বরিশাল-চট্টগ্রাম সড়কের ভোলা অংশ- গর্ত-পানি-কাদায় ভরা সড়ক

বরিশাল-চট্টগ্রাম মহাসড়কের ভোলা অংশের চার কিলোমিটার সড়ক গর্ত, পানি ও কাদায় ভরা। আর এক কিলোমিটার ভাঙাচোরা ইটের সড়ক। বৃষ্টি ও উচ্চ জোয়ারে সড়কের কিছু অংশ প্লাবিত হচ্ছে। সড়ক ও জনপথ (সওজ) বিভাগ ওসব গর্তে মাটি-বালু-ইট ফেলে ভরাট করে মহাসড়ককে মাটির সড়কে পরিণত করেছে বলে স্থানীয় বাসিন্দারা অভিযোগ করেছেন।


ফলে ঈদে ঘরে ফেরা মানুষ ও স্থানীয় বাসিন্দাদের ভোগান্তি চরমে উঠেছে।
গতকাল রোববার সরেজমিনে দেখা গেছে, মহাসড়কের ভোলা অংশের ইলিশা বাঘারহাওলা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় থেকে ইলিশা ফেরিঘাট পর্যন্ত প্রায় পাঁচ কিলোমিটার সড়ক অসংখ্য গর্তে ভরা। সড়কের দুই পাশ ঢালু থাকায় পানি জমে নালার মতো সৃষ্টি হয়েছে। ভাঙা সড়কের ইলিশা বাঘারহাওলা থেকে ব্যারিস্টারের কাচারি পর্যন্ত দুই কিলোমিটার সড়কের ওপরের স্তর তুলে ফেলা হয়েছে। সে অংশের পাথর-বালু উঠে সড়কটি হয়ে গেছে এবড়োখেবড়ো। গর্ত ভরাটের জন্য চলতি বর্ষা মৌসুমেই কয়েকবার প্রায় ২৫ লাখ টাকার মাটি, ইট ও বালু ফেলা হয়েছে বলে সওজ বিভাগ জানিয়েছে। এর পরপরই টানা বর্ষণে বালু-মাটি-কাদা-পানিতে পরিণত হয়ে যাত্রী ও পথচারীদের ভোগান্তি আরও বাড়িয়ে দিয়েছে। ইলিশা চড়ার মাথা থেকে ইলিশা ফেরিঘাট পর্যন্ত এক কিলোমিটার ইটের সড়ক।
ভোলা সওজ বিভাগের কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, জরুরি পুনর্বাসন প্রকল্পের আওতায় ২০১১ সালের মে মাসে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান ‘ওটিবিএল’ বরিশাল-চট্টগ্রাম মহাসড়কের ভোলা অংশের আট কিলোমিটার (পরাণগঞ্জ থেকে ইলিশা ফেরিঘাট) সড়ক সংস্কারের দায়িত্ব পায়। এতে ব্যয় ধরা হয় সাড়ে সাত কোটি টাকা। প্রথম কার্যমেয়াদ শেষ হলে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে গত জানুয়ারিতে নতুন কার্যমেয়াদ বেঁধে দেয় সওজ। ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান জুন পর্যন্ত তিন কিলোমিটার সড়কের কাজ সমাপ্ত করলে ওটিবিএলের সঙ্গে সওজের চুক্তি বাতিল হয়ে যায়। পুনরায় গত জুলাইয়ে সওজের একটি দল সড়কের দুরবস্থা পরিদর্শন করে।
সড়কের পাশে অবস্থিত ইলিশা ইসলামিয়া মডেল কলেজের বাংলার প্রভাষক জুন্নু রায়হান বলেন, ‘পাঁচ-ছয় বছর ধরে এ সড়কের যাত্রী ও পথচারীরা শুকনো মৌসুমে গায়ে ধুলো মেখে, বর্ষায় কাদা-পানি মেখে বাড়ি ফিরে। কিন্তু সড়ক বিভাগের কোনো তদারকি নেই।’
ট্রাকচালক জাকির হোসেন বলেন, ‘বরিশাল-ভোলা চট্টগ্রাম মহাসড়কের ভোলা অংশে ঢুকলে গাড়ির যন্ত্রাংশ ভেঙে যায়। সড়কজুড়ে এত গর্ত! যেকোনো মুহূর্তে বড় ধরনের দুর্ঘটনা ঘটতে পারে। অনেক ঝুঁকি ও সময় নিয়ে গাড়ি চালাই।’
সওজ বিভাগ ভোলা জেলা কার্যালয়ের নির্বাহী প্রকৌশলী সুশীল চন্দ্র সাহা বলেন, ‘ঢাকা থেকে আসা একটি দল পরিদর্শনের পর সাময়িক সংস্কার প্রকল্পের আওতায় আমরা নতুন করে আট কোটি টাকার একটি নকশা পাঠিয়েছি। আশা করা যায়, শীতকালে দরপত্র আহ্বান করা হবে। এখন বর্ষায় সড়কে গর্ত হচ্ছে সত্য, তবে সে গর্ত ভরাট করে আমরা সড়কটি চালু রাখার চেষ্টা করছি।’

No comments

Powered by Blogger.