এক বছরে ছয় লাখ বিও হিসাব বন্ধ হয়ে গেছে-শেয়ারবাজার ছাড়ছেন ক্ষুদ্র বিনিয়োগকারীরা!
শেয়ারবাজার ছেড়ে যাচ্ছেন সাধারণ বিনিয়োগকারীরা। দেড় বছরের বেশি সময় ধরে অস্থিতিশীল বাজার। শেয়ারের ক্রমাগত দরপতনের কারণেই এই বাজারবিমুখতা। আবার যেসব বিনিয়োগকারী বাজারে আছেন, তাঁদের অনেকের শুধু বিও (বেনিফিশিয়ারি ওনার্স) হিসাবটিই সক্রিয়। সেখানে নেই কোনো শেয়ার।
বিনিয়োগকারীদের বিও হিসাব ও শেয়ার সংরক্ষণকারী প্রতিষ্ঠান সেন্ট্রাল ডিপোজিটরি বাংলাদেশ লিমিটেডের (সিডিবিএল) সাম্প্রতিক হিসাব থেকে এ তথ্য পাওয়া গেছে।
সংস্থাটির হিসাব অনুযায়ী, ২০১১ সালের ১ জুন দেশের শেয়ারবাজারে সক্রিয় বিও হিসাবের সংখ্যা ছিল ৩৪ লাখের বেশি। চলতি বছরের ৩ জুন সেই সংখ্যা কমে নেমে এসেছে প্রায় ২৮ লাখে। এই হিসাবে গত এক বছরে ছয় লাখ বিও হিসাব বন্ধ হয়ে গেছে। শেয়ারবাজারে লেনদেনের জন্য একজন বিনিয়োগকারীর বিও হিসাব হলো প্রথম শর্ত। সেই বিও হিসাবই স্বেচ্ছায় বন্ধ করে দিচ্ছেন সাধারণ বিনিয়োগকারীরা। সিডিবিএলের হিসাব অনুযাযী, ২০০৯ সালের ১ জুন শেয়ারবাজারে সক্রিয় বিও হিসাব ছিল প্রায় ১৪ লাখ। ২০১০ সালের একই তারিখে তা বেড়ে হয়েছে ২৬ লাখ।
অপর এক হিসাব থেকে জানা গেছে, বর্তমানে শেয়ারবাজারে ২৮ লাখের বেশি সক্রিয় বিও হিসাব থাকলেও এর মধ্যে শেয়ার রয়েছে ১৭ লাখ ৬১ হাজার বিও হিসাবে। বাকি ১০ লাখ ৩৯ হাজার বিও হিসাব সক্রিয় রয়েছে শুধু হিসাবের অঙ্কে। তাতে কোনো শেয়ার নেই।
সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের অভিমত, যে ১৭ লাখ ৬১ হাজার বিও হিসাবে শেয়ার রয়েছে, তাদের একটি বড় অংশের হিসাবেই রয়েছে সাম্প্রতিক সময়ে কয়েকটি কোম্পানির প্রাথমিক গণপ্রস্তাবে বা আইপিওতে পাওয়া শেয়ার। যেহেতু এখন পর্যন্ত বাজারে ওই সব কোম্পানির শেয়ার লেনদেন হয়নি, তাই বিও হিসাবে শেয়ার সংরক্ষিত রয়েছে।
সাম্প্রতিক সময়ে বাংলাদেশ সাবমেরিন কেব্লসসহ একাধিক কোম্পানির আইপিওতে সাধারণ বিনিয়োগকারী কোটায় যাঁরাই আবেদন করেছেন, তাঁরা শেয়ার বরাদ্দ পেয়েছেন। এমনকি সবাইকে শেয়ার বরাদ্দ দিয়েও সাধারণ বিনিয়োগকারীদের কোটা পূরণ করতে পারেনি একাধিক কোম্পানি। পরে প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীদের মধ্যে ব্যক্তিশ্রেণীর বিনিয়োগকারীর কোটার শেয়ার বিক্রি করা হয়।
সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের ধারণা, যদি সাবমেরিন কেব্লসহ তালিকাভুক্তির চূড়ান্ত পর্যায়ে থাকা একাধিক কোম্পানির শেয়ার লেনদেন শুরু হয়ে যায়, তাহলে অনেক বিও হিসাব শেয়ারশূন্য হয়ে যাবে। অবশ্য শেয়ারশূন্য হলেও সেগুলো ‘সক্রিয় বিও’ হিসাবে থেকে যাবে।
কেন বিনিয়োগকারীরা বাজারবিমুখ: ২০১০ সালের ১ জুন দেশের প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) সাধারণ মূল্যসূচক ছিল প্রায় ছয় হাজার ১৫২ পয়েন্টে। ২০১১ সালের ১ জুন সেটি কমে দাঁড়ায় প্রায় পাঁচ হাজার ৬৬৯ পয়েন্টে। আর ২০১২ সালের ৩ জুন ডিএসইর সাধারণ সূচক ছিল চার হাজার ৮৫৫ পয়েন্টে। এ সময়ে বাজারে নতুন অনেক কোম্পানি যুক্ত হয়েছে। নতুন কোম্পানি তালিকাভুক্তির ফলে সূচকে বাড়তি কিছু পয়েন্ট যুক্ত হয়। তা সত্ত্বেও এই সময়ে সূচক না বেড়ে উল্টো কমেছে। সেই হিসাবে সূচকের প্রকৃত পতন হয়েছে অনেক বেশি।
জানতে চাইলে পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (এসইসি) সাবেক চেয়ারম্যান ফারুক আহমেদ সিদ্দিকী প্রথম আলোকে বলেন, বাজার খারাপ থাকলে বিনিয়োগকারীরা বাজারবিমুখ হয়ে পড়বেন, এটাই স্বাভাবিক। যেসব বিনিয়োগকারী উত্থানপর্বে এক বা একাধিক বিও হিসাব খুলে বাজারে এসেছিলেন, তাঁরা এখন নিজেদের গুটিয়ে নিচ্ছেন। হয়তো তাঁরা ভাবছেন, বাজারের যে অবস্থা তাতে হয়তো শিগগির এখান থেকে লাভবান হওয়া যাবে না।
ফারুক আহমেদ সিদ্দিকী আরও বলেন, ‘শেয়ারবাজারে যত বিও হিসাব রয়েছে, তত লোক কখনোই সেকেন্ডারি বাজারের নিয়মিত লেনদেনের সঙ্গে সম্পৃক্ত ছিলেন না। আমার মতে, যত বিও হিসাব থাকে, তার সর্বোচ্চ ৫০ শতাংশ নিয়মিত লেনদেনে ব্যবহূত হয়। বাকি ৫০ শতাংশ শুধু আইপিওর জন্য ব্যবহার করা হয়। অনেকেই আছেন, যাঁদের নামে একসময় ৩০-৪০টি বিও হিসাব ছিল। যেহেতু বিও হিসাব সক্রিয় রাখতে হলে বছর বছর কিছু ফি দিতে হয়, তাই অনেকে হয়তো নামে-বেনামে থাকা একাধিক বিও হিসাব বন্ধ করে দিচ্ছেন।’
ফারুক আহমেদ সিদ্দিকী বলেন, এখনো আইপিও শেয়ারের কারণে অনেকে বাজারে সক্রিয় আছেন। যদি আইপিও থেকেও কাঙ্ক্ষিত লাভ না আসে, তাহলে বর্তমানে সক্রিয় ব্যক্তি বিনিয়োগকারীদের বড় অংশও বাজার থেকে মুখ ফিরিয়ে নেবে। তাই এই ধরনের পরিস্থিতি তৈরি হওয়ার আগে বাজারে স্থিতিশীলতা তৈরি করা খুবই জরুরি।
সংস্থাটির হিসাব অনুযায়ী, ২০১১ সালের ১ জুন দেশের শেয়ারবাজারে সক্রিয় বিও হিসাবের সংখ্যা ছিল ৩৪ লাখের বেশি। চলতি বছরের ৩ জুন সেই সংখ্যা কমে নেমে এসেছে প্রায় ২৮ লাখে। এই হিসাবে গত এক বছরে ছয় লাখ বিও হিসাব বন্ধ হয়ে গেছে। শেয়ারবাজারে লেনদেনের জন্য একজন বিনিয়োগকারীর বিও হিসাব হলো প্রথম শর্ত। সেই বিও হিসাবই স্বেচ্ছায় বন্ধ করে দিচ্ছেন সাধারণ বিনিয়োগকারীরা। সিডিবিএলের হিসাব অনুযাযী, ২০০৯ সালের ১ জুন শেয়ারবাজারে সক্রিয় বিও হিসাব ছিল প্রায় ১৪ লাখ। ২০১০ সালের একই তারিখে তা বেড়ে হয়েছে ২৬ লাখ।
অপর এক হিসাব থেকে জানা গেছে, বর্তমানে শেয়ারবাজারে ২৮ লাখের বেশি সক্রিয় বিও হিসাব থাকলেও এর মধ্যে শেয়ার রয়েছে ১৭ লাখ ৬১ হাজার বিও হিসাবে। বাকি ১০ লাখ ৩৯ হাজার বিও হিসাব সক্রিয় রয়েছে শুধু হিসাবের অঙ্কে। তাতে কোনো শেয়ার নেই।
সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের অভিমত, যে ১৭ লাখ ৬১ হাজার বিও হিসাবে শেয়ার রয়েছে, তাদের একটি বড় অংশের হিসাবেই রয়েছে সাম্প্রতিক সময়ে কয়েকটি কোম্পানির প্রাথমিক গণপ্রস্তাবে বা আইপিওতে পাওয়া শেয়ার। যেহেতু এখন পর্যন্ত বাজারে ওই সব কোম্পানির শেয়ার লেনদেন হয়নি, তাই বিও হিসাবে শেয়ার সংরক্ষিত রয়েছে।
সাম্প্রতিক সময়ে বাংলাদেশ সাবমেরিন কেব্লসসহ একাধিক কোম্পানির আইপিওতে সাধারণ বিনিয়োগকারী কোটায় যাঁরাই আবেদন করেছেন, তাঁরা শেয়ার বরাদ্দ পেয়েছেন। এমনকি সবাইকে শেয়ার বরাদ্দ দিয়েও সাধারণ বিনিয়োগকারীদের কোটা পূরণ করতে পারেনি একাধিক কোম্পানি। পরে প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীদের মধ্যে ব্যক্তিশ্রেণীর বিনিয়োগকারীর কোটার শেয়ার বিক্রি করা হয়।
সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের ধারণা, যদি সাবমেরিন কেব্লসহ তালিকাভুক্তির চূড়ান্ত পর্যায়ে থাকা একাধিক কোম্পানির শেয়ার লেনদেন শুরু হয়ে যায়, তাহলে অনেক বিও হিসাব শেয়ারশূন্য হয়ে যাবে। অবশ্য শেয়ারশূন্য হলেও সেগুলো ‘সক্রিয় বিও’ হিসাবে থেকে যাবে।
কেন বিনিয়োগকারীরা বাজারবিমুখ: ২০১০ সালের ১ জুন দেশের প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) সাধারণ মূল্যসূচক ছিল প্রায় ছয় হাজার ১৫২ পয়েন্টে। ২০১১ সালের ১ জুন সেটি কমে দাঁড়ায় প্রায় পাঁচ হাজার ৬৬৯ পয়েন্টে। আর ২০১২ সালের ৩ জুন ডিএসইর সাধারণ সূচক ছিল চার হাজার ৮৫৫ পয়েন্টে। এ সময়ে বাজারে নতুন অনেক কোম্পানি যুক্ত হয়েছে। নতুন কোম্পানি তালিকাভুক্তির ফলে সূচকে বাড়তি কিছু পয়েন্ট যুক্ত হয়। তা সত্ত্বেও এই সময়ে সূচক না বেড়ে উল্টো কমেছে। সেই হিসাবে সূচকের প্রকৃত পতন হয়েছে অনেক বেশি।
জানতে চাইলে পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (এসইসি) সাবেক চেয়ারম্যান ফারুক আহমেদ সিদ্দিকী প্রথম আলোকে বলেন, বাজার খারাপ থাকলে বিনিয়োগকারীরা বাজারবিমুখ হয়ে পড়বেন, এটাই স্বাভাবিক। যেসব বিনিয়োগকারী উত্থানপর্বে এক বা একাধিক বিও হিসাব খুলে বাজারে এসেছিলেন, তাঁরা এখন নিজেদের গুটিয়ে নিচ্ছেন। হয়তো তাঁরা ভাবছেন, বাজারের যে অবস্থা তাতে হয়তো শিগগির এখান থেকে লাভবান হওয়া যাবে না।
ফারুক আহমেদ সিদ্দিকী আরও বলেন, ‘শেয়ারবাজারে যত বিও হিসাব রয়েছে, তত লোক কখনোই সেকেন্ডারি বাজারের নিয়মিত লেনদেনের সঙ্গে সম্পৃক্ত ছিলেন না। আমার মতে, যত বিও হিসাব থাকে, তার সর্বোচ্চ ৫০ শতাংশ নিয়মিত লেনদেনে ব্যবহূত হয়। বাকি ৫০ শতাংশ শুধু আইপিওর জন্য ব্যবহার করা হয়। অনেকেই আছেন, যাঁদের নামে একসময় ৩০-৪০টি বিও হিসাব ছিল। যেহেতু বিও হিসাব সক্রিয় রাখতে হলে বছর বছর কিছু ফি দিতে হয়, তাই অনেকে হয়তো নামে-বেনামে থাকা একাধিক বিও হিসাব বন্ধ করে দিচ্ছেন।’
ফারুক আহমেদ সিদ্দিকী বলেন, এখনো আইপিও শেয়ারের কারণে অনেকে বাজারে সক্রিয় আছেন। যদি আইপিও থেকেও কাঙ্ক্ষিত লাভ না আসে, তাহলে বর্তমানে সক্রিয় ব্যক্তি বিনিয়োগকারীদের বড় অংশও বাজার থেকে মুখ ফিরিয়ে নেবে। তাই এই ধরনের পরিস্থিতি তৈরি হওয়ার আগে বাজারে স্থিতিশীলতা তৈরি করা খুবই জরুরি।
No comments