কুকুর কেন হাড় চিবাতে ভালবাসে
কুকুর হাড় চিবাতে ভালবাসে। এরা মাংস যেমন পছন্দ করে হাড়ও পছন্দ করে। হাড় চিবানো কুকুরের স্বাভাবিক আচরণ। কেন ওরা হাড় চিবাতে ভালবাসে বিজ্ঞানীরা তা আবিষ্কার করতে সক্ষম হয়েছেন। কুকুরের পূর্বপুরুষদের আচরণ বিশ্লেষণ করে বিজ্ঞানীরা বলেছেন যে, যূথবদ্ধভাবে শিকার করা ও বসবাস করার সময় কুকুরদের খাদ্যের ক্ষেত্রেও পরিবর্তন ঘটেছে।
আজ থেকে ৮০ লাখ বছর আগে তারা দলবদ্ধভাবে বসবাস করার কৌশল অবলম্বন করে যাতে বড়সড় সাইজের কোন প্রাণী শিকার করা যায়। এসব প্রাণী শিকার করা ও খাওয়ার ফলে তাদের চোয়ালেরও বিবর্তন ঘটে। আমাদের আজকের গৃহপালিত জীব কুকুরের পূর্বপুরুষরা ধীরে ধীরে রূপান্তরিত হয়ে যায় হাইপারকারনিভোরে।
কলাম্বিয়া ন্যাশানাল ইউনিভার্সিটির ড. জোয়াও মুনোজডোরান সম্প্রতি কানাডার অটোয়ায় বিবর্তনমূলক জীববিজ্ঞানের প্রথম যৌথ কংগ্রেসে এই সংক্রান্ত গবেষণার ফলাফল তুলে ধরেন। তিনি ও তাঁর সহকর্মীরা তিন শ’রও বেশি প্রজাতির কুকুরের প্রতিটির সঙ্গে প্রতিটির সম্পর্ক একসঙ্গে গ্রথিত করে কুকুরের একটি বংশতালিকা তৈরি করেছেন। সেই বংশতালিকা থেকে কুকুরদের বিবর্তনের একটি চিত্র পাওয়া যায়। তাতে দেখা যায় মোটামুটিভাবে কখন প্রতিটি প্রজাতির উদ্ভদ হয়েছিল। বংশের এই ঠিকুজি দেখে বিজ্ঞানীদের পক্ষেও বোঝা সম্ভব হয়েছে কিভাবে এই প্রাণীটির জীবনধারা ও আবাসের বিষয়টি এর করোটি বা মাথার খুলির আকারের সঙ্গে সম্পর্কিত।
ড. মুনোজডোরান বলেন, আমরা অতি ভিন্ন ধরনের আহার্য তালিকার অধিকারী প্রজাতিগুলোকে পরস্পরের সঙ্গে তুলনা করে দেখেছি। এবং তার ভিত্তিতে সারমেয় শ্রেণীকে কার্নিভোর, হাইপারকার্নিভোর ও ওমনিভোর (অর্থাৎ যেসব প্রাণী মাংস ও সবজি উভয়েই আহার করে থাকে) এই তিন ভাগে বিভক্ত করেছি।
হাইপারকার্নিভোরের মধ্যে রয়েছে গৃহপালিত কুকুরের নিকটতম আত্মীয় গ্রে-উলফ। হাইপারকার্নিভোদের পরীক্ষা করে দেখা যায় যে এই প্রাণীগুলো প্রথম যখন দলবদ্ধভাবে শিকার করতে শুরু করে তখন থেকেই এদের ছেদন দন্ত বড় হতে এবং চোয়ালের পেশী শক্ত হয়ে উঠতে থাকে। ড. মুনোজডোরান বলেন, এসব বৈশিষ্ট্যের এক অভিন্ন বিবর্তনমূলক ইতিহাস আমরা পেয়েছি। তিনি বলেন, ৮০ লাখ বছর আগে এশিয়া, ইউরোপ ও উত্তর আমেরিকায় অপেক্ষাকৃত কম বনভূমি সম্পন্ন এবং অপেক্ষাকৃত অধিক খোলামেলা আবাসস্থল ছড়িয়ে পড়ছিল। আর যখন আবাসস্থল ছিল উন্মুক্ত সে সময় বড় বড় শিকারের প্রাণীরা একত্রে দলবদ্ধ হয়। শিকারি প্রাণীরা এতে সমস্যায় পড়্ তোরা যে অতর্কিত শিকারের ওপর ঝাঁপিয়ে পড়বে সেটা আর হয়ে ওঠে না। কারণ তাদের ওপর নজর রাখার মতো আরও অনেক চোখ ছিল। খোলামেলা সমভূমিতে বিচরণরত কুকুরদের পক্ষে বেশ বড় শিকারের পাল থেকে বড়সড় আকারের কোন শিকার ছিনিয়ে নেয়ার একটাই মাত্র উপায় ছিল। আর সেটা হলো একত্রিতভাবে থাকা ও আক্রমণ করা। আর এইভাবে কয়েক পুরুষ ধরে এমনি যূথবদ্ধভাবে আচরণের পর তাদের করোটির আকারের ওপর চাপ সৃষ্টি হয়। সেই চাপের অর্থ হলো যেসব প্রাণীর দাঁত তুলনামূলকভাবে বড় এবং চোয়াল অপেক্ষাকৃত শক্ত শিকারের বেলায় তাদের সফল হওয়ার সম্ভাবনা বেশি ছিল। যারা নিজেদের লম্বা দাঁত ও শক্ত চোয়ালের জিন পরবর্তী প্রজন্মের কাছে স্থানান্তর করতে পেরেছে সেই শ্রেণীগুলোই টিকে থাকতে পেরেছে। শক্ত চোয়াল ও লম্বা ছেদনদন্তবিশিষ্ট প্রাণীগুলোই অধিকতর সফল শিকারি হতে পেরেছে।
ড. মুনোজডোরান বলেন, তারা তাদের পেশী বিশেষ করে মুখের কাছাকাছি পেশীর শক্তি বৃদ্ধি করেছে। সেইসঙ্গে বাড়িয়ে তুলেছে সেইসব হাড়ের শক্তি যেগুলো শিকারকে কামড় মারার মেকানিক্যাল চাপ ধারণ করতে পারে। কালক্রমে তারা অভিযোজনের মধ্য দিয়ে হাইপারকারনিভোরাসে পরিণত হয়।
গবেষকরা বলেন, হাড় চিবানো উপভোগ করার অতি উত্তম বিবর্তনগত কারণ গৃহপালিত কুকুরদের রয়েছে। সেটা করার মতো হাতিয়ার তাদের রয়েছে এবং সেই হাতিয়ার তারা ব্যবহার করতে চায়।
সূত্র : এনিমেল সায়েন্স
কলাম্বিয়া ন্যাশানাল ইউনিভার্সিটির ড. জোয়াও মুনোজডোরান সম্প্রতি কানাডার অটোয়ায় বিবর্তনমূলক জীববিজ্ঞানের প্রথম যৌথ কংগ্রেসে এই সংক্রান্ত গবেষণার ফলাফল তুলে ধরেন। তিনি ও তাঁর সহকর্মীরা তিন শ’রও বেশি প্রজাতির কুকুরের প্রতিটির সঙ্গে প্রতিটির সম্পর্ক একসঙ্গে গ্রথিত করে কুকুরের একটি বংশতালিকা তৈরি করেছেন। সেই বংশতালিকা থেকে কুকুরদের বিবর্তনের একটি চিত্র পাওয়া যায়। তাতে দেখা যায় মোটামুটিভাবে কখন প্রতিটি প্রজাতির উদ্ভদ হয়েছিল। বংশের এই ঠিকুজি দেখে বিজ্ঞানীদের পক্ষেও বোঝা সম্ভব হয়েছে কিভাবে এই প্রাণীটির জীবনধারা ও আবাসের বিষয়টি এর করোটি বা মাথার খুলির আকারের সঙ্গে সম্পর্কিত।
ড. মুনোজডোরান বলেন, আমরা অতি ভিন্ন ধরনের আহার্য তালিকার অধিকারী প্রজাতিগুলোকে পরস্পরের সঙ্গে তুলনা করে দেখেছি। এবং তার ভিত্তিতে সারমেয় শ্রেণীকে কার্নিভোর, হাইপারকার্নিভোর ও ওমনিভোর (অর্থাৎ যেসব প্রাণী মাংস ও সবজি উভয়েই আহার করে থাকে) এই তিন ভাগে বিভক্ত করেছি।
হাইপারকার্নিভোরের মধ্যে রয়েছে গৃহপালিত কুকুরের নিকটতম আত্মীয় গ্রে-উলফ। হাইপারকার্নিভোদের পরীক্ষা করে দেখা যায় যে এই প্রাণীগুলো প্রথম যখন দলবদ্ধভাবে শিকার করতে শুরু করে তখন থেকেই এদের ছেদন দন্ত বড় হতে এবং চোয়ালের পেশী শক্ত হয়ে উঠতে থাকে। ড. মুনোজডোরান বলেন, এসব বৈশিষ্ট্যের এক অভিন্ন বিবর্তনমূলক ইতিহাস আমরা পেয়েছি। তিনি বলেন, ৮০ লাখ বছর আগে এশিয়া, ইউরোপ ও উত্তর আমেরিকায় অপেক্ষাকৃত কম বনভূমি সম্পন্ন এবং অপেক্ষাকৃত অধিক খোলামেলা আবাসস্থল ছড়িয়ে পড়ছিল। আর যখন আবাসস্থল ছিল উন্মুক্ত সে সময় বড় বড় শিকারের প্রাণীরা একত্রে দলবদ্ধ হয়। শিকারি প্রাণীরা এতে সমস্যায় পড়্ তোরা যে অতর্কিত শিকারের ওপর ঝাঁপিয়ে পড়বে সেটা আর হয়ে ওঠে না। কারণ তাদের ওপর নজর রাখার মতো আরও অনেক চোখ ছিল। খোলামেলা সমভূমিতে বিচরণরত কুকুরদের পক্ষে বেশ বড় শিকারের পাল থেকে বড়সড় আকারের কোন শিকার ছিনিয়ে নেয়ার একটাই মাত্র উপায় ছিল। আর সেটা হলো একত্রিতভাবে থাকা ও আক্রমণ করা। আর এইভাবে কয়েক পুরুষ ধরে এমনি যূথবদ্ধভাবে আচরণের পর তাদের করোটির আকারের ওপর চাপ সৃষ্টি হয়। সেই চাপের অর্থ হলো যেসব প্রাণীর দাঁত তুলনামূলকভাবে বড় এবং চোয়াল অপেক্ষাকৃত শক্ত শিকারের বেলায় তাদের সফল হওয়ার সম্ভাবনা বেশি ছিল। যারা নিজেদের লম্বা দাঁত ও শক্ত চোয়ালের জিন পরবর্তী প্রজন্মের কাছে স্থানান্তর করতে পেরেছে সেই শ্রেণীগুলোই টিকে থাকতে পেরেছে। শক্ত চোয়াল ও লম্বা ছেদনদন্তবিশিষ্ট প্রাণীগুলোই অধিকতর সফল শিকারি হতে পেরেছে।
ড. মুনোজডোরান বলেন, তারা তাদের পেশী বিশেষ করে মুখের কাছাকাছি পেশীর শক্তি বৃদ্ধি করেছে। সেইসঙ্গে বাড়িয়ে তুলেছে সেইসব হাড়ের শক্তি যেগুলো শিকারকে কামড় মারার মেকানিক্যাল চাপ ধারণ করতে পারে। কালক্রমে তারা অভিযোজনের মধ্য দিয়ে হাইপারকারনিভোরাসে পরিণত হয়।
গবেষকরা বলেন, হাড় চিবানো উপভোগ করার অতি উত্তম বিবর্তনগত কারণ গৃহপালিত কুকুরদের রয়েছে। সেটা করার মতো হাতিয়ার তাদের রয়েছে এবং সেই হাতিয়ার তারা ব্যবহার করতে চায়।
সূত্র : এনিমেল সায়েন্স
No comments