দিনভর সংঘর্ষে জাবি উত্তাল-ক্যাম্পাস বন্ধ ঘোষণা ॥ হল ত্যাগের নির্দেশ-০ পাঁচ ছাত্র আহত, ব্যাপক ভাংচুর -০ এক ছাত্রকে কুপিয়ে জখমের জের, পুলিশ দোষীকে আটক করতে গেলে হামলার শিকার by বিভাষ বাড়ৈ ও আহমেদ রিয়াদ
দিনভর ছাত্র-পুলিশ সংঘর্ষ ও ছাত্রদের ওপর পুলিশের গুলিবর্ষণের জের ধরে ক্যাম্পাস উত্তাল হয়ে ওঠায় আগামী ২৫ আগস্ট পর্যন্ত বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়। হল খালি করার নির্দেশ দিলে শিক্ষার্থীরা এরই মধ্যে হল ছাড়তে শুরু করেছে। ছাত্রীদের আজ সকাল ৯টার মধ্যে হল ছাড়ার নির্দেশ দেয়া হয়েছে।
এক ছাত্রলীগ নেতার ওপর সশস্ত্র হামলা, পরে বিক্ষুব্ধ ছাত্রদের ওপর পুলিশের গুলিবর্ষণের জের ধরে ক্যাম্পাস অস্থির হয়ে ওঠায় বৃহস্পতিবার সিন্ডিকেটের জরুরী বৈঠকে ক্যাম্পাস বন্ধ ঘোষণা করা হয়। এদিকে জাহাঙ্গীরনগর, বুয়েট, রাজশাহী, পাবনাসহ বিভিন্ন পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে একের পর এক বিতর্কিত কর্মকা-ে প্রশ্নের মুখে পড়েছে ছাত্র, বিশেষত শিক্ষক রাজনীতি। ছাত্রলীগ, ছাত্রদলসহ বিভিন্ন ছাত্র সংগঠনের আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে চালানো কর্মকা-ের পর প্রশ্ন উঠেছে শিক্ষকদের আধিপত্য বিস্তারের আন্দোলন নিয়ে। বিশ্ববিদ্যালয়ের অস্থিরতায় উদ্বেগ প্রকাশ করে ঘটনা খতিয়ে দেখতে তিন সদস্যবিশিষ্ট তদন্ত কমিটি গঠন করেছে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন (ইউজিসি)।
বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের দেয়া বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক মোঃ আনোয়ার হোসেনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সিন্ডিকেটের জরুরী সভায় বিশ্ববিদ্যালয়ে উদ্ভূত পরিস্থিতিতে আসন্ন ঈদের ছুটি ৯ আগস্ট থেকে এগিয়ে এনে ২ আগস্ট নির্ধারণ করা হয়েছে। বলা হয়, বিশ্ববিদ্যালয়ের উদ্ভূত পরিস্থিতির কারণ নির্ণয়, ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের চিহ্নিত করা, বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্ষয়-ক্ষতি নির্ধারণ এবং সুপারিশ প্রদানের জন্য উপ-উপাচার্য অধ্যাপক মোঃ ফরহাদ হোসেনকে প্রধান করে ছয় সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। তদন্ত কমিটিকে আগামী ২১ কর্মদিবসের মধ্যে রিপোর্ট দিতে বলা হয়েছে। বৃহস্পতিবার দুপুর দেড়টা পর্যন্ত বিক্ষুব্ধ ছাত্রদের সঙ্গে উপ-উপাচার্যের নেতৃত্বে গঠিত উচ্চ পর্যায়ের একটি প্রশাসনিক টিমের কয়েক দফা আলোচনা হলেও কোনো ফলপ্রসূ সমাধান না হওয়ায় সিন্ডিকেটের জরুরী সভায় ঈদের ছুটি এগিয়ে এনে আবাসিক হল খালি করার সিদ্ধান্ত গৃহীত হয় বলেও এতে বলা হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ ঘোষণা করার পরপরই পুলিশ জলকামান নিয়ে ক্যাম্পাসে প্রবেশ করে। এ সময় বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা মীর মশাররফ হোসেন হলের সামনে অবস্থান নেন। জানা গেছে, এক ছাত্রকে কুপিয়ে জখম করা মীর মশাররফ হোসেন হলের এক ছাত্রলীগ কর্মীকে বুধবার মধ্যরাতে আটকের ঘটনায় ছাত্র ও পুলিশ সংঘর্ষের একপর্যায়ে পুলিশের গুলিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের ৫ ছাত্র আহত হয়েছে। আর এ ঘটনায় রাত ১টা থেকে ঢাকা-আরিচা মহাসড়কক অবরোধ করে রাখে সাধারণ ছাত্ররা, যা বৃহস্পতিবার বেলা ৩টা পর্যন্ত চলে। সাড়ে ৩টার দিকে অবরোধ তুলে নেয়া হয়। শুরু হয় যান চলাচল। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ বৈঠকে বসলেও দুুপুর পর্যন্ত কোন সমাধান না হওয়ায় ১৬ ঘণ্টা ছাত্ররা ঢাকা-আরিচা মহাসড়ক অবরোধ করে রাখে। এর আগে সকাল থেকে বিক্ষোভ করে তারা। এ সময় কোন ধরনের যানবাহন চলেনি। মালবাহী ট্রাকসহ অনেক যানবাহন সাভারের কাছে এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্যপাশে আটকে ছিল। এ রুটে চলাচলকারী কয়েক হাজার সাধারণ মানুষ চরম দুর্ভোগে পড়ে। এদিকে বিক্ষুব্ধ ছাত্ররা ঢাকা থেকে আসা গাড়ি এবং সময় টেলিভিশনের গাড়ি যেতে বাধা দেয় এবং একপর্যায়ে গাড়ি ভাংচুর করে। ছাত্র-পুলিশ সংঘর্ষে পুলিশ, সাংবাদিক ও শিক্ষার্থীসহ ২৫ জন আহত হয়েছেন। বৃহস্পতিবার বেলা দেড়টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ফরহাদ হোসেনের নেতৃত্বে সিন্ডিকেট সদস্যদের একটি প্রতিনিধি দল শিক্ষার্থীদের সঙ্গে সমঝোতা করতে গেলে পুলিশের নিক্ষেপ করা ইটপাটকেলের আঘাতে ৩ সাংবাদিক ও প্রায় ১৩ শিক্ষার্থী আহত হন। আহত সাংবাদিকদের মধ্যে রয়েছেন, কালের কণ্ঠের ইমন রহমান, উন্মোচন কমের মাহিদুল ইসলাম ও সিটিভি নিউজের হিমেল।
এ ঘটনায় আহতরা হলেন ফার্মেসি বিভাগের ৩৯তম ব্যাচের ছাত্র রাকিব, পরিসংখ্যান বিভাগের ৪০তম ব্যাচের ছাত্র বশির, ইনফরমেশন টেকনোলজি বিভাগের ৩৯তম ব্যাচের ছাত্র মারুফ, গণিত বিভাগের ৪১তম বিভাগের রবিন ও ফিন্যান্স এ্যান্ড ব্যাংকিং বিভাগের ৩৯তম ব্যাচের ছাত্র নাহিদ। তাদের সাভারের এনাম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। বুধবার রাতেও বিক্ষুব্ধ ছাত্ররা ঢাকা-আরিচা মহাসড়ক অবরোধ করে গাড়ি ভাংচুর করেন। মীর মশাররফ হোসেন হলের এক শিক্ষার্থী আটকের ঘটনায় ছাত্র ও পুলিশ সংঘর্ষের একপর্যায়ে ক্যাম্পাসে ব্যাপক ভাংচুর চালিয়েছে বিক্ষুব্ধ ছাত্ররা। বিশ্ববিদ্যালয়ে সমস্ত স্থাপনায় ব্যাপক ভাংচুর চালানো হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয় হল প্রাধ্যক্ষ, প্রক্টর বাসভবন, টিএসসি ভবন, অডিটরিয়াম, উপাচার্যের গাড়িতে ব্যাপক ভাংচুর চালানো হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয় প্রধান প্রবেশদ্বার ভেঙ্গে ফেলে রাতে বিক্ষুব্ধ ছাত্ররা। এ সময় পুলিশের গুলিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের এক সাংবাদিকসহ ৫ বিক্ষুব্ধ ছাত্র আহত হয়। আর এ ঘটনার প্রতিবাদে রাত ১টা থেকে ঢাকা-আরিচা মহাসড়ক অবরোধ করে রাখে ছাত্ররা, যা বৃহস্পতিবার বিকেল পর্যন্ত চলে।
এদিকে ঘটনার সূত্রপাত কিভাবে তার খোজ নিতে গিয়ে জানা গেছে, বুধবার রাত ১০টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের ৩৬তম ব্যাচের ছাত্র তাহমিদুল ইসলাম লিখনকে মীর মশাররফ হোসেন হলের নৃ-বিজ্ঞান বিভাগের এক ছাত্র ছুরিকাঘাত করেন। এতে তিনি মারাত্মকভাবে জখম হন। পরে তাকে সাভারের এনাম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। এ ঘটনায় লিখনের আবাসিক হলসহ অন্যান্য হলে উত্তেজনা দেখা দেয়। লিখনের অভিযোগের প্রেক্ষিতে রাত ১২টার দিকে পুলিশ সন্দেহভাজনভাবে মীর মশাররফ হোসেন হলের নৃ-বিজ্ঞান বিভাগের ৩৯তম ব্যাচের ছাত্র নাহিদকে আটক করতে গেলে ওই হলের ছাত্রদের সঙ্গে পুলিশের বাগ্বিত-া হয় এবং পুলিশের ওপর হামলা চালায়। এ সময় পুলিশ ১০-১২ রাউন্ড রাউন্ড ফাঁকা গুলি ছুড়লে ছাত্ররা ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠে। ছাত্রদের তোপের মুখে পুলিশ নাহিদকে ছেড়ে দেয়। এ সময় ছাত্ররা পুলিশকে লক্ষ্য করে ইটপটকেল ছুড়লে পুলিশ ৩০-৪০ রাউন্ড গুলি করে ছত্রভঙ্গ করে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে ব্যর্থ হয়। পরে তারা পিছু হটে। এ সময় বিক্ষোভ ঠেকাতে পুলিশ ছাত্রদের ওপর গুলি ছুড়লে ৫ ছাত্র গুলিবিদ্ধ হন। গুলিবিদ্ধ ছাত্রদের সাভার এনাম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। এ সময় ছাত্রদের হামলায় সাভার সার্কেলের এসপি মনোয়ার হোসেন আহত হয়। অন্যদিকে নাহিদকে আটকের খবর ছড়িয়ে পড়লে সব ছাত্র হল থেকে বেরিয়ে এসে ক্যাম্পাসে বিক্ষোভ করতে থাকে। সূত্র জানিয়েছে, ছাত্রী উত্ত্যক্ত করার ঘটনায় বুধবার রাতে মীর মশাররফ হোসেন হলের শিক্ষার্থীকে আটক করার ঘটনায় ছাত্র-পুলিশ সংঘর্ষ হয়। তবে ছাত্রদের ওপর পুলিশের গুলি ছোঁড়ার অনুমতি ছিল না বলে জানা গেছে। ছাত্রদের ওপর আত্মরক্ষার জন্য গুলি ছোড়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন ঢাকা জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার শেখ রফিকুল ইসলাম। তিনি বলেছেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনের অনুমতিক্রমে আমরা যখন জাবিতে এসেছি তখন শিক্ষার্থী আমাদের ওপর হামলা করে। সে সময় আমরা আত্মরক্ষার জন্য গুলি ছুড়তে বাধ্য হই। যে গুলি ছোড়া হয়েছে এটি শটগানের। খুব কাছ থেকেও যদি শটগান দিয়ে গুলি ছোড়া হয় তাতে খুব বেশি ক্ষতি হবে না কারও। এছাড়াও কয়েক রাউন্ড রাবার বুলেট ছোড়ার কথা স্বীকার করেন তিনি।
বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের দেয়া বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক মোঃ আনোয়ার হোসেনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সিন্ডিকেটের জরুরী সভায় বিশ্ববিদ্যালয়ে উদ্ভূত পরিস্থিতিতে আসন্ন ঈদের ছুটি ৯ আগস্ট থেকে এগিয়ে এনে ২ আগস্ট নির্ধারণ করা হয়েছে। বলা হয়, বিশ্ববিদ্যালয়ের উদ্ভূত পরিস্থিতির কারণ নির্ণয়, ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের চিহ্নিত করা, বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্ষয়-ক্ষতি নির্ধারণ এবং সুপারিশ প্রদানের জন্য উপ-উপাচার্য অধ্যাপক মোঃ ফরহাদ হোসেনকে প্রধান করে ছয় সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। তদন্ত কমিটিকে আগামী ২১ কর্মদিবসের মধ্যে রিপোর্ট দিতে বলা হয়েছে। বৃহস্পতিবার দুপুর দেড়টা পর্যন্ত বিক্ষুব্ধ ছাত্রদের সঙ্গে উপ-উপাচার্যের নেতৃত্বে গঠিত উচ্চ পর্যায়ের একটি প্রশাসনিক টিমের কয়েক দফা আলোচনা হলেও কোনো ফলপ্রসূ সমাধান না হওয়ায় সিন্ডিকেটের জরুরী সভায় ঈদের ছুটি এগিয়ে এনে আবাসিক হল খালি করার সিদ্ধান্ত গৃহীত হয় বলেও এতে বলা হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ ঘোষণা করার পরপরই পুলিশ জলকামান নিয়ে ক্যাম্পাসে প্রবেশ করে। এ সময় বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা মীর মশাররফ হোসেন হলের সামনে অবস্থান নেন। জানা গেছে, এক ছাত্রকে কুপিয়ে জখম করা মীর মশাররফ হোসেন হলের এক ছাত্রলীগ কর্মীকে বুধবার মধ্যরাতে আটকের ঘটনায় ছাত্র ও পুলিশ সংঘর্ষের একপর্যায়ে পুলিশের গুলিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের ৫ ছাত্র আহত হয়েছে। আর এ ঘটনায় রাত ১টা থেকে ঢাকা-আরিচা মহাসড়কক অবরোধ করে রাখে সাধারণ ছাত্ররা, যা বৃহস্পতিবার বেলা ৩টা পর্যন্ত চলে। সাড়ে ৩টার দিকে অবরোধ তুলে নেয়া হয়। শুরু হয় যান চলাচল। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ বৈঠকে বসলেও দুুপুর পর্যন্ত কোন সমাধান না হওয়ায় ১৬ ঘণ্টা ছাত্ররা ঢাকা-আরিচা মহাসড়ক অবরোধ করে রাখে। এর আগে সকাল থেকে বিক্ষোভ করে তারা। এ সময় কোন ধরনের যানবাহন চলেনি। মালবাহী ট্রাকসহ অনেক যানবাহন সাভারের কাছে এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্যপাশে আটকে ছিল। এ রুটে চলাচলকারী কয়েক হাজার সাধারণ মানুষ চরম দুর্ভোগে পড়ে। এদিকে বিক্ষুব্ধ ছাত্ররা ঢাকা থেকে আসা গাড়ি এবং সময় টেলিভিশনের গাড়ি যেতে বাধা দেয় এবং একপর্যায়ে গাড়ি ভাংচুর করে। ছাত্র-পুলিশ সংঘর্ষে পুলিশ, সাংবাদিক ও শিক্ষার্থীসহ ২৫ জন আহত হয়েছেন। বৃহস্পতিবার বেলা দেড়টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ফরহাদ হোসেনের নেতৃত্বে সিন্ডিকেট সদস্যদের একটি প্রতিনিধি দল শিক্ষার্থীদের সঙ্গে সমঝোতা করতে গেলে পুলিশের নিক্ষেপ করা ইটপাটকেলের আঘাতে ৩ সাংবাদিক ও প্রায় ১৩ শিক্ষার্থী আহত হন। আহত সাংবাদিকদের মধ্যে রয়েছেন, কালের কণ্ঠের ইমন রহমান, উন্মোচন কমের মাহিদুল ইসলাম ও সিটিভি নিউজের হিমেল।
এ ঘটনায় আহতরা হলেন ফার্মেসি বিভাগের ৩৯তম ব্যাচের ছাত্র রাকিব, পরিসংখ্যান বিভাগের ৪০তম ব্যাচের ছাত্র বশির, ইনফরমেশন টেকনোলজি বিভাগের ৩৯তম ব্যাচের ছাত্র মারুফ, গণিত বিভাগের ৪১তম বিভাগের রবিন ও ফিন্যান্স এ্যান্ড ব্যাংকিং বিভাগের ৩৯তম ব্যাচের ছাত্র নাহিদ। তাদের সাভারের এনাম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। বুধবার রাতেও বিক্ষুব্ধ ছাত্ররা ঢাকা-আরিচা মহাসড়ক অবরোধ করে গাড়ি ভাংচুর করেন। মীর মশাররফ হোসেন হলের এক শিক্ষার্থী আটকের ঘটনায় ছাত্র ও পুলিশ সংঘর্ষের একপর্যায়ে ক্যাম্পাসে ব্যাপক ভাংচুর চালিয়েছে বিক্ষুব্ধ ছাত্ররা। বিশ্ববিদ্যালয়ে সমস্ত স্থাপনায় ব্যাপক ভাংচুর চালানো হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয় হল প্রাধ্যক্ষ, প্রক্টর বাসভবন, টিএসসি ভবন, অডিটরিয়াম, উপাচার্যের গাড়িতে ব্যাপক ভাংচুর চালানো হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয় প্রধান প্রবেশদ্বার ভেঙ্গে ফেলে রাতে বিক্ষুব্ধ ছাত্ররা। এ সময় পুলিশের গুলিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের এক সাংবাদিকসহ ৫ বিক্ষুব্ধ ছাত্র আহত হয়। আর এ ঘটনার প্রতিবাদে রাত ১টা থেকে ঢাকা-আরিচা মহাসড়ক অবরোধ করে রাখে ছাত্ররা, যা বৃহস্পতিবার বিকেল পর্যন্ত চলে।
এদিকে ঘটনার সূত্রপাত কিভাবে তার খোজ নিতে গিয়ে জানা গেছে, বুধবার রাত ১০টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের ৩৬তম ব্যাচের ছাত্র তাহমিদুল ইসলাম লিখনকে মীর মশাররফ হোসেন হলের নৃ-বিজ্ঞান বিভাগের এক ছাত্র ছুরিকাঘাত করেন। এতে তিনি মারাত্মকভাবে জখম হন। পরে তাকে সাভারের এনাম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। এ ঘটনায় লিখনের আবাসিক হলসহ অন্যান্য হলে উত্তেজনা দেখা দেয়। লিখনের অভিযোগের প্রেক্ষিতে রাত ১২টার দিকে পুলিশ সন্দেহভাজনভাবে মীর মশাররফ হোসেন হলের নৃ-বিজ্ঞান বিভাগের ৩৯তম ব্যাচের ছাত্র নাহিদকে আটক করতে গেলে ওই হলের ছাত্রদের সঙ্গে পুলিশের বাগ্বিত-া হয় এবং পুলিশের ওপর হামলা চালায়। এ সময় পুলিশ ১০-১২ রাউন্ড রাউন্ড ফাঁকা গুলি ছুড়লে ছাত্ররা ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠে। ছাত্রদের তোপের মুখে পুলিশ নাহিদকে ছেড়ে দেয়। এ সময় ছাত্ররা পুলিশকে লক্ষ্য করে ইটপটকেল ছুড়লে পুলিশ ৩০-৪০ রাউন্ড গুলি করে ছত্রভঙ্গ করে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে ব্যর্থ হয়। পরে তারা পিছু হটে। এ সময় বিক্ষোভ ঠেকাতে পুলিশ ছাত্রদের ওপর গুলি ছুড়লে ৫ ছাত্র গুলিবিদ্ধ হন। গুলিবিদ্ধ ছাত্রদের সাভার এনাম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। এ সময় ছাত্রদের হামলায় সাভার সার্কেলের এসপি মনোয়ার হোসেন আহত হয়। অন্যদিকে নাহিদকে আটকের খবর ছড়িয়ে পড়লে সব ছাত্র হল থেকে বেরিয়ে এসে ক্যাম্পাসে বিক্ষোভ করতে থাকে। সূত্র জানিয়েছে, ছাত্রী উত্ত্যক্ত করার ঘটনায় বুধবার রাতে মীর মশাররফ হোসেন হলের শিক্ষার্থীকে আটক করার ঘটনায় ছাত্র-পুলিশ সংঘর্ষ হয়। তবে ছাত্রদের ওপর পুলিশের গুলি ছোঁড়ার অনুমতি ছিল না বলে জানা গেছে। ছাত্রদের ওপর আত্মরক্ষার জন্য গুলি ছোড়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন ঢাকা জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার শেখ রফিকুল ইসলাম। তিনি বলেছেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনের অনুমতিক্রমে আমরা যখন জাবিতে এসেছি তখন শিক্ষার্থী আমাদের ওপর হামলা করে। সে সময় আমরা আত্মরক্ষার জন্য গুলি ছুড়তে বাধ্য হই। যে গুলি ছোড়া হয়েছে এটি শটগানের। খুব কাছ থেকেও যদি শটগান দিয়ে গুলি ছোড়া হয় তাতে খুব বেশি ক্ষতি হবে না কারও। এছাড়াও কয়েক রাউন্ড রাবার বুলেট ছোড়ার কথা স্বীকার করেন তিনি।
No comments