গ্রীনকার্ড দেখিয়ে যুক্তরাষ্ট্রে ঢোকেন ফখরুদ্দীন? by মাহফুজুর রহমান

এক-এগারোর তত্ত্বাবধায়ক সরকারপ্রধান ফখরুদ্দীন আহমদও আমেরিকার গ্রীনকার্ডধারী। তিনি গ্রীনকার্ড পেয়েছেন দীর্ঘ দেড় দুই যুগ আগে। বিস্ময়কর ব্যাপার হলো, বাংলাদেশের সরকারপ্রধান হিসেবে যুক্তরাষ্ট্রে যখন এসেছিলেন তত্ত্বাবধায়ক সরকারপ্রধান ফখরুদ্দীন আহমদ তখন তিনি ইমিগ্রেশনে বাংলাদেশের পাসপোর্টে নয়,


আমেরিকার গ্রীনকার্ডধারী হিসেবে চেক -ইন করেছিলেন। তাঁর এই আচরণ বাংলাদেশের সার্বভৌমত্বের প্রতি চরম অবমাননাকর ছিল। কিন্তু তিনি কেন তা করেছিলেন তা কারও বোধগম্য নয়। কিন্তু বিষয়টিকে রাষ্ট্রদ্রোহিতার পর্যায়ে দেখার সুযোগ রয়েছে বলে জানালেন এক আইনজ্ঞ। তাঁর মতে এ বিষয়টি নিয়ে সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারপ্রধান ফখরুদ্দীনকে জিজ্ঞাসাবাদ করা উচিত। কারণ কোন দেশের সরকারপ্রধান সে দেশের সার্বভৌমত্বের প্রতীক এবং তিনি যদি সে দেশের নাগরিক হিসেবে অন্য দেশে ভ্রমণ না করে আরেক দেশের পার্মানেন্ট রেসিডেন্সির কার্ড ব্যবহার করে ইমিগ্রেশন ছাড়পত্র নেন তা হলে সেটা ক্ষমার অযোগ্য অপরাধ হিসেবে বিবেচিত হওয়া উচিত।

জেনারেল মইন গ্রীনকার্ড পেয়েছেন
এদিকে বাংলাদেশের আলোচিত এক-এগারোর অন্যতম নায়ক জেনারেল মইন ইউ আহমেদ এখন যুক্তরাষ্ট্রের স্থায়ী বাসিন্দার মর্যাদার অধিকারী। গত মাসে তাঁকে বিশেষ ব্যবস্থায় গ্রীনকার্ড (পার্মানেন্ট রেসিডেন্ট কার্ড) দেয়া হয়েছে। এর ফলে তাঁর পক্ষে যুক্তরাষ্ট্রের বাইরে যে কোন দেশে ঘুরে আসা সহজ হলো। জেনারেল মইনের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ একটি মহল জানিয়েছে গ্রীনকার্ড পেতে জেনারেল মইনের কোন বেগ পেতে হয়নি। যুক্তরাষ্ট্র ইমিগ্রেশন কর্তৃপক্ষ তাঁকে বিশেষ মর্যাদায় তা দিয়েছে। ধারণা করা হচ্ছে গ্রীনকার্ড নিয়ে শীঘ্রই তিনি বাংলাদেশে যাবেন বিডিআর হত্যা মামলায় সাক্ষ্য দিতে।
এদিকে জেনারেল মইনের ঘনিষ্ঠ সূত্র জানিয়েছে, গত মাসে তিনি যখন নিউইয়র্ক শহরের উপকণ্ঠে লং আইল্যান্ডের ইমিগ্রেশন সার্ভিস সেন্টারে তাঁর গ্রীনকার্ড নিতে যান তখন এক অভূতপূর্ব দৃশ্যের অবতারণা হয়। যেখানে সাধারণত কোন সার্ভিস পেতে সবাইকে নিয়মানুযায়ী লাইনে দাঁড়াতে হয় এবং অপেক্ষা করতে হয় কখন ডাক পড়বে- সেখানে জেনারেল মইনকে এসবের কোন কিছুরই মুখোমুখি হতে হয়নি। তিনি ইমিগ্রেশন অফিসে যাওয়ার পর তাকে বিশেষভাবে অভ্যর্থনা জানানো হয় এবং তাঁকে দেখার জন্য অফিসের কর্তাব্যক্তিদের অনেকেই তাদের কক্ষ থেকে বেরিয়ে আসেন এবং তাঁর সঙ্গে কুশল বিনিময় করেন। প্রত্যক্ষদর্শীদের মতে এটা ছিল অভাবনীয় ঘটনা।
কাউকে এভাবে গ্রীনকার্ড দেয়ার নজির নেই বলে জানালেন ইমিগ্রেশন সংশ্লিষ্ট এক আইনজীবী। তাঁর মতে যুক্তরাষ্ট্র সরকার সেদেশের স্বার্থে যারা কোন অবদান রাখেন বা রাখতে পারেন বা যুক্তরাষ্ট্রকে সেবা প্রদান করেছেন এমন একটি ক্যাটাগরিতেই সরাসরি কাউকে গ্রীনকার্ড দেয়ার বিধান রেখেছে। কিন্তু জেনারেল মইন যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষে এমন কী অবদান রাখলেন যে তাঁকে বিশেষ মর্যাদায় গ্রীনকার্ড দেয়া হলো সে সম্পর্কে তাঁর কোন ধারণা নেই বলে জানালেন ওই ইমিগ্রেশন আইনজীবী।

No comments

Powered by Blogger.