নির্বাচন নিয়ে কোন ধানাইপানাই চলবে না- স্থানীয় প্রতিনিধিদের সঙ্গে ইফতারে খালেদা

জাতীয় সংসদে বিরোধী দলের নেতা ও বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়া বলেছেন, আগামী নির্বাচন নিেেয় কোন প্রকার ধানাই পানাই চলবে না। সংবিধান সংশোধন করে অবিলম্বে নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকারের ব্যবস্থা করতে হবে। তা না হলে দুর্বার আন্দোলনের মাধ্যমে নির্দলীয় সরকারের দাবি আদায় করা হবে।


বৃহস্পতিবার জাতীয় সংসদ ভবনের এলডি হল প্রাঙ্গণে সারাদেশের নির্বাচিত স্থানীয় সরকার প্রতিনিধিদের জন্য বিএনপি আয়োজিত ইফতার পার্টিতে তাদের উদ্দেশে সংক্ষিপ্ত বক্তব্য রাখতে গিয়ে তিনি এসব কথা বলেন। ইফতারের আগে খালেদা জিয়া স্থানীয় সরকার প্রতিনিধিদের সঙ্গে কুশল বিনিময় করেন।
খালেদা জিয়া বলেন, আমরা আগেও বলেছি এখনও বলছি এ দেশে দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচন হতে দেয়া হবে না। বিএনপি কোন দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচনে অংশ নেবে না। নির্বাচন অবশ্যই নির্দলীয় সরকারের অধীনে হতে হবে। স্থানীয় সরকার প্রতিনিধিদের সরকারবিরোধী আন্দোলনে অংশ নেয়ার আহ্বান জানিয়ে খালেদা জিয়া বলেন, বর্তমান সরকার দেশ পরিচালনায় ব্যর্থ। তাই আন্দোলন করে এ সরকারকে ক্ষমতাচ্যুত করতে হবে। ঈদের পর দেশব্যাপী আন্দোলন শুরু হবে। এ আন্দোলনে স্থানীয় সরকার প্রতিনিধিদেরও অংশ নিতে হবে। সেই সঙ্গে সমাজের সকল স্তরের লোকজন যাতে এ আন্দোলনে শরিক হতে পারে সে ব্যাপারে সবাইকে সহযোগিতা করতে হবে।
খালেদা জিয়া অভিযোগ করেন বর্তমান সরকার স্থানীয় সরকার প্রতিনিধিদের কাজ করতে দিচ্ছে না। সরকারের লুটেরা বাহিনী উন্নয়নের জন্য বরাদ্দ অর্থ লুটে নিয়ে গেছে। জাতীয় স্বার্থে তাদের কাজ করতে দেয়া উচিত। তিনি বলেন, বিএনপি আরেকবার ক্ষমতায় গেলে স্থানীয় সরকার ব্যবস্থাকে আরও শক্তিশালী করা হবে। স্থানীয় সরকার প্রতিনিধিরা যাতে ঠিকভাবে কাজ করতে পারে এ ব্যাপারে আইন করা হবে।
খালেদা জিয়া বলেন, দেশের অর্থনীতি ধ্বংস হয়ে গেছে। ছাত্রলীগ, যুবলীগ ও আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা লুটপাট করে দেশকে ধ্বংস করে দিচ্ছে। এ সরকার দুর্নীিিততে রেকর্ড সৃষ্টি করেছে। সরকারের দুর্নীতির কারণেই পদ্মা সেতু নির্মাণের কাজ বন্ধ হয়ে গেছে। বিশ্বব্যাংক ঋণচুক্তি বাতিল করেছে। অথচ সরকার এ নিয়ে আবোলতাবোল কথা বলছে। তিনি বলেন, এ সরকারের কাছে দেশ নিরাপদ নয়, তাই এ সরকারকে ক্ষমতা থেকে সরাতে সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে।
খালেদা জিয়া বলেন, নির্দলীয় সরকার ছাড়া আওয়ামী লীগ ভিন্ন কোন পথের কথা চিন্তা করলে বিএনপি তা কখনই মেনে নেবে না। তিনি বলেন, সারাদেশে এখন শুধু খুন, গুম, মিথ্যা মামলা দেয়া হচ্ছে। কেউই এখন নিরাপদ নয়। ব্যবসা-বাণিজ্য ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে পৌঁছে গেছে। কোন বেচাকেনা নেই। ব্যবসায়ীরা এখন অসহায়। পরিকল্পিতভাবে অর্থনীতি ধ্বংস করে দেয়া হয়েছে। এ অবস্থায় দেশকে যারা ভালবাসে তাদের এগিয়ে আসতে হবে দেশকে মুক্ত করতে। যারা দেশকে ভালবাসে তারাই পারবে এ সরকারের হাত থেকে দেশ রক্ষা করতে।
ইফতার পার্টিতে স্থানীয় সরকার প্রতিনিধিদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন চট্টগ্রামের মেয়র মঞ্জুর আলম, উপজেলা চেয়ারম্যান পরিষদের সাধারণ সম্পাদক আতাউর রহমান আতা, পৌর মেয়র এ্যাসোসিয়েশন সাধারণ সম্পাদক শামীম আল রাজি, ঢাকার সাবেক মেয়র সাদেক হোসেন খোকা, রাজশাহীর সাবেক মেয়র মিজানুর রহমান মিনু, বরিশালের সাবেক মেয়র মজিবুর রহমান সারোয়ার প্রমুখ। বিএনপি নেতাদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন, ড. আরএ গনি, ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ, তরিকুল ইসলাম, লে. জেনারেল (অব) মাহবুবুর রহমান, এমকে আনোয়ার, ব্যারিস্টার জমিরউদ্দিন সরকার, ব্যারিস্টার রফিকুল ইসলাম মিয়া, ব্রিগেডিয়ার (অব) আসম হান্নান শাহ প্রমুখ। ইফতার পার্টিতে সারাদেশের বিভিন্ন সিটি কর্পোরেশন, পৌরসভা ও পরিষদের মেয়র ও কাউন্সিলর এবং ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও মেম্বাররা উপস্থিত ছিলেন।

No comments

Powered by Blogger.