অভিনব প্রতিবাদ
সারাদেশেই সড়ক ব্যবস্থা অনেকটা বিপর্যস্ত। একই সঙ্গে রাজধানীসহ দেশের প্রায় সব শহরের কোন কোন গুরুত্বপূর্ণ সড়ক বর্তমানে যানবাহন চলাচলের অনুপযুক্ত। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ এই অবস্থার পরিবর্তনে কোন কার্যকর পদক্ষেপ নেয়নি।
এভাবে আর কতকাল? সম্প্রতি চট্টগ্রাম শহরে সড়কপথে বেহাল অবস্থার বিরুদ্ধে প্রতিবাদে ফেটে পড়েছে সাধারণ মানুষ। তবে এবারের এ প্রতিবাদের ভাষা কিছুটা অভিনব ও প্রতীকী। চট্টগ্রাম শহরে যে গুরুত্বপূর্ণ সড়কগুলো চলাচলের অনুপযুক্ত, তার মধ্যে অন্যতম বহদ্দারহাট থেকে কালুরঘাট পর্যন্ত ‘আরাকান সড়ক’। শুক্রবার এই প্রাচীন সড়কের সংস্কারের দাবিতে এক ব্যতিক্রমী প্রতিবাদ কর্মসূচীর আয়োজন করে স্থানীয়রা। তারা যান চলাচলের প্রায় অনুপযুক্ত এই সড়কটিতে দল বেঁধে ধান রোপণ করেছে। এই গুরুত্বপূর্ণ সড়কের অনেক জায়গায় আস্তর উঠে মাটি বৃষ্টির পানিতে কাদায় পরিণত হয়েছে। সেখানে স্থানীয়রা ধান গাছ রোপণের মাধ্যমে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানিয়েছে। কয়েক কিলোমিটারজুড়ে খানাখন্দে ভরা এই ঐতিহ্যবাহী সড়ক। যানবাহন দূরের কথা, বৃষ্টি হলে এই পথ দিয়ে মানুষ হাঁটতে পারে না; এখানে ওখানে কাদা ও গর্ত।
দেশের বেশির ভাগ সড়ক ও মহাসড়ককে বর্তমানে অচলাবস্থা বিরাজ করছে। ঈদের আর দেরি নেই। আর ক’দিন পরেই নাড়ির টানে ঈদের উৎসবে যোগ দিতে মানুষ ঘরে ফিরবে। বেশিরভাগ মানুষ সড়কপথের ওপর নির্ভরশীল। কিন্তু চলাচলের অনুপযুক্ত এই সড়কপথ দিয়ে তারা কিভাবে ঘরে ফিরবে? তাই চট্টগ্রামের আরাকান সড়কের পাশাপাশি দেশের সব গুরুত্বপূর্ণ সড়ক ও মহাসড়কের সংস্কারের বিষয়ে জরুরী পদক্ষেপ নিতে হবে। গত বছর ঈদের আগে সড়ক ও মহাসড়কের অচলাবস্থার কারণে দেশব্যাপী বিপর্যয়ের সূচনা হয়েছিল। যোগাযোগমন্ত্রী কয়েক মাস ধরে রাস্তাঘাটের বেহাল অবস্থা স্ব-শরীরে প্রত্যক্ষ করছেন। সম্প্রতি তিনি চাঁদপুর জেলার সড়ক পথের বেহাল অবস্থা বিষয়ে তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। শুধু চাঁদপুর জেলা নয়, সর্বত্র পুরনো সড়ক ও মহাসড়কের সংস্কার ও রক্ষণাবেক্ষণের ক্ষেত্রে দায়িত্বহীনতা পরিলক্ষিত হচ্ছে। সারা দেশের সড়ক ও মহাসড়কের সংস্কারের লক্ষ্যে সমন্বিত মহাপরিকল্পনা অপরিহার্য। আরাকান সড়ক সংস্কারের দাবিতে যেভাবে অভিনব প্রতিবাদ জানানো হয়েছে, সে বিষয়ে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের পক্ষ থেকে অবিলম্বে কার্যকর পদক্ষেপ নেয়া উচিত।
No comments