন্ত শিক্ষা। আল্লাহ পাক ধনী-গরিব সবার জন্য রোজা ফরজ করেছেন। রোজা ফরজ হওয়ার ফলে ধনী, আমির, রাজা-বাদশাহ সবাই দরিদ্রের ক্ষুধার ক্লেশ অনুভব করতে পারে। সুতরাং ধনীরা দরিদ্রের প্রতি সহানুভূতিশীল হয় এবং তাদের সাহায্য করে থাকে। ইসলাম যে সাম্যের ধর্ম অর্থাৎ উঁচু-নিচু ও ধনী-দরিদ্র সবাই আল্লাহর দরবারে সমান, রোজায় এর উজ্জ্বল প্রমাণ বিদ্যমান। আল্লাহর দৃষ্টিতে সব বান্দা সমান, আল্লাহর হুকুমের সামনে সবাই সমভাবে দায়ী। নামাজে যেমন এর প্রমাণ দেখা যায়, তেমনি রোজায়ও এর কোনো ব্যতিক্রম নেই। হোক না সে আরব আজমের বাদশাহ; কিন্তু তাকেও রোজামুখে ইফতারি সামনে নিয়ে একজন অতি দীনহীন ব্যক্তির মতোই সূর্যাস্ত পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হয়। এক মিনিট আগে ইফতার করার অধিকার কারো নেই। ব্যতিক্রম এতটুকু যে, সচ্ছল এবং আমির ওমরাহরা নানা রকম ইফতারি দিয়ে রোজা খুলবে, আর গরিব বেচারা হয়তো এক ঢোক পানি, একমুষ্টি চাল বা একটি খেজুর দিয়েই ইফতার করবে। কিন্তু দরিদ্রের এক ঢোক পানিতে আল্লাহ বেহেশতের শরাবান তহুরার ফোঁটা ফেলবেন এবং এর স্বাদও অতুলনীয় ও অপূর্ব- এতে সন্দেহ নেই। তবে ধনীরা অবশ্যই এ মাসে অফুরন্ত সাওয়াব কামাই করে থাকেন। তাঁরা অবশ্যই নিজেদের ইফতারে বহু লোককে শরিক করেন। গরিব প্রতিবেশীকে ইফতারি পাঠিয়ে তাদের রোজার সওয়াবে অংশীদার হন। দরিদ্র ও অনাহারক্লিষ্ট অগণিত আল্লাহর বান্দা ক্ষুধায় কীরূপ জ্বালা ভোগ করে, রোজার বিধান চালু না হলে ধনীরা তা সত্যিকার অর্থে কোনো দিন উপলব্ধি করতে পারত না। সুতরাং রোজার এ একটি অপূর্ব মাহাত্ম্য যে, এটা দরিদ্রের প্রতি ধনীদের সহানুভূতি জাগ্রত করে। এভাবে বিশ্ব-মানবতার প্রতি কল্যাণ কামনারও একটি উৎস। শত বক্তৃতা ও গলাবাজি, শত পুঁথি-পুস্তক ও লেখা ধনী মানুষের মনে যে সহায়তা জাগ্রত করতে সমর্থ না হয়, একটি রোজা নীরবে-নিভৃতে মানুষকে সে সহানুভূতিতে জাগ্রত করে। সুতরাং এর মাধ্যমে বিশ্ব-মানবতাবোধ জাগ্রত হয়। এ জন্যই দীন ইসলাম শান্তির বাহক, শান্তির অগ্রদূত, বিশ্বজনীন ভ্রাতৃত্ব ও প্রেম-ভালোবাসার শিক্ষাদাতা। ইসলামের প্রতিটি ইবাদত-বন্দেগি শিক্ষা ও আদর্শের মর্মমূলে সাম্য, ভ্রাতৃত্ব, ত্যাগ ও সহিষ্ণুতা, প্রেম, ঔদার্যের আহ্বান রয়েছে। রোজা এমন একটি ইবাদত, এর কল্যাণস্পর্শ, ব্যক্তি থেকে বিশ্ব-মানবের কল্যাণ কামনায় পরিব্যাপ্ত হয়। এর জাজ্বল্যমান প্রমাণ রয়েছে ঈদের দিনে। অবশ্য ঈদ একটি স্বতন্ত্র ইবাদত হলেও রমজানের রোজার সঙ্গে এটা ওতপ্রোতভাবে জড়িত। কারণ ঈদুল ফিতর হলো রোজা ভঙ্গের ঈদ। এ ঈদে রমজানের অন্তর্নিহিত শিক্ষার একটি সামাজিক অনুষ্ঠান হয় এবং সে জন্যই এটিও একটি দায়িত্বপূর্ণ ইবাদত ওয়াজিব নামাজ এবং সে উপলক্ষে একটি বার্ষিক মিলন ও আনন্দের মহড়া বা উৎসব। এ জন্য রোজার সঙ্গে ঈদুল ফিতরের কল্যাণ ও উপকারিতা সম্পর্কে সংক্ষেপে একটু আলোচনা করা অপ্রাসঙ্গিক হবে না।
লেখক : সভাপতি, বাংলাদেশ সীরাত মিশন
No comments