সাঈদীর বিরুদ্ধে তদন্ত কর্মকর্তাকে জেরা করতে সময় বেঁধে দিয়েছে ট্রাইব্যুনাল - যুদ্ধাপরাধী বিচার

একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধের সময় মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে গ্রেফতারকৃত জামায়াতের নায়েবে আমির মাওলানা দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর বিরুদ্ধে মামলার তদন্ত কর্মকর্তাকে জেরা করতে সময় বেঁধে দিয়েছে ট্রাইব্যুনাল।


তদন্তকারী কর্মকর্তা এএসপি মোঃ হেলাল উদ্দিনকে ৮ আগস্টের মধ্যে জেরা সম্পন্ন করার নির্দেশ দিয়েছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১। চেয়ারম্যান বিচারপতি মোঃ নিজামুল হক নাসিমের নেতৃত্বে তিন সদস্যবিশিষ্ট আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১ এই আদেশ প্রদান করে। অন্যদিকে জামায়াতের সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল মুহাম্মদ কামারুজ্জামানের বিরুদ্ধে তৃতীয় সাক্ষী কমান্ডার সিরাজুল ইসলাম মুন্সীর জেরা সম্পন্ন করেছে আসামি পক্ষের আইনজীবী। রবিবার চতুর্থ সাক্ষীর জবানবন্দী গ্রহণ করা হবে। চেয়ারম্যান বিচারপতি এটিএম ফজলে কবীরের নেতৃত্বে তিন সদস্যবিশিষ্ট আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-২ এ জেরা অনুষ্ঠিত হয়।
সাঈদী
মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় আটক জামায়াতের নায়েবে আমির মাওলানা দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর বিরুদ্ধে তদন্ত কর্মকর্তা হেলাল উদ্দিনের জেরা ৮ আগস্ট বুধবারের মধ্যে শেষ করার নির্দেশ দিয়েছে ট্রাইব্যুনাল-১। বৃহস্পতিবার ট্রাইব্যুনাল-১ এর চেয়ারম্যান বিচারপতি নিজামুল হকের নেতৃত্বে তিন সদস্যের ট্রাইব্যুনাল সময় বেঁধে দেয়ার এ নির্দেশ দেন।
সাঈদীর মামলার তদন্ত কর্মকর্তা হেলালউদ্দিনের ৪২তম দিনের জেরা শেষে ট্রাইব্যুনাল তার আদেশে বলে, ৮ আগস্ট বুধবারের মধ্যে জেরা শেষ করতে হবে। এর আগে তদন্ত কর্মকর্তাকে জেরা করেন আসামিপক্ষের আইনজীবী মিজানুল ইসলাম ও মনজুর আহমেদ আনসারী। ট্রাইব্যুনালের আদেশের আগে আসামিপক্ষের প্রধান আইনজীবী ব্যারিস্টার আব্দুর রাজ্জাক ও মিজানুল ইসলাম আদেশের বিরোধিতা করে তাদের পক্ষে যুক্তি তুলে ধরেন। প্রসিকিউশন পক্ষে ছিলেন প্রসিকিউটর সৈয়দ হায়দার আলী।
আইনজীবী মিজানুল ইসলাম বলেন, এ মামলায় ২০টি চার্জ আছে। ২০টি চার্জের পক্ষে হাজার হাজার পৃষ্ঠার ডকুমেন্ট দেয়া হয়েছে। তাছাড়া ১৫ জন সাক্ষীর সাক্ষ্য তাদের অনুপস্থিতিতে গ্রহণ করা হয়েছে। এসব বিষয়ে জেরা করতে সময় বেশিই লাগার কথা। এছাড়া জেরাকালে ২৫ শতাংশ সময় নষ্ট হয়েছে তদন্ত কর্মকর্তার ডকুমেন্ট খুঁজতে। তিনি আরও বলেন, এ মামলার তদন্ত কাজ থেকে শুরু করে কোন ক্ষেত্রেই সময় বেঁধে দেয়া হয়নি। শুধু শেষ সাক্ষীর বেলায় সময় বেঁধে দেয়া ঠিক হবে না। রবিবার নিজামী এবং সাকা চৌধুরীর মামলা আছে। আমরা চেষ্টা করব আগামী সপ্তাহের মধ্যে শেষ করতে।
তখন ট্রাইব্যুনাল বলেন, এ মামলাই চলবে। এটা শেষ না হওয়া পর্যন্ত অন্যগুলো বাদ। ট্রাইব্যুনাল জানায়, আমরা একটা সুযোগ পেয়েছি তা কাজে লাগাতে দিন মিস্টার রাজ্জাক। দেখুন আমরা কি আদেশ দেই। এরপর ট্রাইব্যুনাল তার আদেশে সাঈদীর মামলার তদন্ত কর্মকর্তার জেরা শেষ করতে ৮ আগস্ট সময় বেঁধে দেয়।
পরে আসামিপক্ষের প্রধান আইনজীবী ব্যারিস্টার আব্দুর রাজ্জাক সাংবাদিকদের বলেন, সময় বেঁধে দেয়াতে আমরা ক্ষতিগ্রস্ত হব। ন্যায়বিচার পাওয়া থেকে বঞ্চিত হব। ট্রাইব্যুনাল আদেশ না দিয়ে মৌখিকভাবে বলতে পারত। কিন্তু তারপরও ট্রাইব্যুনাল আদেশ দিয়ে সময় বেঁধে দিল।
এর আগে আসামিপক্ষের আইনজীবীরা তদন্ত কর্মকর্তা হেলাল উদ্দিনকে সাক্ষী শহিদুল ইসলাম খান সেলিমসহ অন্যান্য সাক্ষীর বিষয়ে জেরা করেন। তদন্তকালে সাক্ষী সেলিমের মেয়ে আপনাকে কি বলেছিলÑ আইনজীবীর এমন এক প্রশ্নের জবাবে হেলাল উদ্দিন বলেন, আমি তদন্তের জন্য সেলিমের বাড়িতে গেলে তার মেয়ে আমাকে দেখে চিনতে পেরে রেগে গিয়ে আমাকে বলে, আমার বাবাকে সাক্ষী বানাতে কেন এসেছেন? সাক্ষী হওয়ার জন্য তিনি (বাবা) মার খেয়েছে। সেজন্য সে মামলাও করেছে। এজন্য আমার পড়ালেখা বন্ধ হতে চলেছে। সে সাক্ষী হতে যাবে না। পারলে আপনি ডাকাতদের গ্রেফতার করেন।
কামারুজ্জামান
একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধের সময় মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে গ্রেফতারকৃত জামায়াতের সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল মুহাম্মদ কামারুজ্জামানের বিরুদ্ধে তৃতীয় সাক্ষী মুক্তিযোদ্ধা মোঃ জহিরুল হক মুন্সী বীরপ্রতীকের জেরা সম্পন্ন করেছে আসামিপক্ষের আইনজীবী। আসামিপক্ষের আইনজীবী মোঃ কফিল উদ্দিন চৌধুরী সাক্ষীকে জেরা করেন। অন্যদিকে সাক্ষীকে সহযোগিতা করেন প্রসিকিউটর কেএম সাইফুল ইসলাম ও প্রসিকিউটর নুরজাহান বেগম মুক্তা। জেরার এক পর্যায়ে সাক্ষী বলেন, আমি গোপন সূত্রে খবর পাই কাদের মোল্লা ও মেজর আইয়ুব মাইক মেরে জনগণকে বলছিল, মুক্তিযোদ্ধাদের যাঁরা সহযোগিতা করবেন, তাঁদের ঘরবাড়ি জ্বালিয়ে দেয়া হবে। মহিলাদের সম্ভ্রমহানি করা হবে। এই মিটিং জুলাই, আগস্ট মাসে শ্রীবর্দী আকবরিয়া পাইলট হাইস্কুলে তৎকালীন চেয়ারম্যান আব্দুস সাত্তারের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত হয়। এ ছাড়া তিনি জেরায় যা বলেছেন, তার কিছু অংশ নিম্নে দেযা হলো।
প্রশ্ন : জবানবন্দী শেষে জয়বাংলা বলে শেষ করেছিলেন।
উত্তর : জি। এটা যুদ্ধকালীন সেøøাগান ছিল।
প্রশ্ন : এটা বর্তমানে আওয়ামী লীগের সেøাগান।
উত্তর : আওয়ামী লীগের সেøাগান নয়। বাংলাদেশী মানুষের সেøাগান। যারা বাংলা ভাষায় কথা বলে তাদের সেøøাগান।
প্রশ্ন : কর্নেল ওলি আহম্মেদের নেতৃত্বে ১৯৯১ সালের ২৫ আগস্ট জাতীয়তাবাদী মুক্তিযোদ্ধা দল গঠিত হয়।
উত্তর : জানা নেই।
প্রশ্ন : জাতীয়তাবাদী মুক্তিযোদ্ধা দলের সেøাগান বাংলাদেশ জিন্দাবাদ।
উত্তর : ওরা পাকিস্তানের দোসর।
প্রশ্ন : মুক্তিযোদ্ধাদের মধ্যে বিভক্তি আছে তা গোপন করছেন।
উত্তর : সত্য নয়।
প্রশ্ন : আপনি আওয়ামী লীগ পন্থী মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে কামারুজাজামানের বিরুদ্ধে সাক্ষী দিয়েছেন।
উত্তর : সত্য নয়।
প্রশ্ন : আপনি ভারত থেকে এসে টিকরকান্দা, চরকান্দা ব্রিজ ধ্বংস করেছিলেন, এটা কোন মাসে।
উত্তর : জুন মাসে।
প্রশ্ন : আরও দু’মাস চেরাপুঞ্জিতে ছিলেন।
উত্তর : ব্রিজ ধ্বংস করে চেরাপুঞ্জিতে ১ মাস উচ্চতর ট্রেনিং নেই। জুন ১৫ থেকে জুলাই ১৫ পর্যন্ত।
প্রশ্ন : ঐ সময়ে ভারতের তুরাইয়ে ট্রেনিং নিয়েছেন।
উত্তর : একই সময়ে ট্রেনিং নেই।
প্রশ্ন : মারাঠা ফার্স্ট ব্যাটালিয়নে কবে অন্তর্ভুক্ত হন ।
উত্তর : মারাঠা ফার্স্ট ব্যাটালিয়ন ৯৫ মাউন্ট ব্রিগেড এলআই’র ৮ নবেম্বর অন্তর্ভুক্ত হই।
প্রশ্ন : ৩১ বেলুচ রেজিমেন্টের ক্যাপ্টেন রিয়াজ আহত হয়ে পাকিস্তান চলে যান। ওখানকার কমান্ডিং অফিসার কে ছিল।
উত্তর : লে. কর্নেল সুলতান খান। আর ক্যাপ্টেন রিয়াজ নয়, হবে মেজর রিয়াজ।
প্রশ্ন : এ তথ্য অসত্য।
উত্তর : ইহা সত্য নয়।
প্রশ্ন : আপনি বলেছেন, শেরপুরে এসে একজন কামরানকে দেখেন, এই কামরানকে নিজে দেখেছেন।
উত্তর : দেখিনি। নাম শুনেছি।
প্রশ্ন : উনি কি ছিলেন।
উত্তর : বদর বাহিনীর কমান্ডার কামারুজ্জামানের টু-আই-সি ছিলেন।
প্রশ্ন : কামারুজ্জামানের নাম বলেছেন, সেই কামারুজাজামানের সঙ্গে প্রথম কবে দেখা হয়।
উত্তর : সুরেন্দ্র মোহন সাহার বাড়ির ক্যাম্পে।
প্রশ্ন : এটা কোন মাস ।
উত্তর : নবেম্বর।
প্রশ্ন : ঐ সময় তার কোন আকৃতি ছিল।
উত্তর : গোফ ছিল। অল্প দাড়ি ছিল।
প্রশ্ন : তিনি কোথায় লেখাপড়া করেছেন।
উত্তর : কাদের মোল্লার সঙ্গে সর্বপ্রথম দেখা হবার আগে আমি শুনেছি শেরপুর কলেছে পড়াশুনা করত। পরে জামালপুর পড়েছে। ফাঁকে ফাঁকে বিভিন্ন অফিসে কাগজ বই কলম সরবরাহ করত।
প্রশ্ন : আপনার বাড়ি থেকে উনার বাড়ি কতদূর।
উত্তর : প্রায় ২০ কিলোমিটার।
প্রশ্ন : যুদ্ধের সময় শেরপুর না জামালপুরে পড়েছে।
উত্তর : জামালপুরে পড়েছে।
প্রশ্ন : কোন ক্লাসে।
উত্তর : তিনি জামালপুর পড়তেন ইসলামী স্টাডিজে নিয়ে বিএ।
প্রশ্ন : যুদ্ধের পর উনি লেখাপড়া করেছিলেন কিনা খোঁজ নিয়েছেন?
উত্তর : জানা নেই।
প্রশ্ন : উনি কোথায় কোন অবস্থায় ছিলেন খোঁজ খবর নিয়েছেন।
উত্তর : প্রয়োজন ছিল না।
প্রশ্ন : কামারুজ্জামান বৃহত্তর ময়মনসিংহের আলবদর নেতা ছিলেন। কোন পদে ছিলেন।
উত্তর : জানা নেই। আলবদর, আলসামস কমান্ডার হিসেবে ছিলেন।
প্রশ্ন : শেরপুরের আলবদরের কমান্ডার কে ছিলেন।
উত্তর : উনিই ছিলেন। টু-আই-সি ছিলেন কামরান।
প্রশ্ন : শেরপুরের রাজাকার কমান্ডার কে ছিলেন।
উত্তর : রাজাকার ও আলবদর একই কমান্ডারের অধীনে ছিল।
প্রশ্ন : শেরপুরের আলসামস কমান্ডার কে ছিলেন।
উত্তর : আলবদর ও আলসামসের একই কমান্ডার ছিল।
প্রশ্ন : ঐ বাহিনীর আলাদা কমান্ডার ছিল না?
উত্তর : না, সহযোগী কমান্ডার ছিল।
প্রশ্ন : কবে কখন কোথায় বসে উনি সব বাহিনীর কমান্ডার হলেন।
উত্তর : মনে নেই।
প্রশ্ন : আপনি কি শ্রীবর্দী হাইস্কুলসহ অন্য যে সব ক্যাম্পে আলবদর আর্মি থাকত ঐ ক্যাম্পগুলোতে গেছেন।
উত্তর : ক্যাম্পে আর্মি কম থাকত। রাজাকার আলবদর বেশি থাকত। আর্মিরা দিনে থাকত রাতে থাকত না। ঐ ক্যাম্পে ঢুকিনি। বাইরে থেকে খবর নিয়েছি।
প্রশ্ন : সুরেন্দ্র মোহন সাহার বাড়িতে ক্যাম্পে কতজন পাক সেনা ছিল।
উত্তর : ১০/১২ জন পাক সেনা থাকত।
প্রশ্ন : কামারুজ্জামান আলবদর কমানডার। উনার শরীরে কোন পদবী পোশাক ছিল।
উত্তর : যুদ্ধের সময় সামরিক পোশাক ছিল না।
প্রশ্ন : শুনে বলেছেন।
উত্তর : উনি যে কমান্ডার তা কার্যকলাপ ও মুখে শুনে বলেছি।
প্রশ্ন : ৭০ নির্বাচনে শেরপুরের জামায়াতের কোন প্রার্থী ছিল।
উত্তর : ছিল। সম্ভবত, ঠিকাদার হাবিবুল্লাহ।
প্রশ্ন : শ্রীবর্দীতে তখন জামায়াতের আমির কে ছিলেন।
উত্তর : শ্রীবর্দীতে অধ্যাপক আজিজুর রহমান শেরপুরে এ্যাডভোকেট হাবিবুল্লাহ।
প্রশ্ন : এই তথ্য সঠিক নয়।
উত্তর : ইহা সত্য নয়।
প্রশ্ন : অধ্যক্ষ হান্নানকে মাথা মুড়িয়ে চুনকালি মাখিয়ে দড়ি দিয়ে বেঁধে ঘুরিয়েছিল। এটা কবে শুনেছেন।
উত্তর : নবেম্বর মাসে।
প্রশ্ন : ঘটনা কবে ঘটেছিল তারিখ, মাস ।
উত্তর : ১৫/২০ দিন আগে।
প্রশ্ন : ফুলকার চর পরিদর্শনে যারা যায় এটা সত্য নয়।
উত্তর : সত্য।
প্রশ্ন : কিছু ধর্ষিত মহিলার লাশ দেখেছেন। সেই লাশের মধ্যে দুটি ছাত্রীর লাশ পাওয়া যায়। তাদের নাম বলতে পারবেন?
উত্তর : বলতে পারব না।
প্রশ্ন : কানসা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মোকলেস টাকা জমা দিতে গিয়েছিল। তার বাড়ি কোথায়।
উত্তর : কানসা ।
প্রশ্ন : আপনার বাড়ি থেকে তার বাড়ি কত দূর।
উত্তর : প্রায় ২৫ কিলোমিটার।
প্রশ্ন : আপনি যুদ্ধের পর বা তার মৃত্যুর পর তার বাড়িতে গেছেন।
উত্তর : ৪ বার গেছি।
প্রশ্ন : মোসলেম চেয়ারম্যানকে হত্যার সময় ছিলেন।
উত্তর : ছিলাম না।
প্রশ্ন : একটা চিঠি নিয়ে পাক আর্মির ক্যাম্পে যান। মেজর কামরুল হাসান ভুইয়াকে চিনেন।
উত্তর : চিনি। দুই নম্বর সেক্টরে যুদ্ধ করেছেন। তখন ছাত্র ছিলেন।
প্র্শ্ন : ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক ছিল।
উত্তর : ছিল।
প্রশ্ন : পাক ক্যাম্পে ভারতীয় ব্রিগেডিয়ার হরদেব সিং ক্লের চিঠি নিয়ে যান তিনি, জানতেন।
উত্তর : পরে জেনেছি।
প্রশ্ন : ২০০৫ সালের জানুযারিতে আলোর মিছিল পাক্ষিক পত্রিকায় আপনার লেখা একটি কবিতা আছে।
উত্তর : জি।
প্রশ্ন : ঐ সংখ্যাটি পড়েছেন ।
উত্তর : জি।
প্রশ্ন : সেখানে মেজর কামরুল হাসান ভুইয়া একটি বড় প্রবন্ধ লিখেছেন। পড়েছেন।
উত্তর : জি।
প্রশ্ন : সেখানে পাক ক্যাম্পে যাওয়া এবং ফিরে আসা বর্ণনা ভিন্নভাবে বর্ণিত আছে।
উত্তর : ইহা সত্য নয়।
প্রশ্ন : ওখানে কামারুজ্জামান সাহেবের নাম নেই।
উত্তর : একজন লোক কি ভাবে লিখেছে তার ব্যাপার। দেশের পরিস্থিতি ভিন্ন ছিল।
প্রশ্ন : ১১ নম্বর সেক্টরে কর্নেল তাহেরের অধীনে যুদ্ধ করেছেন।
উত্তর : কর্নেল তাহের বীর উত্তমের অধীনে যুদ্ধ করেছি। আহত হবার পর উইং কমান্ডার হামিদুল্লাহ খান বীরপ্রতীকের অধীনে যুদ্ধ করি।
প্রশ্ন : উইং কমান্ডার হামিদুল্লাহ খান বীরপ্রতীক একটি বই লিখেছেন। যার নাম একাত্তরে উত্তর রণাঙ্গন।
উত্তর : থাকতে পারে।
প্রশ্ন : ঐ বইটি পড়েছেন ।
উত্তর : না। তবে অনেক বইতেই আমার কথা লেখা আছে।
প্রশ্ন : সেই বইয়ে পাক ক্যাম্পে যাবার বিষয়টি ভিন্ন ভাবে দেয়া আছে, যা গোপন করেছেন।
উত্তর : সত্য নয়।
প্রশ্ন : ক্যাপ্টেন আজিজ একই সেক্টরে যুদ্ধ করেছেন।
উত্তর : একই সেক্টরে ব্রিগেডিয়ার হবার পর মারা যান। তিনি ভাল মানুষ ছিলেন। তাঁকে জিয়াউর রহমানের সময় পয়জন দিয়ে হত্যা করা হয় শুনেছি।
প্রশ্ন : কোন দেশে মারা গেছেন।
উত্তর : বিদেশে মারা গেছেন।
প্রশ্ন : কোন পক্ষ থেকে মামলা হয়েছিল কিনা।
উত্তর : জানি না।
প্রশ্ন : বাংলাদেশ স্বাধীনতা যুদ্ধের ওপর সরকার স্বীকৃত ভাবে ইতিহাস লিখেছে পড়েছেন।
উত্তর : ১৬ খ-ে। শুনেছি। টাকার অভাবে কিনতে পারিনি। আর পড়তেও পারিনি।
প্রশ্ন : ১৯৯২ সালে স্বাধীনতা বিরোধীদের বিচারের দাবিতে গণআদালত হয়েছিল।
উত্তর : জানি না। তখন চাকরি করতাম। জানলে বিচার চাইতাম।
প্রশ্ন : ৯২/৯৪ সাল পর্যন্ত যারা উদ্যোগ নিয়েছিল তারা ঘুরে ঘুরে কামারুজ্জামানের বিরুদ্ধে তথ্য সংগ্রহ করেছে।
উত্তর : জানা নেই।
প্রশ্ন : ২০০৮ সালে আওয়ামী লীগের পক্ষে নির্বাচনী কাজ করায় ওদের দারা উদ্বুদ্ধ হয়ে কামারুজ্জামানের বিরুদ্ধে বর্ণনা মতে সাক্ষ্য দিয়েছেন।
উত্তর : সত্য নয়।
প্রশ্ন : শেরপুর কবে শত্রুমুক্ত হয়।
উত্তর : ৭ ডিসেম্বর।
প্রশ্ন : আপনার শিক্ষাগত যোগ্যতা।
উত্তর : এসএসসি।
উত্তর : ছেলেমেয়ে।
উত্তর : তিন ছেলে দুই মেয়ে।
প্রশ্ন : আপনার ছেলে মঞ্জুরুল হক মঞ্জু কি করে।
উত্তর : বাড়িতে সংসারী কাজ করে।
প্রশ্ন : সে মাদকাক্ত। এ বিষয়ে থানায় অভিযোগ করেছিলেন।
উত্তর : মিথ্যা কথা।
প্রশ্ন : এই হলফনামায় আপনার স্বাক্ষর আছে।
উত্তর : ছেলেকে সংসারী করার জন্য সায়েস্তা করতে থানায় অভিযোগ করেছি। যেন কোন রাজনীতিতে না যায়। ছেলে আদৌ মাদকাসক্ত ছিল না।
প্রশ্ন : অবসরে গেছেন কবে।
উত্তর : ১৯৮৭ সালে।
প্রশ্ন : জমিজমা আছে।
উত্তর : ৫ একর জমি আছে। ১০ কাঠার ওপর দুটি গাছের বাগান। ২টি বাড়ি। তা থেকে ভাড়া পাই। ২টি ধানের গোডাউন, একটি নিজে ব্যবসা করি। আরেকটি ভাড়া দিয়েছি।
প্রশ্ন : আপনি বিভিন্ন সময়ে আদালতে তদ্বির করেন।
উত্তর : সত্য নয়।
প্রশ্ন : হাসেন আলী মামলা প্রত্যাাহারের হলফনামায় আপনার স্বাক্ষর আছে।
উত্তর : এটা আমার সাক্ষর নয়। হাসান আলী কৃত হলফনামা, আমি স্বাক্ষর করিনি। হলফনামার ফটোকপিটি দেখানো হয়েছে তাতে যে স্বাক্ষর তা আমার নয়।
প্রশ্ন : সাইজ উদ্দিনকে চিনেন।
উত্তর : চিনি।
প্রশ্ন : আপনি মিথ্যা মামলায় মিথ্যা সাক্ষ্য দিয়েছেন।
উত্তর : সত্য নয়।

No comments

Powered by Blogger.