বঙ্গবন্ধু হত্যা মামলার- ঐতিহাসিক রায়- বাংলায় রূপান্তর : এনামুল হক

(পূর্ব প্রকাশের পর) (ঙ) দোষী সাব্যস্ত পিটিশনকারীদের বিরুদ্ধে দণ্ডবিধির ৩৪ ধারার সঙ্গে গঠিত ৩০২ ধারায় আনীত হত্যার অভিযোগটি রেকর্ডকৃত সা্যপ্রমাণের যথাযথ মূল্যায়ন ও চুলচেরা বিশ্লেষণের ভিত্তিতে প্রমাণিত হয়নি এবং সেহেতু ন্যায়বিচারের ব্যর্থতার পরিচয় দেয়া হয়েছে।"


বিচার চলাকালেই প্রতীয়মান হয়েছে যে, বাদীপ তার পরে সাীদের দেয়া সা্যপ্রমাণ, আপীলকারী ফারুক রহমান, সুলতান শাহরিয়ার ও মহিউদ্দীনের (আর্টিলারি) অপরাধ স্বীকারোক্তি, বাদীপরে ১৫ ও ৮ নং সাী কতর্ৃক প্রমাণিত আদালতবহিভর্ূত স্বীকারোক্তি, ইলেক্ট্রনিক সা্যপ্রমাণ এবং ষড়যন্ত্র সম্পর্কিত পারিপাশ্বর্িক অবস্থাগত প্রমাণের ভিত্তিতে আপীলকারীদের ও অপরাপর আসামির বিরুদ্ধে তাদের মামলাটি সপ্রমাণিত করার চেষ্টা করেছিল এবং অন্যদিকে অপীলকারীরা ও অন্য আসামিরা প্রমাণ করার চেষ্টা করেছিল যে তারা নির্দোষ। উপরোক্ত তিন আপীলকারীর অপরাধ স্বীকারোক্তির বিবৃতিগুলো স্বেচ্ছায় প্রদত্ত ছিল না এবং তদানীন্তন সরকারের বিরুদ্ধে সেনাবাহিনীর এক সফল বিদ্রোহের পরিণতিতে রাষ্ট্রপতি ও তাঁর পরিবার পরিজন নিহত হয়েছিলেন।
তৃতীয় বিজ্ঞ বিচারকের গোটা রেফারেন্সটির অর্থাৎ দোষী সাব্যস্ত শুধু ৬ জনের পরিবর্তে দোষী সাব্যস্ত ১৫ জনের সকলের বিষয়গুলোর শুনানি গ্রহণ করা উচিত ছিল_ এই যুক্তি সম্পর্কে আপীলকারীদের পরে বিজ্ঞ কেঁৗসুলিদের অভিন্ন নিবেদন হলো এই যে, হাইকোর্ট বিভাগের বিজ্ঞ বিচারকরা যেহেতু ভিন্ন ভিন্ন রায় দিয়েছেন তাই তৃতীয় বিজ্ঞ বিচারকের উচিত ছিল গোটা ডেথ রেফারেন্সটির ওপর শুনানি গ্রহণ করা। কিন্তু তিনি ৬ জন আসামির েেত্রই শুধু রেফারেন্সটির শুনানি করেছেন। কাজেই ডেথ রেফারেন্স ও আপীলগুলোর নতুন করে শুনানির জন্য বর্তমান রেফারেন্স এবং সেই সঙ্গে আপীলগুলো তৃতীয় বিজ্ঞ বিচারকের কাছে পুনঃপ্রেরণ করা উচিত।
আপীলকারী ফারুক রহমান ও মহিউদ্দীন (আর্টিলারি_এর বিজ্ঞ কেঁৗসুলি খান সাইফুর রহমান আরও নিবেদন করেন যে বিজ্ঞ প্রধান বিচারপতি খণ্ডিত রেফারেন্স নয় বরং গোটা ডেথ রেফারেন্সটি নি্#৬৩৭৪৩;ত্তির জন্য তৃতীয় বিজ্ঞ বিচারকের কাছে পাঠিয়েছিলেন। কাজেই তৃতীয় বিজ্ঞ বিচারকের উচিত ছিল গোটা রেফারেন্সটির ওপর শুনানি করা। যে রায়টি নিয়ে প্রশ্ন তোলা হয়েছে সেটি আইনের দৃষ্টিতে রায় নয়। কেননা বিজ্ঞ বিচারকরা ফৌজদারি কার্যবিধির ৩৭৭ ধারার বিধানাবলী লঙ্ঘন করে আলাদা আলাদাভাবে তাদের অভিমত ব্যক্ত করেছেন এবং সেই অভিমতে স্বার দিয়েছেন। হাইকোর্ট বিভাগের বিজ্ঞ বিচারকরা যেহেতু ডেথ রেফারেন্স এবং সেই সঙ্গে আপীলসমূহের শুনানি করেছেন তাই ফৌজদারি কার্যবিধির ৩৭৮ ও ৪২৯ _এই উভয় ধারাই এেেত্র প্রযোজ্য এবং সেই কারণে তৃতীয় বিজ্ঞ বিচারকের অভিমতই হবে চূড়ান্ত অভিমত এবং এর ভিত্তিতেই রায় ও আদেশ প্রদত্ত হবে যা বর্তমান আপীলসমূহের েেত্র করা হয়নি। আপীলকারী ফারুক রহমান, সুলতান শাহরিয়ার ও মহিউদ্দীনের (আর্টিলারি) েেত্র তৃতীয় বিচারকের অভিমতটি কোনক্রমে একটি সহবর্তমান বা সমান্তরাল অভিমতও নয়, বিশেষ করে যখন প্রথম বিজ্ঞ বিচারক তাদের অপরাধ স্বীকারোক্তিগুলোকে অবিশ্বাস করেছেন এবং দ্বিতীয় বিজ্ঞ বিচারক বিশ্বাস করেছেন। (ক্রমশ)

No comments

Powered by Blogger.