ঢাকা-বগুড়া-রংপুর-মাথাব্যথার কারণ ৩৯ কিলোমিটার by জে এম রউফ
ঢাকা-রংপুর মহাসড়কের বগুড়া ও গাইবান্ধা অংশে ৩৯ কিলোমিটার রাস্তা ঈদে ঘরমুখো উত্তরবঙ্গবাসীর আগাম মাথাব্যথার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। দীর্ঘদিন সংস্কার না হওয়ায় বগুড়া অংশে ৯ কিলোমিটার এবং গাইবান্ধা অংশে ৩০ কিলোমিটার রাস্তায় যানবাহন চলাচল করছে মারাত্মক ঝুঁকি নিয়ে শম্বুকগতিতে।
এ ছাড়া কেবল বগুড়া অংশেই মহাসড়কের প্রায় ৩১ কিলোমিটারজুড়ে সমপ্রসারিত সড়কের অংশ ভেঙেচুরে একাকার। রাস্তার এই বেহাল ঈদের আগে যাত্রী ভোগান্তির বড় কারণ হয়ে দাঁড়াবে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
সিরাজগঞ্জের শেষ সীমা এবং বগুড়ার শেরপুর উপজেলার সীমাবাড়ী থেকে উত্তরে গাইবান্ধার সীমান্ত এলাকা রহবল পর্যন্ত উত্তরবঙ্গ মহাসড়কের ৬৮ কিলোমিটার এলাকা বগুড়া জেলার আওতাভুক্ত। দুটি উপবিভাগের অধীনে এই মহাসড়ক সংস্কার ও রক্ষণাবেক্ষণ হয়। এর মধ্যে শেরপুর উপবিভাগে মহাসড়ক সংস্কারকাজ হয়েছে বিগত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সময়ে। কিন্তু ওই সময় বা পরবর্তী সময়ে উত্তরের বগুড়া উপবিভাগের অধীন ৩১ কিলোমিটার সড়কের কোনো কাজ হয়নি। কোনোমতে জোড়াতালি দিয়ে চলছে এই অংশের সংস্কারকাজ। এরই মধ্যে গত অর্থবছরে মারাত্মক ক্ষতিগ্রস্ত হয় শেষাংশের তিন কিলোমিটার রাস্তা। কার্পেটিং উঠে গিয়ে এবড়োথেবড়ো আকার ধারণ করে। সে সময় বগুড়ার তিন কিলোমিটারসহ গাইবান্ধা অংশের আরো ৩২ কিলোমিটার মিলে মোট ৩৫ কিলোমিটার মহাসড়ক জরুরি প্রকল্পের আওতায় সংস্কারের উদ্যোগ নেওয়া হয়। গাইবান্ধা সড়ক ও জনপথ বিভাগের মাধ্যমে সেই কাজ সম্পন্ন করার কথা ছিল। কিন্তু গত জুন মাসে সেই প্রকল্পের মেয়াদ শেষ হলেও বগুড়া অংশে কোনো কাজই হয়নি। এরই মধ্যে বগুড়ার শিবগঞ্জ উপজেলার চণ্ডিহারা এলাকার ছয় কিলোমিটার এলাকা ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়ে। বর্ষা মৌসুমের আগে সেই অংশ সংস্কার না করা হলে যান চলাচল বিঘি্নত হওয়ার শঙ্কা দেখা দেয়।
সূত্র জানায়, যোগাযোগমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের গত ১৭ ফেব্রুয়ারি বগুড়া সফরে এসে সরেজমিনে মহাসড়কের ঝুঁকিপূর্ণ চণ্ডিহারা অংশটি পরিদর্শন করেন। সেখান থেকেই তিনি অর্থ মন্ত্রণালয়সহ বিভিন্ন স্থানে কথা বলে সংবাদমাধ্যমকে জানান, ২০১১-১২ অর্থবছরের মধ্যেই ক্ষতিগ্রস্ত মহাসড়কের ওই স্থানে কাজ শুরু করা হবে। কিন্তু সেই অর্থবছর শেষ হয়ে নতুন অর্থবছরের আরো দুই মাস অতিবাহিত হলেও কাজ শুরু হয়নি। এখন চণ্ডিহারার ছয় কিলোমিটার এবং রহবলে তিন কিলোমিটার এলাকা চরম ঝুঁকিপূর্ণ বলে খোদ সওজ কর্মকর্তারাই স্বীকার করেছেন।
শনিবার সরেজমিন পরিদর্শনে গিয়ে দেখা যায়, চণ্ডিহারা এলাকায় মহাসড়কের বিটুমিনাস লেয়ার (পিচঢালা স্তর) নষ্ট হয়ে যাওয়ায় সড়কের স্থায়িত্ব ও কার্যকারিতা আর নেই। এ কারণে কোনো স্থানে মহাসড়ক ফেটে চৌচির অবস্থা, কোথাও আবার নষ্ট কার্পেটিং একত্র হয়ে দলা পাকানো অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। এই অংশ দিয়ে যান চলাচলের সময় পরিবহনগুলো সামনে-পেছনে দোল খেতে শুরু করে। একই অবস্থা দেখা গেছে রহবল অংশেও।
এ ছাড়া বগুড়া শহরতলির বনানী থেকে শুরু করে রহবল পর্যন্ত ৩১ কিলোমিটার এলাকার বেশির ভাগ স্থানে মহাসড়কের সমপ্রসারিত অংশ (সোল্ডার) ভেঙেচুরে একাকার। এ কারণে অটোটেম্পো ও মোটরসাইকেলগুলোও চলাচল করছে মহাসড়কের মাঝ দিয়ে। সমপ্রসারিত অংশের কোনো কোনো স্থানে এমন গর্তের সৃষ্টি হয়েছে, যেখানে পেছন থেকে কোনো পরিবহন অতিক্রম করতে গেলেই দুর্ঘটনার আশঙ্কা প্রবল।
এই মহাসড়ক দিয়ে পঞ্চগড়-নেত্রকোনা নিয়মিত বিআরটিসির বাস চালান আবদুর রহমান। তিনি বলেন, 'মাত্র ৯ কিলোমিটার সড়কে কাজ করলে আর কুনু টেনশন থাকে না। কিন্তু সেই কাজই হচ্ছে না। এ জন্যি নিজেরাও ঝুঁকির মধ্যে আছি, যাত্রীরাও কষ্ট পাচ্ছেন।'
কুড়িগ্রাম থেকে ঢাকায় নাবিল পরিবহনের চালক জামাল উদ্দিন মোল্লা বলেন, 'সামান্য বৃষ্টি হলেই আর মহাসড়ক দিয়ে চলা যায় না। মনে হয়, ধানের জমির মতো সড়ক দেবে যায়। ঈদের আগে গাড়ির চাপ বাড়লে এই সড়কে চলাচল করা কঠিন হয়ে পড়বে।'
বগুড়া-দেবীগঞ্জ সড়কের বাসচালক জিকরুল আলম হতাশা ব্যক্ত করে বলেন, 'মন্ত্রী অ্যাসে কয়া গ্যালো এবারই সড়ক ঠিক করা হবি। কিন্তু ছয় মাসেও কাজের কোনো হদিস নাই। আর কার কতা হামরা বিশ্বাস করি কন?'
এই মহাসড়কে নিয়মিত ট্রাক চালান বগুড়ার নাইম ইসলাম। তিনি বলেন, 'খালি সড়ক খারাপই না; মহাস্থান, চণ্ডিহারা, নয়মাইল, মির্জাপুর, ছোনকাসহ বিভিন্ন স্থানে প্রতিদিন সড়ক দখল করে হাট বসে। এসব হাটের কারণে চলাচল করাই মুশকিল। ঈদের আগে এই এলাকাগুলোতে তাই প্রতিবছরই দুর্ঘটনা ঘটে।'
সড়ক ও জনপথ বিভাগের বগুড়া উপবিভাগীয় প্রকৌশলী মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, মন্ত্রীর আশ্বাস অনুযায়ী মহাসড়কের চণ্ডিহারা এলাকার ছয় কিলোমিটার এবং মহাসড়কের উভয় পাশে ২৮ কিলোমিটার করে সোল্ডার নির্মাণের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। ইতিমধ্যে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে কার্যাদেশ দেওয়া হয়েছে। তাঁরা আগামী সপ্তাহেই যাতে কাজ শুরু করেন, সে চেষ্টা হচ্ছে। এ ছাড়া রহবলে মহাসড়কের তিন কিলোমিটার গাইবান্ধার একটি প্রকল্পের আওতায় থাকায় টেন্ডার আহ্বান করা সম্ভব হয়নি। তিনি বলেন, মহাসড়ক চলাচলের উপযোগী রাখতে ভ্রাম্যমাণ দল নিয়মিত কাজ করে যাচ্ছে। এ ছাড়া ঈদের আগে মহাসড়ক-সংলগ্ন হাটবাজারগুলোর চাপ কমানোর চেষ্টা চলছে।
গাইবান্ধার বেহাল ৩৩ কি. মি. রাস্তা : বিগত ২০১১-১২ অর্থবছরে সওজ থেকে প্রায় ২৩ কোটি টাকা ব্যয়ে গাইবান্ধা অংশের ৩২ কিলোমিটারসহ মোট ৩৫ কিলোমিটার মহাসড়ক সংস্কারের প্রকল্প গ্রহণ করা হয়। যথাসময়ে কার্যাদেশ পেয়ে ঠিকাদার মহাসড়কের উত্তরাংশে কাজও শুরু করেন। মাত্র সোয়া দুই কিলোমিটার রাস্তার কাজ করার পর প্রকল্পের অর্থ ছাড় না করায় ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান কাজ বন্ধ করে দেয়। এরপর প্রায় এক বছর অতিক্রান্ত হলেও প্রকল্পটির অর্থ আর ছাড় করা হয়নি। এরই মধ্যে গত ৩০ জুন শেষ হয়ে গেছে প্রকল্পের মেয়াদ। ফলে প্রকল্পভুক্ত ৩৩ কিলোমিটার সড়কের অবস্থা এখন বেহাল।
স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, মহাসড়কের পাশে অবস্থিত ফাঁসিতলা, গোবিন্দগঞ্জ, পলাশবাড়ী, ধাপেরহাট, বালুয়া ও কমরপুর হাট এলাকায় দুই পাশে উঁচু সব স্থাপনা নির্মিত হওয়ায় বৃষ্টিসহ অন্যান্য ব্যবহার্য পানিও সরাসরি রাস্তায় নেমে আসে। এ কারণে ওই এলাকাগুলোতে সড়কের অবস্থা করুণ। দীর্ঘদিন একই অবস্থায় রয়েছে সড়কটি। সওজ কর্তৃপক্ষ মাঝেমধ্যে ভ্রাম্যমাণ ট্রাকে করে কিছু পিচ ও ইট-বালু ফেলেই দায়িত্ব শেষ করে। কিন্তু সংস্কারের কার্যকর কোনো উদ্যোগ নেওয়া হয়নি।
যোগাযোগ করা হলে গাইবান্ধা সওজের নির্বাহী প্রকৌশলী এম এম সেলিম প্রকল্পের মেয়াদ শেষ হয়ে যাওয়ার বিষয়টি স্বীকার করে বলেন, সে সময় যে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান কাজ পেয়েছিল, তারা অর্থ না পাওয়ায় কাজ করেনি। এখনো সওজের কাছে প্রতিষ্ঠানটি সাড়ে চার লাখ টাকা পাবে। প্রকল্পের মেয়াদ শেষ হয়ে যাওয়ায় গাইবান্ধা অংশের প্রায় ৩০ কিলোমিটার সড়ক সংস্কারের জন্য নতুন করে প্রকল্প গ্রহণের চেষ্টা চলছে। তা অনুমোদন হলে নতুন করে কাজ শুরু করা হবে।
ঈদ সামনে রেখে পুরো সড়ক চলাচলের উপযোগী রাখার চেষ্টা চলছে দাবি করে এম এম সেলিম বলেন, গোবিন্দগঞ্জ বাজারসংলগ্ন ২০০ মিটার রাস্তার অবস্থা খুবই খারাপ। এ ছাড়া অন্যান্য অংশে আসন্ন ঈদে ঘরমুখো যাত্রী বহনকারী যানবাহনের তেমন সমস্যা হবে না।
সিরাজগঞ্জের শেষ সীমা এবং বগুড়ার শেরপুর উপজেলার সীমাবাড়ী থেকে উত্তরে গাইবান্ধার সীমান্ত এলাকা রহবল পর্যন্ত উত্তরবঙ্গ মহাসড়কের ৬৮ কিলোমিটার এলাকা বগুড়া জেলার আওতাভুক্ত। দুটি উপবিভাগের অধীনে এই মহাসড়ক সংস্কার ও রক্ষণাবেক্ষণ হয়। এর মধ্যে শেরপুর উপবিভাগে মহাসড়ক সংস্কারকাজ হয়েছে বিগত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সময়ে। কিন্তু ওই সময় বা পরবর্তী সময়ে উত্তরের বগুড়া উপবিভাগের অধীন ৩১ কিলোমিটার সড়কের কোনো কাজ হয়নি। কোনোমতে জোড়াতালি দিয়ে চলছে এই অংশের সংস্কারকাজ। এরই মধ্যে গত অর্থবছরে মারাত্মক ক্ষতিগ্রস্ত হয় শেষাংশের তিন কিলোমিটার রাস্তা। কার্পেটিং উঠে গিয়ে এবড়োথেবড়ো আকার ধারণ করে। সে সময় বগুড়ার তিন কিলোমিটারসহ গাইবান্ধা অংশের আরো ৩২ কিলোমিটার মিলে মোট ৩৫ কিলোমিটার মহাসড়ক জরুরি প্রকল্পের আওতায় সংস্কারের উদ্যোগ নেওয়া হয়। গাইবান্ধা সড়ক ও জনপথ বিভাগের মাধ্যমে সেই কাজ সম্পন্ন করার কথা ছিল। কিন্তু গত জুন মাসে সেই প্রকল্পের মেয়াদ শেষ হলেও বগুড়া অংশে কোনো কাজই হয়নি। এরই মধ্যে বগুড়ার শিবগঞ্জ উপজেলার চণ্ডিহারা এলাকার ছয় কিলোমিটার এলাকা ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়ে। বর্ষা মৌসুমের আগে সেই অংশ সংস্কার না করা হলে যান চলাচল বিঘি্নত হওয়ার শঙ্কা দেখা দেয়।
সূত্র জানায়, যোগাযোগমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের গত ১৭ ফেব্রুয়ারি বগুড়া সফরে এসে সরেজমিনে মহাসড়কের ঝুঁকিপূর্ণ চণ্ডিহারা অংশটি পরিদর্শন করেন। সেখান থেকেই তিনি অর্থ মন্ত্রণালয়সহ বিভিন্ন স্থানে কথা বলে সংবাদমাধ্যমকে জানান, ২০১১-১২ অর্থবছরের মধ্যেই ক্ষতিগ্রস্ত মহাসড়কের ওই স্থানে কাজ শুরু করা হবে। কিন্তু সেই অর্থবছর শেষ হয়ে নতুন অর্থবছরের আরো দুই মাস অতিবাহিত হলেও কাজ শুরু হয়নি। এখন চণ্ডিহারার ছয় কিলোমিটার এবং রহবলে তিন কিলোমিটার এলাকা চরম ঝুঁকিপূর্ণ বলে খোদ সওজ কর্মকর্তারাই স্বীকার করেছেন।
শনিবার সরেজমিন পরিদর্শনে গিয়ে দেখা যায়, চণ্ডিহারা এলাকায় মহাসড়কের বিটুমিনাস লেয়ার (পিচঢালা স্তর) নষ্ট হয়ে যাওয়ায় সড়কের স্থায়িত্ব ও কার্যকারিতা আর নেই। এ কারণে কোনো স্থানে মহাসড়ক ফেটে চৌচির অবস্থা, কোথাও আবার নষ্ট কার্পেটিং একত্র হয়ে দলা পাকানো অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। এই অংশ দিয়ে যান চলাচলের সময় পরিবহনগুলো সামনে-পেছনে দোল খেতে শুরু করে। একই অবস্থা দেখা গেছে রহবল অংশেও।
এ ছাড়া বগুড়া শহরতলির বনানী থেকে শুরু করে রহবল পর্যন্ত ৩১ কিলোমিটার এলাকার বেশির ভাগ স্থানে মহাসড়কের সমপ্রসারিত অংশ (সোল্ডার) ভেঙেচুরে একাকার। এ কারণে অটোটেম্পো ও মোটরসাইকেলগুলোও চলাচল করছে মহাসড়কের মাঝ দিয়ে। সমপ্রসারিত অংশের কোনো কোনো স্থানে এমন গর্তের সৃষ্টি হয়েছে, যেখানে পেছন থেকে কোনো পরিবহন অতিক্রম করতে গেলেই দুর্ঘটনার আশঙ্কা প্রবল।
এই মহাসড়ক দিয়ে পঞ্চগড়-নেত্রকোনা নিয়মিত বিআরটিসির বাস চালান আবদুর রহমান। তিনি বলেন, 'মাত্র ৯ কিলোমিটার সড়কে কাজ করলে আর কুনু টেনশন থাকে না। কিন্তু সেই কাজই হচ্ছে না। এ জন্যি নিজেরাও ঝুঁকির মধ্যে আছি, যাত্রীরাও কষ্ট পাচ্ছেন।'
কুড়িগ্রাম থেকে ঢাকায় নাবিল পরিবহনের চালক জামাল উদ্দিন মোল্লা বলেন, 'সামান্য বৃষ্টি হলেই আর মহাসড়ক দিয়ে চলা যায় না। মনে হয়, ধানের জমির মতো সড়ক দেবে যায়। ঈদের আগে গাড়ির চাপ বাড়লে এই সড়কে চলাচল করা কঠিন হয়ে পড়বে।'
বগুড়া-দেবীগঞ্জ সড়কের বাসচালক জিকরুল আলম হতাশা ব্যক্ত করে বলেন, 'মন্ত্রী অ্যাসে কয়া গ্যালো এবারই সড়ক ঠিক করা হবি। কিন্তু ছয় মাসেও কাজের কোনো হদিস নাই। আর কার কতা হামরা বিশ্বাস করি কন?'
এই মহাসড়কে নিয়মিত ট্রাক চালান বগুড়ার নাইম ইসলাম। তিনি বলেন, 'খালি সড়ক খারাপই না; মহাস্থান, চণ্ডিহারা, নয়মাইল, মির্জাপুর, ছোনকাসহ বিভিন্ন স্থানে প্রতিদিন সড়ক দখল করে হাট বসে। এসব হাটের কারণে চলাচল করাই মুশকিল। ঈদের আগে এই এলাকাগুলোতে তাই প্রতিবছরই দুর্ঘটনা ঘটে।'
সড়ক ও জনপথ বিভাগের বগুড়া উপবিভাগীয় প্রকৌশলী মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, মন্ত্রীর আশ্বাস অনুযায়ী মহাসড়কের চণ্ডিহারা এলাকার ছয় কিলোমিটার এবং মহাসড়কের উভয় পাশে ২৮ কিলোমিটার করে সোল্ডার নির্মাণের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। ইতিমধ্যে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে কার্যাদেশ দেওয়া হয়েছে। তাঁরা আগামী সপ্তাহেই যাতে কাজ শুরু করেন, সে চেষ্টা হচ্ছে। এ ছাড়া রহবলে মহাসড়কের তিন কিলোমিটার গাইবান্ধার একটি প্রকল্পের আওতায় থাকায় টেন্ডার আহ্বান করা সম্ভব হয়নি। তিনি বলেন, মহাসড়ক চলাচলের উপযোগী রাখতে ভ্রাম্যমাণ দল নিয়মিত কাজ করে যাচ্ছে। এ ছাড়া ঈদের আগে মহাসড়ক-সংলগ্ন হাটবাজারগুলোর চাপ কমানোর চেষ্টা চলছে।
গাইবান্ধার বেহাল ৩৩ কি. মি. রাস্তা : বিগত ২০১১-১২ অর্থবছরে সওজ থেকে প্রায় ২৩ কোটি টাকা ব্যয়ে গাইবান্ধা অংশের ৩২ কিলোমিটারসহ মোট ৩৫ কিলোমিটার মহাসড়ক সংস্কারের প্রকল্প গ্রহণ করা হয়। যথাসময়ে কার্যাদেশ পেয়ে ঠিকাদার মহাসড়কের উত্তরাংশে কাজও শুরু করেন। মাত্র সোয়া দুই কিলোমিটার রাস্তার কাজ করার পর প্রকল্পের অর্থ ছাড় না করায় ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান কাজ বন্ধ করে দেয়। এরপর প্রায় এক বছর অতিক্রান্ত হলেও প্রকল্পটির অর্থ আর ছাড় করা হয়নি। এরই মধ্যে গত ৩০ জুন শেষ হয়ে গেছে প্রকল্পের মেয়াদ। ফলে প্রকল্পভুক্ত ৩৩ কিলোমিটার সড়কের অবস্থা এখন বেহাল।
স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, মহাসড়কের পাশে অবস্থিত ফাঁসিতলা, গোবিন্দগঞ্জ, পলাশবাড়ী, ধাপেরহাট, বালুয়া ও কমরপুর হাট এলাকায় দুই পাশে উঁচু সব স্থাপনা নির্মিত হওয়ায় বৃষ্টিসহ অন্যান্য ব্যবহার্য পানিও সরাসরি রাস্তায় নেমে আসে। এ কারণে ওই এলাকাগুলোতে সড়কের অবস্থা করুণ। দীর্ঘদিন একই অবস্থায় রয়েছে সড়কটি। সওজ কর্তৃপক্ষ মাঝেমধ্যে ভ্রাম্যমাণ ট্রাকে করে কিছু পিচ ও ইট-বালু ফেলেই দায়িত্ব শেষ করে। কিন্তু সংস্কারের কার্যকর কোনো উদ্যোগ নেওয়া হয়নি।
যোগাযোগ করা হলে গাইবান্ধা সওজের নির্বাহী প্রকৌশলী এম এম সেলিম প্রকল্পের মেয়াদ শেষ হয়ে যাওয়ার বিষয়টি স্বীকার করে বলেন, সে সময় যে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান কাজ পেয়েছিল, তারা অর্থ না পাওয়ায় কাজ করেনি। এখনো সওজের কাছে প্রতিষ্ঠানটি সাড়ে চার লাখ টাকা পাবে। প্রকল্পের মেয়াদ শেষ হয়ে যাওয়ায় গাইবান্ধা অংশের প্রায় ৩০ কিলোমিটার সড়ক সংস্কারের জন্য নতুন করে প্রকল্প গ্রহণের চেষ্টা চলছে। তা অনুমোদন হলে নতুন করে কাজ শুরু করা হবে।
ঈদ সামনে রেখে পুরো সড়ক চলাচলের উপযোগী রাখার চেষ্টা চলছে দাবি করে এম এম সেলিম বলেন, গোবিন্দগঞ্জ বাজারসংলগ্ন ২০০ মিটার রাস্তার অবস্থা খুবই খারাপ। এ ছাড়া অন্যান্য অংশে আসন্ন ঈদে ঘরমুখো যাত্রী বহনকারী যানবাহনের তেমন সমস্যা হবে না।
No comments